ঢাকা ১১:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ভোলায় সাংবাদিক ইউনুছ শরীফের উপর হামলা, বিভিন্ন মহলের নিন্দা Logo পাসপোর্ট আনতে গিয়ে সোনারগাঁয়ের দুই যুবক নিহত Logo সৈয়দপুরে গরিব ও দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ Logo আইফেল টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড! ১২০০০ পর্যটককে নিরাপদ স্থানে সরান হল Logo সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে: প্রেস সচিব Logo উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড: শিশুসহ নিহত ২ Logo বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক জোরদারের আশাবাদ প্রণয় ভার্মার Logo আশুলিয়ায় ছয় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা Logo অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি মার্কিন সমর্থন অব্যাহত থাকবে, ফোনলাপে জ্যাক সুলিভান Logo গণহত্যার সাথে জড়িতদের বিএনপিতে নেয়া মানা: মির্জা ফখরুল

ব্যবস্থাপনার উন্নতি না করে আবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি?

সারাবেলা প্রতিবেদন
  • আপডেট সময় : ০২:৫৫:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ৯৬ বার পঠিত
মার্চের প্রথম দিন থেকে ফের বিদ্যুতের দাম বাড়তে পারে৷ একই সঙ্গে গ্যাস ও জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের কথাও বলেছেন খনিজ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ৷

এখন পর্যন্ত যা আভাস পাওয়া গেছে তাতে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ৩০ থেকে ৮০ পয়সা বাড়তে পারে৷

২০২৩ সালের মার্চে সর্বশেষ বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়৷ তখন বাড়ানো হয় শতকরা পাঁচ ভাগ৷

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, এবার তিন থেকে চার শতাংশ বাড়বে৷  তবে বিদ্যুতের দামের নানা ধরনের স্লট থাকায় লাইফ লাইন পর্যায়ে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না বলে তিনি দাবি করেছেন৷ তার কথা, ‘‘ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে মূল্য সমন্বয় করা হচ্ছে৷’’

গত দেড় দশকে পাইকারি পর্যায়ে ১২ বার এবং গ্রাহক পর্যায়ে ১৩ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে৷

এদিকে শীত যাওয়ার আগেই লোডশেডিং শুরু হয়ে গেছে৷ তবে পিডিবি দাবি করছে, এখন পর্যন্ত কোনো লোডশোডিং নেই৷ পিডিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শামীম আহসান বলেন, বৃহস্পতিবার বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১০ হাজার ৫৯৮ মেগাওয়াট, উৎপাদনও ছিল ঠিক সমপরিমাণ৷ কোনো ঘাটতি ছিল না৷ কিন্তু বাস্তবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং হয়েছে৷

এবার গ্রীষ্ম মৌসুমে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট৷ গত বছরের চেয়ে চাহিদা বেড়েছে ১১ শতাংশের মতো৷ মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার ৪৮১ মেগাওয়াট হলেও এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ উৎপাদন ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট হয়েছে গত বছরের ১৯ এপ্রিল৷ এ বছর গরমের সময় সেই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও কোনোভাবেই লোডশেডিং এড়ানো যাবে না৷

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী শামসুল আলম বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেই বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় না৷ কারণ, আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিনির্ভর৷ মূল কাঁচামাল হলো গ্যাস৷ এখন আমাদের গ্যাসেরই সংকট চলছে৷ উৎপাদন বাড়লে ব্যয় বাড়বে৷ আর সেটা আবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে নেয়া ছাড়া সরকার আর কোনো পথ দেখছে না৷ ফলে লোডশেডিং করেই সরকার খরচ কমাবে৷’’
তার কথা, ‘‘বারবার একতরফাভাবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে৷ কোনো গণশুনানি করা হচ্ছে না৷ কিন্তু ব্যবস্থাপনার উন্নতি ঘটিয়ে, দুর্নীতি কমিয়ে, ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসিয়ে অর্থ দেয়া বন্ধ করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কমানো সম্ভব৷ সরকার সেটা তো করছে না৷ সাধারণ মানুষের ওপর দামের বোঝা চাপিয়ে কষ্ট দিচ্ছে৷’’

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক সদস্য মকবুল ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে গ্যাস লাগে, সেটা আমাদের আছে৷ কিন্তু গ্যাস উত্তোলন না করে একটি মহলকে সু্বিবধা দিতে আমদানি বাড়ানো হচ্ছে৷ ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ বাড়ছে৷’’

বিদ্যুতের দাম বাড়লে তার পুরো চাপ সাধারণ মানুষের ওপর পড়ে বলে মন্তব্য করেন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ সভাপতি এস এম নাজের হোসেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বিদ্যুতের দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতি আবার বাড়বে৷ বিদ্যুৎ খরচ বাড়ার প্রভাব পড়ে সবখানে৷  কৃষি ও ভোগ্যপণ্য, পরিবহণ খরচ সবকিছু বেড়ে যায়৷ কিন্তু সরকার চাইলে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়েও পারে৷ ক্যাপাসিটি ট্যাক্সের নামে যে অর্থ পরিশোধ করা হয়, সেটা বাদ দিলে উৎপাদন খরচ কমে যায়৷ আর আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও এখানে কমছে না৷ এই জ্বালানি তেলের ব্যবসা আবার সরকার এবকভাবে করে৷’’

