ঢাকা ০৯:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

৫০ আসনের মধ্যে বুথ দখল ও জাল ভোট হয়েছে ৫১ শতাংশ কেন্দ্রে: টিআইবি

সারাবেলা প্রতিবেদন
  • আপডেট সময় : ১০:২৬:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪ ৬৭ বার পঠিত

টিআইবি'র সংবাদ সম্মেলন

দশ সংসদ নির্বাচনকে ‘একপাক্ষিক’ ও ‘পাতানো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’ আখ্যা দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। নির্বাচন ‘অবাধ হয়নি’ এবং সেটি ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য অশনি সংকেত’ বলে সংস্থাটি বলছে।

নির্বাচনের ৫০টি আসনের ওপর চালানো একটি গবেষণায় টিআইবি দেখতে পেয়েছে, সেখানে ৫১ শতাংশ কেন্দ্রে বুথ দখল, জাল ভোট প্রদান ও প্রকাশ্যে সিল মারার মতো ঘটনা ঘটেছে।
সেইসাথে, এসব আসনে ৫৫ দশমিক ১ শতাংশ কেন্দ্রে ভোটারদেরকে জোর করে নির্দিষ্ট মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করা হয়েছে।
বুধবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া ট্র্যাকিং’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
টিআইবি বলছে, ‘নির্বাচন কমিশন কখনো অপারগ হয়ে, কখনো কৌশলে, একতরফা নিবাচনের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অন্যতম অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান একইভাবে সহায়ক ভূমিকায় ব্যবহৃত হয়েছে বা লিপ্ত থেকেছে।
সংসদ নির্বাচনের ৫০টি আসনে নির্বাচনের দিন সংঘটিত অনিয়মের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৮৫ দশমিক ৭ শতাংশ আসনে নির্বাচনি বিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে, অনিয়ম প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।
অথচ, নির্বাচনি বাজেটের অর্ধেকেরও বেশি পরিমাণ (৫৪ শতাংশ) অর্থ ব্যয় করা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য। এই খাতে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের সুনির্দিষ্ট কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায় নি।

টিআইবি বলেছে, অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ নির্বাচন না হওয়ার প্রধান কারণ হলো, নির্বাচিনকালীন সরকার ইস্যুতে দুই বড় দলের বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থান। এ বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থানকেন্দ্রিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লড়াইয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জিম্মিদশা প্রকটতর হয়েছে।

টিআইবি যে ৫০টি আসনে গবেষণা করেছে, সেখানে সংঘটিত অনিয়মের চিত্র
যেসব আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী ছিলো, সেইসব আসন সম্পর্কে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, “৬২ আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর সার্বিক চিত্র হলো- একটা পাতানো প্রতিযোগিতামূলক, অনেকক্ষেত্রে সহিংস এবং সংঘাতময় নির্বাচন হয়েছে। সার্বিকভাবে এসব আসনে প্রতিযোগিতা হয়েছে, তবে সেটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা।”
“তবে এই অসুস্থ প্রতিযোগিতার একটি মাত্র ইতিবাচক দিক হচ্ছে, তারা পরস্পরের প্রতি বিষেদগার এবং পাল্টা অভিযোগ করায় দুর্নীতি, অনিয়ম, অবৈধতা ইত্যাদি বিষয়গুলো যথার্থতা পেয়েছে। অর্থাৎ, তারা নিজেরাই নিজেদের সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন।”
এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে যথেষ্ট ঘাটতি ছিলো বলেও ড. ইফতেখারুজ্জামান উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “যাদেরকে সরকার দলের বাইরের প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে, তারা হয় সরকার দলের সদস্য, অথবা সরকারের সমর্থনপুষ্ট রাজনৈতিক দলের সদস্য।”

টিআইবি বলেছে, অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ নির্বাচন না হওয়ার প্রধান কারণ হলো, নির্বাচিনকালীন সরকার ইস্যুতে দুই বড় দলের বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থান। এ বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থানকেন্দ্রিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লড়াইয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জিম্মিদশা প্রকটতর হয়েছে।

টিআইবির গবেষণায় নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের চিত্র
যেসব আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী ছিলো, সেইসব আসন সম্পর্কে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, “৬২ আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর সার্বিক চিত্র হলো- একটা পাতানো প্রতিযোগিতামূলক, অনেকক্ষেত্রে সহিংস এবং সংঘাতময় নির্বাচন হয়েছে। সার্বিকভাবে এসব আসনে প্রতিযোগিতা হয়েছে, তবে সেটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা।”
“তবে এই অসুস্থ প্রতিযোগিতার একটি মাত্র ইতিবাচক দিক হচ্ছে, তারা পরস্পরের প্রতি বিষেদগার এবং পাল্টা অভিযোগ করায় দুর্নীতি, অনিয়ম, অবৈধতা ইত্যাদি বিষয়গুলো যথার্থতা পেয়েছে। অর্থাৎ, তারা নিজেরাই নিজেদের সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন।”
এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে যথেষ্ট ঘাটতি ছিলো বলেও ড. ইফতেখারুজ্জামান উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “যাদেরকে সরকার দলের বাইরের প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে, তারা হয় সরকার দলের সদস্য, অথবা সরকারের সমর্থনপুষ্ট রাজনৈতিক দলের সদস্য।”
Facebook Comments Box
ট্যাগস :

