ঢাকা ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪, ৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বাংলাদেশ সাংবাদিক কমিউনিটি (বিএসসি) যাত্রা শুরু Logo দাম নিয়ন্ত্রণে ট্রেনে সবজি পরিবহন Logo আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি কর্নেল অলির Logo আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে সরকার সফল হবে না: তারেক Logo স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে দেশ এখনও মুক্ত নয়: রিজভী Logo হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে যেভাবে ইসরায়েল খুঁজে বের করে হত্যা করেছে Logo সোনারগাঁওয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে যুবকের মৃত্যু Logo সংবাদ প্রকাশের পর বৃদ্ধা মহিলার ঠাই হলো স্বামীর বসত ভিটায় Logo সোনারগাঁয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি হালট দখল করে বালু ভরাট Logo ‘সংস্কারের ধীর গতি’ ও কাজের গুরুত্ব নির্ধারণ নিয়ে সমালোচনা, কী বলছেন উপদেষ্টারা?

রাষ্ট্রকে গিলে ফেলেছে সরকার: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৮:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪ ৩৮ বার পঠিত

আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গোটা দেশ ও রাষ্ট্রকে গিলে ফেলেছে সরকার। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা সংগ্রাম ও লড়াই করছি। বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে ‘মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় বিদস উপলক্ষে’ এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বসে থাকতে পারে না। বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতাকামী মানুষ। স্বাধীনভাবে কথা বলতে চায়। এটা বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র এবং তারা রাজনৈতিকভাবে সচেতন। গ্রামে-গঞ্জে চায়ের দোকানে বসে তারা রাজনীতির কথা বলে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। এই বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে, বিশ্ব প্রেক্ষিত এবং সামগ্রিক অবস্থাকে সামনে নিয়ে আমাদের রাজনীতি ও কৌশল আবারো ঠিক সেইভাবে এগিয়ে নিতে হবে। কারণ সংগ্রাম ও আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলে সেই সংগ্রামকে আরও বেশি জোরদার করতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই কাজটি করছে। আওয়ামী লীগ সব সময়ই গণতন্ত্রের বিরোধী শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেছে, কিন্তু সব সময় গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কাজ করেছে।

ফখরুল বলেন, গত নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে, দেশে জনগণের অধিকারকে প্রয়োগ করতে দেওয়া হয় না। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গত ১৫ বছর ধরে নির্বাচনকে তারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তারা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। বরং আমরা যারা গণতন্ত্র, নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং দেশের অর্থনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করবার কথা বলেছি, তাদের উপর চরম দমন-পীড়ন ও নির্যাতন নেমে এসেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমার কাছে মনে হয়, বাংলাদেশ এখন ফ্যাসিস্টদের কবলে পড়েনি। বাংলাদেশ এখন বর্ণবাদীদের কবলে পড়েছে। বিএনপি যারা করে তাদের ঘর-বাড়ি, জমি এবং ব্যবসা পর্যন্ত দখল করে নেওয়া হচ্ছে। তাদের ছেলে-মেয়েদের চাকরির কোনো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি দুঃসম্পর্কের আত্মীয়দের বিএনপি হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা বর্ণবাদ ছাড়া কিছু না। আর দেশকে তারা দুটি ভাগ করেছে। একটা ভাগ হচ্ছে আওয়ামী লীগ। আরেকটি ভাগ হচ্ছে বিরোধী দল। এই অবস্থা তৈরি করে তারা নিজেরাই একটা সাম্প্রদায়িক একটা অবস্থা তৈরি করেছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আমাদের এখন কথা বলার সময় কম। কাজ করার সময়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, স্বাধীনতা উদযাপন করার মতো পরিস্থিতি বাংলাদেশে নাই। এই আলোচনা সভার সভাপতি মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমদ, জাতির বীরবিক্রমকে এই সরকার কারারুদ্ধ করে। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে? এই সরকার মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনার কথা বলে, সেই চেতনাকে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না। কারণ তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এই গণতন্ত্রকে আওয়ামী লীগ সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা দেশে অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে। সুতরাং এই সরকার একদলীয় সরকার। এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমরা কর্মসূচি পালন করেছি। ভবিষ্যতে নতুন কর্মসূচি আসবে। কারণ এদেশের জনগণকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে আছি এবং থাকবো।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, এডভোকেট ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির প্রমু্খ। এছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ দলটির সিনিয়র নেতা এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

