গণধর্ষণ : ধর্ষকরা নিজের লোক হওয়ায় বাদীকে মামলা দিতে ৩ দিন ঘুরালেন চেয়ারম্যান
- আপডেট সময় : ০৭:৫১:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ৪৮৫ বার পঠিত
ইউপি চেয়ারম্যানের ইচ্ছাকৃত কালক্ষেপণে একটি গণধর্ষণের মামলা হয়েছে ঘটনার ৩ দিন পর। ধর্ষকরা চেয়ারম্যানের লোক হওয়ায় তিনি আলামত নষ্ট করার উদ্দেশ্যে ভুক্তভোগীকে ৩ দিন ঘুরান। ভুক্তভোগী পাবনার সাঁথিয়ায় এক মিষ্টির দোকানের স্বামী পরিত্যক্তা কাজের বুয়া। উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের চরভদ্রকোলা গ্রামে তার বাড়ি।
এ দিকে মামলা মীমাংসার জন্য আসামীর পক্ষ থেকে অব্যাহত চাপ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ মামলার বাদী ও তার পরিবারের। অপরদিকে ঘটনার ১০ দিন অতিবাহিত হলেও আসামী আটক করতে পারেনি থানা পুলিশ।
অভিযোগ জানা গেছে, গত সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় প্রতিদিনের মত ভুক্তভোগী ঘোষের মিষ্টির দোকানের কাজ সেরে অটোভ্যানে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে চর ভদ্রকোলা মোড়ে ভ্যান থেকে নেমে বাড়ির দিকে যাওয়ার সময় ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের চাদপুর গ্রামের ইসলাম প্রামানিকের ছেলে নুহু প্রাং, আব্দুর রহমান বগমের ছেলে নাসির উদ্দিন, নুর আলীর ছেলে সাইফুল শাপলাকে পিছন দিক থেকে এসে দুহাত বেধে মুখে গামছা দিয়ে পাশ^র্বতী মাঠে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় সে জ্ঞান হারা হয়ে গেলে ধর্ষকেরা ওখানেই ফেলে রেখে চলে যায়।
রাত সাড়ে আটার দিকে ধর্ষিতা জ্ঞান ফিরে বাড়ি যায়। আসামীরা ইউপি চেয়ারম্যান মনসুর আলম পিন্চুর লোক হওয়ায় ধর্ষিতা পরের দিন (২০ ফেব্রুয়ারী) তাঁর নিকট গিয়ে বিষয়টি জানান। চেয়ারম্যান বিষয়টি দেখতেছি বলে কালক্ষেপন করেন। এ অবস্থায় ধর্ষিতার পরিবারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে ঘটনার ৩দিন পর গত বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারী) ধর্ষিতা নিজেই বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ে করেন। (যার নম্বর— ২০, তারিখ ২২—০২—২০২৪ইং।) এ দিকে ঘটনার ১০দিন অতিবাহিত হলেও আসামীরা আটক না হওয়ায় বাদী এ তার পরিবার ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অপরদিকে প্রভাবশালী হওয়ায় আসামিরা টাকা পয়সা দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে নেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। এ নিয়ে ধর্ষিতার পরিবার চরম আতংকের মধ্যে রয়েছেন। তারা অতি দ্রুত আসামীদের আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ক্ষেতুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মনসুর আলম পিন্চু বলেন, আসামীরা আমার কাজ করে এটা ঠিক আছে। এ জন্য আমি বলেছিলাম বিষয়টা আমি জেনে দেখি। তিনি বলেন, যখন আমি বিষয়টি নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করলে তারা অস্বীকার করে। পরে আমি ভিকটিমকে থানায় যেতে বলেছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি তদন্ত আব্দুল লতিফ জানান, আসামীরা পলাতক থাকায় এখন পর্যন্ত আটক করতে পারিনি। তবে আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।