ঢাকা ০৪:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে নির্বাচন কমিশন গঠন Logo সোনারগাঁয়ে গাজাঁ ও ফেনসিডিলসহ আটক-৪ Logo স্বপ্ন পূরণ হলো না মৌলভীবাজারের লিটনের ! বেলারুশ সীমান্তে পিটিয়ে হত্যা তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: স্বপ্ন পূরণে ইচ্ছা ছিল জার্মানিতে গিয়ে উন্নত জীবনযাপনের মাধ্যমে স্বপ্নের বাস্তবতা হাসিল করার অদম্য সাহস ছিল লিটন চৌধুরীর। সেই দেশে যেতে বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিসহ কয়েকজন অভিবাসন-প্রত্যাশী পোল্যান্ড পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। তাদের পুশব্যাক করা হয়। কিন্তু বেলারুশেও তারা ঢুকতে পারেননি। দুই দেশের সীমান্তে গভীর জঙ্গলে বহু কষ্টে দিন কাটছিল তাদের। গত সোমবার স্থানীয় সময় রাতে স্বজনেরা জানতে পারেন, লিটনসহ ১৫ জন অভিবাসী পুলিশের পিটুনিতে মারা গেছেন। বেলারুশের একটি হাসপাতালের মর্গে তাদের লাশ রাখা হয়েছে। এ খবরে লিটনের পরিবারে মাতম শুরু হয়। লিটন চৌধুরী (৩৫) মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সদরের জাঙ্গিরাই এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত মোশারফ হোসেন চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ ছেলে। তার মা, এক ভাই, স্ত্রী ও তিন শিশুসন্তান রয়েছে। লিটন এর আগে দুবাইয়ে থাকতেন। লিটনদের বাড়িতে, একটি কক্ষে তার মা ও স্ত্রী আহাজারি করছেন। স্বজনেরা তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, লিটনের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে একটি কিন্ডারগার্টেনে পঞ্চম ও মেয়ে একই প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ছেলের বয়স মাত্র দুই বছর। লিটনের ছোট ভাই নোমান চৌধুরী ইতালিতে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বসবাস করছেন। বৈধ না হওয়ায় দেশে ফিরতে পারছেন না। স্বজনেরা বলেন, লিটনদের পরিবার অনেকটা সচ্ছল। দুবাইয়ের জীবন লিটনের ভালো লাগত না। ইউরোপে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের স্বপ্ন দেখতেন তিনি। লিটনের স্ত্রীর বড় ভাই শাহিন আহমদ বলেন, মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে বছরখানেক আগে লিটন দুবাই থেকে দেশে ফেরেন। মায়ের চিকিৎসা করান। মা সুস্থ হওয়ার কয়েক মাস পর দুবাইয়ে ফিরে যান। দুবাইয়ে গিয়ে রাশিয়ায় বসবাসকারী ম্যাক্স নামের এক দালালের মাধ্যমে জার্মানিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। এ কাজের জন্য ম্যাক্স ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। ম্যাক্সের বাড়ি নোয়াখালী। প্রকৃত নাম অন্য কিছু হলেও দুবাইয়ে ওই নামেই তিনি পরিচিত। শাহিন বলেন, সিলেটের বিয়ানীবাজারে নজরুল ইসলাম নামের এক গাড়ি ব্যবসায়ী ম্যাক্সের আত্মীয়। নজরুলের কাছে তাঁরা টাকা জমা দেন। এ সময় একটি চুক্তিনামাও করা হয়। জার্মানিতে পাঠাতে না পারলে সব টাকা ফেরতের কথাও চুক্তিনামায় উল্লেখ করা হয়। সেপ্টেম্বরে লিটন রাশিয়া হয়ে বেলারুশে যান। এরপর বেলারুশের সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে পৌঁছালে পুলিশ তাঁকেসহ আরও কয়েকজনকে ধরে ফেলে। তাদের সীমান্ত দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। বেলারুশের পুলিশ তাঁদের ঢুকতে বাঁধা দেয়। এ পরিস্থিতিতে দুই দেশের সীমান্তে জঙ্গলে তাঁরা দিন কাটান। শাহিন বলেন, সর্বশেষ ৭ই অক্টোবর লিটন তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভয়েস মেসেজ পাঠান। ওই ভয়েস মেসেজে লিটন বলেন, তিনি জঙ্গলে খুব কষ্টে আছেন। খাবার নেই, পানি নেই। তাঁর একটি পা ভেঙে গেছে। লিটন ম্যাক্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত তাকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে বলেন। পরে তিনি (শাহিন আহমেদ) ম্যাক্সের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ করলে তিনি শুধু আশ্বাস দিতে থাকেন। কিছুদিন পর লিটনের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। লিটনের খোঁজ না পাওয়ায় চিন্তিত ছিল তার পরিবার। এই বিষয়ে শাহিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে লিটনের খোঁজখবর না পাওয়ায় তারা উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাতে থাকেন। সম্প্রতি তারা বেলারুশ সীমান্তের একটি ভিডিও পান। ভিডিওটি স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের। ওই ভিডিওতে দাবি করা হয়, সীমান্তে ১৫ জন অভিবাসীকে পোল্যান্ড পুলিশ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এর মধ্যে চেহারা, পরনের টি-শার্ট ও প্যান্ট দেখে তারা লিটনের লাশ শনাক্ত করেন। কিন্তু তাতেও তাঁরা পুরোপুরি নিশ্চিত হননি। শাহিন বলেন, বিভিন্ন সূত্রের ভিত্তিতে বেলারুশে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি চিকিৎসকের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করেন। ওই চিকিৎসক বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্প ও হাসপাতালে খোঁজ নেন। একপর্যায়ে একটি হাসপাতালের মর্গে লিটনের লাশ পান। সোমবার রাত আটটার দিকে চিকিৎসক লিটনের লাশের ছবি তাদের কাছে পাঠান। এতে তাঁরা নিশ্চিত হন লিটন মারা গেছেন। শাহিন বলেন, লিটনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পর তারা ম্যাক্স ও নজরুলের সঙ্গে কথা বলেন। লাশ ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তাদের সহায়তা চান। কিন্তু তারা কোনো সহায়তা করেননি। ম্যাক্সের আসল পরিচয় উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা চলছে। তারা ম্যাক্স ও নজরুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেবেন। শাহিন বলেন, লিটনের লাশ দেশে আনা হবে কি না, সে বিষয়ে তাঁরা পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ বিষয়ে কুলাউড়া সার্কেলের (কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান গনমাধ্যমে বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। Logo সৌদিতে ফ্যাশন শো নিয়ে ইসলামী পণ্ডিতদের ক্ষোভের যত কারণ Logo প্রতারণার অভিযোগে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে আমেরিকার আদালতে মামলা Logo ট্রাইব্যুনালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক কর্তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হলো Logo ভাঙ্গুড়া প্রেস ক্লাবের অবৈধ কমিটি বাতিলের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান Logo মৌলভীবাজার পূজা উদযাপন পরিষদের সম্পাদক মহিম গ্রেপ্তার Logo পাবনার আমিনপুরে ইজিবাইক-মোটর সাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ Logo সেনাকুঞ্জে যাবেন খালেদা জিয়া

সৈয়দপুরে প্রভাব খাটিয়ে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৩:০২:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ০ বার পঠিত

oppo_2

