ঢাকা ১১:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

রংপুরকে উড়িয়ে ফাইনালে কুমিল্লা

ক্রীড়াঙ্গন প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১০:৩৮:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ২৫ বার পঠিত

দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে চলতি আসরে শক্তিশালী দল গড়েছিল রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দারুণ পারফরম্যান্স করে দুই দলই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে প্লে-অফে জায়গা করে নিয়েছে। তাদের গ্রুপ পর্বের লড়াইও হয়েছে সমানে সমান। দুই দলই একটি করে ম্যাচ জিতেছে। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) প্রথম কোয়ালিফায়ারে সুযোগ ছিল ম্যাচটি জিতে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের। সেই কাজটা খুব ভালো করেই করলো কুমিল্লা। রংপুরের বোলিং আক্রমণকে গুড়িয়ে দিয়ে ৯ বল আগেই ৬ উইকেটে বিপিএল দশম আসরের ফাইনাল নিশ্চিত করলো চারবারের চ্যাম্পিয়নরা।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়েছিল রংপুর রাইডার্স। জিমি নিশামের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে কুমিল্লাকে ১৮৬ রানের লক্ষ্য দেয় রংপুর। কঠিন এই লক্ষ্য সহজ হয়ে যায় তাওহীদ হৃদয় ও লিটন দাসের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটের সহজ জয় পায় কুমিল্লা। এই জয়ে আগামী ১ এপ্রিলের ফাইনাল নিশ্চিত হয় লিটন দাসের দলের। তবে রংপুর হারলেও ফাইনালে যাওয়ার আরও একটি সুযোগ পাচ্ছে। আগামী বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে লড়তে হবে তাদের। এই ম্যাচে যারা জিতবে তাদের সাথে ফাইনালে দেখা হবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের।
সোমবার ১৮৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন সুনিল নারিন (০)। প্রথম বলে উইকেট হারানো কুমিল্লা এভাবে জিতবে, কেই ঘুর্ণাক্ষরেও ভাবেনি। কিন্তু তাওহীদ ও লিটন গড়া ৮৯ বলে ১৪৩ রানের জুটিই মূলত ব্যবধান গড়ে দেয়। এদিন রংপুরের কোনও বোলার পাত্তা পায়নি লিটন-তাওহীদের কাছে। ৪৩ বলে ৬৪ রান করে তাওহীদ আউট হলে জুটি ভাঙে তাদের। এরপর জনসন চার্লসও ৩ বলে ৬ রান করে বিদায় নেন।

জয় থেকে ১৩ রান দূরে থাকতে অধিনায়ক লিটন সাজঘরে ফেরেন। ৫৭ বলে ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ৮৩ রান করে আউট হন এই ওপেনার। তাওহীদ নিজের ৬৪ রানের ইনিংস খেলতে ৫টি চার ছাড়াও ৪টি ছক্কা মেরেছেন। ৬৪ রানের ইনিংস খেলার পথে তাওহীদ ছাড়িয়ে গেছেন তামিম ইকবালকে। ৪৪৭ রান নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এখন তিনিই। এরপর মঈন আলী ৫ বলে ১৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ৯ বল আগেই দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান।

রংপুরের বোলারদের মধ্যে ফজল হক ফারুকী ২৭ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া আবু হায়দার ও শেখ মেহেদী হাসান একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

এর আগে টস জিতে রংপুর রাইডার্সকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। রংপুরও নিজেদের পরিকল্পনায় কিছুটা বদল আনে। ওপেনিং পাঠানো হয় শামীম হোসেনকে। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই রানের খাতা না খুলে বিদায় নেন শামীম। ২৭ রানে টপ অর্ডার তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে লিটন প্রমাণ করেছিলেন কেন তিনি ফিল্ডিং নিয়েছেন!  শামীমের পর রনি তালুকদার (১৩) ও সাকিব আল হাসান (৫) বিদায় নিলে পুরোপুরি চাপে পড়ে যায় রংপুর।

