ঢাকা ০৩:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে সরকার সফল হবে না: তারেক Logo স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে দেশ এখনও মুক্ত নয়: রিজভী Logo হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে যেভাবে ইসরায়েল খুঁজে বের করে হত্যা করেছে Logo সোনারগাঁওয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে যুবকের মৃত্যু Logo সংবাদ প্রকাশের পর বৃদ্ধা মহিলার ঠাই হলো স্বামীর বসত ভিটায় Logo সোনারগাঁয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি হালট দখল করে বালু ভরাট Logo ‘সংস্কারের ধীর গতি’ ও কাজের গুরুত্ব নির্ধারণ নিয়ে সমালোচনা, কী বলছেন উপদেষ্টারা? Logo আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু আজ Logo বাড়তে পারে ঈদ ও পূজার সরকারি ছুটি Logo আগামী বছর থেকে আবারও মাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন শুরু

নির্বাচনে নেই, ভোটের হার কমানোয় আছে বিএনপি

সারাবেলা প্রতিবেদন
  • আপডেট সময় : ১২:০৪:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ৫৪ বার পঠিত

আওয়ামী লীগসহ যেসব দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে টানতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে তারা৷

অন্যদিকে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে না যাবার সিদ্ধান্তে অটল বিএনপি এবং অন্য কিছু দলও মাঠে আছে, তবে তারা আছে অন্যভাবে৷

নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি বাড়াতে নির্বাচন কমিশনও মাঠে নেমেছে৷ রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিদের এজন্য কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে  জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান৷

বিএনপির স্থায়ী কসিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমানের কণ্ঠে বিপরীত সুর৷ তিনি বলেন, “৭ তারিখের নির্বাচন তো আগেই হয়ে গেছে৷ ভাগ করা হয়ে গেছে৷ আমরা আশা করছি কোনো ভোটার ওইদিন ভোট কেন্দ্রে যাবে না৷”

বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের চলমান অসহযোগ আন্দোলনের মূল লক্ষ্যই হলো ভোটাররা যাতে ভোট কেন্দ্রে না যান৷ শনিবার তিনদিনের কর্মসূচি শেষ হলে রবিবার থেকে দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি দেয়া হবে৷ এভাবে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে৷ ৭ জানুয়ারিও হরতাল অথবা অবরোধ থাকবে৷ তাদের টার্গেট হলো, নির্বাচনে যদি ভোটার উপস্থিতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে হয়, তাহলে সরকারবিরোধী আন্দোলন আরো চাঙ্গা হবে, বিদেশিদের চাপ আরো বাড়বে৷

ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, “৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আমাদের টানা কর্মসূচি থাকবে৷  আমাদের অনেক নেতা-কর্মী এখন জেলে৷ কিন্তু তারপরও নির্দেশনা হলো, নেতারা যারা বাইরে আছেন, তারা যেন সবাই কর্মসূচি সফলে কাজ করেন৷ ফলে চলমান কর্মসূচি আরো কঠোর হবে৷ আরো নেতা-কমী মাঠে থাকবে৷ নির্বাচনের পর নতুন আরো কর্মসূচি আসবে৷”

তিনি বলেন, ” সাত তারিখে ভোটার উপস্থিতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে যাতে হয়, আমাদের টার্গেট সেটাই৷ এর জন্য আমাদের কর্মসূচিসহ আরো কিছু কার্যক্রম থাকবে৷

জানা গেছে, বিএনপি এখন জামায়াতকে আরো সক্রিয় করতে চায়৷ জামায়াতকে একই মঞ্চে নিয়ে আন্দোলন করার পরিকল্পনাও তাদের আছে৷ দলে জামায়াতবিরোধীরা এখন কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন৷ বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, মাঠের আন্দোলনে জামায়াতের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷

এ ব্যাপারে নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, “আমরা আমাদের সমমনা কোনো দলকেই এখন আর দূরে রাখতে চাই না৷ যারা গণতন্ত্রের জন্য মাঠে আছে, তাদের সবার সঙ্গেই আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো৷”

আর বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন বলেন, “এটা কোনো নির্বাচন নয় ৷ তাই ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাবে না৷ ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আমাদের সব কর্মসূচিই থাকবে ভোটার যাতে ভোটকেন্দ্রে না যায় তার জন্য কাজ করা৷”

