সংবাদ শিরোনাম :
সৈয়দপুরের উৎপাদিত শুটকি যাচ্ছে ভারতসহ মধ্যপ্রাচ্য
মোঃ জহুরুল ইসলাম খোকন সৈয়দপুর( নীলফামারী) প্রতিনিধি
- আপডেট সময় : ০৫:২০:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ৬৯ বার পঠিত
নীলফামারীর সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন শুটকি ব্যবসায়ি পল্লীতে শুরু হয়েছে শুঁটকি মাছ কেনাবেচার ধুম। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাঁচা শুটকি মাছ সংগ্রহ করার পর সেগুলো ভালো ভাবে শুকিয়ে উত্তরাঞ্চল সহ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে ও রপ্তানি করছেন ব্যবসায়িরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দেশ স্বাধীনের ৫/৭ বছর পর পাবনা, সিরাজগঞ্জ, খুলনা, চট্টগ্রাম সহ দেশের প্রায় শতাধিক শুটকি মাছ ব্যবসায়ি পরিবার সৈয়দপুরের বাস টার্মিনাল সংলগ্ন সববাস শুরু করেন। এরপর ১৯৮০ সালের পর এখানেই শুরু করেন শুটকি মাছের ব্যবসা। তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাঁচা শুটকি মাছ সংগ্রহ করা শুরু করেন। এরপর প্রতিবছর আশ্বিন মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত আমদানিকৃত কাঁচা শুটকি মাছ শুকানোর কাজ করেন।
শোল বোয়াল,গজার,ট্যাংরা, পুটি, বাইলা,বাইম,ছুরি, লইট্টা,টাকি সহ শতাধিক প্রকৃতির মাছ শুকিয়ে শুটকি করা হয় এখানে।একেকজন ব্যবসায়ি মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত পুঁজি লাগিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন। যাদের পুঁজি নাই তারাও সুদ ব্যবসায়িদের কাছে চড়া সুদে পুজি সংগ্রহ করেন ব্যবসা করার জন্য।
মাসুদ নামের এক শুটকি মাছ ব্যবসায়ি জানান,প্রতিবছর তাদের শুটকি পল্লীতে দুই থেকে তিন লাখ মন এর কাঁচা শুটকি মাছ আমদানি করা হয়। শুঁটকি করার পর সেগুলো সংরক্ষণের অভাব সহ পুঁজি স্বল্পতায় মাঝে মধ্যে কম মুনাফায় শুঁটকি মাছ বিক্রি করা হচ্ছে ফরেয়া বা ভ্রাম্যমান ব্যবসায়িদের কাছে। এতে তাঁরা প্রতি মৌসুমে লাখ লাখ টাকার মালিক হলেও আমদানিকারকরা দেনা গ্রস্ত হয়ে ব্যবসা ছেড়ে দেয়ার কথা বলছেন।
শুঁটকি মাছ ব্যবসায়ি চুন্নু মুনু, চাঁন ও বারেক সহ অনেক ব্যবসায়ি জানান,আগের মতো আর মাছ পাওয়া যায় না। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মাছ করতে এখন অনেক বেশি পুজির প্রয়োজন হয়।কারন মাছের দাম আগের চেয়ে অনেক বেশি। তাছাড়া ব্যবসায়িদের পুজি সংকট দেখা দিলে অনেক ব্যাংক শুঁটকি মাছ ব্যবসায়িদের লোন দিতে চান না। যার কারনে সুদ ব্যবসায়িদের কাছেই চড়া সুদে পুজি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। তারা বলেন, সরকার যদি শুঁটকি মাছ ব্যবসায়িদের কম লাভে ব্যাংক থেকে লোন দিতো তাহলে দেশের আনাচে-কানাচে থেকে মাছ সংগ্রহ করে এবং শুঁটকি বানিয়ে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে পারতো।
বর্তমানে তাঁরা তাদের উৎপাদিত শুটকি মাছ দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারতসহ ৪টি দেশে নিয়মিত রপ্তানি করছেন বলে জানান। শুধু মাত্র শুঁটকি সংরক্ষণের স্হান ও কম লাভে ব্যাংক লোন পেলেই শুটকি ব্যবসায়িরা তাদের শুটকি উৎপাদন বাড়াতে পারবে।এতে একদিকে লাভবান হবেন ব্যবসায়ি অন্য দিকে সরকার পাবেন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। শুধু মাত্র পুঁজি সংকটের অনেক ব্যবসায়ি তাদের ব্যবসায় লস খেয়ে ব্যবসা ছাড়ার চিন্তা ভাবনা করছেন।
শুঁটকি মাছ ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি আবুল বাসার বলেন, সৈয়দপুরে শুটকি মাছের আড়ত গড়ে উঠায় হাজারো পরিবারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এতে কমে গেছে বেকারত্ব। পুঁজি সংকটে ব্যবসায়িরা পথে বসলে শুটকি আড়তে কর্মরত অনেকেই পুনরায় বেকার হয়ে যাবেন। শুঁটকি মাছ ব্যবসায়িসহ কর্মরতদের কথা চিন্তা করে কম লাভে ব্যাংক লোনের সুবিধা দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
Facebook Comments Box