ঢাকা ০৭:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

মাদ্রাসা ছাত্রকে শারীরিক নির্যাতনে হত্যা, প্রধান আসামী গ্রেফতার

সারাবেলা ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:১৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৯৫ বার পঠিত

অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষক

চট্রগ্রামের হাফিজিয়া মাদরাসায় পড়ুয়া শাবিব শাইয়ান (১১) নামে এক শিক্ষার্থীকে শারিরিক নির‌্যাতন করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামী মাদরাসার প্রধান আসামী শিক্ষক রিদুয়ানুলকে আটক করেছে র‌্যাব-৭ চট্রগ্রাম।

মামলার এজহার থেকে জানা গেছে,নিহত ভিকটিম শাবিব শাইয়ান (১১) চট্টগ্রামের চকবাজার থানাধীন মেহেদীবাগস্থ একটি মাদ্রসার হেফ্জ বিভাগের ছাত্র । প্রতিদিনের ন্যায় গত ১৩ মার্চ  সকাল ৬টার দিকে ভিকটিম শাবিব শাইয়ান’কে তার বাবা মশিউর রহমান চৌধুরী বাসা থেকে মাদ্রাসায় দিয়ে আসেন।

পরবর্তীতে রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ছেলেকে মাদ্রাসা থেকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য মাদ্রাসার গেইটের সামনে উপস্থিত হলে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোঃ ফোরকান মোবাইল ফোনে জানায় তার ছেলে মাদ্রাসার ৪র্থ তলায় অবস্থিত বাথরুমে গিয়েছে।

বাথরুম থেকে ফিরতে দেরি হওয়ায় মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ভিকটিম শাবিব শাইয়ান’কে অনেক ডাকাডাকি করে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে মাদ্রাসায় উপস্থিত শিক্ষকদেরকে জানায়। এ সময় শিক্ষক রিদুয়ানুল হক শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাথরুমের দরজা ভেঙ্গে দেখতে পান ভিকটিম শাবিব শাইয়ান তার পরিহিত প্যান্টের বেল্ট গলায় দিয়ে বাথরুমের টাওয়াল স্ট্যান্ড এর সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।

তখন শিক্ষার্থীরা ভিকটিম শাবিব শাইয়ানের মুমূর্ষ অবস্থার কথা তার বাবা মশিউর রহমান চৌধুরীকে জানালে তিনি দ্রুত মাদ্রাসার ৪র্থ তলায় ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষক রিদুয়ানুল হক ও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সহযোগীতায় ভিকটিম শাবিব শাইয়ান’কে উদ্ধার করে নিকটস্থ মাক্স হাসপাতাল নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ভিকটিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।   সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু ভিকটিম শাবিব শাইয়ান’কে মৃত ঘোষণা করেন। সে সময় নৃশংস হত্যাকান্ডটি চট্টগ্রামসহ সারাদেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

নির্মম  এ হত্যার ঘটনায় গত ১৬ মার্চ   নিহতের পিতা মশিউর রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার থানায় ৩ জনকে  আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।  যার মামলার নং-০৮, তারিখ ১৬ মার্চ ২০২৩ ইং ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।

মামলা হওয়ার পর চকবাজার থানা পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত ০২ জনকে আসামী’কে আটক করলেও  হত্যার সাথে জড়িত প্রধান আসামী এবং হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য র‍্যাব-৭, চট্টগ্রাম ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। দীর্ঘ ৬মাস পর নির্মম ও নৃশংস হত্যা মামলার এজাহার নামীয় প্রধান আসামী রিদুয়ানুল হককে চট্টগ্রাম র‍্যাব-৭ এর  একটি আভিযানিক দল কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন বমুবিলছড়ি এলাকা থেকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর  বোরবার  তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ওই শিক্ষক চকরিয়া থানার পূর্ব চরণদ্বীপের বদিউল আলমের ছেলে।, সাং-,, জেলা-চট্টগ্রাম’কে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে অকপটে স্বীকার করে যে, উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে সরাসির জড়িত।

উল্লেখ্য, বর্ণিত হত্যাকান্ডের ঘটনাটি প্রাথমিক পর্যায়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও পরবর্তীতে লাশের ময়না তদন্তে নিহত ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের প্রমান পাওয়া যায় এবং অনৈতিকভাবে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের আলামত পাওয়া যায়। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সারাবেলার সংবাদ/ এমএএইচ/ ১৯ সেপ্টম্বর ২০২৩