৫০ আসনের মধ্যে বুথ দখল ও জাল ভোট হয়েছে ৫১ শতাংশ কেন্দ্রে: টিআইবি

আপডেট সময় : ১০:২৬:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪

দশ সংসদ নির্বাচনকে ‘একপাক্ষিক’ ও ‘পাতানো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’ আখ্যা দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। নির্বাচন ‘অবাধ হয়নি’ এবং সেটি ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য অশনি সংকেত’ বলে সংস্থাটি বলছে।

নির্বাচনের ৫০টি আসনের ওপর চালানো একটি গবেষণায় টিআইবি দেখতে পেয়েছে, সেখানে ৫১ শতাংশ কেন্দ্রে বুথ দখল, জাল ভোট প্রদান ও প্রকাশ্যে সিল মারার মতো ঘটনা ঘটেছে।
সেইসাথে, এসব আসনে ৫৫ দশমিক ১ শতাংশ কেন্দ্রে ভোটারদেরকে জোর করে নির্দিষ্ট মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করা হয়েছে।
বুধবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া ট্র্যাকিং’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
টিআইবি বলছে, ‘নির্বাচন কমিশন কখনো অপারগ হয়ে, কখনো কৌশলে, একতরফা নিবাচনের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অন্যতম অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান একইভাবে সহায়ক ভূমিকায় ব্যবহৃত হয়েছে বা লিপ্ত থেকেছে।
সংসদ নির্বাচনের ৫০টি আসনে নির্বাচনের দিন সংঘটিত অনিয়মের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৮৫ দশমিক ৭ শতাংশ আসনে নির্বাচনি বিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে, অনিয়ম প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।
অথচ, নির্বাচনি বাজেটের অর্ধেকেরও বেশি পরিমাণ (৫৪ শতাংশ) অর্থ ব্যয় করা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য। এই খাতে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের সুনির্দিষ্ট কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায় নি।

টিআইবি বলেছে, অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ নির্বাচন না হওয়ার প্রধান কারণ হলো, নির্বাচিনকালীন সরকার ইস্যুতে দুই বড় দলের বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থান। এ বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থানকেন্দ্রিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লড়াইয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জিম্মিদশা প্রকটতর হয়েছে।

টিআইবি যে ৫০টি আসনে গবেষণা করেছে, সেখানে সংঘটিত অনিয়মের চিত্র
যেসব আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী ছিলো, সেইসব আসন সম্পর্কে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, “৬২ আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর সার্বিক চিত্র হলো- একটা পাতানো প্রতিযোগিতামূলক, অনেকক্ষেত্রে সহিংস এবং সংঘাতময় নির্বাচন হয়েছে। সার্বিকভাবে এসব আসনে প্রতিযোগিতা হয়েছে, তবে সেটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা।”
“তবে এই অসুস্থ প্রতিযোগিতার একটি মাত্র ইতিবাচক দিক হচ্ছে, তারা পরস্পরের প্রতি বিষেদগার এবং পাল্টা অভিযোগ করায় দুর্নীতি, অনিয়ম, অবৈধতা ইত্যাদি বিষয়গুলো যথার্থতা পেয়েছে। অর্থাৎ, তারা নিজেরাই নিজেদের সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন।”
এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে যথেষ্ট ঘাটতি ছিলো বলেও ড. ইফতেখারুজ্জামান উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “যাদেরকে সরকার দলের বাইরের প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে, তারা হয় সরকার দলের সদস্য, অথবা সরকারের সমর্থনপুষ্ট রাজনৈতিক দলের সদস্য।”

টিআইবি বলেছে, অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ নির্বাচন না হওয়ার প্রধান কারণ হলো, নির্বাচিনকালীন সরকার ইস্যুতে দুই বড় দলের বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থান। এ বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থানকেন্দ্রিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লড়াইয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জিম্মিদশা প্রকটতর হয়েছে।

টিআইবির গবেষণায় নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের চিত্র
যেসব আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী ছিলো, সেইসব আসন সম্পর্কে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, “৬২ আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর সার্বিক চিত্র হলো- একটা পাতানো প্রতিযোগিতামূলক, অনেকক্ষেত্রে সহিংস এবং সংঘাতময় নির্বাচন হয়েছে। সার্বিকভাবে এসব আসনে প্রতিযোগিতা হয়েছে, তবে সেটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা।”
“তবে এই অসুস্থ প্রতিযোগিতার একটি মাত্র ইতিবাচক দিক হচ্ছে, তারা পরস্পরের প্রতি বিষেদগার এবং পাল্টা অভিযোগ করায় দুর্নীতি, অনিয়ম, অবৈধতা ইত্যাদি বিষয়গুলো যথার্থতা পেয়েছে। অর্থাৎ, তারা নিজেরাই নিজেদের সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন।”
এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে যথেষ্ট ঘাটতি ছিলো বলেও ড. ইফতেখারুজ্জামান উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “যাদেরকে সরকার দলের বাইরের প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে, তারা হয় সরকার দলের সদস্য, অথবা সরকারের সমর্থনপুষ্ট রাজনৈতিক দলের সদস্য।”
Facebook Comments Box