ঢাকা ০৭:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

১০ মাদক কারবারির ১৭৯ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৩:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ৪৪ বার পঠিত

ঢাকা : মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়া ১০ মাদক কারবারির সম্পত্তি, জমি, বাড়ি, খামার ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। যার আর্থিক মূল্যে প্রায় ১৭৯ কোটি টাকা।

ইয়াবা, মদ এবং ফেনসিডিল বিক্রি থেকে আয় করে তা মানি লন্ডারিং করেছিল তারা। বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।

তিনি জানান, তারা প্রাথমকিভাবে ৩৫টি মামলা তদন্ত করে মামলার মূলহোতাদের মাদক ব্যবসা থেকে অবৈধভাবে অর্জিত ব্যাংক একাউন্টে জমাকৃত অর্থ, ক্রয়কৃত জমি, বাড়ি ও ফ্ল্যাটসহ লন্ডারকৃত বিভিন্ন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির সন্ধান পান। এ সকল মামলায় অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৭৮ কোটি ৪৪ লাখ কোটি টাকা।

তিনি আরও জানান, সিআইডি ইতোমধ্যে ৩৫ মামলার মধ্যে ৩টি মামলায় মাদক কারবারিদের ৯.১৪ একর জমি ও ২টি বাড়ি (যার মূল্য আনুমানিক মূল্য ৮.১১ কোটি টাকা) ক্রোক এবং মাদক সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং বিভিন্ন মামলায় ব্যাংকে গচ্ছিত ১ কোটি ১ লাখ ২৩ হাজার ৪২৫ টাকা ফ্রিজ করেছে। আরও ৩৫.১৭৩ একর জমি, ১২টি বাড়ি ও ১টি গাড়ি যার মূল্য আনুমানিক মূল্য ৩৬.৮২ কোটি টাকা ক্রোকের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

সিআইডি জানিয়েছে, এই দশ মাদক কারবারির তালিকায় প্রথমে আছেন কক্সবাজারের নুরুল হক ওরফে ভুট্টো (৩২)। তদন্তে তার ৪২ জন সহযোগীর তথ্য পেয়েছে সিআইডি। ভুট্টো কক্সবাজার জেলার টেকনাফ পৌরসভাস্থ অগ্রণী ব্যাংক লিঃ, আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক লিঃ, জনতা ব্যাংক লিঃ, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ টেকনাফ শাখায় শুধু ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করে যা আয় করেছেন তার মধ্যে প্রায় ৩ কোটি টাকা তিনি মানিলন্ডারিং করেছেন। আর এ টাকায় করেছেন আড়াই কোটি টাকা মূল্যের বাড়ি। এছাড়াও তার ২.৪৫ একর জমির সন্ধান পেয়ে তা ক্রোক করা হয়েছে।

খুনলনার শফিক আলম ওরফে শফিক ওরফে শফি। তার নামে খুলনায় ২০২১ সালে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা হয়। সেই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি চট্টগ্রাম জেলার খুলশী থানার ব্রাক ব্যাংক লিমিটেড, সিডিএ এভিনিউ শাখা অফিসসহ টেকনাফ থানার ডেইল পাড়া এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ৪০ কোটি ১৪ লাখ টাকা পাচার করেছেন। তিনিও ইয়াবার ব্যবসা করেন। শফি ইয়াবা বিক্রি করে ৭০০.৯৬ শতাংশ জমি করেছেন। যার দলিল মূল্য ৫ কোটি ১১ লাখ টাকা।

খুলনার লবনচরার শাহজাহান হাওলাদার (৫৮)। তার নামে ২০২১ সালে মামলা হলে তদন্তে বেরিয়ে আসে তিনি চট্টগ্রাম জেলার খুলশী ব্রাক ব্যাংক লিমিটেড, সিডিএ এভিনিউ শাখা অফিসসহ টেকনাফ থানার ডেইল পাড়া এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে মদক ও ইয়াবা বিক্রি করে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা পাচার করেছেন। তার ক্রোককৃত সম্পদের পরিমাণ শূন্য দশমিক ৯৩৬ একর। তার জমিসহ বাড়ির মূল্য ৫০ লাখ টাকা।

