ঢাকা ০৯:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

সৈয়দপুরে অনুমোদন ছাড়াই চলছে ২৬টি ইটভাটা

সৈয়দপুর  (নীলফামারী) প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৪:০৩:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪ ৫৬ বার পঠিত

সৈয়দপুরে অনুমোদনহীন ইটভাটা

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন স্হানে গড়ে উঠেছে ২৬ টি ইটভাটা। এর মধ্যে ৩ টি ইটভাটা বন্ধ রয়েছে। গড়ে উঠা ওইসব ইটভাটার নেই কোন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। সরকারি অনুমোদন সহ নেই পরিবেশের কাগজপত্র।
সরেজমিন গিয়ে কাগজপত্রের কথা বললে ভাটার মালিকরা কাগজপত্র থাকার কথা বললেও তারা ট্রেড লাইসেন্স ও ফায়ার ব্রিগেডের লাইসেন্স দেখালেও সরকারি অনুমোদন ও পরিবেশের কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেন নাই।
নীলফামারী জেলা প্রশাসকের অফিস সুত্র জানায়, সৈয়দপুর উপজেলায় যতগুলো ইটভাটা রয়েছে তার একটির ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কাগজ ও সরকারি অনুমোদন নেই। ভাটার মালিকরা একপ্রকার প্রভাব খাটিয়ে নিরীহ কৃষকদের ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়। আর মাটি আনা নেয়ার জন্য যেসব ট্রাক বা ট্রাকটার ব্যবহার করছে, সেগুলি দিয়ে ফসলি জমি ও সরু সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অনেকের অভিযোগ।
উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জকনা যায়,প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র ছাড়াই একপ্রকার গায়ের জোড়ে ও প্রভাব খাটিয়ে ইটভাটা করায় প্রসাশনের পক্ষ থেকে ৩ টি ইটভাটা বন্ধ করে দেয়া হয়। আর বাকিগুলোর কাগজপত্র না থাকায় গত ২/৩ বছর আগে মোটা অংকের জরিমানা করা হয়।
একারনে অনেকেই মনে করেছিল ভাটার মালিকরা কাগজপত্র সংগ্রহ করবেন,একই সাথে সরকারের কোষাগারে জমা হবে মোটা অংকের রাজস্ব।কিন্তু ভাটার মালিকদের জরিমানা করার পরও টনক নড়েনি।উল্টো জরিমানা আদায়ের পর অদৃশ্য হাতের ইশারায় ইটভাটা চালুর নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন এর ইটভাটার মালিক আনিছুর রহমান জানান, প্রায় প্রতিটি ইটভাটার মালিক ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ইটভাটা গড়ে তুলেছেন। ভাটার কোন মালিকই চান না, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া ইটভাটা চালু রাখুক। কিন্তু সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে সরকারি অনুমোদন ও পরিবেশের ছাড়পত্রের জন্য বারবার আবেদন করে ও নিরাশ হতে হচ্ছে।
অথচ প্রতিটি ভাটার মালিক ইনকাম ট্যাক্স ও ভ্যাট প্রদান করছেন নিয়মিত। তিনি আরো বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে বৈধ কাগজ পত্র চেয়ে পাওয়া যাচ্ছে না, অথচ তারা প্রায় প্রতিবছরই নানা অজুহাত দেখিয়ে কোন না কোন ভাটায় অভিযান চালিয়ে মোটা অংকের জরিমানা করে চলেছেন।
তারা যদি কাগজপত্র ছাড়া  ইটভাটা করতে নাই দিবেন তাহলে বারবার আবেদন করেও কাগজ দিচ্ছেন না কেন,এবং জরিমানাই বা কেন করছেন।এর চেয়ে সৈয়দপুরের সব ইটভাটা বন্ধ করে দিলেই তো হয়। না তৈরি হবে ইট, না হবে ইটের বাড়ি। কাগজ পত্র না দিয়ে জরিমানা করে ভাটার মালিকদের পথে বসানোর কোন মানেই হয় না।
মাহাবুব আলম নামের অপর এক ইটভাটার মালিক জানান, যেসব ভাটার মালিকরা বৈধভাবে ব্যবসা করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছেন এবং তাদের দীর্ঘদিনেও কাগজ দেয়া হচ্ছে না, তাদের জরিমানা করা অমানবিক।
যারা কাগজপত্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেন নাই অন্যায় ভাবে ইট ভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা বা সিলগালা করলে আপত্তি থাকবেনা।কিন্তু যারা বৈধভাবে ব্যবসা করতে সরকারি অনুমোদন ও পরিবেশের ছাড়পত্র চেয়ে আবেদন করেছেন,তাদের হয়রানি না করে ভালোভাবে ব্যবসা করতে বাধা বা জরিমানা না করার অনুরোধ জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ঈসমাইল জানান,কোন কোন ইটভাটার কাগজ পত্র নাই,বা বৈধতা চেয়ে আবেদন করেন নাই আমরা সেগুলি খতিয়ে দেখছি। তাছাড়া যারা সঠিক মাপের বাইরে ইট তৈরি করছেন,এবং ফসলি জমিতে বা ফসলি জমির আশপাশে ইটভাটা স্হাপন করেছেন,তাদের বিরুদ্ধে ও ব্যবস্হা নেয়া হবে।
Facebook Comments Box
ট্যাগস :

