ঢাকা ১১:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে সরকার সফল হবে না: তারেক Logo স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে দেশ এখনও মুক্ত নয়: রিজভী Logo হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে যেভাবে ইসরায়েল খুঁজে বের করে হত্যা করেছে Logo সোনারগাঁওয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে যুবকের মৃত্যু Logo সংবাদ প্রকাশের পর বৃদ্ধা মহিলার ঠাই হলো স্বামীর বসত ভিটায় Logo সোনারগাঁয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি হালট দখল করে বালু ভরাট Logo ‘সংস্কারের ধীর গতি’ ও কাজের গুরুত্ব নির্ধারণ নিয়ে সমালোচনা, কী বলছেন উপদেষ্টারা? Logo আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু আজ Logo বাড়তে পারে ঈদ ও পূজার সরকারি ছুটি Logo আগামী বছর থেকে আবারও মাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন শুরু

বিশ্বকাপে রেকর্ড গড়ে জিতল পাকিস্তান

ক্রীড়াঙ্গন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:০৬:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৭ বার পঠিত

মঙ্গলবার হায়দরাবাদে আব্দুল্লাহ শফিক ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের দুর্দান্ত দুই সেঞ্চুরিতে রেকর্ডটা নিজেদের করে নিয়েছে পাকিস্তান। রান উৎসবের লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কাকে তারা অনায়াসে হারিয়ে দিয়েছে ৬ উইকেটে। এবারের আসরে বাবর আজমের দলের এটি টানা দ্বিতীয় জয়, লঙ্কানদের দ্বিতীয় হার।

বিশ্বকাপের মঞ্চে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার আগের রেকর্ডটা ছিল আয়ারল্যান্ডের। ২০১১ সালের আসরে বেঙ্গালুরুতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২৮ রান তাড়ায় সফল হয়েছিল তারা। ১২ বছর পর ভাঙা পড়ল সেই কীর্তিটি।

এত বড় স্কোর তাড়া করতে গেলে ভালো শুরু গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্ত পাকিস্তান শুরুর দিকেই হারিয়ে ফেলেছিল ২ উইকেট। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে গেল ম্যাচেও ওপেনার ইমাম উল হক বাউন্সারে আউট হয়েছিলেন। এবারও বাউন্সারই তার সর্বনাশ ডেকে আনল। দিলশান মাদুশাঙ্কার বলে ইমাম ১২ রানে আউট হওয়ার পর পাকিস্তানের মূল ভরসা বাবরও ফিরে যান দ্রুত, মাদুশাঙ্কার বলেই। ১০ রানে অধিনায়ক আউট হওয়ার পর শফিক ও রিজওয়ান ইনিংস মেরামতে মনোযোগ দেন।

স্ট্রাইক বদলের পাশাপাশি বাউন্ডারি আদায়েও সজাগ ছিলেন দুজনেই। ১৯তম ওভারে পাকিস্তানের সংগ্রহ শতরান ছাড়িয়ে যায়। আগে-পরে দুজনেই ফিফটি ছুঁয়ে ফেলেন। এরপরে দুজনেই রানের চাকাও সমান গতিতে ঘোরাতে থাকেন।

৫৮ বলে ফিফটি করে পরের ৩৯ বলে ৫০ রান এনে সেঞ্চুরি পূরণ ৯৭ বলে। ফখর জামানের জায়গায় একাদশে ঢোকা শফিক ও রিজওয়ান দুজনেরই ইনিংস চলেছে সমানতালে, একই সুরে। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি পাওয়া প্রথম পাকিস্তানি ব্যাটার হয়ে যান শফিক। পয়েন্টে বদলি ফিল্ডার দুশান হেমন্তের দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচে তার ইনিংস থেমে যায়। ১০৩ বলে ১১৩ রানের ঝলমলে ইনিংসে তিনি মারেন ১০টি চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা।

১৭৬ রানের জুটি ভেঙে যাওয়ার পর অভিজ্ঞ রিজওয়ানের ওপর দায়িত্ব বেড়ে যায়। এ ম্যাচে তার কাছে চাহিদা ছিল আরও বেশিকিছুর! সে পথেই এগিয়ে যেতে থাকা রিজওয়ানকে ভোগান্তিতে ফেলে দিয়েছিল তার শরীর। তবে দমে না গিয়ে ক্র্যাম্পের সঙ্গে লড়ে উল্টো লঙ্কানদেরই ভোগান্তি বাড়ান শুধু।

৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১২১ বলে ১৩১ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থেকে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন রিজওয়ান। ৩১ রান করে সৌদ শাকিল ও ইফতিখার আহমেদ এসে ১০ বলে ২২ রানের অপরাজিত ক্যামিও খেলে যোগ্য সঙ্গ দেন। হারের স্বাদ পাওয়া শ্রীলঙ্কার আফসোসের জায়গা থাকবে এখানেই, মিডল অর্ডারে আরও অবদানের অভাব। নইলে তাদের পুঁজি চারশ পেরোনোর জোরালো অবস্থা ছিল।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা। কুসল পেরেরা ‘ডাক’ মেরে আউট হওয়ার পর যদিও পাথুম নিসাঙ্কা ও মেন্ডিস মিলে চাপ গায়ে লাগতে দেননি। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে পাওয়ারপ্লে তারা শেষ করেন ৫৮ রানে।

১৮ রানে থাকা অবস্থায় মেন্ডিসের ক্যাচ উঠেছিল পয়েন্টে, কিন্ত ইমাম উল হক তা ফেলে দেন। এরপর মেন্ডিস সময়ের সঙ্গে শুধু পাকিস্তানের আফসোসই বাড়ান। লাইন-লেংথে সামান্য হেরফের করলেই হন চড়াও।

অপর প্রান্তে নিসাঙ্কা ৬১ বলে ৫১ রান করে আউট হওয়ার পর সামারাবিক্রমা-মেন্ডিস জুটিতে রান আসতে থাকে আরও দ্রুত। ১৭তম ওভারে শতক পূর্ণ করা শ্রীলঙ্কা তাদের রান দুইশর উপরে নিয়ে যায় ২৮তম ওভারেই।

সেঞ্চুরির পর ‘শুধুই আক্রমণ’ নীতিতে গিয়ে মেন্ডিস ১২২ রানে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। ৭৭ বলের ইনিংসে দৃষ্টিনন্দন ১৪টি চারের সঙ্গে ৬টি ছক্কা মারেন তিনি। বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার জার্সিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির আগের রেকর্ডটি এসেছিল ২০১৫ সালে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭০ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা।

মেন্ডিস ফেরার পর চারিথ আসালাঙ্কা দ্রুত ফিরে যান। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাও বেশিদূর এগোতে পারেননি। একপাশ আগলে সামারাবিক্রমা সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ফেলেন ৮২ বলে। তবে অপর প্রান্তে সাহায্য পায়নি শ্রীলঙ্কা। সামারাবিক্রমা ৮৯ বলে ১০৮ রানে আউট হন ১১টি চার ও ২টি ছক্কা মেরে।

শেষ ১০ ওভারে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে লঙ্কানরা। শেষ ৬০ বলে তারা আনে মাত্র ৬১ রান। পাকিস্তানের পেসার হাসান আলি, হারিস রউফরা মিলে রানের চাকায় দেন লাগাম। হাসান ১০ ওভারে ৭১ রান দিলেও সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন। ময় রউফ ৬৪ রানে পান ২ উইকেট।

সারাবেলার সংবাদ/ এমএএইচ/ ১০ অক্টোবর ২০২৩

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

বিশ্বকাপে রেকর্ড গড়ে জিতল পাকিস্তান

আপডেট সময় : ০১:০৬:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩

মঙ্গলবার হায়দরাবাদে আব্দুল্লাহ শফিক ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের দুর্দান্ত দুই সেঞ্চুরিতে রেকর্ডটা নিজেদের করে নিয়েছে পাকিস্তান। রান উৎসবের লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কাকে তারা অনায়াসে হারিয়ে দিয়েছে ৬ উইকেটে। এবারের আসরে বাবর আজমের দলের এটি টানা দ্বিতীয় জয়, লঙ্কানদের দ্বিতীয় হার।

বিশ্বকাপের মঞ্চে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার আগের রেকর্ডটা ছিল আয়ারল্যান্ডের। ২০১১ সালের আসরে বেঙ্গালুরুতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২৮ রান তাড়ায় সফল হয়েছিল তারা। ১২ বছর পর ভাঙা পড়ল সেই কীর্তিটি।

এত বড় স্কোর তাড়া করতে গেলে ভালো শুরু গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্ত পাকিস্তান শুরুর দিকেই হারিয়ে ফেলেছিল ২ উইকেট। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে গেল ম্যাচেও ওপেনার ইমাম উল হক বাউন্সারে আউট হয়েছিলেন। এবারও বাউন্সারই তার সর্বনাশ ডেকে আনল। দিলশান মাদুশাঙ্কার বলে ইমাম ১২ রানে আউট হওয়ার পর পাকিস্তানের মূল ভরসা বাবরও ফিরে যান দ্রুত, মাদুশাঙ্কার বলেই। ১০ রানে অধিনায়ক আউট হওয়ার পর শফিক ও রিজওয়ান ইনিংস মেরামতে মনোযোগ দেন।