মাদক কারবারি শফিক আলম ওরফে শফিকের (৩৯) বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ২২ মার্চ টেকনাফ থানায় মানিলন্ডারিং মামলা হয়। সেই মামলায় তিনি ছাড়াও তার সহযোগী মনির আলম (৩০), মো. রফিক আলম (৩৭), আব্দুল গফুরের (৫৫) সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি। তারা সবাই শফিকের পরিবারের সদস্য।

ইয়াবা বিক্রি করে এই শফিক প্রায় ৪ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং করেছে। এছাড়াও এই টাকায় ১ কোট ১০ লাখ টাকা মূল্যের ৩টি বাড়ি ও ২৯.৩৩ শতাংশ জমি কেনেন। যার তথ্য পেয়ে সিআইডি ক্রোক করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। তার মোট ৫টি ব্যাংক এ্যাকাউন্টে ২০ হাজার টাকা পাওয়ার পর তা ফ্রিজ করেছে সিআইডি।

মাদক কারবারি শাহিন আলমের বিরুদ্ধে পাবনার আতাইকুলা থানায় ২০২৩ সালের ১৪ মার্চ মানিলন্ডারিং মামলা হয়। মামলার পর তদন্তে তার সহযোগীদেরও নাম উঠে আসে। এছাড়াও তিনি গাঁজা ও ইয়াবা কারবার করে প্রায় ৬ কোটি ২০ লাখ টাকা লন্ডারিং করেছেন তার তথ্য পায় সিআইডি। এরপর তার একটি বাড়ি ও ১৯২.৬৭ শতাংশ জমি যার মূল্য ৬.২০ কোটি টাকা ক্রোক করার জন্য আবেদন করেছে সংস্থাটি।

২০২০ সালের ২০ মার্চে কক্সবাজারের টেকনাফে মানিলন্ডারিং মামলায় অভিযুক্ত ইয়াবা কারবারি নুরুল কবির। কবির ইয়াবার টাকায় আয় করে ১১ কোটি ৫ লাখ টাকা পাচার করেছে। যা ক্রোক প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও তার অবৈধ টাকায় গড়ে তোলা এএনবি ব্রিকস নামে একটি ইট ভাটা, একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি, পোলট্রি খামার, লবণ চাষের ব্যবসা এবং ৩৮টি দলিল মূলে মোট ১৫.৫৬৫৩ একর জমি যার অনুমান মূল্য ৫ কোটি টাকা ক্রোক করা হয়েছে।

২০২১ সালের ২০ অক্টোবর টেকনাফের আরেক মাদক কারবারি সিদ্দিক আহমেদের (৫৩) বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের মামলা হয়। মামলার তদন্তে উঠে আসে তার এই মাদক ব্যবসায় অন্যতম সহযোগী ছিল ছেলে ফরিদুল আলম ওরফে মেহেদী হাসান ওরফে ফরিদ (৩৮), ছেলে রবিউল আলম (২৭), মো. জসিম উদ্দীন (২৩), সৈয়দ আহমেদ ওরফে সৈয়দ হোছইন, আব্দুল মালেক ওরফে মালেক হোছাইন (৩২), শফিকুল ইসলাম ওরফে সামসুল (২৫)। তাদের মাধ্যমে সিদ্দিক ইয়াবা কারবার করে দেড় কোটি টাকার লন্ডারিং করেন। যে অর্থের সন্ধান পায় সিআইডি। এরপর তার ৪৮.৩৩ শতাংশ জমি ও ২০ লাখ টাকা মূল্যের ১টি বহুতল নির্মাণাধীন বাড়ি ক্রোকের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

গেল বছরের ২০২৩ সালের ২২ মার্চ ঢাকার মাদক গডফাদার নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদাবর থানার মানিলন্ডারিং মামলা হয়। মামলার তদন্তে ওঠে আসে ইয়াবা কারবারি করে নুরুল প্রায় ১৩ কোটি টাকা পাচার করেছেন। তার ক্রোকের প্রক্রিয়াধীন সম্পদের পরিমাণ মোট ১৩ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ৪টি বাড়ি, ০.৮৮ একর জমি, ১টি গাড়ি ও স্বর্ণালংকার শনাক্ত করেছে সিআইডি।

ঢাকার বাইরে গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানায় মাদক কারবারি পারুলের (৩৩) বিরুদ্ধে গেল বছরের ৩০ অক্টোবর মানিলন্ডারিং মামলা হয়। তার মামলা তদন্তে করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে ওই এলাকার খালেদা বেগম (৪০), রিতা (৩৫), জামাই লিটন (৫০), জালাল (৪০), ছোটন (৩৫), পলাশ (২৮), ফরহাদ (৩৫), শুক্কুর আলী ছিল তার অন্যতম সহযোগী। তারা সকলে প্রতিবেশী হলেও মাদক মামলায় নানাভাবে সহযোগিতা করতেন। পারুল ইয়াবা ও গাঁজা কারবারি করে প্রায় ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা পাচার করেছে। তার সম্পত্তির পরিমাণ ১৮.৬৫ শতাংশ জমি এবং ১টি বাড়ি, যার মুল্য আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। যা ক্রোক প্রক্রিয়াধীন।

টেকনাফ থানায় ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মাদক কারবারি ফজর আলীর (৩৯) বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা হয়। সেই মামলার তদন্তে উঠে আসে তার বোন জামাই গনু মিয়া (৬১) ও পার্টনার আব্দুর রহিম প্রকাশ রানা (৩৪) ছিল ফজর আলীর অন্যতম সহযোগী। ইয়াবা কারবারি ফজর আলী প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা পাচার করেছেন। তার সম্পদের পরিমান ০.২০৬৭ একর জমি। যার মূল্য অনুমান ৩৯ লাখ টাকা। যা ক্রোক প্রক্রিয়াধীন।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

১০ মাদক কারবারির ১৭৯ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

আপডেট সময় : ০৫:৪৩:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

ঢাকা : মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়া ১০ মাদক কারবারির সম্পত্তি, জমি, বাড়ি, খামার ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। যার আর্থিক মূল্যে প্রায় ১৭৯ কোটি টাকা।

ইয়াবা, মদ এবং ফেনসিডিল বিক্রি থেকে আয় করে তা মানি লন্ডারিং করেছিল তারা। বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।

তিনি জানান, তারা প্রাথমকিভাবে ৩৫টি মামলা তদন্ত করে মামলার মূলহোতাদের মাদক ব্যবসা থেকে অবৈধভাবে অর্জিত ব্যাংক একাউন্টে জমাকৃত অর্থ, ক্রয়কৃত জমি, বাড়ি ও ফ্ল্যাটসহ লন্ডারকৃত বিভিন্ন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির সন্ধান পান। এ সকল মামলায় অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৭৮ কোটি ৪৪ লাখ কোটি টাকা।

তিনি আরও জানান, সিআইডি ইতোমধ্যে ৩৫ মামলার মধ্যে ৩টি মামলায় মাদক কারবারিদের ৯.১৪ একর জমি ও ২টি বাড়ি (যার মূল্য আনুমানিক মূল্য ৮.১১ কোটি টাকা) ক্রোক এবং মাদক সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং বিভিন্ন মামলায় ব্যাংকে গচ্ছিত ১ কোটি ১ লাখ ২৩ হাজার ৪২৫ টাকা ফ্রিজ করেছে। আরও ৩৫.১৭৩ একর জমি, ১২টি বাড়ি ও ১টি গাড়ি যার মূল্য আনুমানিক মূল্য ৩৬.৮২ কোটি টাকা ক্রোকের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

