ঢাকা ১১:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৮:২৮:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪ ১৪ বার পঠিত

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশবাসীকে অধিক পরিমাণে গাছ লাগিয়ে ‘সবুজ বাংলাদেশ’ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সবুজ বাংলাদেশ গড়তে সারা দেশে আমাদের সাধ্যমতো গাছ লাগাতে হবে।
আজ শনিবার (১৫ জুন) আষাঢ় মাসের প্রথম দিনে নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশ কৃষক লীগের তিন মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
১৯৮৪ সাল থেকে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আষাঢ়ের প্রথম দিনটি থেকে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে আসছে। একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযানে অবদানের জন্য কৃষক লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে পুরস্কৃত করেন এবং নেতাকর্মীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করেন।
পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন দেশে আওয়ামী লীগই প্রথম শুরু করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষক ও কৃষি বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। সেক্ষেত্রে কৃষক লীগের দায়িত্ব অনেক বেশি।
সরকারপ্রধান বলেন, খাদ্য মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় চাহিদা। তাই এই খাদ্যের জন্য কারও কাছে যেন হাত পাততে না হয়। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা এবং জলবায়ুর অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করা। যদিও জলবায়ুর ক্ষতিসাধনে বাংলাদেশের কোনও ভূমিকা নেই, কিন্তু বাংলাদেশ এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত। সেদিকে লক্ষ রেখেই দক্ষিণাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি উন্নয়নের কর্মসূচি নিয়ে আমরা ওই অঞ্চলের মানুষকে সুরক্ষিত করেছি এবং এটা আরও সুন্দরভাবে আমাদের করতে হবে।
তিনি বলেন, গাছ আমাদের প্রাণ, এটি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেন দেয়। কাজেই আমরা যত বেশি বৃক্ষ লাগাতে পারবো, এটি আপনাকে ফল দেবে, খাদ্য দেবে আবার অর্থ উপার্জনের পথও সুগম করবে।
প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেককে একটি করে ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এভাবে আমাদের দেশকে যদি আমরা সবসময় সবুজ করে রাখতে পারি তাহলে বাংলাদেশ আর পিছিয়ে থাকবে না। সেজন্য সবাইকে আমাদের এভাবেই চিন্তা করতে হবে। তবে একটা জিনিসের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে, ফসলি জমি যেন নষ্ট না হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামে আমাদের বহু জায়গা আছে। বেশি করে নদীর পাড়, যেসব এলাকায় ভাঙন হতে পারে সেসব জায়গায় বড় শিকড়-সমৃদ্ধ মাটি কামড়ে ধরে রাখার মতো গাছ, উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে গাছ লাগাতে হবে এবং বাড়ির চারপাশ এবং ছাদে বাগান করতে হবে।
তিনি বলেন, বহুতল ভবন আর উন্নয়নের নামে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে শুরু করে গুলশান-বনানী এলাকায় অতীতে যেসব বড় বড় গাছ ছিল সেগুলো উজাড় হয়েছে। ফলে আগে যে সবুজ ছিল সেটা এখন আর নেই। এখন অবশ্য ছাদবাগান হচ্ছে, সবাই এদিকে ঝুঁকছে। সেটাও করতে পারেন সবাই। এতে বাড়িটাও ঠান্ডা থাকবে, তেমনি নিজের হাতে বাগান করে নিজের গাছের তরিতরকারি খাওয়ার স্বাদই আলাদা।
কর্মসূচি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন।
তিনি বলেন, ‘৯৬ সালে সরকারে আসার পর তিনি গণভবনে দুই হাজারের মতো গাছ লাগিয়েছিলেন। এর আগের গাছগুলো জাতির পিতার হাতে লাগানো। এরপর আমরা বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ লাগাই এবং লাগাচ্ছি এবং এখানে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করে দেখছি ভালোই হয়। হাঁস-মুরগি গরু-ছাগল সবই আছে আমাদের। এখন গণভবন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন এবং একইসঙ্গে একটি খামারবাড়িতে পরিণত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে যত্রতত্র কোরবানির পশু জবাই করে জায়গা যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নিজেদের আবাসস্থল এবং এর চারপাশে নিজেদেরই নজরদারি রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু। কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীমা শাহরিয়ার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট সময় : ০৮:২৮:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশবাসীকে অধিক পরিমাণে গাছ লাগিয়ে ‘সবুজ বাংলাদেশ’ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সবুজ বাংলাদেশ গড়তে সারা দেশে আমাদের সাধ্যমতো গাছ লাগাতে হবে।