সৈয়দপুরে অনুমোদন ছাড়াই চলছে ২৬টি ইটভাটা

আপডেট সময় : ০৪:০৩:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন স্হানে গড়ে উঠেছে ২৬ টি ইটভাটা। এর মধ্যে ৩ টি ইটভাটা বন্ধ রয়েছে। গড়ে উঠা ওইসব ইটভাটার নেই কোন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। সরকারি অনুমোদন সহ নেই পরিবেশের কাগজপত্র।
সরেজমিন গিয়ে কাগজপত্রের কথা বললে ভাটার মালিকরা কাগজপত্র থাকার কথা বললেও তারা ট্রেড লাইসেন্স ও ফায়ার ব্রিগেডের লাইসেন্স দেখালেও সরকারি অনুমোদন ও পরিবেশের কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেন নাই।
নীলফামারী জেলা প্রশাসকের অফিস সুত্র জানায়, সৈয়দপুর উপজেলায় যতগুলো ইটভাটা রয়েছে তার একটির ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কাগজ ও সরকারি অনুমোদন নেই। ভাটার মালিকরা একপ্রকার প্রভাব খাটিয়ে নিরীহ কৃষকদের ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়। আর মাটি আনা নেয়ার জন্য যেসব ট্রাক বা ট্রাকটার ব্যবহার করছে, সেগুলি দিয়ে ফসলি জমি ও সরু সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অনেকের অভিযোগ।
উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জকনা যায়,প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র ছাড়াই একপ্রকার গায়ের জোড়ে ও প্রভাব খাটিয়ে ইটভাটা করায় প্রসাশনের পক্ষ থেকে ৩ টি ইটভাটা বন্ধ করে দেয়া হয়। আর বাকিগুলোর কাগজপত্র না থাকায় গত ২/৩ বছর আগে মোটা অংকের জরিমানা করা হয়।
একারনে অনেকেই মনে করেছিল ভাটার মালিকরা কাগজপত্র সংগ্রহ করবেন,একই সাথে সরকারের কোষাগারে জমা হবে মোটা অংকের রাজস্ব।কিন্তু ভাটার মালিকদের জরিমানা করার পরও টনক নড়েনি।উল্টো জরিমানা আদায়ের পর অদৃশ্য হাতের ইশারায় ইটভাটা চালুর নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন এর ইটভাটার মালিক আনিছুর রহমান জানান, প্রায় প্রতিটি ইটভাটার মালিক ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ইটভাটা গড়ে তুলেছেন। ভাটার কোন মালিকই চান না, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া ইটভাটা চালু রাখুক। কিন্তু সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে সরকারি অনুমোদন ও পরিবেশের ছাড়পত্রের জন্য বারবার আবেদন করে ও নিরাশ হতে হচ্ছে।
অথচ প্রতিটি ভাটার মালিক ইনকাম ট্যাক্স ও ভ্যাট প্রদান করছেন নিয়মিত। তিনি আরো বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে বৈধ কাগজ পত্র চেয়ে পাওয়া যাচ্ছে না, অথচ তারা প্রায় প্রতিবছরই নানা অজুহাত দেখিয়ে কোন না কোন ভাটায় অভিযান চালিয়ে মোটা অংকের জরিমানা করে চলেছেন।
তারা যদি কাগজপত্র ছাড়া  ইটভাটা করতে নাই দিবেন তাহলে বারবার আবেদন করেও কাগজ দিচ্ছেন না কেন,এবং জরিমানাই বা কেন করছেন।এর চেয়ে সৈয়দপুরের সব ইটভাটা বন্ধ করে দিলেই তো হয়। না তৈরি হবে ইট, না হবে ইটের বাড়ি। কাগজ পত্র না দিয়ে জরিমানা করে ভাটার মালিকদের পথে বসানোর কোন মানেই হয় না।
মাহাবুব আলম নামের অপর এক ইটভাটার মালিক জানান, যেসব ভাটার মালিকরা বৈধভাবে ব্যবসা করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছেন এবং তাদের দীর্ঘদিনেও কাগজ দেয়া হচ্ছে না, তাদের জরিমানা করা অমানবিক।
যারা কাগজপত্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেন নাই অন্যায় ভাবে ইট ভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা বা সিলগালা করলে আপত্তি থাকবেনা।কিন্তু যারা বৈধভাবে ব্যবসা করতে সরকারি অনুমোদন ও পরিবেশের ছাড়পত্র চেয়ে আবেদন করেছেন,তাদের হয়রানি না করে ভালোভাবে ব্যবসা করতে বাধা বা জরিমানা না করার অনুরোধ জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ঈসমাইল জানান,কোন কোন ইটভাটার কাগজ পত্র নাই,বা বৈধতা চেয়ে আবেদন করেন নাই আমরা সেগুলি খতিয়ে দেখছি। তাছাড়া যারা সঠিক মাপের বাইরে ইট তৈরি করছেন,এবং ফসলি জমিতে বা ফসলি জমির আশপাশে ইটভাটা স্হাপন করেছেন,তাদের বিরুদ্ধে ও ব্যবস্হা নেয়া হবে।
Facebook Comments Box