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহ সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, ‘‘আবারো বিদ্যুতের দাম বাড়লে পোশাক শিল্পসহ সব শিল্পেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে৷ এর আগে শিল্প গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে৷ কিন্তু আমরা গ্যাস পাই না৷ আমাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে গিয়েছে৷ বিদ্যুতের দাম বাড়লে উৎপাদন খরচ আরো বাড়বে৷ এমনিতেই আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিসহ নানা কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ ভাগ এবং ইউরোপে ১৭ ভাগ পোশাক রপ্তানি কমে গেছে৷’’

তবে বিষয়টিকে পুরো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিপর্যয় হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর৷ তিনি বলেন, ‘‘ভ্রান্ত নীতির কারণে আমাদের জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে৷ যেখানে আমাদের জ্বালানি সার্বভৌমত্ব থাকার কথা ছিল, সেখানে আমরা আমদানিনির্ভর হয়ে পড়েছি৷ ফলে আমরা এখন অন্যের ওপর নির্ভশীল৷ তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ-এর একটির সঙ্গে অন্যটি সম্পর্কিত৷ এর মধ্যে আমাদের গ্যাস থাকলেও তা উত্তোলন না করে আমরা এলএনজি আমদানি করছি৷ ফলে বিদ্যুতে আমরা বিপর্যয়ের মুখে পড়ছি৷ উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে৷ আর সেই খরচ নেয়া হচ্ছে গ্রাহকদের কাছ থেকে৷ সরকারের ভ্রান্ত  নীতির বলি হচ্ছেন গ্রাহকরা৷’’

তার কথা, ‘‘বিদ্যুতের দাম বাড়লে কৃষি ও শিল্প উৎপাদনের খরচ বেড়ে যায়, বেড়ে যায় পরিবহণ খরচ৷ ফলে সার্বিকভাবে সব কিছুর দাম বেড়ে যায়৷ বেড়ে যায় সার্বিক মূল্যস্ফীতি৷ যার চাপ পড়ে সাধারণ মানুষের ওপর৷’’

তিনি বলেন, ‘‘মূল্যস্ফীতির সঙ্গে আয় না বাড়লে যারা নিম্ন আয়ের মানুষ, সীমিত আয়ের মানুষ, তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমে যায়৷ তারা কম কেনেন, কম খান৷ ফলে পুষ্টির অভাব দেখা দেয় আর দারিদ্র্য বেড়ে যায়৷ যেমন ঢাকা শহরে দারিদ্র্য বেড়েছে৷’’

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

ব্যবস্থাপনার উন্নতি না করে আবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি?

আপডেট সময় : ০২:৫৫:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
মার্চের প্রথম দিন থেকে ফের বিদ্যুতের দাম বাড়তে পারে৷ একই সঙ্গে গ্যাস ও জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের কথাও বলেছেন খনিজ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ৷

এখন পর্যন্ত যা আভাস পাওয়া গেছে তাতে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ৩০ থেকে ৮০ পয়সা বাড়তে পারে৷

২০২৩ সালের মার্চে সর্বশেষ বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়৷ তখন বাড়ানো হয় শতকরা পাঁচ ভাগ৷

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, এবার তিন থেকে চার শতাংশ বাড়বে৷  তবে বিদ্যুতের দামের নানা ধরনের স্লট থাকায় লাইফ লাইন পর্যায়ে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না বলে তিনি দাবি করেছেন৷ তার কথা, ‘‘ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে মূল্য সমন্বয় করা হচ্ছে৷’’

গত দেড় দশকে পাইকারি পর্যায়ে ১২ বার এবং গ্রাহক পর্যায়ে ১৩ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে৷

এদিকে শীত যাওয়ার আগেই লোডশেডিং শুরু হয়ে গেছে৷ তবে পিডিবি দাবি করছে, এখন পর্যন্ত কোনো লোডশোডিং নেই৷ পিডিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শামীম আহসান বলেন, বৃহস্পতিবার বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১০ হাজার ৫৯৮ মেগাওয়াট, উৎপাদনও ছিল ঠিক সমপরিমাণ৷ কোনো ঘাটতি ছিল না৷ কিন্তু বাস্তবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং হয়েছে৷

এবার গ্রীষ্ম মৌসুমে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট৷ গত বছরের চেয়ে চাহিদা বেড়েছে ১১ শতাংশের মতো৷ মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার ৪৮১ মেগাওয়াট হলেও এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ উৎপাদন ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট হয়েছে গত বছরের ১৯ এপ্রিল৷ এ বছর গরমের সময় সেই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও কোনোভাবেই লোডশেডিং এড়ানো যাবে না৷

