ঢাকা ১২:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে সরকার সফল হবে না: তারেক Logo স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে দেশ এখনও মুক্ত নয়: রিজভী Logo হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে যেভাবে ইসরায়েল খুঁজে বের করে হত্যা করেছে Logo সোনারগাঁওয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে যুবকের মৃত্যু Logo সংবাদ প্রকাশের পর বৃদ্ধা মহিলার ঠাই হলো স্বামীর বসত ভিটায় Logo সোনারগাঁয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি হালট দখল করে বালু ভরাট Logo ‘সংস্কারের ধীর গতি’ ও কাজের গুরুত্ব নির্ধারণ নিয়ে সমালোচনা, কী বলছেন উপদেষ্টারা? Logo আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু আজ Logo বাড়তে পারে ঈদ ও পূজার সরকারি ছুটি Logo আগামী বছর থেকে আবারও মাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন শুরু

সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত: জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:১১:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ ১৪ বার পঠিত

জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করতে পারে, সেজন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে পূর্বের বৈচিত্র্য হারিয়েছে আওয়ামী লীগ; তারা এখন পরগাছায় পরিণত হয়েছে, সেই কারণে তারা কাউকে পাত্তা দেয় না, কাউকে হিসাবেও রাখছে না। ফলে দেশ ও জনগণ মহাসংকটে বিরাজ করছে। আগে জনগণকে ধারণ করত আওয়ামী লীগ, এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে।

রোববার দুপুরে ঢাকা থেকে রংপুর সার্কিট হাউসে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, সামনে ভয়াবহ বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১০ থেকে বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে; যা এযাবৎ কালের সর্বনিম্ন। এখন বলা হয় ৩ মাসের আমদানি করার মতো অর্থ থাকলেই নাকি যথেষ্ট। কিন্তু আমরা যতটুকু জানি আমদানি ব্যয় আগের তুলনায় অনেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন ৭-৮ মিলিয়নের জায়গায় ৪-৫ মিলিয়নে নেমে এসেছে। আমার মনে হয় সরকার মুখে যতই রিজার্ভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে ধারণা করছি।

তিনি বলেন, এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, দেশে বিনিয়োগ আসছে না, যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।

জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ আইন করলেও রাইট টু ইনফরমেশন বলতে এখন কোনো কিছু নেই। কোনো তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। সব গোপন রাখা হচ্ছে। যে তথ্যই চাওয়া হয়, সেটাই রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ। সংবিধানের ১৪৫(ক) ধারায় বলা হয়েছে, আমরা বিদেশের সঙ্গে যে চুক্তিই করি না কেন। সেটা প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে সংসদে উপস্থাপন করতে হবে; কিন্তু এ পর্যন্ত যত বিদেশি চুক্তি হয়েছে হাজার হাজার চুক্তি হয়েছে। কোনো চুক্তিই আমাদের সংসদে প্লেস করা হচ্ছে না। সংবিধান মানা হচ্ছে না।

জিএম কাদের বলেন, ওনারা (আওয়ামী লীগ) অনেক খাতে লুটপাট করেছেন। বিদ্যুৎ খাতে লুটপাট হয়েছে, জ্বালানি খাতে লুটপাট হয়েছে। প্রচুরভাবে টাকা পাচার হয়েছে এবং পাচার করতে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকারের রেগুলেটরি বডিগুলো আছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং শাখা এরা যেসব নিয়ম করছেন তা করা হয়েছে এসব দুর্নীতিকে সহায়তা করার জন্য। এ পরিস্থিতি থেকে দেশ উদ্ধার চায়।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাকে আমি রেসপেক্ট করি; কিন্তু যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করত এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল; জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

এর আগে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আসেন। এরপর সৈয়দপুর থেকে রংপুর সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছলে জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, জেলা কমিটির আহবায়ক আলাউদ্দিন মিয়া, সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাকসহ প্রশাসন ও দলের নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।