তবে চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন শেখ মেহেদী হাসান ও জিমি নিশাম। দুইজন মিলে ২৬ বলে ২৯ রানের জুটির পর মেহেদী বিদায় নেন। এরপর নিকোলাস পুরানের সাথে ২৪ বলে ৩৮ রানের জুটি করেন কিউই এই অলরাউন্ডার। এবার সঙ্গী পুরানকে হারান তিনি। মেহেদী ১৭ বলে ২২ এবং পুরান ৯ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলেন।

এই দুই জুটির পর নিশাম এবার অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের সাথে জুটি বাঁধেন। ২৪ বলে ৩০ রান করে সোহান আউট হলে তাদের ৫৩ রানের জুটি ভাঙে। ছোট ছোট জুটি গড়ে অন্যপ্রান্তে আউট হলেও একপ্রান্ত আগলে রেখে আক্রমণ চালাতে থাকেন নিশাম। তার বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের সামনে অসহায় হয়ে পড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বোলাররা। নিশামের সামনে সুযোগ ছিল সেঞ্চুরি ছোঁয়ার। শেষ ওভারে সেঞ্চুরি ছুঁতে প্রয়োজন ছিল ২৯ রানের। কিন্তু ব্যাট হাতে ২৬ রান নিতে পারেন। ইনিংসের পঞ্চম বলটি মিস না করলেও তিন রানের আক্ষেপে পুড়তে হতো না নিশামকে। শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে ৮ চার ও ৭ ছক্কায় ৯৭ রানে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার। তার ব্যাটে চড়েই শুরুর ব্যর্থতা কাটিয়ে রংপুর ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রানের সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারে।

৩৭ রানে দুই উইকেট নিয়ে কুমিল্লার সেরা বোলার আন্দ্রে রাসেল। এছাড়া বিপিএলের অভিষেক ম্যাচে রহনাতদৌল্লা বর্ষণ নিয়েছেন একটি উইকেট। এর বাইরে তানভীর ইসলাম, সুনিল নারিন ও মুশফিক হাসান একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

রংপুরকে উড়িয়ে ফাইনালে কুমিল্লা

আপডেট সময় : ১০:৩৮:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে চলতি আসরে শক্তিশালী দল গড়েছিল রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দারুণ পারফরম্যান্স করে দুই দলই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে প্লে-অফে জায়গা করে নিয়েছে। তাদের গ্রুপ পর্বের লড়াইও হয়েছে সমানে সমান। দুই দলই একটি করে ম্যাচ জিতেছে। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) প্রথম কোয়ালিফায়ারে সুযোগ ছিল ম্যাচটি জিতে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের। সেই কাজটা খুব ভালো করেই করলো কুমিল্লা। রংপুরের বোলিং আক্রমণকে গুড়িয়ে দিয়ে ৯ বল আগেই ৬ উইকেটে বিপিএল দশম আসরের ফাইনাল নিশ্চিত করলো চারবারের চ্যাম্পিয়নরা।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়েছিল রংপুর রাইডার্স। জিমি নিশামের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে কুমিল্লাকে ১৮৬ রানের লক্ষ্য দেয় রংপুর। কঠিন এই লক্ষ্য সহজ হয়ে যায় তাওহীদ হৃদয় ও লিটন দাসের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটের সহজ জয় পায় কুমিল্লা। এই জয়ে আগামী ১ এপ্রিলের ফাইনাল নিশ্চিত হয় লিটন দাসের দলের। তবে রংপুর হারলেও ফাইনালে যাওয়ার আরও একটি সুযোগ পাচ্ছে। আগামী বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে লড়তে হবে তাদের। এই ম্যাচে যারা জিতবে তাদের সাথে ফাইনালে দেখা হবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের।
সোমবার ১৮৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন সুনিল নারিন (০)। প্রথম বলে উইকেট হারানো কুমিল্লা এভাবে জিতবে, কেই ঘুর্ণাক্ষরেও ভাবেনি। কিন্তু তাওহীদ ও লিটন গড়া ৮৯ বলে ১৪৩ রানের জুটিই মূলত ব্যবধান গড়ে দেয়। এদিন রংপুরের কোনও বোলার পাত্তা পায়নি লিটন-তাওহীদের কাছে। ৪৩ বলে ৬৪ রান করে তাওহীদ আউট হলে জুটি ভাঙে তাদের। এরপর জনসন চার্লসও ৩ বলে ৬ রান করে বিদায় নেন।

