ঢাকা ০৪:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যশোর সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে বিজিবি সদস্য নিহত

সারাবেলা সংবাদ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ১১:২৭:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৪ ১৫১ বার পঠিত

সীমান্তে বিজিবি সদস্য

বাংলাদেশের যশোর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী- বিএসএফ এর গুলিতে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী- বিজিবির এক সদস্য নিহত হয়েছে।
বিজিবির যশোর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আহমেদ জামিল চৌধুরী এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো তার সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২২শে জানুয়ারি যশোর বিজিবির ধান্যখোলা বিওপি’র জেলেপাড়া পোস্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বিজিবি সদস্যের নাম সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দীন।
 আহমেদ জামিল চৌধুরী জানিয়েছেন, তার মরদেহ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে বিজিবি সদস্য নিহত হওয়ার এ ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন’ বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
মঙ্গলবার ভারতীয় হাই কমিশনারের সাথে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।”
বিজিবি সদস্য নিহত হওয়ার এ খবর বাংলাদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসলেও ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে এই খবর তেমন একটা দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ ও ভারত প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র হলেও দুই দেশের সীমান্তে হত্যার ঘটনা নতুন কিছু নয়। বিএসএফ এর হাতে বাংলাদেশিদের নিহত হওয়ার খবর মাঝে মাঝেই দেখা যায় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে।
তবে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে সংঘাতের ঘটনা খুব একটা ঘটে না।

যেভাবে নিহত হলো বিজিবি সদস্য

বিজিবি জানায়, সোমবার সকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে ভারত থেকে একদল গরু চোরাকারবারীকে সীমান্ত পার হতে দেখে তাদের একটি টহল দল।
গরু চোরাকারবারীদের ধরতে গেলে তারা দৌড়ে ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
সেসময় সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দীন চোরাকারবারীদের ধাওয়া করতে গিয়ে ঘন কুয়াশার কারণে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
প্রাথমিকভাবে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু পরে বিভিন্ন মাধ্যমে বিজিবি জানতে পারে যে, তিনি বিএসএফের গুলিতে আহত হয়েছেন এবং ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর পর বিজিবি ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বিএসএফ এর সাথে বিষয়টি নিয়ে পতাকা বৈঠক করে। সে সময় জানা যায়, আহত মি. রইশুদ্দীন ভারতের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে বিজিবির পক্ষ থেকে।

এছাড়া কূটনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিবাদ লিপিও পাঠানো হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এতে বলা হয়, নিহত বিজিবি সদস্যের মরদেহ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সব পর্যায়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের রাজশাহী সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফ এর মধ্যে গোলাগুলি হয়েছিল। সেসময় বিজিবির গুলিতে একজন ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছিল।

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বালুঘাট এলাকায় পদ্মা নদীতে ইলিশ মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে এই গোলাগুলি হয়েছিল।
সেসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এই ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত এক দুর্ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন।
বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি তখন বলেছিলেন, ইলিশ নিষিদ্ধ মৌসুমে বাংলাদেশের জলসীমায় আটক করে রাখা এক জেলেকে বিএসএফ জোর করে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিল।
কিন্তু বিজিবি এতে আপত্তি জানালে বিএসএফ তাড়াহুড়ো করে চলে যাওয়ার সময় গুলি ছোড়ে। এর জবাবে বিজিবিও গুলি ছোড়ে বলে আসাদুজ্জামান  খান জানান।
তবে বিএসএফের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছিল যে, পতাকা বৈঠকের সময় বিজিবি বিএসএফকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল। যা অস্বীকার করেছিল বিজিবি।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে এ ঘটনা ব্যাপকভাবে স্থান করে নিয়েছিল সেসময়। সেখানে বিএসএফ এর দেয়া ভাষ্যকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছিল। যদিও একই সংবাদে তারা বিজিবির ভাষ্যও যুক্ত করেছিল।
ওই খবরগুলোতে বিজিবি এবং বিএসএফ-এর পরস্পরবিরোধী দাবি উঠে এসেছিল। বিজিবি কর্মকর্তারা বিবিসি বাংলাকে সেসময় বলেছেন, প্রথমে বিএসএফ-এর তরফ থেকেই গুলি করা হয়, অন্যদিকে বিএসএফ বলছে তাদের জওয়ানরা গুলি করেনি। বিবিসি
Facebook Comments Box
ট্যাগস :

