ঢাকা ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

পাবনায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক-পুলিশ ত্রিমুখী সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৫

পাবনা প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১০:১৭:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪ ৪৫ বার পঠিত

পাবনার সুজানগ উপজেলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক ও পুলিশের সঙ্গে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ২ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এঘটনায় ৩ জনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যার দিকে সুজানগর উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের কালিরমোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- ভায়না ইউনিয়নের ভায়না এলাকার রশিদ প্রামাণিকের ছেলে বাদশা প্রামাণিক (৪০), শেকেল শেখের ছেলে মতিন শেখ (৫০) ও মৃত আজগর আলীর ছেলে আব্দুল আওয়াল (৩৫)। অন্যান্য আহত এবং আটককৃদের তাৎক্ষনিক নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, সুজানগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল ওহাব (প্রতিক মোটরসাইকেল), অন্যজন হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন (প্রতিক আনারস)।

বৃহস্পতিবার বিকেলে শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থকরা ভায়না কালির মোড়ে নির্বাচনী প্রচারণায় যায়। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আব্দুল ওহাবের সমর্থক ও ভায়না ইউপি চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিনের ভাতিজা আব্দুল আওয়ালকে কথা কাটাকাটির জেরে কিল-ঘুষি মারে। তখন ভায়না ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন শাহীন চেয়ারম্যানের লোকজনকে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তারা আবার লোকজন নিয়ে ভায়না ইউপি চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিনের বাড়ি ঘেরাও করে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এমন খবর পেয়ে সেখানে হাজির হয় পুলিশ। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে পুলিশের সাথে শাহীন চেয়ারম্যানের লোকজনের কথা কাটাকাটি থেকে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতি হয়। পরে উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। এ সময় বাদশা নামের এক যুবক পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। অন্যরা ঘটনাস্থল থেকে সরে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে আহত বাদশাকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত বাদশা চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনের সমর্থক বলে জানা গেছে।

 

এবিষয়ে ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন বলেন, আমার বাড়ির ওপরে শাহিনুজ্জামান শাহিনের লোকজন হামলা করেছে। আমার বাড়ি ঘর ভাংচুর করেছে। পরে পুলিশ এসে তাদের প্রতিরোধ করে। এখন তাদের লোকজন কিভাবে আহত হয়েছে পুলিশই ভালো বলতে পারবে।

চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল ওহাব অভিযোগ করেন, প্রতিদ্বন্দ্বি চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনের লোকজন সারা উপজেলায় আমার লোকজনের উপর হামলা চালাচ্ছে। বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্চে। আজকের ঘটনা তারই অংশ। তারা পুলিশকেও মানছে না।

তবে হামলার জন্য আমিন চেয়ারম্যানকে দায়ী করে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিনুজ্জামান শাহিন বলেন, ‘ভোট নিয়ে কথাকাটাকাটির একজন প্রার্থী আমিন চেয়ারম্যান নেতৃত্বে আব্দুল মজিদ নামের আমার এক সমর্থককে মারধর করে। এটা নিয়েই উত্তেজনা। পরে আমিন চেয়ারম্যান নেতৃত্বে আমার লোকজনের ওপর গুলি চালানো হয়। এতে আমার কয়েকজন সমর্থক গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

এব্যাপারে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, আমিন চেয়ারম্যানের বাড়ির ওপর হামলার খবর পেয়ে সেখানে গেলে শাহিনের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্টগানের ফায়ার করলে একজনের পায়ে লাগে। ঘটনাস্থল থেকে ৩ জনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে।

 

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

পাবনায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক-পুলিশ ত্রিমুখী সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৫

আপডেট সময় : ১০:১৭:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

পাবনার সুজানগ উপজেলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক ও পুলিশের সঙ্গে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ২ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এঘটনায় ৩ জনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যার দিকে সুজানগর উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের কালিরমোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- ভায়না ইউনিয়নের ভায়না এলাকার রশিদ প্রামাণিকের ছেলে বাদশা প্রামাণিক (৪০), শেকেল শেখের ছেলে মতিন শেখ (৫০) ও মৃত আজগর আলীর ছেলে আব্দুল আওয়াল (৩৫)। অন্যান্য আহত এবং আটককৃদের তাৎক্ষনিক নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, সুজানগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল ওহাব (প্রতিক মোটরসাইকেল), অন্যজন হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন (প্রতিক আনারস)।

বৃহস্পতিবার বিকেলে শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থকরা ভায়না কালির মোড়ে নির্বাচনী প্রচারণায় যায়। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আব্দুল ওহাবের সমর্থক ও ভায়না ইউপি চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিনের ভাতিজা আব্দুল আওয়ালকে কথা কাটাকাটির জেরে কিল-ঘুষি মারে। তখন ভায়না ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন শাহীন চেয়ারম্যানের লোকজনকে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তারা আবার লোকজন নিয়ে ভায়না ইউপি চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিনের বাড়ি ঘেরাও করে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এমন খবর পেয়ে সেখানে হাজির হয় পুলিশ। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে পুলিশের সাথে শাহীন চেয়ারম্যানের লোকজনের কথা কাটাকাটি থেকে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতি হয়। পরে উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। এ সময় বাদশা নামের এক যুবক পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। অন্যরা ঘটনাস্থল থেকে সরে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে আহত বাদশাকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত বাদশা চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনের সমর্থক বলে জানা গেছে।

 

এবিষয়ে ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন বলেন, আমার বাড়ির ওপরে শাহিনুজ্জামান শাহিনের লোকজন হামলা করেছে। আমার বাড়ি ঘর ভাংচুর করেছে। পরে পুলিশ এসে তাদের প্রতিরোধ করে। এখন তাদের লোকজন কিভাবে আহত হয়েছে পুলিশই ভালো বলতে পারবে।

চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল ওহাব অভিযোগ করেন, প্রতিদ্বন্দ্বি চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনের লোকজন সারা উপজেলায় আমার লোকজনের উপর হামলা চালাচ্ছে। বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্চে। আজকের ঘটনা তারই অংশ। তারা পুলিশকেও মানছে না।

তবে হামলার জন্য আমিন চেয়ারম্যানকে দায়ী করে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিনুজ্জামান শাহিন বলেন, ‘ভোট নিয়ে কথাকাটাকাটির একজন প্রার্থী আমিন চেয়ারম্যান নেতৃত্বে আব্দুল মজিদ নামের আমার এক সমর্থককে মারধর করে। এটা নিয়েই উত্তেজনা। পরে আমিন চেয়ারম্যান নেতৃত্বে আমার লোকজনের ওপর গুলি চালানো হয়। এতে আমার কয়েকজন সমর্থক গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

এব্যাপারে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, আমিন চেয়ারম্যানের বাড়ির ওপর হামলার খবর পেয়ে সেখানে গেলে শাহিনের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্টগানের ফায়ার করলে একজনের পায়ে লাগে। ঘটনাস্থল থেকে ৩ জনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে।

 

Facebook Comments Box