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী শামসুল আলম বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেই বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় না৷ কারণ, আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিনির্ভর৷ মূল কাঁচামাল হলো গ্যাস৷ এখন আমাদের গ্যাসেরই সংকট চলছে৷ উৎপাদন বাড়লে ব্যয় বাড়বে৷ আর সেটা আবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে নেয়া ছাড়া সরকার আর কোনো পথ দেখছে না৷ ফলে লোডশেডিং করেই সরকার খরচ কমাবে৷’’
তার কথা, ‘‘বারবার একতরফাভাবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে৷ কোনো গণশুনানি করা হচ্ছে না৷ কিন্তু ব্যবস্থাপনার উন্নতি ঘটিয়ে, দুর্নীতি কমিয়ে, ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসিয়ে অর্থ দেয়া বন্ধ করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কমানো সম্ভব৷ সরকার সেটা তো করছে না৷ সাধারণ মানুষের ওপর দামের বোঝা চাপিয়ে কষ্ট দিচ্ছে৷’’

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক সদস্য মকবুল ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে গ্যাস লাগে, সেটা আমাদের আছে৷ কিন্তু গ্যাস উত্তোলন না করে একটি মহলকে সু্বিবধা দিতে আমদানি বাড়ানো হচ্ছে৷ ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ বাড়ছে৷’’

বিদ্যুতের দাম বাড়লে তার পুরো চাপ সাধারণ মানুষের ওপর পড়ে বলে মন্তব্য করেন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ সভাপতি এস এম নাজের হোসেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বিদ্যুতের দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতি আবার বাড়বে৷ বিদ্যুৎ খরচ বাড়ার প্রভাব পড়ে সবখানে৷  কৃষি ও ভোগ্যপণ্য, পরিবহণ খরচ সবকিছু বেড়ে যায়৷ কিন্তু সরকার চাইলে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়েও পারে৷ ক্যাপাসিটি ট্যাক্সের নামে যে অর্থ পরিশোধ করা হয়, সেটা বাদ দিলে উৎপাদন খরচ কমে যায়৷ আর আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও এখানে কমছে না৷ এই জ্বালানি তেলের ব্যবসা আবার সরকার এবকভাবে করে৷’’

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহ সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, ‘‘আবারো বিদ্যুতের দাম বাড়লে পোশাক শিল্পসহ সব শিল্পেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে৷ এর আগে শিল্প গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে৷ কিন্তু আমরা গ্যাস পাই না৷ আমাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে গিয়েছে৷ বিদ্যুতের দাম বাড়লে উৎপাদন খরচ আরো বাড়বে৷ এমনিতেই আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিসহ নানা কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ ভাগ এবং ইউরোপে ১৭ ভাগ পোশাক রপ্তানি কমে গেছে৷’’

তবে বিষয়টিকে পুরো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিপর্যয় হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর৷ তিনি বলেন, ‘‘ভ্রান্ত নীতির কারণে আমাদের জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে৷ যেখানে আমাদের জ্বালানি সার্বভৌমত্ব থাকার কথা ছিল, সেখানে আমরা আমদানিনির্ভর হয়ে পড়েছি৷ ফলে আমরা এখন অন্যের ওপর নির্ভশীল৷ তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ-এর একটির সঙ্গে অন্যটি সম্পর্কিত৷ এর মধ্যে আমাদের গ্যাস থাকলেও তা উত্তোলন না করে আমরা এলএনজি আমদানি করছি৷ ফলে বিদ্যুতে আমরা বিপর্যয়ের মুখে পড়ছি৷ উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে৷ আর সেই খরচ নেয়া হচ্ছে গ্রাহকদের কাছ থেকে৷ সরকারের ভ্রান্ত  নীতির বলি হচ্ছেন গ্রাহকরা৷’’

তার কথা, ‘‘বিদ্যুতের দাম বাড়লে কৃষি ও শিল্প উৎপাদনের খরচ বেড়ে যায়, বেড়ে যায় পরিবহণ খরচ৷ ফলে সার্বিকভাবে সব কিছুর দাম বেড়ে যায়৷ বেড়ে যায় সার্বিক মূল্যস্ফীতি৷ যার চাপ পড়ে সাধারণ মানুষের ওপর৷’’

তিনি বলেন, ‘‘মূল্যস্ফীতির সঙ্গে আয় না বাড়লে যারা নিম্ন আয়ের মানুষ, সীমিত আয়ের মানুষ, তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমে যায়৷ তারা কম কেনেন, কম খান৷ ফলে পুষ্টির অভাব দেখা দেয় আর দারিদ্র্য বেড়ে যায়৷ যেমন ঢাকা শহরে দারিদ্র্য বেড়েছে৷’’

Facebook Comments Box