ঢাকা ০১:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

রমজান আসার আগেই ডালের বাজার উর্দ্ধগতি, ব্যবসায়ীরা এখন বেপরোয়া

সারাবেলা প্রতিবেদন
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৮:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ৮৭ বার পঠিত

দেশের অনেক ব্যবসায়ী এখন বেপরোয়া। কোন কিছু দিয়েই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না তাদের। নিত্যদিন বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়েই চলেছেন তারা। এতে ব্যাপক অসুবিধায় পড়েছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। বাজারে সঙ্কট থাকুক বা না থাকুক, প্রতিবছর রমজানকে সামনে রেখে যেভাবে নিত্য পণ্যের দাম বাড়ে। এবারও তেমনটি হতে যাচ্ছে।

সিয়াম সাধনার এ মাসে বাঙালি মুসলমানদের কাছে ইফতারির অন্যতম প্রধান পণ্য ছোলা, যার প্রায় শতভাগই আমদানি নির্ভর। রমজান দু’সপ্তাহের বেশি বাকি থাকলেও বেড়ে গেছে ছোলা, ডাবলি বুট, খেসারিসহ সব ধরনের ডালের দাম। অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানো হচ্ছে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময়মূল্য বেড়ে যাওয়া এবং এলসি সংকটকে। এমন পরিস্থিতিতে বাজার মনিটরিং জোরদার না করা গেলে শবে বরাতের পর আরও বাড়তে পারে এসকল পণ্যের দাম, এমন আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

গেলো একমাস আগেও পাইকারিতে যে ছোলার দাম কেজিতে ছিলো ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, সেই ছোলা এখন পাইকারিতেই বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়। বাজারে মটর ডালের দামও বেড়েছে কেজিতে ৮ টাকা। বেসন তৈরিতে ব্যবহৃত অ্যাংকর ডাল এখন ৭২ টাকা। যেখানে কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।

ডালের বাজারের এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মোঃ নেসার উদ্দিন খান বলেছেন, ডলার এবং এলসি সঙ্কটের কারণে এসকল পণ্যের দাম বাড়ছে। এমন প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী শফি মাহমুদ বলছেন, বড় কিছু গ্রুপ অব কোম্পানি ডালের আমদানি বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের ইচ্ছার অভাবেই ডালের দাম বাড়ছে। বছরের এসময়টাতে দাম বাড়িয়ে দেওয়ার যে প্রবণতা দেখা যায় তার প্রতিফলনই দেখা যাচ্ছে বাজারে।

জানা গেছে, দেশে সীমিত পরিসরে ছোলার উৎপাদন হয়। আর চাহিদার সিংহভাগই আসে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, মিয়ানমার ও তানজানিয়া থেকে। চলতি বছর চাহিদার তুলনায় আমদানি কম হওয়ায় রোজায় পণ্যটির দাম বেশি হবে বলেই ধরে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে আগে থেকেই মজুদের পাশাপাশি বিক্রির ক্ষেত্রে বাড়তি দাম হাঁকিয়ে পণ্যমূল্য বাড়ানো হয়েছে কৌশলে। এক মাসের ব্যবধানে ছোলার দাম বেড়েছে তাই রেকর্ড পরিমাণ।

এ কারণে বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে আমদানিকারক ও মজুদদার ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। অনেক সময় পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও বড় ব্যবসায়ীদের বেঁধে দেয়া দামের সঙ্গে সমন্বয় করতে ছোলার দাম বাড়ানো হয়। দেশে মুষ্টিমেয় কয়েকটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ছোলা আমদানির সঙ্গে যুক্ত থাকায় সহজেই পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছে।

তবে এ পরিস্থিতিতে সরকার যদি শক্ত হাতে বাজার মনিটরিং না করে তাহলে শবে বরাতের পর আরেক দফা দাম বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে ছোলাসহ ডালের বাজারে, এমন আশংকা খুচরা ব্যবসায়ীদের।

এদিকে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছে, বাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হলে সরকার কঠোর হবে। শিগগির নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি আগামী ১ মার্চ থেকে চালু হবে ৩৩৩ হটলাইন। কোনো ব্যবসায়ী নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করলে ভোক্তারা হটলাইনে অভিযোগ জানাতে পারবেন। পার্সটুডে
Facebook Comments Box
ট্যাগস :