যশোর সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে বিজিবি সদস্য নিহত

আপডেট সময় : ১১:২৭:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৪
বাংলাদেশের যশোর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী- বিএসএফ এর গুলিতে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী- বিজিবির এক সদস্য নিহত হয়েছে।
বিজিবির যশোর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আহমেদ জামিল চৌধুরী এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো তার সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২২শে জানুয়ারি যশোর বিজিবির ধান্যখোলা বিওপি’র জেলেপাড়া পোস্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বিজিবি সদস্যের নাম সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দীন।
 আহমেদ জামিল চৌধুরী জানিয়েছেন, তার মরদেহ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে বিজিবি সদস্য নিহত হওয়ার এ ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন’ বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
মঙ্গলবার ভারতীয় হাই কমিশনারের সাথে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।”
বিজিবি সদস্য নিহত হওয়ার এ খবর বাংলাদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসলেও ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে এই খবর তেমন একটা দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ ও ভারত প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র হলেও দুই দেশের সীমান্তে হত্যার ঘটনা নতুন কিছু নয়। বিএসএফ এর হাতে বাংলাদেশিদের নিহত হওয়ার খবর মাঝে মাঝেই দেখা যায় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে।
তবে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে সংঘাতের ঘটনা খুব একটা ঘটে না।

যেভাবে নিহত হলো বিজিবি সদস্য

বিজিবি জানায়, সোমবার সকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে ভারত থেকে একদল গরু চোরাকারবারীকে সীমান্ত পার হতে দেখে তাদের একটি টহল দল।
গরু চোরাকারবারীদের ধরতে গেলে তারা দৌড়ে ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
সেসময় সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দীন চোরাকারবারীদের ধাওয়া করতে গিয়ে ঘন কুয়াশার কারণে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
প্রাথমিকভাবে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু পরে বিভিন্ন মাধ্যমে বিজিবি জানতে পারে যে, তিনি বিএসএফের গুলিতে আহত হয়েছেন এবং ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর পর বিজিবি ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বিএসএফ এর সাথে বিষয়টি নিয়ে পতাকা বৈঠক করে। সে সময় জানা যায়, আহত মি. রইশুদ্দীন ভারতের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে বিজিবির পক্ষ থেকে।

এছাড়া কূটনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিবাদ লিপিও পাঠানো হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এতে বলা হয়, নিহত বিজিবি সদস্যের মরদেহ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সব পর্যায়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের রাজশাহী সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফ এর মধ্যে গোলাগুলি হয়েছিল। সেসময় বিজিবির গুলিতে একজন ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছিল।

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বালুঘাট এলাকায় পদ্মা নদীতে ইলিশ মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে এই গোলাগুলি হয়েছিল।
সেসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এই ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত এক দুর্ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন।
বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি তখন বলেছিলেন, ইলিশ নিষিদ্ধ মৌসুমে বাংলাদেশের জলসীমায় আটক করে রাখা এক জেলেকে বিএসএফ জোর করে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিল।
কিন্তু বিজিবি এতে আপত্তি জানালে বিএসএফ তাড়াহুড়ো করে চলে যাওয়ার সময় গুলি ছোড়ে। এর জবাবে বিজিবিও গুলি ছোড়ে বলে আসাদুজ্জামান  খান জানান।
তবে বিএসএফের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছিল যে, পতাকা বৈঠকের সময় বিজিবি বিএসএফকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল। যা অস্বীকার করেছিল বিজিবি।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে এ ঘটনা ব্যাপকভাবে স্থান করে নিয়েছিল সেসময়। সেখানে বিএসএফ এর দেয়া ভাষ্যকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছিল। যদিও একই সংবাদে তারা বিজিবির ভাষ্যও যুক্ত করেছিল।
ওই খবরগুলোতে বিজিবি এবং বিএসএফ-এর পরস্পরবিরোধী দাবি উঠে এসেছিল। বিজিবি কর্মকর্তারা বিবিসি বাংলাকে সেসময় বলেছেন, প্রথমে বিএসএফ-এর তরফ থেকেই গুলি করা হয়, অন্যদিকে বিএসএফ বলছে তাদের জওয়ানরা গুলি করেনি। বিবিসি
Facebook Comments Box