ঢাকা ০৭:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

সৈয়দপুর রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ফের দখল

জহুরুল ইসলাম খোকন সৈয়দপুর থেকে
  • আপডেট সময় : ০২:৩৫:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪ ৭৭ বার পঠিত
সৈয়দপুরে রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাত্র ৪/৫ দিনের ব্যবধানে  সেগুলো আবার দখলে নিয়েছে দখলদাররা । উচ্ছেদ অভিযানের নামে এভাবেই চলছে ভাঙা-গড়ার খেলা। নিজেদের পকেট ভারী করতেই রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
অভিযোগে জানা গেছে,গত ৩রা মার্চ রোববার রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ১ নং রেলক্রসিং হতে ২ নং রেলক্রসিং  পর্যন্ত রেল লাইনের দু’ধারে গড়ে ওঠা প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। সৈয়দপুরের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. সুলতান মৃধা নেতৃত্বে রেলওয়ে থানা পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করে গত ৪ মার্চ। কিন্তু উচ্ছেদ অভিযানের পর ৪/৫ দিনের মাথায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ফের পুরনো চিত্রে রূপ নেয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে,  উচ্ছেদ করা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ জায়গায় অস্থায়ী দোকান বসিয়ে ফের ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। রেললাইনের দুইপাশ আগের সেই অবস্থাতেই ফিরে গেছে। এতে করে ঝুঁকি নিয়ে চলছে একাধিক ট্রেন। ক্ষমতাসীন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা, রেলওয়ের আসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রেল  পুলিশের  কারণেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
দুই নং রেলক্রসিং এলাকা থেকে  ফলের দোকান ও শীতবস্ত্রের দোকানসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল।
কিন্তু রেল কর্মকর্তা  সুলতান মৃধা চলে যাওয়ার পরপরই আবার ওই স্থান দখল হওয়া শুরু হয়ে যায়।  নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বললেন, ‘এখানকার কয়েকজন নেতা রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রেলওয়ে থানা পুলিশকে নিয়মিত টাকা দিতে হয়।’কারন আমরা গরীব মানুষ। দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করার সামর্থ নেই আমার। একারনে তাদের মাসিক কিছু দিয়ে রেললাইন সংলগ্ন ব্যবসা করেছি। কয়েক দিন আগে এই এলাকার ব্যবসায়িদের কাছে বেশি টাকা দাবী করেন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও কয়েকজন রেল পুলিশ। তাদের দাবী কৃত অর্থ দিতে না পারায় আমাদের দোকানপাট গুড়িয়ে দেয়া হয়।
রেলওয়ে শ্রমিক লীগের এক নেতা বলেন, সারা সৈয়দপুরে রয়েছে রেলওয়ের প্রায় সারে ৮ শ একর সম্পত্তি। এরমধ্যে গরীবের চেয়ে বড়লোকরাই বেশি রেলওয়ের জমি অবৈধ ভাবে দখল করে ঘরবাড়ি ও মার্কেট নির্মাণ করে আছেন। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপই নেন না। কারন অর্থ বানিজ্য। গরীবরা তাদের দাবীকৃত অর্থ দিতে পারে না বলেই বার বার তাদের উচ্ছেদ করা হয়। তাছাড়া সামনে রমজান ও পবিত্র ঈদে টাকার দরকার আছে বলেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
রেলওয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন কারখানা শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রোবায়েতুর রহমান বলেন, রেলপথ বিভাগের মনোভাবের কারণে রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছেন অনেকেই এবং ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন।
সৈয়দপুরের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. সুলতান মৃধা বলেন অভিযান অব্যাহত থাকবে। উপর মহলের নির্দেশ পেলে আগামীতে রেললাইন সংলগ্ন অবৈধভাবে কোন দোকান পাটই নির্মান করতে দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।
Facebook Comments Box
ট্যাগস :

সৈয়দপুর রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ফের দখল

আপডেট সময় : ০২:৩৫:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪
সৈয়দপুরে রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাত্র ৪/৫ দিনের ব্যবধানে  সেগুলো আবার দখলে নিয়েছে দখলদাররা । উচ্ছেদ অভিযানের নামে এভাবেই চলছে ভাঙা-গড়ার খেলা। নিজেদের পকেট ভারী করতেই রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
অভিযোগে জানা গেছে,গত ৩রা মার্চ রোববার রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ১ নং রেলক্রসিং হতে ২ নং রেলক্রসিং  পর্যন্ত রেল লাইনের দু’ধারে গড়ে ওঠা প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। সৈয়দপুরের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. সুলতান মৃধা নেতৃত্বে রেলওয়ে থানা পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করে গত ৪ মার্চ। কিন্তু উচ্ছেদ অভিযানের পর ৪/৫ দিনের মাথায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ফের পুরনো চিত্রে রূপ নেয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে,  উচ্ছেদ করা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ জায়গায় অস্থায়ী দোকান বসিয়ে ফের ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। রেললাইনের দুইপাশ আগের সেই অবস্থাতেই ফিরে গেছে। এতে করে ঝুঁকি নিয়ে চলছে একাধিক ট্রেন। ক্ষমতাসীন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা, রেলওয়ের আসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রেল  পুলিশের  কারণেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
দুই নং রেলক্রসিং এলাকা থেকে  ফলের দোকান ও শীতবস্ত্রের দোকানসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল।
কিন্তু রেল কর্মকর্তা  সুলতান মৃধা চলে যাওয়ার পরপরই আবার ওই স্থান দখল হওয়া শুরু হয়ে যায়।  নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বললেন, ‘এখানকার কয়েকজন নেতা রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রেলওয়ে থানা পুলিশকে নিয়মিত টাকা দিতে হয়।’কারন আমরা গরীব মানুষ। দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করার সামর্থ নেই আমার। একারনে তাদের মাসিক কিছু দিয়ে রেললাইন সংলগ্ন ব্যবসা করেছি। কয়েক দিন আগে এই এলাকার ব্যবসায়িদের কাছে বেশি টাকা দাবী করেন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও কয়েকজন রেল পুলিশ। তাদের দাবী কৃত অর্থ দিতে না পারায় আমাদের দোকানপাট গুড়িয়ে দেয়া হয়।
রেলওয়ে শ্রমিক লীগের এক নেতা বলেন, সারা সৈয়দপুরে রয়েছে রেলওয়ের প্রায় সারে ৮ শ একর সম্পত্তি। এরমধ্যে গরীবের চেয়ে বড়লোকরাই বেশি রেলওয়ের জমি অবৈধ ভাবে দখল করে ঘরবাড়ি ও মার্কেট নির্মাণ করে আছেন। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপই নেন না। কারন অর্থ বানিজ্য। গরীবরা তাদের দাবীকৃত অর্থ দিতে পারে না বলেই বার বার তাদের উচ্ছেদ করা হয়। তাছাড়া সামনে রমজান ও পবিত্র ঈদে টাকার দরকার আছে বলেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
রেলওয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন কারখানা শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রোবায়েতুর রহমান বলেন, রেলপথ বিভাগের মনোভাবের কারণে রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছেন অনেকেই এবং ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন।
সৈয়দপুরের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. সুলতান মৃধা বলেন অভিযান অব্যাহত থাকবে। উপর মহলের নির্দেশ পেলে আগামীতে রেললাইন সংলগ্ন অবৈধভাবে কোন দোকান পাটই নির্মান করতে দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।
Facebook Comments Box