জয় থেকে ১৩ রান দূরে থাকতে অধিনায়ক লিটন সাজঘরে ফেরেন। ৫৭ বলে ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ৮৩ রান করে আউট হন এই ওপেনার। তাওহীদ নিজের ৬৪ রানের ইনিংস খেলতে ৫টি চার ছাড়াও ৪টি ছক্কা মেরেছেন। ৬৪ রানের ইনিংস খেলার পথে তাওহীদ ছাড়িয়ে গেছেন তামিম ইকবালকে। ৪৪৭ রান নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এখন তিনিই। এরপর মঈন আলী ৫ বলে ১৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ৯ বল আগেই দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান।

রংপুরের বোলারদের মধ্যে ফজল হক ফারুকী ২৭ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া আবু হায়দার ও শেখ মেহেদী হাসান একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

এর আগে টস জিতে রংপুর রাইডার্সকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। রংপুরও নিজেদের পরিকল্পনায় কিছুটা বদল আনে। ওপেনিং পাঠানো হয় শামীম হোসেনকে। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই রানের খাতা না খুলে বিদায় নেন শামীম। ২৭ রানে টপ অর্ডার তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে লিটন প্রমাণ করেছিলেন কেন তিনি ফিল্ডিং নিয়েছেন!  শামীমের পর রনি তালুকদার (১৩) ও সাকিব আল হাসান (৫) বিদায় নিলে পুরোপুরি চাপে পড়ে যায় রংপুর।

তবে চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন শেখ মেহেদী হাসান ও জিমি নিশাম। দুইজন মিলে ২৬ বলে ২৯ রানের জুটির পর মেহেদী বিদায় নেন। এরপর নিকোলাস পুরানের সাথে ২৪ বলে ৩৮ রানের জুটি করেন কিউই এই অলরাউন্ডার। এবার সঙ্গী পুরানকে হারান তিনি। মেহেদী ১৭ বলে ২২ এবং পুরান ৯ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলেন।

এই দুই জুটির পর নিশাম এবার অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের সাথে জুটি বাঁধেন। ২৪ বলে ৩০ রান করে সোহান আউট হলে তাদের ৫৩ রানের জুটি ভাঙে। ছোট ছোট জুটি গড়ে অন্যপ্রান্তে আউট হলেও একপ্রান্ত আগলে রেখে আক্রমণ চালাতে থাকেন নিশাম। তার বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের সামনে অসহায় হয়ে পড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বোলাররা। নিশামের সামনে সুযোগ ছিল সেঞ্চুরি ছোঁয়ার। শেষ ওভারে সেঞ্চুরি ছুঁতে প্রয়োজন ছিল ২৯ রানের। কিন্তু ব্যাট হাতে ২৬ রান নিতে পারেন। ইনিংসের পঞ্চম বলটি মিস না করলেও তিন রানের আক্ষেপে পুড়তে হতো না নিশামকে। শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে ৮ চার ও ৭ ছক্কায় ৯৭ রানে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার। তার ব্যাটে চড়েই শুরুর ব্যর্থতা কাটিয়ে রংপুর ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রানের সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারে।

৩৭ রানে দুই উইকেট নিয়ে কুমিল্লার সেরা বোলার আন্দ্রে রাসেল। এছাড়া বিপিএলের অভিষেক ম্যাচে রহনাতদৌল্লা বর্ষণ নিয়েছেন একটি উইকেট। এর বাইরে তানভীর ইসলাম, সুনিল নারিন ও মুশফিক হাসান একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

Facebook Comments Box