বিএনপি মনে করছে, ভোটার উপস্থিতি তেমন না হলে নির্বাচনের পর বাইরের বিশ্বের চাপ বাড়বে৷ তখন এই ধরনের একটি নির্বাচনের মাধ্যমে আসা সরকার বেশিদিন টিকতে পারবে না৷ নির্বাচনের পর পরিস্থিতি বুঝে তখন তারা আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে৷

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, “নির্বাচন ঠেকানো তো কঠিন ব্যাপার৷ নির্বাচন তো হয়ে গেছে৷ কারা কতটা সিট পাবে তা তো ভাগ করে দেয়া হয়েছে৷ আমাদের আন্দোলন হলো প্রকৃত নির্বাচনের জন্য৷ সেই নির্বাচন যখন হবে তখন জনগণ ভোট দেয়ার সুযোগ পাবে৷ এখন তো ভোটাররা ভোট দিতে যাবে না৷”
তার কথা, “আমরা তো গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছি৷ হরতাল, অবরোধ, অসহযোগ এর বাইরে তো কিছু করার সুযোগ নেই৷ সরকার যদি গ্রেপ্তার ও ভয়ভীতি না দেখাতো, সব মানুষ রাস্তায় নেমে আসতো৷ আমরা আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত রাখবো৷ সাত তারিখের পরও সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন চলবে৷”

অন্যদিকে সরকার এরই মধ্যে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি যাতে সন্তোষজনক হয়, সেজন্য কাজ করছে৷ আওয়ামী লীগ ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপাস্থিত করাকেই প্রধান চ্যালেঞ্জ মনে করছে৷ সেই কারণেই যাতে বেশি প্রার্থী হয়, সেজন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উৎসাহিত করা হয়েছে৷ বিদ্রোহী প্রার্থীদেরও উৎসাহিত করা হয়েছে৷ তারা মনে করছে, বেশি প্রার্থী হলে তারাই ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাবে৷ এর সঙ্গে এবার আইন-শৃঙ্খলার জন্য ভোটের বেশ আগেই সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার মাঠে নামানো হচ্ছে৷ নামবে বিজিবিও৷ কেউ যাতে ভোটে কোনো রকম বাধা না দিতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷

আর স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে আওয়ামী লীগের অনেক প্রার্থী চাপে থাকলেও এ ব্যাপারে দলীয় প্রার্থীদের কোনো ছাড় দিতে এখনো রাজি নন শেখ হাসিনা৷ জোট মহাজোটের প্রার্থীদেরও না৷ তিনি চাচ্ছেন সব প্রার্থী যাতে মাঠে থাকে৷ ভোটার উপস্থিতি যাতে সন্তোষজনক হয়৷

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, “বিএনপি বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য দল৷ স্বাভাবিকভাবে তারা নির্বাচনে না গেলে ভোটার উপস্থিতি কম হবে৷ আর সেই কারণে ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে যান সেজন্য নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটা ক্যাম্পেইন শুরু করেছি ‘গো ভোট’ নামে৷ এর উদ্দেশ্য হলো ভোটারকে ভেটকেন্দ্রে নেয়া৷ ভোট তিনি যেখানে খুশি সেখানে দেবেন৷ ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে, নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে৷” তার কথা, “নির্বাচনে স্বতন্ত্র, বিদ্রোহী সব মিলিয়ে বেশি প্রার্থীও ভোটার উপস্থিতি বাড়াানোর একটা কৌশল৷”
” আর কোনো দল বা ব্যক্তি যদি ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে না দেয়, বাধা বা হুমকি দেয়, তাদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে,” বলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা৷

নির্বাচন কমিশনও ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে বেশি আসেন, তার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে৷ নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, “আজকেও (শুক্রবার) এ নিয়ে আমরা বৈঠক করেছি৷ জেলার রিটার্নিং অফিসার, সহকারি রিটার্নিং অফিসারসহ জেলার ডিসি, এসপি ও থানার ওসিসহ আরো যারা নির্বাচনের কাজে আছেন, তাদের সবাইকে ভোটরদের ভোটকেন্দ্রে আসতে উৎসাহিত করতে বলা হয়েছে৷ তাদের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়েছে৷ জনপ্রনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করে তাদের ভোটার উপাস্থিতি বাড়াতে বলা হয়েছে৷ এছাড়া মাইকিং করা হচ্ছে৷ গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপনও যাবে৷ আমরা ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করবো৷”