রাষ্ট্রকে গিলে ফেলেছে সরকার: মির্জা ফখরুল

আপডেট সময় : ০৫:৩৮:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গোটা দেশ ও রাষ্ট্রকে গিলে ফেলেছে সরকার। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা সংগ্রাম ও লড়াই করছি। বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে ‘মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় বিদস উপলক্ষে’ এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বসে থাকতে পারে না। বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতাকামী মানুষ। স্বাধীনভাবে কথা বলতে চায়। এটা বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র এবং তারা রাজনৈতিকভাবে সচেতন। গ্রামে-গঞ্জে চায়ের দোকানে বসে তারা রাজনীতির কথা বলে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। এই বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে, বিশ্ব প্রেক্ষিত এবং সামগ্রিক অবস্থাকে সামনে নিয়ে আমাদের রাজনীতি ও কৌশল আবারো ঠিক সেইভাবে এগিয়ে নিতে হবে। কারণ সংগ্রাম ও আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলে সেই সংগ্রামকে আরও বেশি জোরদার করতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই কাজটি করছে। আওয়ামী লীগ সব সময়ই গণতন্ত্রের বিরোধী শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেছে, কিন্তু সব সময় গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কাজ করেছে।

ফখরুল বলেন, গত নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে, দেশে জনগণের অধিকারকে প্রয়োগ করতে দেওয়া হয় না। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গত ১৫ বছর ধরে নির্বাচনকে তারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তারা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। বরং আমরা যারা গণতন্ত্র, নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং দেশের অর্থনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করবার কথা বলেছি, তাদের উপর চরম দমন-পীড়ন ও নির্যাতন নেমে এসেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমার কাছে মনে হয়, বাংলাদেশ এখন ফ্যাসিস্টদের কবলে পড়েনি। বাংলাদেশ এখন বর্ণবাদীদের কবলে পড়েছে। বিএনপি যারা করে তাদের ঘর-বাড়ি, জমি এবং ব্যবসা পর্যন্ত দখল করে নেওয়া হচ্ছে। তাদের ছেলে-মেয়েদের চাকরির কোনো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি দুঃসম্পর্কের আত্মীয়দের বিএনপি হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা বর্ণবাদ ছাড়া কিছু না। আর দেশকে তারা দুটি ভাগ করেছে। একটা ভাগ হচ্ছে আওয়ামী লীগ। আরেকটি ভাগ হচ্ছে বিরোধী দল। এই অবস্থা তৈরি করে তারা নিজেরাই একটা সাম্প্রদায়িক একটা অবস্থা তৈরি করেছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আমাদের এখন কথা বলার সময় কম। কাজ করার সময়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, স্বাধীনতা উদযাপন করার মতো পরিস্থিতি বাংলাদেশে নাই। এই আলোচনা সভার সভাপতি মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমদ, জাতির বীরবিক্রমকে এই সরকার কারারুদ্ধ করে। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে? এই সরকার মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনার কথা বলে, সেই চেতনাকে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না। কারণ তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এই গণতন্ত্রকে আওয়ামী লীগ সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা দেশে অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে। সুতরাং এই সরকার একদলীয় সরকার। এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমরা কর্মসূচি পালন করেছি। ভবিষ্যতে নতুন কর্মসূচি আসবে। কারণ এদেশের জনগণকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে আছি এবং থাকবো।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, এডভোকেট ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির প্রমু্খ। এছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ দলটির সিনিয়র নেতা এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

Facebook Comments Box