ঢাকা ০২:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে

তিন ঘণ্টা পর রেললাইন থেকে অবরোধ তুলে নিল আন্দোলনকারীরা

রাজশাহী ব্যুরো
  • আপডেট সময় : ০৭:৪৪:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪ ১৫ বার পঠিত

ছবি সংগৃহিত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে সাড়ে তিন ঘণ্টা ঢাকা-রাজশাহী রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনবাজারসংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করেন তারা। ঝুম বৃষ্টি উপেক্ষা করেও আন্দোলন চালিয়ে গেছেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ঝড়ো হবেন তারা। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ করবেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা-রাজশাহী রেললাইন অবরোধের হুশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তোফায়েল আহমেদ বলেন, সারাদেশের সঙ্গে সমন্বয় করে শুক্রবার বিকালে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি করা হবে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হবেন। সেখান থেকে বিক্ষোভ করবেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রয়োজনে ঢাকা-রাজশাহী রেললাইন অবরোধ করা হবে।

এর আগে বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আবাসিক হল ঘুরে ক্যাম্পাসসংলগ্ন স্টেশনবাজার এলাকায় যাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ করেন। সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে ঝুম বৃষ্টি শুরু হলেও বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ চালিয়ে যান আন্দোলনকারীরা।

বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, লড়াই হবে এক সাথে’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটাপ্রথার কবর দে’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

আন্দোলনকারীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সুজন ভৌমিক। তিনি বলেন, সারা দেশে কোটা আন্দোলনকে বেগবান করতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। আমরা ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলন করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আজকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ জঘন্য ও বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছেন। এর প্রতিবাদে আমরা রেললাইন অবরোধ করেছি।

বেলা সোয়া তিনটার দিকে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের এক দফা দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করতে যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন আনসার ক্যাম্প এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ, সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। তাদের কয়েকজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে ঢাকা-রাজশাহীগামী তিনটি ট্রেনের সূচিতে বিপর্যয় ঘটে।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

কুবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে

তিন ঘণ্টা পর রেললাইন থেকে অবরোধ তুলে নিল আন্দোলনকারীরা

আপডেট সময় : ০৭:৪৪:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে সাড়ে তিন ঘণ্টা ঢাকা-রাজশাহী রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনবাজারসংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করেন তারা। ঝুম বৃষ্টি উপেক্ষা করেও আন্দোলন চালিয়ে গেছেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ঝড়ো হবেন তারা। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ করবেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা-রাজশাহী রেললাইন অবরোধের হুশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তোফায়েল আহমেদ বলেন, সারাদেশের সঙ্গে সমন্বয় করে শুক্রবার বিকালে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি করা হবে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হবেন। সেখান থেকে বিক্ষোভ করবেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রয়োজনে ঢাকা-রাজশাহী রেললাইন অবরোধ করা হবে।

এর আগে বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আবাসিক হল ঘুরে ক্যাম্পাসসংলগ্ন স্টেশনবাজার এলাকায় যাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ করেন। সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে ঝুম বৃষ্টি শুরু হলেও বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ চালিয়ে যান আন্দোলনকারীরা।

বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, লড়াই হবে এক সাথে’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটাপ্রথার কবর দে’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

আন্দোলনকারীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সুজন ভৌমিক। তিনি বলেন, সারা দেশে কোটা আন্দোলনকে বেগবান করতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। আমরা ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলন করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আজকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ জঘন্য ও বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছেন। এর প্রতিবাদে আমরা রেললাইন অবরোধ করেছি।

বেলা সোয়া তিনটার দিকে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের এক দফা দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করতে যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন আনসার ক্যাম্প এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ, সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। তাদের কয়েকজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে ঢাকা-রাজশাহীগামী তিনটি ট্রেনের সূচিতে বিপর্যয় ঘটে।

Facebook Comments Box