ঢাকা ০২:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বোচ্চ সতর্কতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
  • আপডেট সময় : ০৪:০৮:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪ ২১ বার পঠিত

ঢাকা : কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা। রাজধানীর উত্তরা এবং হবিগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় হঠাৎ করেই ঘোলাটে হয়ে উঠেছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। তবে শুক্রবার (০২ আগস্ট) সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঠে ছিল বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) টহল। দিনে কারফিউ না থাকায় সেনাবাহিনীর সদস্যদের সতর্ক ও সশস্ত্র অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সরকারের শীর্ষ মহল থেকে বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত থাকতে। এরই মধ্যে পুলিশ, র‌্যাব এবং আনসার সদর দপ্তর থেকে সবগুলো ইউনিটে বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। সর্বোচ্চ সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নিতে ইউনিট প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় রয়েছেন বিভিন্ন বাহিনীর ৩০ হাজার সদস্য।

জানা গেছে, সম্ভাব্য সব বিষয়কে মাথায় রেখেই সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বলেছে পুলিশ সদর দপ্তর। শান্তিপূর্ণ অবস্থানকারীদের বিষয়ে সহনশীলতা প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে।

গোয়েন্দারা বলছেন, জামায়াতে ইসলামী ও দলটির ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপনের পর থেকেই দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে তারা। এক এলাকার নেতা-কর্মীদেরকে তারা অন্য এলাকায় গিয়ে লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা দিয়েছে। তবে কারফিউ জারির আগে ঢাকা এবং এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেওয়া কিছু নেতা-কর্মী এখনো নিজেদের এলাকায় ফেরেনি। তাদের প্রয়োজনে অবস্থান পরিবর্তন করে পার্শ্ববর্তী এলাকায় যেতে বলা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট এবং টহল জোরদার করা হয়েছে। তবে যারা সহনশীল এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছেন তাদের ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট পজিটিভ। তবে যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করছে, জ্বালাও পোড়াও করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর হবে।

একাধিক সূত্র বলছে, সম্ভাব্য হামলা-নাশকতার বিপরীতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং টার্গেট ব্যক্তিদের ঘিরে বিশেষ প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রস্তুতিকে আরও নিখুঁত করার জন্য বলা হয়েছে। সবগুলো সংস্থাকে পাঠানো হয়েছে বিশেষ নির্দেশনা। যদিও কোটাবিরোধী আন্দোলনকে পুঁজি করে দেশে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে কারফিউ জারি করেছে সরকার। এ কারণে মাঠে সশস্ত্র অবস্থায় রয়েছেন সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা।

র‌্যাবের প্রস্তুতি সম্পর্কে এলিট ফোর্সের আইন ও গণমাধ্যম পরিচালক লে. কর্নেল মুনীফ ফেরদৌস জানান, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব সময়ই প্রস্তুত র‌্যাবের প্রতিটি সদস্য। দেশের মানুষের জানমাল রক্ষা এবং সরকারি সম্পদের নিরাপত্তায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ র‌্যাব। তবে বিশেষ পরিস্থিতির উদ্ভব হলে সব ব্যাটালিয়নকে আলাদাভাবে সতর্ক করা হয়।

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর পরিচালক (অপারেশন্স) সৈয়দ ইফতেহার আলী বলেন, আবুল হোটেল থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আনসার সদর দপ্তরকে। এখানে তিনটি এলএমজি (লাইট মেশিনগান) পোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। তিনটি এলএমজি প্যাট্রোল সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। এর বাইরেও কেপিআইগুলোতে আমাদের এজিবির (আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন) সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। এ ছাড়া পুলিশ এবং সেনাবাহিনী আছেই।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

সর্বোচ্চ সতর্কতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

আপডেট সময় : ০৪:০৮:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪

ঢাকা : কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা। রাজধানীর উত্তরা এবং হবিগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় হঠাৎ করেই ঘোলাটে হয়ে উঠেছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। তবে শুক্রবার (০২ আগস্ট) সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঠে ছিল বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) টহল। দিনে কারফিউ না থাকায় সেনাবাহিনীর সদস্যদের সতর্ক ও সশস্ত্র অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সরকারের শীর্ষ মহল থেকে বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত থাকতে। এরই মধ্যে পুলিশ, র‌্যাব এবং আনসার সদর দপ্তর থেকে সবগুলো ইউনিটে বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। সর্বোচ্চ সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নিতে ইউনিট প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় রয়েছেন বিভিন্ন বাহিনীর ৩০ হাজার সদস্য।

জানা গেছে, সম্ভাব্য সব বিষয়কে মাথায় রেখেই সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বলেছে পুলিশ সদর দপ্তর। শান্তিপূর্ণ অবস্থানকারীদের বিষয়ে সহনশীলতা প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে।

গোয়েন্দারা বলছেন, জামায়াতে ইসলামী ও দলটির ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপনের পর থেকেই দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে তারা। এক এলাকার নেতা-কর্মীদেরকে তারা অন্য এলাকায় গিয়ে লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা দিয়েছে। তবে কারফিউ জারির আগে ঢাকা এবং এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেওয়া কিছু নেতা-কর্মী এখনো নিজেদের এলাকায় ফেরেনি। তাদের প্রয়োজনে অবস্থান পরিবর্তন করে পার্শ্ববর্তী এলাকায় যেতে বলা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট এবং টহল জোরদার করা হয়েছে। তবে যারা সহনশীল এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছেন তাদের ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট পজিটিভ। তবে যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করছে, জ্বালাও পোড়াও করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর হবে।

একাধিক সূত্র বলছে, সম্ভাব্য হামলা-নাশকতার বিপরীতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং টার্গেট ব্যক্তিদের ঘিরে বিশেষ প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রস্তুতিকে আরও নিখুঁত করার জন্য বলা হয়েছে। সবগুলো সংস্থাকে পাঠানো হয়েছে বিশেষ নির্দেশনা। যদিও কোটাবিরোধী আন্দোলনকে পুঁজি করে দেশে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে কারফিউ জারি করেছে সরকার। এ কারণে মাঠে সশস্ত্র অবস্থায় রয়েছেন সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা।

র‌্যাবের প্রস্তুতি সম্পর্কে এলিট ফোর্সের আইন ও গণমাধ্যম পরিচালক লে. কর্নেল মুনীফ ফেরদৌস জানান, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব সময়ই প্রস্তুত র‌্যাবের প্রতিটি সদস্য। দেশের মানুষের জানমাল রক্ষা এবং সরকারি সম্পদের নিরাপত্তায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ র‌্যাব। তবে বিশেষ পরিস্থিতির উদ্ভব হলে সব ব্যাটালিয়নকে আলাদাভাবে সতর্ক করা হয়।

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর পরিচালক (অপারেশন্স) সৈয়দ ইফতেহার আলী বলেন, আবুল হোটেল থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আনসার সদর দপ্তরকে। এখানে তিনটি এলএমজি (লাইট মেশিনগান) পোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। তিনটি এলএমজি প্যাট্রোল সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। এর বাইরেও কেপিআইগুলোতে আমাদের এজিবির (আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন) সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। এ ছাড়া পুলিশ এবং সেনাবাহিনী আছেই।

Facebook Comments Box