নীলফামারীর সৈয়দপুরে জনসাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের জমিতে লাগানো মূল্যবান অর্ধশতাধি মেহগনি গাছ কর্তনের অভিযোগ উঠেছে সাবেক পৌর কাউন্সিলর আবিদ হোসেন লাড্ডানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পত্র বিভিন্ন দপ্তরে দিয়ে ও কার্যকর ব্যবস্হা না নেয়ায় ফুঁসে ওঠেছে এলাকাবাসী।
জানা যায় , শহরের নিয়ামতপুর মৌজায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২ একর ১৫ শতক জমিতে প্রায় সহস্রাধিক মেহগনি গাছ রয়েছে।
সেখানে পানি ট্যাংকি নির্মাণ করা হয় নাগরিকদের সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য। তার দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয় সৈয়দপুর পৌরসভাকে। ১৯৯৫ সালের বিএস জরিপ চলাকালে মাঠ জরিপকারীদের সাথে যোগ সাজেশ করে পৌরসভার নামে রেকর্ড ভুক্ত করে পৌর কর্তৃপক্ষ । জমিটি পৌরসভার জমি বলে প্রচার চালানো হয় । তৎকালীন পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার ভজে ওই জমিতে পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণের প্রক্রিয়া চালায় । বাগানের ২ কোটি টাকা মূল্যের মেহগনি গাছ মাত্র ১৬ লাখ টাকায় নিলামের মাধ্যমে ২০২০ এর মে মাসে বিক্রি করে দেন ।
ক্রেতা মাহবুবার রহমান পাঁচ দিনের সময়ে গাছ অপসরণে ব্যর্থ হয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাঁধায়। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে পৌরসভা ও জনস্বাস্থ্যের মামলা চলমান রয়েছে আদালতে । গত বছর ও গাছ কাটার চেষ্টা করে আবারো ব্যর্থ হন ওই ক্রেতা । আগষ্টে গণঅভ্যুত্থানের সুযোগ নিয়ে সাবেক পৌর কমিশনার আবিদ হোসেন লাড্ডানের সহযোগিতায় আবারও গাছ কাটতে থাকেন ওই ঠিকাদার ওইসময় এলাকাবাসীর বাঁধার মুখেও গাছ কর্তন অব্যাহত রাখে । কাউন্সিল আবেদ হোসেন লাড্ডান নিজেকে বিএনপির নেতা পরিচয়ে ২০-২৫ টি গাছ মেহগনি গাছ কেটে নিয়ে যায় , যার বর্তমান বাজার মূল্য অর্ধকোটি টাকা ।
এ ব্যাপারে কথা হয় নীলফামারী জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশলী মুরাদ হোসেনের সাথে তিনি জানান , বিষয়টি আমি জেনেছি , তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
সৈয়দপুর বন বিভাগের কর্মকর্তা সাহিরুল জানান ওই জনস্বাস্হ্য প্রোকৌশল অধিদপ্তরের গাছ কাটার কোন অনুমোদন কাউকেই দেওয়া হয়নি ।

সাবেক কাউন্সিলর আবিদ হোসেন লাড্ডান জানান , ২০২০ সালে টেন্ডারের মাধ্যমে গাছ কেনা হয়েছে। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ বাধা দেওয়ায় গাছ কাটা সম্ভব হয়নি । দেশের পট পরিবর্তনের কারণে এখন কাটছি আমার সাথে সাবেক কাউন্সিলর জোবায়দুল মিন্টু রয়েছে ।
এলাকাবাসী সফিয়ার জানান হঠাৎ করে সাবেক কাউন্সিলর লাড্ডান ও মিন্টু গাছ কাটার লোক এনে মেশিন দিয়ে গাছ কাটতে থাকেন । তখন আমরা বাধা দেই এবং গাছ কাটার বৈধ কাগজ দেখতে চাই । তারা মুখে বলেন আগের টেন্ডার গাছ নিয়ে কাটছি কিন্তু কোন কাগজ দেখাতে পারেনি । তাই আমরা গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছি । তারপরও প্রভাব খাটিয়ে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের ২০ ২৫ টি গাছ কেটে নিয়ে যায় ।
এলাকাবাসী আরো জানায় এখানকার গাছ ও জমি অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে । যেকোনো সময়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তা প্রভাবশালীদের আয়ত্তে চলে যেতে পারে । তাই জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে অনুরোধ জমি ও গাছ সুরক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী করা হচ্ছে।
