ঢাকা ০৭:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

সাঁথিয়ায় দুই চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া,বাড়িঘর ভাংচুর, আহত—১০

পাবনা প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৮:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ৮৫ বার পঠিত

পাবনার সাঁথিয়ায় দুই চেয়ারম্যানের পূর্ব বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া,বাড়িঘর ভাংচুর,লুটপাট,সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০জন আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার(১৭ডিসেম্বর)সকাল ৮টার দিকে উপজেলার নাগডেমরা ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামে। আহতদের সাঁথিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় দু’পক্ষেরই উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকার শান্তিশৃঙখলা রক্ষার্থে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

স্থানীয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নাগডেমড়া ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান এবং সাবেক চেয়ারম্যান ও নাগডেমরা ইউনিয়ন আ’লীগের ‘খ’ অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদের মধ্যে হামলা,মামলার বিরোধ চলে আসছিল। এসব বিষয় নিয়ে হাফিজ চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকরা দীর্ঘদিন গ্রাম ছাড়া ছিল।

চেয়ারম্যান হাফিজ রোববার(১৭ডিসেম্বর) গ্রামছাড়া সমর্থকদের নিয়ে বাড়ি আসে। এ খবর জানার পর রোববার সকালে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় শাহ আলম, রতন, সাইদ, বিল্লাল, আবুল ফকির,মজিবর ফকির,ফখরুল,নজরুল,রহম,জিহাদ,আলম,সা্ইফুল, পলাশ সরকারবের বাড়িসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০—১২টি বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ খবর পেয়ে সাঁথিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করে। সংঘর্ষে হাবিল, মতিন, হাসান,মিজানুর, শিহাব, সুমন আহমেদ টুকু, রাকিব, বুলবুল, আবু দায়েন,আব্দুস সামাদ, ফজর আলীসহ অন্তত ১০জন আহত হন। আহতদের সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

নাগডেমড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান হারুন রশিদের অত্যাচারে আমি ও আমাকে মেরে ফেলার হুমকি ধামকিতে আমার সমর্থকরা দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়া ছিলাম। যেহেতু আমি জনপ্রতিনিধি। সেহেতু জনগণের কাছে আমার তো জবাবদিহি আছে।

এজন্য রোববার আমি ও আমার সমর্থকরা গ্রামে আসলে সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ ও তার সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে আমার এবং আমার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট এবং মারধর করে। আমি এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও আমি নিজেই নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।

নাগডেমড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, চেয়ারম্যানের হাফিজের সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি রাত্রেই খবর পেলাম যে চেয়ারম্যান হাফিজ সন্ত্রাসীদের নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছেন। যে কোনসময় আমাদের উপর হামলা করবে। সকালে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করি। তিনি বলেন, হাফিজ চেয়ারম্যান তার সমর্থকদের সাথে করে নিয়ে রোববার গ্রামে এসে আ’লীগের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর,লুটপাট এবং মারপিট করে।

এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)আনোয়ার হোসেন বলেন,নাগডেমরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও সাবেক চেয়ারম্যানের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় এলকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ ঘটনায় সাঁথিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রিফাতুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

সাঁথিয়ায় দুই চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া,বাড়িঘর ভাংচুর, আহত—১০

আপডেট সময় : ০৭:৩৮:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩

পাবনার সাঁথিয়ায় দুই চেয়ারম্যানের পূর্ব বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া,বাড়িঘর ভাংচুর,লুটপাট,সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০জন আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার(১৭ডিসেম্বর)সকাল ৮টার দিকে উপজেলার নাগডেমরা ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামে। আহতদের সাঁথিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় দু’পক্ষেরই উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকার শান্তিশৃঙখলা রক্ষার্থে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

স্থানীয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নাগডেমড়া ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান এবং সাবেক চেয়ারম্যান ও নাগডেমরা ইউনিয়ন আ’লীগের ‘খ’ অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদের মধ্যে হামলা,মামলার বিরোধ চলে আসছিল। এসব বিষয় নিয়ে হাফিজ চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকরা দীর্ঘদিন গ্রাম ছাড়া ছিল।

চেয়ারম্যান হাফিজ রোববার(১৭ডিসেম্বর) গ্রামছাড়া সমর্থকদের নিয়ে বাড়ি আসে। এ খবর জানার পর রোববার সকালে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় শাহ আলম, রতন, সাইদ, বিল্লাল, আবুল ফকির,মজিবর ফকির,ফখরুল,নজরুল,রহম,জিহাদ,আলম,সা্ইফুল, পলাশ সরকারবের বাড়িসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০—১২টি বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ খবর পেয়ে সাঁথিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করে। সংঘর্ষে হাবিল, মতিন, হাসান,মিজানুর, শিহাব, সুমন আহমেদ টুকু, রাকিব, বুলবুল, আবু দায়েন,আব্দুস সামাদ, ফজর আলীসহ অন্তত ১০জন আহত হন। আহতদের সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

নাগডেমড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান হারুন রশিদের অত্যাচারে আমি ও আমাকে মেরে ফেলার হুমকি ধামকিতে আমার সমর্থকরা দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়া ছিলাম। যেহেতু আমি জনপ্রতিনিধি। সেহেতু জনগণের কাছে আমার তো জবাবদিহি আছে।

এজন্য রোববার আমি ও আমার সমর্থকরা গ্রামে আসলে সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ ও তার সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে আমার এবং আমার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট এবং মারধর করে। আমি এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও আমি নিজেই নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।

নাগডেমড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, চেয়ারম্যানের হাফিজের সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি রাত্রেই খবর পেলাম যে চেয়ারম্যান হাফিজ সন্ত্রাসীদের নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছেন। যে কোনসময় আমাদের উপর হামলা করবে। সকালে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করি। তিনি বলেন, হাফিজ চেয়ারম্যান তার সমর্থকদের সাথে করে নিয়ে রোববার গ্রামে এসে আ’লীগের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর,লুটপাট এবং মারপিট করে।

এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)আনোয়ার হোসেন বলেন,নাগডেমরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও সাবেক চেয়ারম্যানের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় এলকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ ঘটনায় সাঁথিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রিফাতুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

Facebook Comments Box