ঢাকা ০৯:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে সরকার সফল হবে না: তারেক Logo স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে দেশ এখনও মুক্ত নয়: রিজভী Logo হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে যেভাবে ইসরায়েল খুঁজে বের করে হত্যা করেছে Logo সোনারগাঁওয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে যুবকের মৃত্যু Logo সংবাদ প্রকাশের পর বৃদ্ধা মহিলার ঠাই হলো স্বামীর বসত ভিটায় Logo সোনারগাঁয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি হালট দখল করে বালু ভরাট Logo ‘সংস্কারের ধীর গতি’ ও কাজের গুরুত্ব নির্ধারণ নিয়ে সমালোচনা, কী বলছেন উপদেষ্টারা? Logo আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু আজ Logo বাড়তে পারে ঈদ ও পূজার সরকারি ছুটি Logo আগামী বছর থেকে আবারও মাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন শুরু

গাজায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, বিভিন্ন রোগে মারা যেতে পারে বহু মানুষ!

সারাবেলার সংবাদ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৪:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ৩৬ বার পঠিত

ইসরাইলের হামলায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা

যদিও ইসরাইল সরকার ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে গাজায় যুদ্ধ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে তবে গাজা উপত্যকায় স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইসরাইলী শাসক গোষ্ঠীর সাম্প্রতিক যুদ্ধে ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ শহীদ হলেও হাজার হাজার মানুষ এখনও মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক যুদ্ধে অধিকৃত জেরুজালেম সরকার কর্তৃক সংঘটিত অপরাধগুলির মধ্যে একটি ছিল চিকিৎসা কেন্দ্র ও হাসপাতালে বোমা হামলা।
যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের পর গাজার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া অফিস ঘোষণা করেছে যে গাজা উপত্যকায় ২৬টি হাসপাতাল এবং ৫৫টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে যে দক্ষিণ গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলো মূলত ধ্বসে পড়েছে এবং ইসরাইলী আগ্রাসনের ফলে উত্তর গাজা উপত্যকা থেকে সরিয়ে নেওয়া বিপুল সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে তারা অক্ষম এবং  গাজাবাসীর স্বাস্থ্যের উপর অনেক চাপ সৃষ্টি করেছে।
ইসরাইলী শাসক গোষ্ঠীর ধারণা ছিল যে হামাস যোদ্ধারা হাসপাতালের নিচে থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করছে । তাই ইসরাইলী সেনারা গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল অবরোধ করে সেখানে হামলা চালিয়েছে। কিন্তু এই ধারণাটি ভুল ছিল এবং ইসরাইলী  শাসকদের দাবি বাস্তবে প্রমাণিত হয়নি। চিকিৎসা কেন্দ্র এবং হাসপাতাল যা আন্তর্জাতিক আইনের নীতি অনুসারে যে কোনও যুদ্ধে  নিরাপদ স্থান হিসেবে সব পক্ষকে সম্মান করা উচিত। কিন্তু গাজা যুদ্ধে হাসপাতাল এবং চিকিৎসা কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ইসরাইল  আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।
মোটকথা গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইসরাইলী শাসক গোষ্ঠীর প্রচণ্ড বোমাবর্ষণের ফলে শহরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে।এখন যুদ্ধ কার্যত বন্ধ হয়ে গেলেও নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে গাজার মেয়র গাজায় বিভিন্ন রোগ ও কলেরা ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে গাজায় পানি, খাদ্য এবং বিশেষ করে জ্বালানি পৌঁছে দিতে বলেছেন।

এই পরিস্থিতি যুদ্ধ বন্ধের পরে সৃষ্ট হয়েছে এবং কয়েক হাজার মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস গতকাল সতর্ক করেছেন যে গাজার বিপুল সংখ্যক বাসিন্দা বিভিন্ন রোগের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। হ্যারিস বলেছেন, “আমরা যদি গাজায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পুনর্নির্মাণ করতে না পারি তবে আমরা আরও দেখতে পাব যে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে এলাকার মানুষগুলো একে একে মারা যাচ্ছে।

এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সত্ত্বেও মানবিক সাহায্য পাঠানো বিশেষ করে ওষুধ এবং চিকিৎসা সহায়তা পাঠানো হয় সম্ভব নয় বা সীমিত পর্যায়ে করা হচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক “মুনির আল-বারশ”এই প্রসঙ্গে বলেছেন, হাসপাতালের বিপর্যয়কর স্বাস্থ্য পরিস্থিতির কারণে গাজা উপত্যকায় বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে যে পরিমাণ চিকিৎসা সহায়তা এবং জ্বালানি প্রবেশ করছে তা খুবই সীমিত এবং অপর্যাপ্ত। পরিশেষে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ইসলামি দেশগুলো যদি যত দ্রুত সম্ভব গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পুনর্গঠনের চেষ্টা না করে, তাহলে এই এলাকায় মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
Facebook Comments Box
ট্যাগস :

গাজায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, বিভিন্ন রোগে মারা যেতে পারে বহু মানুষ!