সিআইডি জানিয়েছে, এই দশ মাদক কারবারির তালিকায় প্রথমে আছেন কক্সবাজারের নুরুল হক ওরফে ভুট্টো (৩২)। তদন্তে তার ৪২ জন সহযোগীর তথ্য পেয়েছে সিআইডি। ভুট্টো কক্সবাজার জেলার টেকনাফ পৌরসভাস্থ অগ্রণী ব্যাংক লিঃ, আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক লিঃ, জনতা ব্যাংক লিঃ, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ টেকনাফ শাখায় শুধু ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করে যা আয় করেছেন তার মধ্যে প্রায় ৩ কোটি টাকা তিনি মানিলন্ডারিং করেছেন। আর এ টাকায় করেছেন আড়াই কোটি টাকা মূল্যের বাড়ি। এছাড়াও তার ২.৪৫ একর জমির সন্ধান পেয়ে তা ক্রোক করা হয়েছে।

খুনলনার শফিক আলম ওরফে শফিক ওরফে শফি। তার নামে খুলনায় ২০২১ সালে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা হয়। সেই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি চট্টগ্রাম জেলার খুলশী থানার ব্রাক ব্যাংক লিমিটেড, সিডিএ এভিনিউ শাখা অফিসসহ টেকনাফ থানার ডেইল পাড়া এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ৪০ কোটি ১৪ লাখ টাকা পাচার করেছেন। তিনিও ইয়াবার ব্যবসা করেন। শফি ইয়াবা বিক্রি করে ৭০০.৯৬ শতাংশ জমি করেছেন। যার দলিল মূল্য ৫ কোটি ১১ লাখ টাকা।

খুলনার লবনচরার শাহজাহান হাওলাদার (৫৮)। তার নামে ২০২১ সালে মামলা হলে তদন্তে বেরিয়ে আসে তিনি চট্টগ্রাম জেলার খুলশী ব্রাক ব্যাংক লিমিটেড, সিডিএ এভিনিউ শাখা অফিসসহ টেকনাফ থানার ডেইল পাড়া এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে মদক ও ইয়াবা বিক্রি করে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা পাচার করেছেন। তার ক্রোককৃত সম্পদের পরিমাণ শূন্য দশমিক ৯৩৬ একর। তার জমিসহ বাড়ির মূল্য ৫০ লাখ টাকা।

মাদক কারবারি শফিক আলম ওরফে শফিকের (৩৯) বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ২২ মার্চ টেকনাফ থানায় মানিলন্ডারিং মামলা হয়। সেই মামলায় তিনি ছাড়াও তার সহযোগী মনির আলম (৩০), মো. রফিক আলম (৩৭), আব্দুল গফুরের (৫৫) সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি। তারা সবাই শফিকের পরিবারের সদস্য।

ইয়াবা বিক্রি করে এই শফিক প্রায় ৪ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং করেছে। এছাড়াও এই টাকায় ১ কোট ১০ লাখ টাকা মূল্যের ৩টি বাড়ি ও ২৯.৩৩ শতাংশ জমি কেনেন। যার তথ্য পেয়ে সিআইডি ক্রোক করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। তার মোট ৫টি ব্যাংক এ্যাকাউন্টে ২০ হাজার টাকা পাওয়ার পর তা ফ্রিজ করেছে সিআইডি।

মাদক কারবারি শাহিন আলমের বিরুদ্ধে পাবনার আতাইকুলা থানায় ২০২৩ সালের ১৪ মার্চ মানিলন্ডারিং মামলা হয়। মামলার পর তদন্তে তার সহযোগীদেরও নাম উঠে আসে। এছাড়াও তিনি গাঁজা ও ইয়াবা কারবার করে প্রায় ৬ কোটি ২০ লাখ টাকা লন্ডারিং করেছেন তার তথ্য পায় সিআইডি। এরপর তার একটি বাড়ি ও ১৯২.৬৭ শতাংশ জমি যার মূল্য ৬.২০ কোটি টাকা ক্রোক করার জন্য আবেদন করেছে সংস্থাটি।