আজ শনিবার (১৫ জুন) আষাঢ় মাসের প্রথম দিনে নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশ কৃষক লীগের তিন মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
১৯৮৪ সাল থেকে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আষাঢ়ের প্রথম দিনটি থেকে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে আসছে। একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযানে অবদানের জন্য কৃষক লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে পুরস্কৃত করেন এবং নেতাকর্মীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করেন।
পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন দেশে আওয়ামী লীগই প্রথম শুরু করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষক ও কৃষি বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। সেক্ষেত্রে কৃষক লীগের দায়িত্ব অনেক বেশি।
সরকারপ্রধান বলেন, খাদ্য মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় চাহিদা। তাই এই খাদ্যের জন্য কারও কাছে যেন হাত পাততে না হয়। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা এবং জলবায়ুর অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করা। যদিও জলবায়ুর ক্ষতিসাধনে বাংলাদেশের কোনও ভূমিকা নেই, কিন্তু বাংলাদেশ এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত। সেদিকে লক্ষ রেখেই দক্ষিণাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি উন্নয়নের কর্মসূচি নিয়ে আমরা ওই অঞ্চলের মানুষকে সুরক্ষিত করেছি এবং এটা আরও সুন্দরভাবে আমাদের করতে হবে।
তিনি বলেন, গাছ আমাদের প্রাণ, এটি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেন দেয়। কাজেই আমরা যত বেশি বৃক্ষ লাগাতে পারবো, এটি আপনাকে ফল দেবে, খাদ্য দেবে আবার অর্থ উপার্জনের পথও সুগম করবে।
প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেককে একটি করে ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এভাবে আমাদের দেশকে যদি আমরা সবসময় সবুজ করে রাখতে পারি তাহলে বাংলাদেশ আর পিছিয়ে থাকবে না। সেজন্য সবাইকে আমাদের এভাবেই চিন্তা করতে হবে। তবে একটা জিনিসের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে, ফসলি জমি যেন নষ্ট না হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামে আমাদের বহু জায়গা আছে। বেশি করে নদীর পাড়, যেসব এলাকায় ভাঙন হতে পারে সেসব জায়গায় বড় শিকড়-সমৃদ্ধ মাটি কামড়ে ধরে রাখার মতো গাছ, উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে গাছ লাগাতে হবে এবং বাড়ির চারপাশ এবং ছাদে বাগান করতে হবে।
তিনি বলেন, বহুতল ভবন আর উন্নয়নের নামে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে শুরু করে গুলশান-বনানী এলাকায় অতীতে যেসব বড় বড় গাছ ছিল সেগুলো উজাড় হয়েছে। ফলে আগে যে সবুজ ছিল সেটা এখন আর নেই। এখন অবশ্য ছাদবাগান হচ্ছে, সবাই এদিকে ঝুঁকছে। সেটাও করতে পারেন সবাই। এতে বাড়িটাও ঠান্ডা থাকবে, তেমনি নিজের হাতে বাগান করে নিজের গাছের তরিতরকারি খাওয়ার স্বাদই আলাদা।
কর্মসূচি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন।
তিনি বলেন, ‘৯৬ সালে সরকারে আসার পর তিনি গণভবনে দুই হাজারের মতো গাছ লাগিয়েছিলেন। এর আগের গাছগুলো জাতির পিতার হাতে লাগানো। এরপর আমরা বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ লাগাই এবং লাগাচ্ছি এবং এখানে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করে দেখছি ভালোই হয়। হাঁস-মুরগি গরু-ছাগল সবই আছে আমাদের। এখন গণভবন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন এবং একইসঙ্গে একটি খামারবাড়িতে পরিণত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে যত্রতত্র কোরবানির পশু জবাই করে জায়গা যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নিজেদের আবাসস্থল এবং এর চারপাশে নিজেদেরই নজরদারি রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু। কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীমা শাহরিয়ার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

Facebook Comments Box