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

মাদ্রাসা ছাত্রকে শারীরিক নির্যাতনে হত্যা, প্রধান আসামী গ্রেফতার

আপডেট সময় : ০২:১৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

চট্রগ্রামের হাফিজিয়া মাদরাসায় পড়ুয়া শাবিব শাইয়ান (১১) নামে এক শিক্ষার্থীকে শারিরিক নির‌্যাতন করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামী মাদরাসার প্রধান আসামী শিক্ষক রিদুয়ানুলকে আটক করেছে র‌্যাব-৭ চট্রগ্রাম।

মামলার এজহার থেকে জানা গেছে,নিহত ভিকটিম শাবিব শাইয়ান (১১) চট্টগ্রামের চকবাজার থানাধীন মেহেদীবাগস্থ একটি মাদ্রসার হেফ্জ বিভাগের ছাত্র । প্রতিদিনের ন্যায় গত ১৩ মার্চ  সকাল ৬টার দিকে ভিকটিম শাবিব শাইয়ান’কে তার বাবা মশিউর রহমান চৌধুরী বাসা থেকে মাদ্রাসায় দিয়ে আসেন।

পরবর্তীতে রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ছেলেকে মাদ্রাসা থেকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য মাদ্রাসার গেইটের সামনে উপস্থিত হলে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোঃ ফোরকান মোবাইল ফোনে জানায় তার ছেলে মাদ্রাসার ৪র্থ তলায় অবস্থিত বাথরুমে গিয়েছে।

বাথরুম থেকে ফিরতে দেরি হওয়ায় মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ভিকটিম শাবিব শাইয়ান’কে অনেক ডাকাডাকি করে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে মাদ্রাসায় উপস্থিত শিক্ষকদেরকে জানায়। এ সময় শিক্ষক রিদুয়ানুল হক শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাথরুমের দরজা ভেঙ্গে দেখতে পান ভিকটিম শাবিব শাইয়ান তার পরিহিত প্যান্টের বেল্ট গলায় দিয়ে বাথরুমের টাওয়াল স্ট্যান্ড এর সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।

তখন শিক্ষার্থীরা ভিকটিম শাবিব শাইয়ানের মুমূর্ষ অবস্থার কথা তার বাবা মশিউর রহমান চৌধুরীকে জানালে তিনি দ্রুত মাদ্রাসার ৪র্থ তলায় ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষক রিদুয়ানুল হক ও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সহযোগীতায় ভিকটিম শাবিব শাইয়ান’কে উদ্ধার করে নিকটস্থ মাক্স হাসপাতাল নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ভিকটিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।   সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু ভিকটিম শাবিব শাইয়ান’কে মৃত ঘোষণা করেন। সে সময় নৃশংস হত্যাকান্ডটি চট্টগ্রামসহ সারাদেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

নির্মম  এ হত্যার ঘটনায় গত ১৬ মার্চ   নিহতের পিতা মশিউর রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার থানায় ৩ জনকে  আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।  যার মামলার নং-০৮, তারিখ ১৬ মার্চ ২০২৩ ইং ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।

মামলা হওয়ার পর চকবাজার থানা পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত ০২ জনকে আসামী’কে আটক করলেও  হত্যার সাথে জড়িত প্রধান আসামী এবং হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য র‍্যাব-৭, চট্টগ্রাম ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। দীর্ঘ ৬মাস পর নির্মম ও নৃশংস হত্যা মামলার এজাহার নামীয় প্রধান আসামী রিদুয়ানুল হককে চট্টগ্রাম র‍্যাব-৭ এর  একটি আভিযানিক দল কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন বমুবিলছড়ি এলাকা থেকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর  বোরবার  তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ওই শিক্ষক চকরিয়া থানার পূর্ব চরণদ্বীপের বদিউল আলমের ছেলে।, সাং-,, জেলা-চট্টগ্রাম’কে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে অকপটে স্বীকার করে যে, উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে সরাসির জড়িত।

উল্লেখ্য, বর্ণিত হত্যাকান্ডের ঘটনাটি প্রাথমিক পর্যায়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও পরবর্তীতে লাশের ময়না তদন্তে নিহত ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের প্রমান পাওয়া যায় এবং অনৈতিকভাবে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের আলামত পাওয়া যায়। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সারাবেলার সংবাদ/ এমএএইচ/ ১৯ সেপ্টম্বর ২০২৩

Facebook Comments Box