এ সময় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক শাফিউল ইসলাম শাফী, নির্বাহী সদস্য লোকমান হোসেন, হাসানুজ্জামান নাজিমসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

তিন দিনের রংপুর সফরে এসে সার্কিট হাউসে উঠেছেন জিএম কাদের। সেখান থেকে তিনি তার পৈতৃক নিবাস নগরীর সেনপাড়ায় স্কাই ভবনে যান। আগামী দুই দিন তিনি তার নির্বাচনি এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সমাবেশ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত: জিএম কাদের

আপডেট সময় : ০৬:১১:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করতে পারে, সেজন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে পূর্বের বৈচিত্র্য হারিয়েছে আওয়ামী লীগ; তারা এখন পরগাছায় পরিণত হয়েছে, সেই কারণে তারা কাউকে পাত্তা দেয় না, কাউকে হিসাবেও রাখছে না। ফলে দেশ ও জনগণ মহাসংকটে বিরাজ করছে। আগে জনগণকে ধারণ করত আওয়ামী লীগ, এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে।

রোববার দুপুরে ঢাকা থেকে রংপুর সার্কিট হাউসে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, সামনে ভয়াবহ বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১০ থেকে বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে; যা এযাবৎ কালের সর্বনিম্ন। এখন বলা হয় ৩ মাসের আমদানি করার মতো অর্থ থাকলেই নাকি যথেষ্ট। কিন্তু আমরা যতটুকু জানি আমদানি ব্যয় আগের তুলনায় অনেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন ৭-৮ মিলিয়নের জায়গায় ৪-৫ মিলিয়নে নেমে এসেছে। আমার মনে হয় সরকার মুখে যতই রিজার্ভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে ধারণা করছি।

তিনি বলেন, এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, দেশে বিনিয়োগ আসছে না, যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।

জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ আইন করলেও রাইট টু ইনফরমেশন বলতে এখন কোনো কিছু নেই। কোনো তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। সব গোপন রাখা হচ্ছে। যে তথ্যই চাওয়া হয়, সেটাই রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ। সংবিধানের ১৪৫(ক) ধারায় বলা হয়েছে, আমরা বিদেশের সঙ্গে যে চুক্তিই করি না কেন। সেটা প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে সংসদে উপস্থাপন করতে হবে; কিন্তু এ পর্যন্ত যত বিদেশি চুক্তি হয়েছে হাজার হাজার চুক্তি হয়েছে। কোনো চুক্তিই আমাদের সংসদে প্লেস করা হচ্ছে না। সংবিধান মানা হচ্ছে না।

জিএম কাদের বলেন, ওনারা (আওয়ামী লীগ) অনেক খাতে লুটপাট করেছেন। বিদ্যুৎ খাতে লুটপাট হয়েছে, জ্বালানি খাতে লুটপাট হয়েছে। প্রচুরভাবে টাকা পাচার হয়েছে এবং পাচার করতে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকারের রেগুলেটরি বডিগুলো আছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং শাখা এরা যেসব নিয়ম করছেন তা করা হয়েছে এসব দুর্নীতিকে সহায়তা করার জন্য। এ পরিস্থিতি থেকে দেশ উদ্ধার চায়।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাকে আমি রেসপেক্ট করি; কিন্তু যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করত এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল; জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

এর আগে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আসেন। এরপর সৈয়দপুর থেকে রংপুর সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছলে জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, জেলা কমিটির আহবায়ক আলাউদ্দিন মিয়া, সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাকসহ প্রশাসন ও দলের নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।

এ সময় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক শাফিউল ইসলাম শাফী, নির্বাহী সদস্য লোকমান হোসেন, হাসানুজ্জামান নাজিমসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

তিন দিনের রংপুর সফরে এসে সার্কিট হাউসে উঠেছেন জিএম কাদের। সেখান থেকে তিনি তার পৈতৃক নিবাস নগরীর সেনপাড়ায় স্কাই ভবনে যান। আগামী দুই দিন তিনি তার নির্বাচনি এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সমাবেশ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

Facebook Comments Box