অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন
মন্ত্রী এমপি নেতাদের বাড়ি ও দলীয় কার্যালয়ে আগুন
- আপডেট সময় : ০৫:৪২:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ অগাস্ট ২০২৪ ৫৩ বার পঠিত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন রবিবার জেলায় জেলায় জনপ্রতিনিধিদের বাসাবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ, সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুক এবং সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের বাড়িও রয়েছে।
কুষ্টিয়ায় মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেছেন বিক্ষোভকারীরা। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শহরের পিটিআই সড়কের বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বাড়ির সামনে বিভিন্ন ধরনের ফুলের টব, তৈরি করা নৌকা সড়কের ওপর পড়ে আছে। নিচতলার এসি, জানালা ও গ্লাস ভেঙে পড়ে আছে। পেছনের রান্নাঘর তছনছ করা হয়েছে।
কুষ্টিয়ায় মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেছেন বিক্ষোভকারীরা। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শহরের পিটিআই সড়কের বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বাড়ির সামনে বিভিন্ন ধরনের ফুলের টব, তৈরি করা নৌকা সড়কের ওপর পড়ে আছে। নিচতলার এসি, জানালা ও গ্লাস ভেঙে পড়ে আছে। পেছনের রান্নাঘর তছনছ করা হয়েছে।
ফরিদপুর : ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে ভাঙচুর, অফিসের সামনের কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন, ১৫ আগস্টের কমপক্ষে ১২ তোরণ ভাঙচুর, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধুর ছবিসংবলিত কয়েকটি গেট ভাঙচুর করে। এরপর তারা আলিমুজ্জামান ব্রিজ পার হয়ে আলীপুর এলাকার রাসেল স্কয়ারের জেলা আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর করে ও অফিসের সামনে রাখা কয়েকটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। এদিকে, শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়। আন্দোলনকারীরা শহরের পূর্ব পাশে রাজেন্দ্র কলেজ সংলগ্ন ছাত্র সংগঠন রুকসু ভবন ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে। এসময় রাজেন্দ্র কলেজের দক্ষিণ পাশে সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
চাঁদপুর শহরের জে এম সেনগুপ্ত রোডে অবস্থিত দীপু মনির বাসায় এবং চাঁদপুর পৌরসভা কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। শহরের কালীবাড়ি পুলিশ বক্সে ও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়।
নীলফামারীতে বিক্ষোভকারীরা সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের বাসভবন, আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর এবং পুলিশ বক্সে ভাঙচুর ও আগুন দেন। পুলিশ তাদের ওপর কাদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
বরিশাল নগরের নবগ্রাম রোডে অবস্থিত জাহিদ ফারুকের বাড়িতে বেলা দুইটার দিকে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। এ সময় বাড়ির ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। বাড়ির সামনে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
দিনাজপুরে ইকবালুর রহিমের বাসায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। একই সময়ে তার বাসার সামনে পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙচুর ও এগুলোতে আগুন দেওয়া হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের খেদন সরদার মোড় ও পৌর শহরের স্টেশন সড়ক এলাকায় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত ও বর্তমান সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী বাড়িতে ভাঙচুর করেন বিক্ষোভকারীরা।
রাজশাহী : রাজশাহীর মোহনপুরে থানা, উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, ইউএনও অফিস, এসি ল্যান্ড অফিস, সরকারি খাদ্য গুদাম ও থানা সংলগ্ন ১৫টি দোকানে আগুন দেওয়া হয়েছে। আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে মোহনপুর থানার দুটি পিকআপ, এসি ল্যান্ডের একটি সরকারি গাড়ি ও থানার ভেতরে থাকা ২৫টি মোটরসাইকেল। পরে দমকল বাহিনীর কয়েকটি গাড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বহিরাগতরা প্রথমে মহাসড়ক সংলগ্ন মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ঘেরাও করে ব্যাপক ভাঙচুর করে ও পরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এদিকে পরে বহিরাগতরা মোহনপুর থানায় ঢুকে প্রথমে ওসির পিকআপ ও পুলিশের আরেকটি টহল পিকআপে আগুন দেয়। থানার বাউন্ডারি লাগোয়া ১৪ থেকে ১৫টি দোকানেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। বহিরাগতরা মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ভবনের কয়েকটি কক্ষে ভাঙচুর চালায়।
টাঙ্গাইলে বিক্ষোভকারীরা পূর্ব আদালতপাড়ায় টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসানের (ছোট মনির) বাসভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেন। বাসার নিচে সাতটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তার মালিকানাধীন পেট্রলপাম্প ও হাইওয়ে রেস্তোরাঁয় ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
ময়মনসিংহ : আন্দোলনকারীদের একটি অংশ নগরীর পন্ডিত পাড়া এলাকায় ঢুকে সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের বাসার প্রধান ফটকে ভাঙচুর করে। নিচতলায় নির্মিত বঙ্গবন্ধু গ্যালারির সমস্ত ছবি ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় আশপাশের বেশ কয়েকটি বহুতল ভবনের প্রধান ফটকে ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। একই সময়ে বিক্ষোভ আন্দোলনকারীরা আদালত প্রাঙ্গণে ঢুকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুলের চেম্বারে ভাঙচুর চালায়।
এ ছাড়া লক্ষ্মীপুরে সংসদ সদস্য নুরুউদ্দীন চৌধুরীর বাসায় ভাঙচুর, বগুড়ায় সংসদ সদস্য মজিবর রহমান ও খুলনায় সংসদ সদস্য শেখ হেলালের বাসভবনে হামলা ও আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।