রমজান আসার আগেই ডালের বাজার উর্দ্ধগতি, ব্যবসায়ীরা এখন বেপরোয়া

আপডেট সময় : ০৭:৩৮:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

দেশের অনেক ব্যবসায়ী এখন বেপরোয়া। কোন কিছু দিয়েই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না তাদের। নিত্যদিন বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়েই চলেছেন তারা। এতে ব্যাপক অসুবিধায় পড়েছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। বাজারে সঙ্কট থাকুক বা না থাকুক, প্রতিবছর রমজানকে সামনে রেখে যেভাবে নিত্য পণ্যের দাম বাড়ে। এবারও তেমনটি হতে যাচ্ছে।

সিয়াম সাধনার এ মাসে বাঙালি মুসলমানদের কাছে ইফতারির অন্যতম প্রধান পণ্য ছোলা, যার প্রায় শতভাগই আমদানি নির্ভর। রমজান দু’সপ্তাহের বেশি বাকি থাকলেও বেড়ে গেছে ছোলা, ডাবলি বুট, খেসারিসহ সব ধরনের ডালের দাম। অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানো হচ্ছে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময়মূল্য বেড়ে যাওয়া এবং এলসি সংকটকে। এমন পরিস্থিতিতে বাজার মনিটরিং জোরদার না করা গেলে শবে বরাতের পর আরও বাড়তে পারে এসকল পণ্যের দাম, এমন আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

গেলো একমাস আগেও পাইকারিতে যে ছোলার দাম কেজিতে ছিলো ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, সেই ছোলা এখন পাইকারিতেই বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়। বাজারে মটর ডালের দামও বেড়েছে কেজিতে ৮ টাকা। বেসন তৈরিতে ব্যবহৃত অ্যাংকর ডাল এখন ৭২ টাকা। যেখানে কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।

ডালের বাজারের এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মোঃ নেসার উদ্দিন খান বলেছেন, ডলার এবং এলসি সঙ্কটের কারণে এসকল পণ্যের দাম বাড়ছে। এমন প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী শফি মাহমুদ বলছেন, বড় কিছু গ্রুপ অব কোম্পানি ডালের আমদানি বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের ইচ্ছার অভাবেই ডালের দাম বাড়ছে। বছরের এসময়টাতে দাম বাড়িয়ে দেওয়ার যে প্রবণতা দেখা যায় তার প্রতিফলনই দেখা যাচ্ছে বাজারে।

জানা গেছে, দেশে সীমিত পরিসরে ছোলার উৎপাদন হয়। আর চাহিদার সিংহভাগই আসে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, মিয়ানমার ও তানজানিয়া থেকে। চলতি বছর চাহিদার তুলনায় আমদানি কম হওয়ায় রোজায় পণ্যটির দাম বেশি হবে বলেই ধরে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে আগে থেকেই মজুদের পাশাপাশি বিক্রির ক্ষেত্রে বাড়তি দাম হাঁকিয়ে পণ্যমূল্য বাড়ানো হয়েছে কৌশলে। এক মাসের ব্যবধানে ছোলার দাম বেড়েছে তাই রেকর্ড পরিমাণ।

এ কারণে বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে আমদানিকারক ও মজুদদার ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। অনেক সময় পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও বড় ব্যবসায়ীদের বেঁধে দেয়া দামের সঙ্গে সমন্বয় করতে ছোলার দাম বাড়ানো হয়। দেশে মুষ্টিমেয় কয়েকটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ছোলা আমদানির সঙ্গে যুক্ত থাকায় সহজেই পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছে।

তবে এ পরিস্থিতিতে সরকার যদি শক্ত হাতে বাজার মনিটরিং না করে তাহলে শবে বরাতের পর আরেক দফা দাম বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে ছোলাসহ ডালের বাজারে, এমন আশংকা খুচরা ব্যবসায়ীদের।

এদিকে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছে, বাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হলে সরকার কঠোর হবে। শিগগির নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি আগামী ১ মার্চ থেকে চালু হবে ৩৩৩ হটলাইন। কোনো ব্যবসায়ী নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করলে ভোক্তারা হটলাইনে অভিযোগ জানাতে পারবেন। পার্সটুডে
Facebook Comments Box