ঢাকা ১২:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে সরকার সফল হবে না: তারেক Logo স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে দেশ এখনও মুক্ত নয়: রিজভী Logo হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে যেভাবে ইসরায়েল খুঁজে বের করে হত্যা করেছে Logo সোনারগাঁওয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে যুবকের মৃত্যু Logo সংবাদ প্রকাশের পর বৃদ্ধা মহিলার ঠাই হলো স্বামীর বসত ভিটায় Logo সোনারগাঁয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি হালট দখল করে বালু ভরাট Logo ‘সংস্কারের ধীর গতি’ ও কাজের গুরুত্ব নির্ধারণ নিয়ে সমালোচনা, কী বলছেন উপদেষ্টারা? Logo আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু আজ Logo বাড়তে পারে ঈদ ও পূজার সরকারি ছুটি Logo আগামী বছর থেকে আবারও মাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন শুরু

দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানুষের জীবনের নিরাপত্তা চরম সংকটাপন্ন: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০২:৪৩:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪ ১১ বার পঠিত

ভিন্ন মতাবলম্বী ব্যক্তিদের গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যার অমানবিক কর্মসূচি চালিয়ে ডামি আওয়ামী সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় টিকে আছে। গণবিচ্ছিন্ন সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানুষের জীবনের নিরাপত্তা চরম সংকটাপন্ন। দেশের মানুষকে বাকরুদ্ধ করার জন্য একের পর এক কালো আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। সেজন্য জোরপূর্বক গুমকে অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়ে এরা দেশকে এক ভীতিকর জনপদে পরিণত করেছে।

একচ্ছত্র ক্ষমতা ধরে রাখতে ডামি সরকার গুমের মতো মনুষ্যত্বহীন পন্থায় বিরোধী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার সর্বাধিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গভীর শঙ্কা, ভয় ও শিহরণের মধ্যে বাস করছে জনগণ। গুম মানবসভ্যতার পরিপন্থি। বিশ্বব্যাপী একদলীয় কতৃর্ত্ববাদী সরকার নিজেদের পথের কাঁটা সরানোর জন্য গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। কাউকে গুম করে দেওয়া মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃতি পায়।

স্বৈরতন্ত্রের ধ্বজাধারী আওয়ামী লীগ বর্তমানে দ্বিতীয় বাকশাল কায়েম করার পর বিএনপিসহ বিরোধী দলের যেসব নেতাকর্মী গুম হয়েছেন তাদের বাপ-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তানদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে গুমের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রবল প্রতিবাদী হলেও আওয়ামী সরকার কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করছে না। একদিকে সমাজ ও রাজনীতিতে মাফিয়াদের উত্থান অন্যদিকে গণতন্ত্রকামী মানুষ জোরপূর্বক গুমের আতঙ্কে দিনরাত উদ্বিগ্ন থাকছে। সবার চোখের সামনে থেকে ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে গুম করা হলেও আওয়ামী লীগ সরকার বরাবরই গুমের বিষয়টি সকল আন্তর্জাতিক ফোরামে নিলজ্জের্র মতো অস্বীকার করে আসছে। অথচ বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে এর সুষ্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে বর্তমান শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। একমাত্র সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষেই সম্ভব সকল মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কারণ নির্বাচিত সরকারকে জনগণের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। আন্তর্জাতিক গুম সপ্তাহ উপলক্ষে আমরা পুনর্ব্যক্ত করতে চাই—অবিলম্বে এম ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু, চৌধুরী আলম, হুমায়ন পারভেজ, সাজেদুল ইসলাম সুমন, জাকিরসহ গুম হয়ে যাওয়া অসংখ্য নেতাকর্মীকে ফিরিয়ে দিতে হবে। আমি মনে করি, ভুক্তভোগী বা তাদের পরিবারকে আইনি ও নৈতিক সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া এবং গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের উত্থাপিত অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি শুনানির আয়োজন করা প্রয়োজন।

