ঢাকা ০২:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে সরকার সফল হবে না: তারেক Logo স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে দেশ এখনও মুক্ত নয়: রিজভী Logo হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে যেভাবে ইসরায়েল খুঁজে বের করে হত্যা করেছে Logo সোনারগাঁওয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে যুবকের মৃত্যু Logo সংবাদ প্রকাশের পর বৃদ্ধা মহিলার ঠাই হলো স্বামীর বসত ভিটায় Logo সোনারগাঁয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি হালট দখল করে বালু ভরাট Logo ‘সংস্কারের ধীর গতি’ ও কাজের গুরুত্ব নির্ধারণ নিয়ে সমালোচনা, কী বলছেন উপদেষ্টারা? Logo আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু আজ Logo বাড়তে পারে ঈদ ও পূজার সরকারি ছুটি Logo আগামী বছর থেকে আবারও মাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন শুরু

ঢাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্তে কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৭:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ মার্চ ২০২৪ ৪৫ বার পঠিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি বা তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠন করা হয়েছে আরও একটি তদন্ত কমিটি।

রোববার (৩ মার্চ) রাতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় পৃথক এই দুই কমিটি গঠন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী এই ফোরামের একাধিক সদস্য জানান, সভায় অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তরের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আনা ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে ফলাফলের ধস নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারের নেতৃত্বে অন্য দুজন সদস্য হলেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহম্মদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে এই কমিটিকে।

এছাড়া, অধ্যাপক নাদির জুনায়েদের বিরুদ্ধে বিভাগের একজন নারী শিক্ষার্থী এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীর আনা যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের তদন্তে গঠন করা হয়েছে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি বা তথ্য অনুসন্ধান কমিটি । তিন সদস্যের এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সীমা জামানকে। অন্য দুজন সদস্য হলেন, সিন্ডিকেট সদস্য ও হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান এবং সহকারী প্রক্টর সঞ্চিতা গুহ। সিন্ডিকেটের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে কমিটিকে দুই সপ্তাহের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন পরবর্তীতে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে পাঠানো হবে।

এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রোশে ফলে ধস নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। অভিযোগের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করে মৌখিক পরীক্ষা পুনঃগ্রহণ ও সম্পূর্ণ ফল পুনর্মূল্যায়ন এবং অধ্যাপক নাদির জুনাইদের কৃতকর্মের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানায়।

এরপর ১০ ফেব্রুয়ারি বিভাগের এক শিক্ষার্থী যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেন অধ্যাপক জুনাইদের বিরুদ্ধে। পরদিন ১১ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে মৌখিক যৌন হয়রানি ধামাচাপা দেওয়ার অন্য আরেকটি অভিযোগ দায়ের করেন বিভাগটির আরেক নারী শিক্ষার্থী। অভিযোগের প্রতিবাদে সব ধরনের শ্রেণি কার্যক্রম বর্জন করে ক্যাম্পাসে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।

পরবর্তীতে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ঐ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে আরেকটি যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেন রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী।

এদিকে সবগুলো অভিযোগ অস্বীকার করে এর পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে বলে দাবি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের। বর্তমানে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে আছেন তিনি। ছুটির চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধান ও তদন্ত করার জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হবে এবং সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

ঢাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্তে কমিটি

আপডেট সময় : ০৭:৩৭:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ মার্চ ২০২৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি বা তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠন করা হয়েছে আরও একটি তদন্ত কমিটি।

রোববার (৩ মার্চ) রাতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় পৃথক এই দুই কমিটি গঠন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী এই ফোরামের একাধিক সদস্য জানান, সভায় অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তরের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আনা ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে ফলাফলের ধস নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারের নেতৃত্বে অন্য দুজন সদস্য হলেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহম্মদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে এই কমিটিকে।

এছাড়া, অধ্যাপক নাদির জুনায়েদের বিরুদ্ধে বিভাগের একজন নারী শিক্ষার্থী এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীর আনা যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের তদন্তে গঠন করা হয়েছে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি বা তথ্য অনুসন্ধান কমিটি । তিন সদস্যের এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সীমা জামানকে। অন্য দুজন সদস্য হলেন, সিন্ডিকেট সদস্য ও হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান এবং সহকারী প্রক্টর সঞ্চিতা গুহ। সিন্ডিকেটের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে কমিটিকে দুই সপ্তাহের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন পরবর্তীতে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে পাঠানো হবে।

এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রোশে ফলে ধস নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। অভিযোগের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করে মৌখিক পরীক্ষা পুনঃগ্রহণ ও সম্পূর্ণ ফল পুনর্মূল্যায়ন এবং অধ্যাপক নাদির জুনাইদের কৃতকর্মের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানায়।

এরপর ১০ ফেব্রুয়ারি বিভাগের এক শিক্ষার্থী যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেন অধ্যাপক জুনাইদের বিরুদ্ধে। পরদিন ১১ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে মৌখিক যৌন হয়রানি ধামাচাপা দেওয়ার অন্য আরেকটি অভিযোগ দায়ের করেন বিভাগটির আরেক নারী শিক্ষার্থী। অভিযোগের প্রতিবাদে সব ধরনের শ্রেণি কার্যক্রম বর্জন করে ক্যাম্পাসে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।

পরবর্তীতে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ঐ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে আরেকটি যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেন রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী।

এদিকে সবগুলো অভিযোগ অস্বীকার করে এর পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে বলে দাবি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের। বর্তমানে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে আছেন তিনি। ছুটির চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধান ও তদন্ত করার জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হবে এবং সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Facebook Comments Box