ঢাকা ০৭:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

সৈয়দপুরে ঘনবসতি এলাকায় পোল্ট্রি খামার,দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

মোঃ জহুরুল ইসলাম খোকন সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৭:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪ ১৯ বার পঠিত

oppo_2

সৈয়দপুর উপজেলার বাংগালীপুর ইউনিয়নের শেখ পাড়া গ্রামে মুরগির খামারের বিষ্ঠার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। প্রায় ৫/৬ বছর থেকে ওই খামারের দুর্গন্ধে এলাকাবাসী নানান রোগে আক্রান্ত হলেও দেখার যেন কেউই নেই। অভিযোগ উঠেছে,পোল্ট্রি খামারের নীতিমালা উপেক্ষা করে গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় খামারটি স্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার মিলছেনা বলে জানান অনেকেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৪/৫ বছর আগে ওই ইউনিয়নের শেখ পাড়া গ্রামের আব্দুল গফুর শেখ পাড়া গ্রামে ব্রয়লার মুরগির খামার স্থাপন করেন। বর্তমানে খামারে প্রায় এক হাজার মুরগি রয়েছে। মুরগির বিষ্ঠার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বিষ্ঠার দুর্গন্ধে খামারের চারদিকে মানুষের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী, একটি মুরগির খামার স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশনভুক্ত হতে হবে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং জনগণের ক্ষতি হয় এমন স্থানে খামার স্থাপন করা যাবে না।কিন্তু ওই খামারের মালিক কোন তোয়াক্কাই করেন নাই।

৩ জুন সোমবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, খামারটির আশপাশে মুরগির বিষ্ঠা ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। খামারটি রয়েছে ডোবার উপরে নির্মিত। পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। খামারের চারপাশে রয়েছে শতাধিক বসতবাড়ি। এসব বাড়ির সবখানে থেকে তীব্র দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা প্রতিবন্ধি মাসুদ মিয়া বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশেই খামার। বিষ্ঠা থেকে সব সময় দুর্গন্ধের কারনে আশপাশে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

সাজেদুল ইসলাম নামের অপর এক বাসিন্দা বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে খামারটি সরানোর জন্য গত দিনে একাধিক বার ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসি। কিন্তু তিনি কোন ব্যবস্থাই নেননি। এর পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা নেয়ার কথা বললেও ব্যবস্হা নেননি । প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার শ্যামল কুমার রায়কে অভিযোগ দেয়া হলে তিনি ঘটনাস্থল তদন্ত সাপেক্ষে ইউএনওর কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে ব্যবস্হা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও আজও কোন প্রকার পদক্ষেপ নেননি তিনি। তবে ওই খামারটি স্থাপনে পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি। এ ছাড়া আবাসিক এলাকায় অবস্থিত খামারের বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নেই। খামারটি স্থাপনের ক্ষেত্রে জাতীয় পোলট্রি উন্নয়ন নীতিমালা-২০০৮ মানা হয়নি বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খামার মালিক আব্দুল গফুর জানান,দুর্গন্ধ যাতে না হয় এজন্য নিয়মিত পরিস্কার করা হয়। এরপরেও যদি দুর্গন্ধ ছড়ায়, তাহলে করার কিছুই নাই বলে জানান তিনি।

প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শ্যামল কুমার রায় বলেন, ২/৪ দিনের মধ্যেই ওই খামার মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর- ই আলম সিদ্দিক বলেন, এলাকাবাসী পুর্বের ইউএনও কে অভিযোগ দিয়েছিল কি-না তা আমার জানা নেই, আমি সদ্য যোগদান করেছি। আমার কাছে অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্হা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

সৈয়দপুরে ঘনবসতি এলাকায় পোল্ট্রি খামার,দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

আপডেট সময় : ০৬:৩৭:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪

সৈয়দপুর উপজেলার বাংগালীপুর ইউনিয়নের শেখ পাড়া গ্রামে মুরগির খামারের বিষ্ঠার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। প্রায় ৫/৬ বছর থেকে ওই খামারের দুর্গন্ধে এলাকাবাসী নানান রোগে আক্রান্ত হলেও দেখার যেন কেউই নেই। অভিযোগ উঠেছে,পোল্ট্রি খামারের নীতিমালা উপেক্ষা করে গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় খামারটি স্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার মিলছেনা বলে জানান অনেকেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৪/৫ বছর আগে ওই ইউনিয়নের শেখ পাড়া গ্রামের আব্দুল গফুর শেখ পাড়া গ্রামে ব্রয়লার মুরগির খামার স্থাপন করেন। বর্তমানে খামারে প্রায় এক হাজার মুরগি রয়েছে। মুরগির বিষ্ঠার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বিষ্ঠার দুর্গন্ধে খামারের চারদিকে মানুষের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী, একটি মুরগির খামার স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশনভুক্ত হতে হবে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং জনগণের ক্ষতি হয় এমন স্থানে খামার স্থাপন করা যাবে না।কিন্তু ওই খামারের মালিক কোন তোয়াক্কাই করেন নাই।

৩ জুন সোমবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, খামারটির আশপাশে মুরগির বিষ্ঠা ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। খামারটি রয়েছে ডোবার উপরে নির্মিত। পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। খামারের চারপাশে রয়েছে শতাধিক বসতবাড়ি। এসব বাড়ির সবখানে থেকে তীব্র দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা প্রতিবন্ধি মাসুদ মিয়া বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশেই খামার। বিষ্ঠা থেকে সব সময় দুর্গন্ধের কারনে আশপাশে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

সাজেদুল ইসলাম নামের অপর এক বাসিন্দা বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে খামারটি সরানোর জন্য গত দিনে একাধিক বার ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসি। কিন্তু তিনি কোন ব্যবস্থাই নেননি। এর পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা নেয়ার কথা বললেও ব্যবস্হা নেননি । প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার শ্যামল কুমার রায়কে অভিযোগ দেয়া হলে তিনি ঘটনাস্থল তদন্ত সাপেক্ষে ইউএনওর কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে ব্যবস্হা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও আজও কোন প্রকার পদক্ষেপ নেননি তিনি। তবে ওই খামারটি স্থাপনে পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি। এ ছাড়া আবাসিক এলাকায় অবস্থিত খামারের বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নেই। খামারটি স্থাপনের ক্ষেত্রে জাতীয় পোলট্রি উন্নয়ন নীতিমালা-২০০৮ মানা হয়নি বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খামার মালিক আব্দুল গফুর জানান,দুর্গন্ধ যাতে না হয় এজন্য নিয়মিত পরিস্কার করা হয়। এরপরেও যদি দুর্গন্ধ ছড়ায়, তাহলে করার কিছুই নাই বলে জানান তিনি।

প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শ্যামল কুমার রায় বলেন, ২/৪ দিনের মধ্যেই ওই খামার মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর- ই আলম সিদ্দিক বলেন, এলাকাবাসী পুর্বের ইউএনও কে অভিযোগ দিয়েছিল কি-না তা আমার জানা নেই, আমি সদ্য যোগদান করেছি। আমার কাছে অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্হা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

Facebook Comments Box