স্ট্রাইক বদলের পাশাপাশি বাউন্ডারি আদায়েও সজাগ ছিলেন দুজনেই। ১৯তম ওভারে পাকিস্তানের সংগ্রহ শতরান ছাড়িয়ে যায়। আগে-পরে দুজনেই ফিফটি ছুঁয়ে ফেলেন। এরপরে দুজনেই রানের চাকাও সমান গতিতে ঘোরাতে থাকেন।

৫৮ বলে ফিফটি করে পরের ৩৯ বলে ৫০ রান এনে সেঞ্চুরি পূরণ ৯৭ বলে। ফখর জামানের জায়গায় একাদশে ঢোকা শফিক ও রিজওয়ান দুজনেরই ইনিংস চলেছে সমানতালে, একই সুরে। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি পাওয়া প্রথম পাকিস্তানি ব্যাটার হয়ে যান শফিক। পয়েন্টে বদলি ফিল্ডার দুশান হেমন্তের দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচে তার ইনিংস থেমে যায়। ১০৩ বলে ১১৩ রানের ঝলমলে ইনিংসে তিনি মারেন ১০টি চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা।

১৭৬ রানের জুটি ভেঙে যাওয়ার পর অভিজ্ঞ রিজওয়ানের ওপর দায়িত্ব বেড়ে যায়। এ ম্যাচে তার কাছে চাহিদা ছিল আরও বেশিকিছুর! সে পথেই এগিয়ে যেতে থাকা রিজওয়ানকে ভোগান্তিতে ফেলে দিয়েছিল তার শরীর। তবে দমে না গিয়ে ক্র্যাম্পের সঙ্গে লড়ে উল্টো লঙ্কানদেরই ভোগান্তি বাড়ান শুধু।

৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১২১ বলে ১৩১ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থেকে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন রিজওয়ান। ৩১ রান করে সৌদ শাকিল ও ইফতিখার আহমেদ এসে ১০ বলে ২২ রানের অপরাজিত ক্যামিও খেলে যোগ্য সঙ্গ দেন। হারের স্বাদ পাওয়া শ্রীলঙ্কার আফসোসের জায়গা থাকবে এখানেই, মিডল অর্ডারে আরও অবদানের অভাব। নইলে তাদের পুঁজি চারশ পেরোনোর জোরালো অবস্থা ছিল।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা। কুসল পেরেরা ‘ডাক’ মেরে আউট হওয়ার পর যদিও পাথুম নিসাঙ্কা ও মেন্ডিস মিলে চাপ গায়ে লাগতে দেননি। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে পাওয়ারপ্লে তারা শেষ করেন ৫৮ রানে।

১৮ রানে থাকা অবস্থায় মেন্ডিসের ক্যাচ উঠেছিল পয়েন্টে, কিন্ত ইমাম উল হক তা ফেলে দেন। এরপর মেন্ডিস সময়ের সঙ্গে শুধু পাকিস্তানের আফসোসই বাড়ান। লাইন-লেংথে সামান্য হেরফের করলেই হন চড়াও।

অপর প্রান্তে নিসাঙ্কা ৬১ বলে ৫১ রান করে আউট হওয়ার পর সামারাবিক্রমা-মেন্ডিস জুটিতে রান আসতে থাকে আরও দ্রুত। ১৭তম ওভারে শতক পূর্ণ করা শ্রীলঙ্কা তাদের রান দুইশর উপরে নিয়ে যায় ২৮তম ওভারেই।

সেঞ্চুরির পর ‘শুধুই আক্রমণ’ নীতিতে গিয়ে মেন্ডিস ১২২ রানে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। ৭৭ বলের ইনিংসে দৃষ্টিনন্দন ১৪টি চারের সঙ্গে ৬টি ছক্কা মারেন তিনি। বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার জার্সিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির আগের রেকর্ডটি এসেছিল ২০১৫ সালে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭০ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা।

মেন্ডিস ফেরার পর চারিথ আসালাঙ্কা দ্রুত ফিরে যান। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাও বেশিদূর এগোতে পারেননি। একপাশ আগলে সামারাবিক্রমা সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ফেলেন ৮২ বলে। তবে অপর প্রান্তে সাহায্য পায়নি শ্রীলঙ্কা। সামারাবিক্রমা ৮৯ বলে ১০৮ রানে আউট হন ১১টি চার ও ২টি ছক্কা মেরে।

শেষ ১০ ওভারে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে লঙ্কানরা। শেষ ৬০ বলে তারা আনে মাত্র ৬১ রান। পাকিস্তানের পেসার হাসান আলি, হারিস রউফরা মিলে রানের চাকায় দেন লাগাম। হাসান ১০ ওভারে ৭১ রান দিলেও সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন। ময় রউফ ৬৪ রানে পান ২ উইকেট।

সারাবেলার সংবাদ/ এমএএইচ/ ১০ অক্টোবর ২০২৩

Facebook Comments Box