আপডেট সময় : ০৯:৩৪:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩
যদিও ইসরাইল সরকার ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে গাজায় যুদ্ধ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে তবে গাজা উপত্যকায় স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইসরাইলী শাসক গোষ্ঠীর সাম্প্রতিক যুদ্ধে ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ শহীদ হলেও হাজার হাজার মানুষ এখনও মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক যুদ্ধে অধিকৃত জেরুজালেম সরকার কর্তৃক সংঘটিত অপরাধগুলির মধ্যে একটি ছিল চিকিৎসা কেন্দ্র ও হাসপাতালে বোমা হামলা।
যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের পর গাজার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া অফিস ঘোষণা করেছে যে গাজা উপত্যকায় ২৬টি হাসপাতাল এবং ৫৫টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে যে দক্ষিণ গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলো মূলত ধ্বসে পড়েছে এবং ইসরাইলী আগ্রাসনের ফলে উত্তর গাজা উপত্যকা থেকে সরিয়ে নেওয়া বিপুল সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে তারা অক্ষম এবং  গাজাবাসীর স্বাস্থ্যের উপর অনেক চাপ সৃষ্টি করেছে।
ইসরাইলী শাসক গোষ্ঠীর ধারণা ছিল যে হামাস যোদ্ধারা হাসপাতালের নিচে থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করছে । তাই ইসরাইলী সেনারা গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল অবরোধ করে সেখানে হামলা চালিয়েছে। কিন্তু এই ধারণাটি ভুল ছিল এবং ইসরাইলী  শাসকদের দাবি বাস্তবে প্রমাণিত হয়নি। চিকিৎসা কেন্দ্র এবং হাসপাতাল যা আন্তর্জাতিক আইনের নীতি অনুসারে যে কোনও যুদ্ধে  নিরাপদ স্থান হিসেবে সব পক্ষকে সম্মান করা উচিত। কিন্তু গাজা যুদ্ধে হাসপাতাল এবং চিকিৎসা কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ইসরাইল  আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।
মোটকথা গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইসরাইলী শাসক গোষ্ঠীর প্রচণ্ড বোমাবর্ষণের ফলে শহরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে।এখন যুদ্ধ কার্যত বন্ধ হয়ে গেলেও নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে গাজার মেয়র গাজায় বিভিন্ন রোগ ও কলেরা ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে গাজায় পানি, খাদ্য এবং বিশেষ করে জ্বালানি পৌঁছে দিতে বলেছেন।

এই পরিস্থিতি যুদ্ধ বন্ধের পরে সৃষ্ট হয়েছে এবং কয়েক হাজার মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস গতকাল সতর্ক করেছেন যে গাজার বিপুল সংখ্যক বাসিন্দা বিভিন্ন রোগের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। হ্যারিস বলেছেন, “আমরা যদি গাজায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পুনর্নির্মাণ করতে না পারি তবে আমরা আরও দেখতে পাব যে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে এলাকার মানুষগুলো একে একে মারা যাচ্ছে।

এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সত্ত্বেও মানবিক সাহায্য পাঠানো বিশেষ করে ওষুধ এবং চিকিৎসা সহায়তা পাঠানো হয় সম্ভব নয় বা সীমিত পর্যায়ে করা হচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক “মুনির আল-বারশ”এই প্রসঙ্গে বলেছেন, হাসপাতালের বিপর্যয়কর স্বাস্থ্য পরিস্থিতির কারণে গাজা উপত্যকায় বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে যে পরিমাণ চিকিৎসা সহায়তা এবং জ্বালানি প্রবেশ করছে তা খুবই সীমিত এবং অপর্যাপ্ত। পরিশেষে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ইসলামি দেশগুলো যদি যত দ্রুত সম্ভব গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পুনর্গঠনের চেষ্টা না করে, তাহলে এই এলাকায় মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
Facebook Comments Box