ঢাকা ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজকন্যা ভিক্টোরিয়া-শেখ হাসিনা বৈঠক: রোহিঙ্গা তহবিল নিয়ে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৭:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪ ১৪ বার পঠিত

ঢাকার একটি হোটেলে সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তায়, বৃহত্তর পরিসরে আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে, ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত ও সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকে এ আহবান জানান শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

নজরুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। তাদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে ভাসানচরে উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। এখন ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারে।

ভাসানচরে আরো রোহিঙ্গা নাগরিককে স্থানান্তরে ইউএনডিপি’র সহায়তা কামনা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। চার দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় পৌঁছান ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া। এ সফরের অংশ হিসেবে তিনি কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়ার বৈঠকে, জলবায়ু পরিবর্তন সহ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান নজরুল ইসলাম।

প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া বলেন, সুইডেন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো গভীর করার বিশাল সুযোগ রয়েছে। দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সুইডেনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ শিকার। কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের অবদান নগণ্য হলেও, আমাদের দেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

স্থানীয় জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং তাদের জীবন-জীবিকার সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল গঠন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন। ইতোমধ্যে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে তার সরকার।

“বাংলাদেশে কোনো গৃহহীন মানুষ যাতে না থাকে, সেজন্য সরকার সারাদেশে গৃহহীনদের বিনামূল্যে ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধী ঘর করে দিচ্ছে;” শেখ হাসিনা আরো বলেন।

শেখ হাসিনা ১৯৬৯ সালে তার প্রথম সুইডেন সফরের কথা স্মরণ করেন, যখন তার স্বামী সেখানে পড়াশোনার জন্য অবস্থান করছিলেন।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

রাজকন্যা ভিক্টোরিয়া-শেখ হাসিনা বৈঠক: রোহিঙ্গা তহবিল নিয়ে আলোচনা

আপডেট সময় : ০৩:৪৭:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তায়, বৃহত্তর পরিসরে আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে, ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত ও সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকে এ আহবান জানান শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

নজরুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। তাদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে ভাসানচরে উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। এখন ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারে।

ভাসানচরে আরো রোহিঙ্গা নাগরিককে স্থানান্তরে ইউএনডিপি’র সহায়তা কামনা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। চার দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় পৌঁছান ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া। এ সফরের অংশ হিসেবে তিনি কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়ার বৈঠকে, জলবায়ু পরিবর্তন সহ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান নজরুল ইসলাম।

প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া বলেন, সুইডেন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো গভীর করার বিশাল সুযোগ রয়েছে। দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সুইডেনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ শিকার। কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের অবদান নগণ্য হলেও, আমাদের দেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

স্থানীয় জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং তাদের জীবন-জীবিকার সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল গঠন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন। ইতোমধ্যে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে তার সরকার।

“বাংলাদেশে কোনো গৃহহীন মানুষ যাতে না থাকে, সেজন্য সরকার সারাদেশে গৃহহীনদের বিনামূল্যে ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধী ঘর করে দিচ্ছে;” শেখ হাসিনা আরো বলেন।

শেখ হাসিনা ১৯৬৯ সালে তার প্রথম সুইডেন সফরের কথা স্মরণ করেন, যখন তার স্বামী সেখানে পড়াশোনার জন্য অবস্থান করছিলেন।

Facebook Comments Box