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,” কারো নির্বাচনে না আসা, ভোট না দেয়া সেটা তার স্বাধীনতা৷ কিন্তু কাউকে ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দিলে, কোনোরকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি বা হুমকি দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ এটা মানুষের অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ৷”
 ডয়চে ভেলে
Facebook Comments Box
ট্যাগস :

নির্বাচনে নেই, ভোটের হার কমানোয় আছে বিএনপি

আপডেট সময় : ১২:০৪:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩

আওয়ামী লীগসহ যেসব দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে টানতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে তারা৷

অন্যদিকে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে না যাবার সিদ্ধান্তে অটল বিএনপি এবং অন্য কিছু দলও মাঠে আছে, তবে তারা আছে অন্যভাবে৷

নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি বাড়াতে নির্বাচন কমিশনও মাঠে নেমেছে৷ রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিদের এজন্য কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে  জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান৷

বিএনপির স্থায়ী কসিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমানের কণ্ঠে বিপরীত সুর৷ তিনি বলেন, “৭ তারিখের নির্বাচন তো আগেই হয়ে গেছে৷ ভাগ করা হয়ে গেছে৷ আমরা আশা করছি কোনো ভোটার ওইদিন ভোট কেন্দ্রে যাবে না৷”

বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের চলমান অসহযোগ আন্দোলনের মূল লক্ষ্যই হলো ভোটাররা যাতে ভোট কেন্দ্রে না যান৷ শনিবার তিনদিনের কর্মসূচি শেষ হলে রবিবার থেকে দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি দেয়া হবে৷ এভাবে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে৷ ৭ জানুয়ারিও হরতাল অথবা অবরোধ থাকবে৷ তাদের টার্গেট হলো, নির্বাচনে যদি ভোটার উপস্থিতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে হয়, তাহলে সরকারবিরোধী আন্দোলন আরো চাঙ্গা হবে, বিদেশিদের চাপ আরো বাড়বে৷

ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, “৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আমাদের টানা কর্মসূচি থাকবে৷  আমাদের অনেক নেতা-কর্মী এখন জেলে৷ কিন্তু তারপরও নির্দেশনা হলো, নেতারা যারা বাইরে আছেন, তারা যেন সবাই কর্মসূচি সফলে কাজ করেন৷ ফলে চলমান কর্মসূচি আরো কঠোর হবে৷ আরো নেতা-কমী মাঠে থাকবে৷ নির্বাচনের পর নতুন আরো কর্মসূচি আসবে৷”

তিনি বলেন, ” সাত তারিখে ভোটার উপস্থিতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে যাতে হয়, আমাদের টার্গেট সেটাই৷ এর জন্য আমাদের কর্মসূচিসহ আরো কিছু কার্যক্রম থাকবে৷

জানা গেছে, বিএনপি এখন জামায়াতকে আরো সক্রিয় করতে চায়৷ জামায়াতকে একই মঞ্চে নিয়ে আন্দোলন করার পরিকল্পনাও তাদের আছে৷ দলে জামায়াতবিরোধীরা এখন কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন৷ বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, মাঠের আন্দোলনে জামায়াতের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷

এ ব্যাপারে নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, “আমরা আমাদের সমমনা কোনো দলকেই এখন আর দূরে রাখতে চাই না৷ যারা গণতন্ত্রের জন্য মাঠে আছে, তাদের সবার সঙ্গেই আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো৷”

আর বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন বলেন, “এটা কোনো নির্বাচন নয় ৷ তাই ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাবে না৷ ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আমাদের সব কর্মসূচিই থাকবে ভোটার যাতে ভোটকেন্দ্রে না যায় তার জন্য কাজ করা৷”

বিএনপি মনে করছে, ভোটার উপস্থিতি তেমন না হলে নির্বাচনের পর বাইরের বিশ্বের চাপ বাড়বে৷ তখন এই ধরনের একটি নির্বাচনের মাধ্যমে আসা সরকার বেশিদিন টিকতে পারবে না৷ নির্বাচনের পর পরিস্থিতি বুঝে তখন তারা আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে৷

