ঢাকা ০৭:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

কলেজছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণ, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

বাগেরহাট প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪ ২৪১ বার পঠিত

ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার ফকিরহাট সদর ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল সরদার

বাগেরহাটের দুই কলেজছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় মো. শাকিল সরদার (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার সন্ধ্যায় ফকিরহাটের জারিয়া এলাকা থেকে শাকিলকে গ্রেফতার হয়। সোমবার তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। শাকিল সরদার ফকিরহাট সদর ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতি।

এদিকে শাকিলকে গ্রেফতার করলেও অপর আসামি মেহেদী হাসান (২০) পলাতক রয়েছেন। এর আগে নির্যাতিত এক কলেজছাত্রী বাদী হয়ে ফকিরহাট থানায় ওই দুইজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

গ্রেফতার শাকিল সরদার ফকিরহাট উপজেলার জারিয়া-চৌমাথা এলাকার মোস্তাব সরদারের ছেলে। অন্য আসামি মেহেদী হাসান একই এলাকার সেখ মাসুমেল হকের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকালে দুই বান্ধবী চাচাতো ভাই ও তার বন্ধুর সঙ্গে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঘুরতে যায়। পরে রামপাল থেকে রাত ১১টার সময় বাগেরহাট খানজাহান আলী মাজারে ঘুরতে যায়। রাত ১২টা ১০ মিনিটে তারা দুটি মোটরসাইকেলে বাগেরহাট থেকে খুলনার দিকে রওনা দেয়।

ফকিরহাটের জারিয়া চৌমাথা এলাকায় একটি মোটরসাইকেলে ত্রুটি দেখা দেয়। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা শাকিল ও মেহেদী হাসান এক মোটরসাইকেলে থাকা তরুণীর ওড়না টেনে ধরে। এতে ওই কলেজছাত্রী ও তার বন্ধু রাস্তার উপর পড়ে যায়। বিষয়টি দেখতে পেয়ে অন্য মোটরসাইকেলের চালক ও কলেজছাত্রী মোটরসাইকেল থেকে নেমে যায়।

মোটরসাইকেলের ছাত্রী ও তাদের বন্ধু তরুণ কোনো কিছু জানতে চাওয়ার আগেই শাকিল ও মেহেদী তাদের মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে ছাত্রীদের সঙ্গে থাকা এক তরুণ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। শাকিল ও মেহেদী তরুণ-তরুণীদের কাছে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে শাকিল ও মেহেদী ওই ছাত্রীদের পার্শ্ববর্তী চায়ের দোকানের ভিতরে নিয়ে যায়।

একজনকে চায়ের দোকানের বেঞ্চির উপর এবং অন্য জনকে পার্শ্ববর্তী দোকানের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে ধর্ষণকারীরা দুই ছাত্রী ও তরুণকে পার্শ্ববর্তী জারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে আবারো ধর্ষণ করা হয়। ঘটনার কথা কাউকে না বলার জন্য হুমকি-ধমকি দিয়ে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এর মধ্যে আগে পালিয়ে যাওয়া তরুণ ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশকে জানান।

ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুল আলম বলেন, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ধর্ষণের শিকার দুই কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

শাকিল সরদার ও মেহেদী হাসানকে আসামি করে রোববার বিকালে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে শাকিল সরদার নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর আসামি মেহেদী হাসানকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সোমবার দুপুরে বাগেরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি শাকিল সরদারকে হাজির করা হলে বিচারক মো. আসাদুজ্জামান তাকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

কলেজছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণ, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

আপডেট সময় : ০৬:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪
বাগেরহাটের দুই কলেজছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় মো. শাকিল সরদার (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার সন্ধ্যায় ফকিরহাটের জারিয়া এলাকা থেকে শাকিলকে গ্রেফতার হয়। সোমবার তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। শাকিল সরদার ফকিরহাট সদর ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতি।

এদিকে শাকিলকে গ্রেফতার করলেও অপর আসামি মেহেদী হাসান (২০) পলাতক রয়েছেন। এর আগে নির্যাতিত এক কলেজছাত্রী বাদী হয়ে ফকিরহাট থানায় ওই দুইজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

গ্রেফতার শাকিল সরদার ফকিরহাট উপজেলার জারিয়া-চৌমাথা এলাকার মোস্তাব সরদারের ছেলে। অন্য আসামি মেহেদী হাসান একই এলাকার সেখ মাসুমেল হকের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকালে দুই বান্ধবী চাচাতো ভাই ও তার বন্ধুর সঙ্গে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঘুরতে যায়। পরে রামপাল থেকে রাত ১১টার সময় বাগেরহাট খানজাহান আলী মাজারে ঘুরতে যায়। রাত ১২টা ১০ মিনিটে তারা দুটি মোটরসাইকেলে বাগেরহাট থেকে খুলনার দিকে রওনা দেয়।

ফকিরহাটের জারিয়া চৌমাথা এলাকায় একটি মোটরসাইকেলে ত্রুটি দেখা দেয়। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা শাকিল ও মেহেদী হাসান এক মোটরসাইকেলে থাকা তরুণীর ওড়না টেনে ধরে। এতে ওই কলেজছাত্রী ও তার বন্ধু রাস্তার উপর পড়ে যায়। বিষয়টি দেখতে পেয়ে অন্য মোটরসাইকেলের চালক ও কলেজছাত্রী মোটরসাইকেল থেকে নেমে যায়।

মোটরসাইকেলের ছাত্রী ও তাদের বন্ধু তরুণ কোনো কিছু জানতে চাওয়ার আগেই শাকিল ও মেহেদী তাদের মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে ছাত্রীদের সঙ্গে থাকা এক তরুণ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। শাকিল ও মেহেদী তরুণ-তরুণীদের কাছে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে শাকিল ও মেহেদী ওই ছাত্রীদের পার্শ্ববর্তী চায়ের দোকানের ভিতরে নিয়ে যায়।

একজনকে চায়ের দোকানের বেঞ্চির উপর এবং অন্য জনকে পার্শ্ববর্তী দোকানের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে ধর্ষণকারীরা দুই ছাত্রী ও তরুণকে পার্শ্ববর্তী জারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে আবারো ধর্ষণ করা হয়। ঘটনার কথা কাউকে না বলার জন্য হুমকি-ধমকি দিয়ে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এর মধ্যে আগে পালিয়ে যাওয়া তরুণ ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশকে জানান।

ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুল আলম বলেন, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ধর্ষণের শিকার দুই কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

শাকিল সরদার ও মেহেদী হাসানকে আসামি করে রোববার বিকালে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে শাকিল সরদার নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর আসামি মেহেদী হাসানকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সোমবার দুপুরে বাগেরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি শাকিল সরদারকে হাজির করা হলে বিচারক মো. আসাদুজ্জামান তাকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

Facebook Comments Box