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও মে মাসের শেষ সপ্তাহে পালিত হচ্ছে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক সপ্তাহ। একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার হিসাব অনুযায়ী ২০০৯ থেকে ২০২৪ এর মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে প্রায় ৬৬৬ জন ব্যক্তি গুম হয়েছেন। এদের মধ্যে কাউকে মৃত, কাউকে অনেকদিন পর গ্রেফতার দেখানো হয়েছে আবার অনেকের কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে আহবান জানাচ্ছি, তারা যেন অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারকে গুমের ঘটনা বন্ধ করতে এবং গুমের শিকার সকলের ভাগ্য ও অবস্থান সম্পর্কে তাদের পরিবারকে তথ্য দেয় ও ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করে। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী গুমের শিকার সকল ব্যক্তি ও পরিবারকে আমরা গভীর সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানুষের জীবনের নিরাপত্তা চরম সংকটাপন্ন: মির্জা ফখরুল

আপডেট সময় : ০২:৪৩:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

ভিন্ন মতাবলম্বী ব্যক্তিদের গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যার অমানবিক কর্মসূচি চালিয়ে ডামি আওয়ামী সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় টিকে আছে। গণবিচ্ছিন্ন সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানুষের জীবনের নিরাপত্তা চরম সংকটাপন্ন। দেশের মানুষকে বাকরুদ্ধ করার জন্য একের পর এক কালো আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। সেজন্য জোরপূর্বক গুমকে অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়ে এরা দেশকে এক ভীতিকর জনপদে পরিণত করেছে।

একচ্ছত্র ক্ষমতা ধরে রাখতে ডামি সরকার গুমের মতো মনুষ্যত্বহীন পন্থায় বিরোধী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার সর্বাধিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গভীর শঙ্কা, ভয় ও শিহরণের মধ্যে বাস করছে জনগণ। গুম মানবসভ্যতার পরিপন্থি। বিশ্বব্যাপী একদলীয় কতৃর্ত্ববাদী সরকার নিজেদের পথের কাঁটা সরানোর জন্য গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। কাউকে গুম করে দেওয়া মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃতি পায়।

স্বৈরতন্ত্রের ধ্বজাধারী আওয়ামী লীগ বর্তমানে দ্বিতীয় বাকশাল কায়েম করার পর বিএনপিসহ বিরোধী দলের যেসব নেতাকর্মী গুম হয়েছেন তাদের বাপ-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তানদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে গুমের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রবল প্রতিবাদী হলেও আওয়ামী সরকার কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করছে না। একদিকে সমাজ ও রাজনীতিতে মাফিয়াদের উত্থান অন্যদিকে গণতন্ত্রকামী মানুষ জোরপূর্বক গুমের আতঙ্কে দিনরাত উদ্বিগ্ন থাকছে। সবার চোখের সামনে থেকে ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে গুম করা হলেও আওয়ামী লীগ সরকার বরাবরই গুমের বিষয়টি সকল আন্তর্জাতিক ফোরামে নিলজ্জের্র মতো অস্বীকার করে আসছে। অথচ বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে এর সুষ্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে বর্তমান শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। একমাত্র সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষেই সম্ভব সকল মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কারণ নির্বাচিত সরকারকে জনগণের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। আন্তর্জাতিক গুম সপ্তাহ উপলক্ষে আমরা পুনর্ব্যক্ত করতে চাই—অবিলম্বে এম ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু, চৌধুরী আলম, হুমায়ন পারভেজ, সাজেদুল ইসলাম সুমন, জাকিরসহ গুম হয়ে যাওয়া অসংখ্য নেতাকর্মীকে ফিরিয়ে দিতে হবে। আমি মনে করি, ভুক্তভোগী বা তাদের পরিবারকে আইনি ও নৈতিক সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া এবং গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের উত্থাপিত অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি শুনানির আয়োজন করা প্রয়োজন।

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও মে মাসের শেষ সপ্তাহে পালিত হচ্ছে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক সপ্তাহ। একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার হিসাব অনুযায়ী ২০০৯ থেকে ২০২৪ এর মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে প্রায় ৬৬৬ জন ব্যক্তি গুম হয়েছেন। এদের মধ্যে কাউকে মৃত, কাউকে অনেকদিন পর গ্রেফতার দেখানো হয়েছে আবার অনেকের কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে আহবান জানাচ্ছি, তারা যেন অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারকে গুমের ঘটনা বন্ধ করতে এবং গুমের শিকার সকলের ভাগ্য ও অবস্থান সম্পর্কে তাদের পরিবারকে তথ্য দেয় ও ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করে। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী গুমের শিকার সকল ব্যক্তি ও পরিবারকে আমরা গভীর সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি।

Facebook Comments Box