২০২০ সালের ২০ মার্চে কক্সবাজারের টেকনাফে মানিলন্ডারিং মামলায় অভিযুক্ত ইয়াবা কারবারি নুরুল কবির। কবির ইয়াবার টাকায় আয় করে ১১ কোটি ৫ লাখ টাকা পাচার করেছে। যা ক্রোক প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও তার অবৈধ টাকায় গড়ে তোলা এএনবি ব্রিকস নামে একটি ইট ভাটা, একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি, পোলট্রি খামার, লবণ চাষের ব্যবসা এবং ৩৮টি দলিল মূলে মোট ১৫.৫৬৫৩ একর জমি যার অনুমান মূল্য ৫ কোটি টাকা ক্রোক করা হয়েছে।

২০২১ সালের ২০ অক্টোবর টেকনাফের আরেক মাদক কারবারি সিদ্দিক আহমেদের (৫৩) বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের মামলা হয়। মামলার তদন্তে উঠে আসে তার এই মাদক ব্যবসায় অন্যতম সহযোগী ছিল ছেলে ফরিদুল আলম ওরফে মেহেদী হাসান ওরফে ফরিদ (৩৮), ছেলে রবিউল আলম (২৭), মো. জসিম উদ্দীন (২৩), সৈয়দ আহমেদ ওরফে সৈয়দ হোছইন, আব্দুল মালেক ওরফে মালেক হোছাইন (৩২), শফিকুল ইসলাম ওরফে সামসুল (২৫)। তাদের মাধ্যমে সিদ্দিক ইয়াবা কারবার করে দেড় কোটি টাকার লন্ডারিং করেন। যে অর্থের সন্ধান পায় সিআইডি। এরপর তার ৪৮.৩৩ শতাংশ জমি ও ২০ লাখ টাকা মূল্যের ১টি বহুতল নির্মাণাধীন বাড়ি ক্রোকের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

গেল বছরের ২০২৩ সালের ২২ মার্চ ঢাকার মাদক গডফাদার নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদাবর থানার মানিলন্ডারিং মামলা হয়। মামলার তদন্তে ওঠে আসে ইয়াবা কারবারি করে নুরুল প্রায় ১৩ কোটি টাকা পাচার করেছেন। তার ক্রোকের প্রক্রিয়াধীন সম্পদের পরিমাণ মোট ১৩ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ৪টি বাড়ি, ০.৮৮ একর জমি, ১টি গাড়ি ও স্বর্ণালংকার শনাক্ত করেছে সিআইডি।

ঢাকার বাইরে গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানায় মাদক কারবারি পারুলের (৩৩) বিরুদ্ধে গেল বছরের ৩০ অক্টোবর মানিলন্ডারিং মামলা হয়। তার মামলা তদন্তে করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে ওই এলাকার খালেদা বেগম (৪০), রিতা (৩৫), জামাই লিটন (৫০), জালাল (৪০), ছোটন (৩৫), পলাশ (২৮), ফরহাদ (৩৫), শুক্কুর আলী ছিল তার অন্যতম সহযোগী। তারা সকলে প্রতিবেশী হলেও মাদক মামলায় নানাভাবে সহযোগিতা করতেন। পারুল ইয়াবা ও গাঁজা কারবারি করে প্রায় ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা পাচার করেছে। তার সম্পত্তির পরিমাণ ১৮.৬৫ শতাংশ জমি এবং ১টি বাড়ি, যার মুল্য আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। যা ক্রোক প্রক্রিয়াধীন।

টেকনাফ থানায় ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মাদক কারবারি ফজর আলীর (৩৯) বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা হয়। সেই মামলার তদন্তে উঠে আসে তার বোন জামাই গনু মিয়া (৬১) ও পার্টনার আব্দুর রহিম প্রকাশ রানা (৩৪) ছিল ফজর আলীর অন্যতম সহযোগী। ইয়াবা কারবারি ফজর আলী প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা পাচার করেছেন। তার সম্পদের পরিমান ০.২০৬৭ একর জমি। যার মূল্য অনুমান ৩৯ লাখ টাকা। যা ক্রোক প্রক্রিয়াধীন।

Facebook Comments Box