এবিষয়ে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসক নুর-ই আলম সিদ্দিক বলেন, গাছগুলো টেন্ডারে দেয়া হয়েছে জানতে পেরেছি। তবে কতটা বৈধতা রয়েছে তা বলতে পারবো না। কারন আমি সদ্য পৌরসভার প্রসাশকের দায়িত্ব পালন করছি।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

স্বপ্ন পূরণ হলো না মৌলভীবাজারের লিটনের ! বেলারুশ সীমান্তে পিটিয়ে হত্যা তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: স্বপ্ন পূরণে ইচ্ছা ছিল জার্মানিতে গিয়ে উন্নত জীবনযাপনের মাধ্যমে স্বপ্নের বাস্তবতা হাসিল করার অদম্য সাহস ছিল লিটন চৌধুরীর। সেই দেশে যেতে বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিসহ কয়েকজন অভিবাসন-প্রত্যাশী পোল্যান্ড পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। তাদের পুশব্যাক করা হয়। কিন্তু বেলারুশেও তারা ঢুকতে পারেননি। দুই দেশের সীমান্তে গভীর জঙ্গলে বহু কষ্টে দিন কাটছিল তাদের। গত সোমবার স্থানীয় সময় রাতে স্বজনেরা জানতে পারেন, লিটনসহ ১৫ জন অভিবাসী পুলিশের পিটুনিতে মারা গেছেন। বেলারুশের একটি হাসপাতালের মর্গে তাদের লাশ রাখা হয়েছে। এ খবরে লিটনের পরিবারে মাতম শুরু হয়। লিটন চৌধুরী (৩৫) মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সদরের জাঙ্গিরাই এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত মোশারফ হোসেন চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ ছেলে। তার মা, এক ভাই, স্ত্রী ও তিন শিশুসন্তান রয়েছে। লিটন এর আগে দুবাইয়ে থাকতেন। লিটনদের বাড়িতে, একটি কক্ষে তার মা ও স্ত্রী আহাজারি করছেন। স্বজনেরা তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, লিটনের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে একটি কিন্ডারগার্টেনে পঞ্চম ও মেয়ে একই প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ছেলের বয়স মাত্র দুই বছর। লিটনের ছোট ভাই নোমান চৌধুরী ইতালিতে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বসবাস করছেন। বৈধ না হওয়ায় দেশে ফিরতে পারছেন না। স্বজনেরা বলেন, লিটনদের পরিবার অনেকটা সচ্ছল। দুবাইয়ের জীবন লিটনের ভালো লাগত না। ইউরোপে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের স্বপ্ন দেখতেন তিনি। লিটনের স্ত্রীর বড় ভাই শাহিন আহমদ বলেন, মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে বছরখানেক আগে লিটন দুবাই থেকে দেশে ফেরেন। মায়ের চিকিৎসা করান। মা সুস্থ হওয়ার কয়েক মাস পর দুবাইয়ে ফিরে যান। দুবাইয়ে গিয়ে রাশিয়ায় বসবাসকারী ম্যাক্স নামের এক দালালের মাধ্যমে জার্মানিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। এ কাজের জন্য ম্যাক্স ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। ম্যাক্সের বাড়ি নোয়াখালী। প্রকৃত নাম অন্য কিছু হলেও দুবাইয়ে ওই নামেই তিনি পরিচিত। শাহিন বলেন, সিলেটের বিয়ানীবাজারে নজরুল ইসলাম নামের এক গাড়ি ব্যবসায়ী ম্যাক্সের আত্মীয়। নজরুলের কাছে তাঁরা টাকা জমা দেন। এ সময় একটি চুক্তিনামাও করা হয়। জার্মানিতে পাঠাতে না পারলে সব টাকা ফেরতের কথাও চুক্তিনামায় উল্লেখ করা হয়। সেপ্টেম্বরে লিটন রাশিয়া হয়ে বেলারুশে যান। এরপর বেলারুশের সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে পৌঁছালে পুলিশ তাঁকেসহ আরও কয়েকজনকে ধরে ফেলে। তাদের সীমান্ত দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। বেলারুশের পুলিশ তাঁদের ঢুকতে বাঁধা দেয়। এ পরিস্থিতিতে দুই দেশের সীমান্তে জঙ্গলে তাঁরা দিন কাটান। শাহিন বলেন, সর্বশেষ ৭ই অক্টোবর লিটন তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভয়েস মেসেজ পাঠান। ওই ভয়েস মেসেজে লিটন বলেন, তিনি জঙ্গলে খুব কষ্টে আছেন। খাবার নেই, পানি নেই। তাঁর একটি পা ভেঙে গেছে। লিটন ম্যাক্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত তাকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে বলেন। পরে তিনি (শাহিন আহমেদ) ম্যাক্সের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ করলে তিনি শুধু আশ্বাস দিতে থাকেন। কিছুদিন পর লিটনের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। লিটনের খোঁজ না পাওয়ায় চিন্তিত ছিল তার পরিবার। এই বিষয়ে শাহিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে লিটনের খোঁজখবর না পাওয়ায় তারা উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাতে থাকেন। সম্প্রতি তারা বেলারুশ সীমান্তের একটি ভিডিও পান। ভিডিওটি স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের। ওই ভিডিওতে দাবি করা হয়, সীমান্তে ১৫ জন অভিবাসীকে পোল্যান্ড পুলিশ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এর মধ্যে চেহারা, পরনের টি-শার্ট ও প্যান্ট দেখে তারা লিটনের লাশ শনাক্ত করেন। কিন্তু তাতেও তাঁরা পুরোপুরি নিশ্চিত হননি। শাহিন বলেন, বিভিন্ন সূত্রের ভিত্তিতে বেলারুশে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি চিকিৎসকের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করেন। ওই চিকিৎসক বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্প ও হাসপাতালে খোঁজ নেন। একপর্যায়ে একটি হাসপাতালের মর্গে লিটনের লাশ পান। সোমবার রাত আটটার দিকে চিকিৎসক লিটনের লাশের ছবি তাদের কাছে পাঠান। এতে তাঁরা নিশ্চিত হন লিটন মারা গেছেন। শাহিন বলেন, লিটনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পর তারা ম্যাক্স ও নজরুলের সঙ্গে কথা বলেন। লাশ ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তাদের সহায়তা চান। কিন্তু তারা কোনো সহায়তা করেননি। ম্যাক্সের আসল পরিচয় উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা চলছে। তারা ম্যাক্স ও নজরুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেবেন। শাহিন বলেন, লিটনের লাশ দেশে আনা হবে কি না, সে বিষয়ে তাঁরা পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ বিষয়ে কুলাউড়া সার্কেলের (কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান গনমাধ্যমে বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সৈয়দপুরে প্রভাব খাটিয়ে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৩:০২:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

নীলফামারীর সৈয়দপুরে জনসাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের জমিতে লাগানো মূল্যবান অর্ধশতাধি মেহগনি গাছ কর্তনের অভিযোগ উঠেছে সাবেক পৌর কাউন্সিলর আবিদ হোসেন লাড্ডানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পত্র বিভিন্ন দপ্তরে দিয়ে ও কার্যকর ব্যবস্হা না নেয়ায় ফুঁসে ওঠেছে এলাকাবাসী।
