ঢাকা ০৭:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

সালিশী বৈঠক চলাকালে কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা

 কুমিল্লা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৭:১২:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩ ৬৮ বার পঠিত
একদিকে প্রেমিকের কাছে প্রতারিত, অন্যদিকে গ্রাম্য সালিশে উপস্থিত মাতবরদের অশালীন কুরুচিপূর্ণ কথা শুনে সহ্য করতে না পেরে সালিশ চলাকালে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক কলেজছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের আলিকামোড়া গ্রামে। নিহত আমেনা আক্তার কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আলিকামোড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে ও চান্দিনা মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী । এ ঘটনায় নিহতের পিতা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে প্রেমিক গাজী বিল্লালও গ্রাম্য মাতবরসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা  আরও ৫ জনকে আসামি করে শুক্রবার চান্দিনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
থানায় মামলা ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়,কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আলিকামোড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে কলেজ পড়ুয়া  আমেনা আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের হাসেম প্রধানের ছেলে গাজী বিল্লাল হোসেনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে উঠে। সম্প্রতি আমেনা আক্তারের পরিবার তার বিয়ে ঠিক করায় তাতে অসম্মতি জানিয়ে নিজের প্রেমের কথা জানায়। পরে ওই বিয়ে ভেঙ্গে যায়।
পরবর্তীতে আমেনা তার প্রেমিক বিল্লালকে বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে প্রেমিক বিল্লাল আমেনার সঙ্গে প্রতারণা শুরু করে । বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা রকম গুঞ্জন সৃষ্টি হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে একই গ্রামের দুই পরিবারের মাঝামাঝি আনোয়ার খন্দকারের বাড়িতে সালিশের আয়োজন করে।
ওই সালিশে ছেলের পরিবারের লোকজন এবং বেশ কয়েকজন মাতবর ছেলের পক্ষ নিয়ে কুৎসা রটিয়ে মেয়েকে আপত্তিকর কথা শোনায়। এসব সহ্য করতে না পেরে সালিশ চলাকালে ওই কলেজছাত্রী  নিজ বাড়িতে গিয়ে ফ্যানের সঙ্গে  ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
নিহতের বড় ভাই ফারুক হোসেন জানান, আমরা গরিব, আর তারা (ছেলের পরিবার) বড় লোক। এই কারণে আমার বোনের প্রেম মেনে না নিয়ে উল্টো আমার বোনকে অকথ্য ভাষায় কথা বলে অপমানিত করেন তারা। আর মাতবররাও পক্ষপাতিত্ব করে যা-তা কথা বলে টাকার বিনিময়ে আমার বোনের প্রেমের সম্পর্ক ছিন্ন করার চেষ্টা করছিলেন।
এসব কিছুই সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে আমার বোন। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। বিষয়টি জানতে অভিযুক্ত প্রেমিক গাজী বিল্লালের বাড়িতে গিয়ে যোগাযোগ করতে চাইলে তারা আত্মগোপনে থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে মাইজখার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ সেলিম প্রধান জানান, দুইজনের মধ্যে প্রেম ও বেশ কয়েকজন মাতবরের কুৎসা রটানোর ঘটনা সত্য বলে আমি জেনেছি। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার ওসি মো. সাহাবুদ্দীন খান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্ত শেষে মামলা নিয়েছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সারাবেলার সংবাদ/ এমএএইচ/ ৭ অক্টোবর ২০২৩
Facebook Comments Box
ট্যাগস :

সালিশী বৈঠক চলাকালে কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা

আপডেট সময় : ০৭:১২:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩
একদিকে প্রেমিকের কাছে প্রতারিত, অন্যদিকে গ্রাম্য সালিশে উপস্থিত মাতবরদের অশালীন কুরুচিপূর্ণ কথা শুনে সহ্য করতে না পেরে সালিশ চলাকালে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক কলেজছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের আলিকামোড়া গ্রামে। নিহত আমেনা আক্তার কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আলিকামোড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে ও চান্দিনা মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী । এ ঘটনায় নিহতের পিতা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে প্রেমিক গাজী বিল্লালও গ্রাম্য মাতবরসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা  আরও ৫ জনকে আসামি করে শুক্রবার চান্দিনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
থানায় মামলা ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়,কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আলিকামোড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে কলেজ পড়ুয়া  আমেনা আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের হাসেম প্রধানের ছেলে গাজী বিল্লাল হোসেনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে উঠে। সম্প্রতি আমেনা আক্তারের পরিবার তার বিয়ে ঠিক করায় তাতে অসম্মতি জানিয়ে নিজের প্রেমের কথা জানায়। পরে ওই বিয়ে ভেঙ্গে যায়।
পরবর্তীতে আমেনা তার প্রেমিক বিল্লালকে বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে প্রেমিক বিল্লাল আমেনার সঙ্গে প্রতারণা শুরু করে । বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা রকম গুঞ্জন সৃষ্টি হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে একই গ্রামের দুই পরিবারের মাঝামাঝি আনোয়ার খন্দকারের বাড়িতে সালিশের আয়োজন করে।
ওই সালিশে ছেলের পরিবারের লোকজন এবং বেশ কয়েকজন মাতবর ছেলের পক্ষ নিয়ে কুৎসা রটিয়ে মেয়েকে আপত্তিকর কথা শোনায়। এসব সহ্য করতে না পেরে সালিশ চলাকালে ওই কলেজছাত্রী  নিজ বাড়িতে গিয়ে ফ্যানের সঙ্গে  ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
নিহতের বড় ভাই ফারুক হোসেন জানান, আমরা গরিব, আর তারা (ছেলের পরিবার) বড় লোক। এই কারণে আমার বোনের প্রেম মেনে না নিয়ে উল্টো আমার বোনকে অকথ্য ভাষায় কথা বলে অপমানিত করেন তারা। আর মাতবররাও পক্ষপাতিত্ব করে যা-তা কথা বলে টাকার বিনিময়ে আমার বোনের প্রেমের সম্পর্ক ছিন্ন করার চেষ্টা করছিলেন।
এসব কিছুই সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে আমার বোন। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। বিষয়টি জানতে অভিযুক্ত প্রেমিক গাজী বিল্লালের বাড়িতে গিয়ে যোগাযোগ করতে চাইলে তারা আত্মগোপনে থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে মাইজখার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ সেলিম প্রধান জানান, দুইজনের মধ্যে প্রেম ও বেশ কয়েকজন মাতবরের কুৎসা রটানোর ঘটনা সত্য বলে আমি জেনেছি। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার ওসি মো. সাহাবুদ্দীন খান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্ত শেষে মামলা নিয়েছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সারাবেলার সংবাদ/ এমএএইচ/ ৭ অক্টোবর ২০২৩
Facebook Comments Box