ঢাকা ০৯:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

মেধাবী প্রিয়াংকার হত্যাকারিদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

সৈয়দপুর  (নীলফামারী) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৫:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৪ ৮৭ বার পঠিত

সৈয়দপুরের নবম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী তামান্না নাদিয়া প্রিয়াঙ্কার (১৪) হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারী) দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনে প্রিয়াংকার আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক ও সহপাঠীর  আয়োজনে ওই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, প্রিয়াঙ্কার বাবা পাপ্পু হোসেন, মা রুপা বেগম, মামা সম্রাট, ওব্যাট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তাবাসসুম আক্তার,  সহপাঠী মোছা. নাদিয়া, মোছা. তানিয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রুহুল আলম মাস্টার, বিশিষ্টজন ওবায়দুর রহমান ও এলাকাবাসী রাজু প্রমুখ। বক্তারা বলেন মামলা তুলে নিতে প্রিয়াঙ্কার শ্বশুর বাদশা নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। এমনকি এলাকার লোকজন যৌথ স্বাক্ষরে একটি অভিযোগ করায় তাদেরকেও মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছে।এই বিষয়ে থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ প্রথমে নিতে গড়িমসি করে। পরে এমপির সুপারিশে নিলেও কোন রিসিভ কপি দেয়নি। তাছাড়া খারাপ আচরণ করার কথাও উল্লেখ করেন তারা। তাছাড়া মামলার ৫ জন আসামীর মধ্যে মাত্র ২ জনকে গ্রেফতার করলেও বাকী ৩ জন আসামি ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে।  তারা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

এব্যাপারে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) রাসেল পারভেজ বলেন, মামলার পরেই প্রিয়াঙ্কার স্বামী বিজয় ও ভাসুর রকি হোসেন বাবু কে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে তৎপর রয়েছি। ময়না তদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর ঘটনা হত্যা না আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়া যাবেনা। আর জিডি করলে তা তদন্ত সাপেক্ষে নথিভুক্ত হবে। এজন্য তদন্তের আগে রিসিভ কপি দেয়া হয়না।
জানা যায়, শহরের মিস্ত্রিপাড়া মহল্লার বাদশা মিয়ার ছেলে বিজয় (১৬) ও মুন্সিপাড়া এলাকার দিনমজুর পাপ্পু হোসেনের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা। বিজয় সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাইস্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র আর প্রিয়াঙ্কা পড়তো এনজিও পরিচালিত ওব্যাট স্কুলের ৯ম শ্রেণিতে। দুজন দুজনকে ভালোবেসে গত ৬ মাস আগে পরিবারকে না জানিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে।
পরে তাদের পরিবার বিয়ে মেনে নিলেও পরে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন।শুরু হয় প্রিয়াঙ্কার  উপর নির্যাতন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা গত ২৭ ডিসেম্বর বিকেলে নির্যাতন করে নিজ শোয়ার ঘরে সিলিংয়ে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। পরে প্রিয়াঙ্কাকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাতে মারা যায় প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কার মামা মো. তুফান এটিকে  একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবি করেন। তিনি বলেন, প্রিয়াঙ্কাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালাচ্ছে বিজয় ও তার পরিবারের লোকজন। পরে আমি হত্যা মামলা দায়ের করলে বাধ্য হয়ে আসামী ধরে পুলিশ। এলাকার লোকজন জানান, যখন প্রিয়াঙ্কাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয় তখন তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহৃ ছিল। সে মারা যাওয়ার পর তার শশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়।
Facebook Comments Box
ট্যাগস :

মেধাবী প্রিয়াংকার হত্যাকারিদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় : ০৮:৫৫:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৪

সৈয়দপুরের নবম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী তামান্না নাদিয়া প্রিয়াঙ্কার (১৪) হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারী) দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনে প্রিয়াংকার আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক ও সহপাঠীর  আয়োজনে ওই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, প্রিয়াঙ্কার বাবা পাপ্পু হোসেন, মা রুপা বেগম, মামা সম্রাট, ওব্যাট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তাবাসসুম আক্তার,  সহপাঠী মোছা. নাদিয়া, মোছা. তানিয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রুহুল আলম মাস্টার, বিশিষ্টজন ওবায়দুর রহমান ও এলাকাবাসী রাজু প্রমুখ। বক্তারা বলেন মামলা তুলে নিতে প্রিয়াঙ্কার শ্বশুর বাদশা নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। এমনকি এলাকার লোকজন যৌথ স্বাক্ষরে একটি অভিযোগ করায় তাদেরকেও মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছে।এই বিষয়ে থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ প্রথমে নিতে গড়িমসি করে। পরে এমপির সুপারিশে নিলেও কোন রিসিভ কপি দেয়নি। তাছাড়া খারাপ আচরণ করার কথাও উল্লেখ করেন তারা। তাছাড়া মামলার ৫ জন আসামীর মধ্যে মাত্র ২ জনকে গ্রেফতার করলেও বাকী ৩ জন আসামি ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে।  তারা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

এব্যাপারে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) রাসেল পারভেজ বলেন, মামলার পরেই প্রিয়াঙ্কার স্বামী বিজয় ও ভাসুর রকি হোসেন বাবু কে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে তৎপর রয়েছি। ময়না তদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর ঘটনা হত্যা না আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়া যাবেনা। আর জিডি করলে তা তদন্ত সাপেক্ষে নথিভুক্ত হবে। এজন্য তদন্তের আগে রিসিভ কপি দেয়া হয়না।
জানা যায়, শহরের মিস্ত্রিপাড়া মহল্লার বাদশা মিয়ার ছেলে বিজয় (১৬) ও মুন্সিপাড়া এলাকার দিনমজুর পাপ্পু হোসেনের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা। বিজয় সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাইস্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র আর প্রিয়াঙ্কা পড়তো এনজিও পরিচালিত ওব্যাট স্কুলের ৯ম শ্রেণিতে। দুজন দুজনকে ভালোবেসে গত ৬ মাস আগে পরিবারকে না জানিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে।
পরে তাদের পরিবার বিয়ে মেনে নিলেও পরে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন।শুরু হয় প্রিয়াঙ্কার  উপর নির্যাতন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা গত ২৭ ডিসেম্বর বিকেলে নির্যাতন করে নিজ শোয়ার ঘরে সিলিংয়ে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। পরে প্রিয়াঙ্কাকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাতে মারা যায় প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কার মামা মো. তুফান এটিকে  একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবি করেন। তিনি বলেন, প্রিয়াঙ্কাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালাচ্ছে বিজয় ও তার পরিবারের লোকজন। পরে আমি হত্যা মামলা দায়ের করলে বাধ্য হয়ে আসামী ধরে পুলিশ। এলাকার লোকজন জানান, যখন প্রিয়াঙ্কাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয় তখন তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহৃ ছিল। সে মারা যাওয়ার পর তার শশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়।
Facebook Comments Box