বাংলাদেশে এমন একটি দিন পাওয়া যাবে না সেখানে কোথাও না কোথাও ছোট বড় কোনো সড়ক দুর্ঘটনার খবর লেখা নেই। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছেন দেশের আনাচে-কানাচে এসব দুর্ঘটনায়। সব দুর্ঘটনার খবর যে পত্র-পত্রিকায় আসেও না।
সড়ক দুর্ঘটনার খবর আজকাল অনেকটা গা সওয়া হয়ে যাওয়ায় বড় কোনো ঘটনা না ঘটলে এই খবর গুলো আজকাল আর গুরুত্ব দিয়ে পত্র পত্রিকায় ছাপাও হয়না। অন্যান্য গণমাধ্যমও যে এই খবর গুলোকে খুব গুরুত্ব দেয় তা-ও নয়। ফলে দুর্ঘটনার অনেক খবরই আড়ালে থেকে যায়। তৈরি হয় এক ধরনের তথ্য ঘাটতি, যে কারণে প্রায় কখনোই জানা সম্ভব হয় না সড়ক দুর্ঘটনার বাংলাদেশে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা আসলে কত।
সরকারি পরিসংখ্যান এক্ষেত্রে ভরসাস্থল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একটা সময় পর্যন্ত সরকার এ বিষয়ে কেবল পুলিশের দেওয়া তথ্য উপাত্তের উপর নির্ভর করেছে। তাতে মৃত্যুর সংখ্যা প্রকৃত মৃত্যুর চেয়ে অনেক কম পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশে এটা মোটামুটি সবারই জানা সড়ক দুর্ঘটনার সব খবরই পুলিশে রিপোর্ট করা হয় না। ঘটনাস্থলে কারো মৃত্যু হলে পুলিশ হয়তো নিজ উদ্যোগে তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। কিন্তু দুর্ঘটনার পর হাসপাতাল কিংবা বাড়িতে কেউ মারা গেলে সেই হিসেব পুলিশের কাছে প্রায়ই থাকে না বলা চলে।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি সম্প্রতি নিজস্ব সূত্র ব্যবহার করে সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য উপাত্ত প্রকাশ শুরু করছে। কিন্তু তাতেও ও গুরুতর তথ্য ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করা হয়। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মতো বেসরকারি যেসব সংস্থা এ ধরণের তথ্য দিয়ে থাকে তার সাথে সরকারি হিসেবের বড় একটা ফারাক থেকে যাচ্ছে।
বেসরকারি এসব প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহের মূল সূত্র গণমাধ্যম। তাতে যে সব খবর পাওয়া যায় না সেকথা আগেই বলা হয়েছে। তাহলে সড়ক দুর্ঘটনার বাংলাদেশে আহত-নিহতের প্রকৃত সংখ্যা জানার আর উপায় কি? বিশেষজ্ঞদের গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ এক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য-উপাত্তকেই ধর্তব্যের মধ্যে নিতে আগ্রহী।
বুধবার এক রিপোর্টে বিশ্বব্যাপি সড়ক দূর্ঘটনার একটা হিসেব প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কয়েক বছর পরপরই তারা এটা করে থাকে, যাতে বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের হিসেব থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রতিবারই দেখা যায় সরকারের দেওয়া হিসেবের সাথে তাদের দেওয়া হিসেবের ব্যাপক তফাত।
২০১২ সালে সরকারি হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২,৫৩৮। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে ২১, ৩১৬। এই হিসেবটা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৫ সালে প্রকাশ করেছিল। ২০১৮ সালে এসে তারা আরেকটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। এতে দেখা যায় সরকারি হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যা ২,৩৯৬ হলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে এটি ২৪,৯৪৪। মৃত্যুর এই হার যে বেড়েই চলেছে এই চিত্র ফুটে আসে তাদের সর্বশেষ রিপোর্টটিও যা বুধবার প্রকাশিত হয়েছে।
সম্পাদক : মাহমুদ আনোয়ার হোসেন
নির্বাহী সম্পাদক : জুবায়ের রহমান চৌধুরী
বার্তা সম্পাদক : খালেকুজ্জামান পান্নু
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয় : বাড়ি # ৬৩, সড়ক # ২১,
রূপনগর আ/এ, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬।
বাণিজ্যিক কার্যালয় : গুলশান-বাড্ডা লিংক রোড, ঢাকা-১২১২।
ফোন : 01731-488397,01552381515, 01751345643
হোয়াটসএ্যাপ : 01826567123
Copyright © 2024 সারাবেলার সংবাদ. All rights reserved.