জানা যায় , শহরের নিয়ামতপুর মৌজায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২ একর ১৫ শতক জমিতে প্রায় সহস্রাধিক মেহগনি গাছ রয়েছে।
সেখানে পানি ট্যাংকি নির্মাণ করা হয় নাগরিকদের সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য। তার দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয় সৈয়দপুর পৌরসভাকে। ১৯৯৫ সালের বিএস জরিপ চলাকালে মাঠ জরিপকারীদের সাথে যোগ সাজেশ করে পৌরসভার নামে রেকর্ড ভুক্ত করে পৌর কর্তৃপক্ষ । জমিটি পৌরসভার জমি বলে প্রচার চালানো হয় । তৎকালীন পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার ভজে ওই জমিতে পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণের প্রক্রিয়া চালায় । বাগানের ২ কোটি টাকা মূল্যের মেহগনি গাছ মাত্র ১৬ লাখ টাকায় নিলামের মাধ্যমে ২০২০ এর মে মাসে বিক্রি করে দেন ।
ক্রেতা মাহবুবার রহমান পাঁচ দিনের সময়ে গাছ অপসরণে ব্যর্থ হয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাঁধায়। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে পৌরসভা ও জনস্বাস্থ্যের মামলা চলমান রয়েছে আদালতে । গত বছর ও গাছ কাটার চেষ্টা করে আবারো ব্যর্থ হন ওই ক্রেতা । আগষ্টে গণঅভ্যুত্থানের সুযোগ নিয়ে সাবেক পৌর কমিশনার আবিদ হোসেন লাড্ডানের সহযোগিতায় আবারও গাছ কাটতে থাকেন ওই ঠিকাদার ওইসময় এলাকাবাসীর বাঁধার মুখেও গাছ কর্তন অব্যাহত রাখে । কাউন্সিল আবেদ হোসেন লাড্ডান নিজেকে বিএনপির নেতা পরিচয়ে ২০-২৫ টি গাছ মেহগনি গাছ কেটে নিয়ে যায় , যার বর্তমান বাজার মূল্য অর্ধকোটি টাকা ।
এ ব্যাপারে কথা হয় নীলফামারী জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশলী মুরাদ হোসেনের সাথে তিনি জানান , বিষয়টি আমি জেনেছি , তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
সৈয়দপুর বন বিভাগের কর্মকর্তা সাহিরুল জানান ওই জনস্বাস্হ্য প্রোকৌশল অধিদপ্তরের গাছ কাটার কোন অনুমোদন কাউকেই দেওয়া হয়নি ।

সাবেক কাউন্সিলর আবিদ হোসেন লাড্ডান জানান , ২০২০ সালে টেন্ডারের মাধ্যমে গাছ কেনা হয়েছে। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ বাধা দেওয়ায় গাছ কাটা সম্ভব হয়নি । দেশের পট পরিবর্তনের কারণে এখন কাটছি আমার সাথে সাবেক কাউন্সিলর জোবায়দুল মিন্টু রয়েছে ।
এলাকাবাসী সফিয়ার জানান হঠাৎ করে সাবেক কাউন্সিলর লাড্ডান ও মিন্টু গাছ কাটার লোক এনে মেশিন দিয়ে গাছ কাটতে থাকেন । তখন আমরা বাধা দেই এবং গাছ কাটার বৈধ কাগজ দেখতে চাই । তারা মুখে বলেন আগের টেন্ডার গাছ নিয়ে কাটছি কিন্তু কোন কাগজ দেখাতে পারেনি । তাই আমরা গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছি । তারপরও প্রভাব খাটিয়ে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের ২০ ২৫ টি গাছ কেটে নিয়ে যায় ।
এলাকাবাসী আরো জানায় এখানকার গাছ ও জমি অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে । যেকোনো সময়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তা প্রভাবশালীদের আয়ত্তে চলে যেতে পারে । তাই জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে অনুরোধ জমি ও গাছ সুরক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী করা হচ্ছে।
এবিষয়ে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসক নুর-ই আলম সিদ্দিক বলেন, গাছগুলো টেন্ডারে দেয়া হয়েছে জানতে পেরেছি। তবে কতটা বৈধতা রয়েছে তা বলতে পারবো না। কারন আমি সদ্য পৌরসভার প্রসাশকের দায়িত্ব পালন করছি।

Facebook Comments Box