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, “নির্বাচন ঠেকানো তো কঠিন ব্যাপার৷ নির্বাচন তো হয়ে গেছে৷ কারা কতটা সিট পাবে তা তো ভাগ করে দেয়া হয়েছে৷ আমাদের আন্দোলন হলো প্রকৃত নির্বাচনের জন্য৷ সেই নির্বাচন যখন হবে তখন জনগণ ভোট দেয়ার সুযোগ পাবে৷ এখন তো ভোটাররা ভোট দিতে যাবে না৷”
তার কথা, “আমরা তো গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছি৷ হরতাল, অবরোধ, অসহযোগ এর বাইরে তো কিছু করার সুযোগ নেই৷ সরকার যদি গ্রেপ্তার ও ভয়ভীতি না দেখাতো, সব মানুষ রাস্তায় নেমে আসতো৷ আমরা আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত রাখবো৷ সাত তারিখের পরও সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন চলবে৷”

অন্যদিকে সরকার এরই মধ্যে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি যাতে সন্তোষজনক হয়, সেজন্য কাজ করছে৷ আওয়ামী লীগ ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপাস্থিত করাকেই প্রধান চ্যালেঞ্জ মনে করছে৷ সেই কারণেই যাতে বেশি প্রার্থী হয়, সেজন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উৎসাহিত করা হয়েছে৷ বিদ্রোহী প্রার্থীদেরও উৎসাহিত করা হয়েছে৷ তারা মনে করছে, বেশি প্রার্থী হলে তারাই ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাবে৷ এর সঙ্গে এবার আইন-শৃঙ্খলার জন্য ভোটের বেশ আগেই সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার মাঠে নামানো হচ্ছে৷ নামবে বিজিবিও৷ কেউ যাতে ভোটে কোনো রকম বাধা না দিতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷

আর স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে আওয়ামী লীগের অনেক প্রার্থী চাপে থাকলেও এ ব্যাপারে দলীয় প্রার্থীদের কোনো ছাড় দিতে এখনো রাজি নন শেখ হাসিনা৷ জোট মহাজোটের প্রার্থীদেরও না৷ তিনি চাচ্ছেন সব প্রার্থী যাতে মাঠে থাকে৷ ভোটার উপস্থিতি যাতে সন্তোষজনক হয়৷

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, “বিএনপি বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য দল৷ স্বাভাবিকভাবে তারা নির্বাচনে না গেলে ভোটার উপস্থিতি কম হবে৷ আর সেই কারণে ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে যান সেজন্য নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটা ক্যাম্পেইন শুরু করেছি ‘গো ভোট’ নামে৷ এর উদ্দেশ্য হলো ভোটারকে ভেটকেন্দ্রে নেয়া৷ ভোট তিনি যেখানে খুশি সেখানে দেবেন৷ ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে, নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে৷” তার কথা, “নির্বাচনে স্বতন্ত্র, বিদ্রোহী সব মিলিয়ে বেশি প্রার্থীও ভোটার উপস্থিতি বাড়াানোর একটা কৌশল৷”
” আর কোনো দল বা ব্যক্তি যদি ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে না দেয়, বাধা বা হুমকি দেয়, তাদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে,” বলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা৷

নির্বাচন কমিশনও ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে বেশি আসেন, তার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে৷ নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, “আজকেও (শুক্রবার) এ নিয়ে আমরা বৈঠক করেছি৷ জেলার রিটার্নিং অফিসার, সহকারি রিটার্নিং অফিসারসহ জেলার ডিসি, এসপি ও থানার ওসিসহ আরো যারা নির্বাচনের কাজে আছেন, তাদের সবাইকে ভোটরদের ভোটকেন্দ্রে আসতে উৎসাহিত করতে বলা হয়েছে৷ তাদের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়েছে৷ জনপ্রনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করে তাদের ভোটার উপাস্থিতি বাড়াতে বলা হয়েছে৷ এছাড়া মাইকিং করা হচ্ছে৷ গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপনও যাবে৷ আমরা ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করবো৷”

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,” কারো নির্বাচনে না আসা, ভোট না দেয়া সেটা তার স্বাধীনতা৷ কিন্তু কাউকে ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দিলে, কোনোরকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি বা হুমকি দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ এটা মানুষের অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ৷”
 ডয়চে ভেলে
Facebook Comments Box