ঢাকা ০৭:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

কিশোরগঞ্জে ঘুমন্ত মায়ের পাশ থেকে নবজাতক উধাও, ঝোপে পাওয়া গেল মরদেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০১:৩৭:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪ ২৬ বার পঠিত

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সাত দিন বয়সী নবজাতক সন্তানকে পাশে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা তৃষা বেগম। ভোর তিনটায় ঘুম ভাঙলে বিছানায় সন্তানকে না দেখতে পেয়ে যান স্বামীর ঘরে। সেখানে সন্তানকে না পেয়ে শুরু করে আহাজারি। এতে বাসার অন্যরা ঘুম ভেঙে যায়। কয়েক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে আজ মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকাল ৯টার দিকে শিশুটির মরদেহের সন্ধান মেলে বাড়ির পাশে ঝোপের মধ্যে।

ঈদের দিন শেষে রাতের আঁধারে কোন এক সময় ভৈবর পৌর শহরের নিউটাউন এলাকার একটি বিল্ডিং এর দশম তলার একটি ফ্ল্যাটের রুম থেকে নিয়ে গিয়ে সাত দিন বয়সী নবজাতককে মেরে ফেলার এ ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নবজাতকের বাবা ওসমান গণি, মা তৃষা, তৃষার বান্ধবী সুমাইয়া এবং দুই কাজের মেয়ে শিলা ও মিমকে আটক করে থানায় নিয়েছে পুলিশ।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম জানান, “শিশুটির বাবা উসমান গণি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তাঁর বাড়ি ভৈরব পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়ায়। তিনি দুই বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রী একজন চিকিৎসক, তিনি ঢাকায় থাকেন। সাড়ে তিন বছর আগে উসমান গণি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম তৃষা বেগম। তৃষার বাবার বাড়ি কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী গ্রামে। সাত দিন আগে তৃষা একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। গণি–তৃষা দম্পতির আরও একটি সন্তান রয়েছে। সন্তানদের নিয়ে তৃষা থাকেন ভৈরব পৌর শহরের নিউটাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাটে। তাঁর সঙ্গে সব সময় থাকেন দুজন গৃহকর্মী ও তৃষার এক বান্ধবী। উসমান গণি সপ্তাহে এক দিন শুক্রবার ভৈরবের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখেন। তিনি এবার ঈদ করেন দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে।”

মৃত নবজাতকের মা তৃষা পুলিশকে জানান, ঈদের দিন শেষে রাত ৩টার দিকে তার ঘুম ভাঙে। এ সময় তিনি দেখেন শিশুটি বিছানায় নেই। অন্য কক্ষে তার স্বামী ঘুমাচ্ছিলেন। সেখানেও নেই শিশুটি। পরে তিনি চিৎকার দিতে থাকেন। তার চিৎকার শুনে সবাই ছুটে আসেন। আশপাশে খোঁজ করেও শিশুটিকে পাওয়া যায়নি।

স্বজন ও এলাকাবাসী ভৈরব থানার পুলিশকে বিষয়টি জানালে সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসার পাশের একটি ঝোপ থেকে শিশুটিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এসময় শিশুটির মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নবজাতকের বাবা ওসমান গণি, মা তৃষা, তৃষার বান্ধবী সুমাইয়া, কাজের মেয়ে শিলা ও মিমকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

কিশোরগঞ্জে ঘুমন্ত মায়ের পাশ থেকে নবজাতক উধাও, ঝোপে পাওয়া গেল মরদেহ

আপডেট সময় : ০১:৩৭:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সাত দিন বয়সী নবজাতক সন্তানকে পাশে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা তৃষা বেগম। ভোর তিনটায় ঘুম ভাঙলে বিছানায় সন্তানকে না দেখতে পেয়ে যান স্বামীর ঘরে। সেখানে সন্তানকে না পেয়ে শুরু করে আহাজারি। এতে বাসার অন্যরা ঘুম ভেঙে যায়। কয়েক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে আজ মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকাল ৯টার দিকে শিশুটির মরদেহের সন্ধান মেলে বাড়ির পাশে ঝোপের মধ্যে।

ঈদের দিন শেষে রাতের আঁধারে কোন এক সময় ভৈবর পৌর শহরের নিউটাউন এলাকার একটি বিল্ডিং এর দশম তলার একটি ফ্ল্যাটের রুম থেকে নিয়ে গিয়ে সাত দিন বয়সী নবজাতককে মেরে ফেলার এ ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নবজাতকের বাবা ওসমান গণি, মা তৃষা, তৃষার বান্ধবী সুমাইয়া এবং দুই কাজের মেয়ে শিলা ও মিমকে আটক করে থানায় নিয়েছে পুলিশ।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম জানান, “শিশুটির বাবা উসমান গণি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তাঁর বাড়ি ভৈরব পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়ায়। তিনি দুই বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রী একজন চিকিৎসক, তিনি ঢাকায় থাকেন। সাড়ে তিন বছর আগে উসমান গণি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম তৃষা বেগম। তৃষার বাবার বাড়ি কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী গ্রামে। সাত দিন আগে তৃষা একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। গণি–তৃষা দম্পতির আরও একটি সন্তান রয়েছে। সন্তানদের নিয়ে তৃষা থাকেন ভৈরব পৌর শহরের নিউটাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাটে। তাঁর সঙ্গে সব সময় থাকেন দুজন গৃহকর্মী ও তৃষার এক বান্ধবী। উসমান গণি সপ্তাহে এক দিন শুক্রবার ভৈরবের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখেন। তিনি এবার ঈদ করেন দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে।”

মৃত নবজাতকের মা তৃষা পুলিশকে জানান, ঈদের দিন শেষে রাত ৩টার দিকে তার ঘুম ভাঙে। এ সময় তিনি দেখেন শিশুটি বিছানায় নেই। অন্য কক্ষে তার স্বামী ঘুমাচ্ছিলেন। সেখানেও নেই শিশুটি। পরে তিনি চিৎকার দিতে থাকেন। তার চিৎকার শুনে সবাই ছুটে আসেন। আশপাশে খোঁজ করেও শিশুটিকে পাওয়া যায়নি।

স্বজন ও এলাকাবাসী ভৈরব থানার পুলিশকে বিষয়টি জানালে সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসার পাশের একটি ঝোপ থেকে শিশুটিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এসময় শিশুটির মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নবজাতকের বাবা ওসমান গণি, মা তৃষা, তৃষার বান্ধবী সুমাইয়া, কাজের মেয়ে শিলা ও মিমকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Facebook Comments Box