ঢাকা ০৯:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

রোহিঙ্গাদের হাতে হাতে অস্ত্র!

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৮:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৩ ১৫৮ বার পঠিত

ফাইল চবি

কক্সবাজার : সহায় সম্বলহীন রোহিঙ্গাদের হাতে হাতে এখন অস্ত্র। গড়ে উঠেছে কয়েক ডজন সন্ত্রাসী বাহিনী। কথায় কথায় খুন, গুম, অপহরণ, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, মাদক ও ধর্ষণ যেন তাদের নিত্ত নৈমিত্তিক ঘটনা। ফলে অবনতি হচ্ছে ক্যাম্প ও তার আশেপাশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির।

পুলিশের দেয়া তথ্যমতে, ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন ঘটনায় মামলা হয়েছে ৩ হাজারের বেশি। যাতে আসামি অন্তত সাত হাজার। খুন হয়েছে অন্তত ১৮৯ জন রোহিঙ্গা।

এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, কতটা অপরাধ প্রবণ হয়ে উঠেছে উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা শিবির। নিজেদের কোন নিরাপত্তা নেই জানিয়ে সাধারণ রোহিঙ্গারাও বলছেন, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গুলোর অপ-তৎপরতায় অনেকেই ক্যাম্প ছেড়ে পালাচ্ছে।

ক্যাম্পে বসবাসকারী একজন বলেন, দিনে মারে না রাতে মারে তার কোন ঠিক নেই, তাই কোন কিছুই ভালো লাগে না ক্যাম্পে।

আরেকজন বলেন, বিভিন্ন ধরনের গ্রুপ হয়ে গেছে ক্যাম্পে। তারা মারামারি করে আমাদের ক্যাম্পের পরিস্থিতি খারাপ করে ফেলছে। আমাদেরকে এখন ২৪ ঘণ্টাই গুলির আতঙ্কে থাকতে হয়। কত গ্রুপ হয়ে গেছে তাদের।

২০১৭ সালের আগে আর পরের স্থানীয় অপরাধ পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গেল ৬ বছরে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার ৮০ শতাংশের জন্যই দায়ী রোহিঙ্গারা। ফলে উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা।

তারা বলেন, আমাদের ছোট শিশুরা স্কুল-মাদরাসায় যাচ্ছে কোন নিরাপত্তা ছাড়াই। কক্সবাজারের সমস্ত কিছু এখন রোহিঙ্গাদের দখলে চলে যাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে আমরা ঘর থেকে বের হতে পারবো কিনা সন্দেহে আছি। ফিলিস্তিনের মতো আমাদের অবস্থা হয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে।

এপিবিএন-এর তিনটি ব্যাটালিয়ন কাজ করলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছেনা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। ক্যাম্পে যেকোনো ঘটনায় অপরাধী শনাক্ত ও তদন্ত নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় পুলিশকে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের ডাকলে অনেক সময়ই তারা আমাদের সঠিক তথ্য দেন না। বেশিরভাগ সময়ই সাক্ষ্যগ্রহণে তাদের অনীহা আমরা পাই। ফলে মামলাগুলো তদন্ত বিঘ্নিত হয়।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, খাদ্যের সন্ধানে কিংবা কাজের সন্ধানে ক্যাম্প থেকে বেড়িয়ে আসার প্রচেষ্টা নিচ্ছে রোহিঙ্গারা। ফলে তারা আমাদের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। এতে আমাদের জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এবং তাদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়টি সামালা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি কঠিন বলে মত, স্থানীয়দের।

সারাবেলার সংবাদ/ এমএ এইচ/ ৩১ আগস্ট ২০২৩

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

রোহিঙ্গাদের হাতে হাতে অস্ত্র!

আপডেট সময় : ০৯:৫৮:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৩

কক্সবাজার : সহায় সম্বলহীন রোহিঙ্গাদের হাতে হাতে এখন অস্ত্র। গড়ে উঠেছে কয়েক ডজন সন্ত্রাসী বাহিনী। কথায় কথায় খুন, গুম, অপহরণ, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, মাদক ও ধর্ষণ যেন তাদের নিত্ত নৈমিত্তিক ঘটনা। ফলে অবনতি হচ্ছে ক্যাম্প ও তার আশেপাশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির।

পুলিশের দেয়া তথ্যমতে, ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন ঘটনায় মামলা হয়েছে ৩ হাজারের বেশি। যাতে আসামি অন্তত সাত হাজার। খুন হয়েছে অন্তত ১৮৯ জন রোহিঙ্গা।

এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, কতটা অপরাধ প্রবণ হয়ে উঠেছে উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা শিবির। নিজেদের কোন নিরাপত্তা নেই জানিয়ে সাধারণ রোহিঙ্গারাও বলছেন, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গুলোর অপ-তৎপরতায় অনেকেই ক্যাম্প ছেড়ে পালাচ্ছে।

ক্যাম্পে বসবাসকারী একজন বলেন, দিনে মারে না রাতে মারে তার কোন ঠিক নেই, তাই কোন কিছুই ভালো লাগে না ক্যাম্পে।

আরেকজন বলেন, বিভিন্ন ধরনের গ্রুপ হয়ে গেছে ক্যাম্পে। তারা মারামারি করে আমাদের ক্যাম্পের পরিস্থিতি খারাপ করে ফেলছে। আমাদেরকে এখন ২৪ ঘণ্টাই গুলির আতঙ্কে থাকতে হয়। কত গ্রুপ হয়ে গেছে তাদের।

২০১৭ সালের আগে আর পরের স্থানীয় অপরাধ পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গেল ৬ বছরে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার ৮০ শতাংশের জন্যই দায়ী রোহিঙ্গারা। ফলে উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা।

তারা বলেন, আমাদের ছোট শিশুরা স্কুল-মাদরাসায় যাচ্ছে কোন নিরাপত্তা ছাড়াই। কক্সবাজারের সমস্ত কিছু এখন রোহিঙ্গাদের দখলে চলে যাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে আমরা ঘর থেকে বের হতে পারবো কিনা সন্দেহে আছি। ফিলিস্তিনের মতো আমাদের অবস্থা হয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে।

এপিবিএন-এর তিনটি ব্যাটালিয়ন কাজ করলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছেনা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। ক্যাম্পে যেকোনো ঘটনায় অপরাধী শনাক্ত ও তদন্ত নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় পুলিশকে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের ডাকলে অনেক সময়ই তারা আমাদের সঠিক তথ্য দেন না। বেশিরভাগ সময়ই সাক্ষ্যগ্রহণে তাদের অনীহা আমরা পাই। ফলে মামলাগুলো তদন্ত বিঘ্নিত হয়।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, খাদ্যের সন্ধানে কিংবা কাজের সন্ধানে ক্যাম্প থেকে বেড়িয়ে আসার প্রচেষ্টা নিচ্ছে রোহিঙ্গারা। ফলে তারা আমাদের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। এতে আমাদের জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এবং তাদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়টি সামালা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি কঠিন বলে মত, স্থানীয়দের।

সারাবেলার সংবাদ/ এমএ এইচ/ ৩১ আগস্ট ২০২৩

Facebook Comments Box