ঢাকা ০৫:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিমানবন্দর এলাকায় নির্মাণ হচ্ছে বহুতল ভবন, দুর্ঘটনার আশংকায় কর্তৃপক্ষ

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১১:৪৩:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ৭২ বার পঠিত

oppo_2

সৈয়দপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই রানওয়ের ৪০০ গজ উত্তরে নির্মাণ হচ্ছে বহুতল ভবন। নুর ইসলাম নামের এক ব্যাক্তি ওই ভবন নির্মাণ করলেও আইনি কোন পদক্ষেপই নিচ্ছেন না এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরের ২৫ নটিকেল মাইল এলাকার মধ্যে বহুতল ভবন নির্মাণের অনুমতি না থাকলেও শুধুমাত্র পৌর কর্তৃপক্ষের নকশা অনুমোদন নেয়ার কথা বলে নির্মাণ কাজ চলছে বহুতল ভবনের। এ নিয়ে বিমান দুর্ঘটনায় আতঙ্কিত বিমান কর্তৃপক্ষ ।

বিমান কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্ষা মৌসুমে বা আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটলে যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তায় বিপদসীমার অনেক নিচে দিয়ে ৪৫ ডিগ্রী এ্যাঙ্গেলে উড়ন্ত বিমান অবতরণ করা হয় বিমানবন্দরে। ওই সময় ঘন মেঘের কারণে বিমান পাইলট সামনের কোন উঁচু স্থাপনা বা টাওয়ার ভালোভাবে দেখতে পান না। যার ফলে পাইলট বারবার বিমান বন্দর টাওয়ারের কাছে জানতে চান অবতরণ বিমানের সামনে কোন বহুতল ভবন, টাওয়ার বা গাছপালা আছে কিনা। থাকলে সেখানে আঘাত লেগে বিমান ক্রাশের সম্ভাবনা থাকে শতভাগ। এ কারণে শুধুমাত্র বিমান ক্রাশের ভয়েই বিমানবন্দরের ২৫ নটিকেল মাইলের মধ্যে কোন প্রকার বহুতল ভবন বা টাওয়ার স্থাপনে অনুমতি দেয়া হয় না। বিমান ও যাত্রীদের নিরপত্তায় ওই নির্দেশনা দেয়া না হলেও সৈয়দপুর বিমানবন্দরের উত্তর পার্শে সহ কয়েক স্হানে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিমানবন্দর রানওযের উত্তর পার্শে ৪০০ ফিট্ এর মধ্যে নুর ইসলাম নামের এক ব্যাক্তি সিভিল অ্যাভিয়েশন এর আইনকে তোয়াক্কা না করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেছেছেন। বিমান কর্তৃপক্ষের অনুমতি পৌরসভার নকশা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন কারো অনুমতির দরকার নাই।ভবনটি নির্মানের জন্য উপর মহলের নির্দেশ রয়েছে। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা সৈয়দপুরে দালানকোঠা বা বহুতল ভবন নির্মাণ হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিমানবন্দরের ২৫ নটিকেল মাইল এলাকা বাদ দিয়ে নির্মাণের জোর তাগিদ দেয়া হলেও তা মানছেন না নুর ইসলাম নামের ওই ব্যাক্তি সহ অনেকেই।

জানা,গেছে,সৈয়দপুর বিমানবন্দরের পূর্বপাশে সেনাসিবাস, উত্তর ও পশ্চিম পাশে পৌর এলাকা এবং দক্ষিণ পাশে বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন। বিধি অনুযায়ী ২৫ নটিকেল মাইল এলাকা বাদ দিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য সৈয়দপুর পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবরে সিভিল এ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগে। ওই চিঠির জবাবে সৈয়দপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আখতার হোসেন বাদল ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুসা উদ্দিন বিমানবন্দরের ২৫ নটিকেল মাইলের মধ্যে বহুতল ভবন নির্মাণের নকশা পাশ করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেন বলে জানা যায় ।

এছাড়াও যদি কোন ভবনের কারণে বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে বা সমস্যা দেখা দেয় তাহলে ওইসব বহুতল ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন তারা। কিন্তু তারা মারা যাওয়ার পর তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতির কোন কাজই হচ্ছেনা। বর্তমান পৌর পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ কোন কার্যকরী ব্যবস্থা না নেয়ার কারনে বিমান উঠানামায় আতংকের সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানা যায়।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক শুপ্লব কুমার ঘোষ জানান,বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরটি আঞ্চলিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত রয়েছে । বর্তমানে এ বিমানবন্দরে প্রতিদিন বাংলাদেশ বিমান,ও ইউএস-বাংলার বিমান চলাচল করছে। যাত্রীসেবাও দেওয়া হচ্ছে শতভাগ। কিন্তু বিমানবন্দরের ২৫ নটিকেল মাইলের মধ্যে উঁচু ভবন থাকায় আতঙ্কে রয়েছে বিমানের পাইলটরা। তিনি বলেন নুর ইসলাম নামের ওই ব্যাক্তিকে রানওয়ে সংলগ্ন ভবন নির্মাণের কোন প্রকার অনুমতি দেয়া হয় নি। অবতরণে আতঙ্কিত ভবনগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পৌর কর্তৃপক্ষ ও সিভিল এ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্শন করেন তিনি ।

সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবি বলেন, নিরাপদে বিমান চলাচলের স্বার্থে রানওয়ে সংলগ্ন বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য কোন নকশা পাস করা হয় নি। যারা রানওয়ের আশপাশ এলাকার বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন তারা এক প্রকার গায়ের জোরেই করছেন। রানওয়ের আশপাশ এলাকার সকল অবৈধ বহুতল ভবন গুড়িয়ে দিতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

বিমানবন্দর এলাকায় নির্মাণ হচ্ছে বহুতল ভবন, দুর্ঘটনার আশংকায় কর্তৃপক্ষ

আপডেট সময় : ১১:৪৩:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

সৈয়দপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই রানওয়ের ৪০০ গজ উত্তরে নির্মাণ হচ্ছে বহুতল ভবন। নুর ইসলাম নামের এক ব্যাক্তি ওই ভবন নির্মাণ করলেও আইনি কোন পদক্ষেপই নিচ্ছেন না এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরের ২৫ নটিকেল মাইল এলাকার মধ্যে বহুতল ভবন নির্মাণের অনুমতি না থাকলেও শুধুমাত্র পৌর কর্তৃপক্ষের নকশা অনুমোদন নেয়ার কথা বলে নির্মাণ কাজ চলছে বহুতল ভবনের। এ নিয়ে বিমান দুর্ঘটনায় আতঙ্কিত বিমান কর্তৃপক্ষ ।

বিমান কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্ষা মৌসুমে বা আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটলে যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তায় বিপদসীমার অনেক নিচে দিয়ে ৪৫ ডিগ্রী এ্যাঙ্গেলে উড়ন্ত বিমান অবতরণ করা হয় বিমানবন্দরে। ওই সময় ঘন মেঘের কারণে বিমান পাইলট সামনের কোন উঁচু স্থাপনা বা টাওয়ার ভালোভাবে দেখতে পান না। যার ফলে পাইলট বারবার বিমান বন্দর টাওয়ারের কাছে জানতে চান অবতরণ বিমানের সামনে কোন বহুতল ভবন, টাওয়ার বা গাছপালা আছে কিনা। থাকলে সেখানে আঘাত লেগে বিমান ক্রাশের সম্ভাবনা থাকে শতভাগ। এ কারণে শুধুমাত্র বিমান ক্রাশের ভয়েই বিমানবন্দরের ২৫ নটিকেল মাইলের মধ্যে কোন প্রকার বহুতল ভবন বা টাওয়ার স্থাপনে অনুমতি দেয়া হয় না। বিমান ও যাত্রীদের নিরপত্তায় ওই নির্দেশনা দেয়া না হলেও সৈয়দপুর বিমানবন্দরের উত্তর পার্শে সহ কয়েক স্হানে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিমানবন্দর রানওযের উত্তর পার্শে ৪০০ ফিট্ এর মধ্যে নুর ইসলাম নামের এক ব্যাক্তি সিভিল অ্যাভিয়েশন এর আইনকে তোয়াক্কা না করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেছেছেন। বিমান কর্তৃপক্ষের অনুমতি পৌরসভার নকশা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন কারো অনুমতির দরকার নাই।ভবনটি নির্মানের জন্য উপর মহলের নির্দেশ রয়েছে। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা সৈয়দপুরে দালানকোঠা বা বহুতল ভবন নির্মাণ হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিমানবন্দরের ২৫ নটিকেল মাইল এলাকা বাদ দিয়ে নির্মাণের জোর তাগিদ দেয়া হলেও তা মানছেন না নুর ইসলাম নামের ওই ব্যাক্তি সহ অনেকেই।

জানা,গেছে,সৈয়দপুর বিমানবন্দরের পূর্বপাশে সেনাসিবাস, উত্তর ও পশ্চিম পাশে পৌর এলাকা এবং দক্ষিণ পাশে বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন। বিধি অনুযায়ী ২৫ নটিকেল মাইল এলাকা বাদ দিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য সৈয়দপুর পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবরে সিভিল এ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগে। ওই চিঠির জবাবে সৈয়দপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আখতার হোসেন বাদল ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুসা উদ্দিন বিমানবন্দরের ২৫ নটিকেল মাইলের মধ্যে বহুতল ভবন নির্মাণের নকশা পাশ করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেন বলে জানা যায় ।

এছাড়াও যদি কোন ভবনের কারণে বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে বা সমস্যা দেখা দেয় তাহলে ওইসব বহুতল ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন তারা। কিন্তু তারা মারা যাওয়ার পর তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতির কোন কাজই হচ্ছেনা। বর্তমান পৌর পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ কোন কার্যকরী ব্যবস্থা না নেয়ার কারনে বিমান উঠানামায় আতংকের সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানা যায়।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক শুপ্লব কুমার ঘোষ জানান,বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরটি আঞ্চলিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত রয়েছে । বর্তমানে এ বিমানবন্দরে প্রতিদিন বাংলাদেশ বিমান,ও ইউএস-বাংলার বিমান চলাচল করছে। যাত্রীসেবাও দেওয়া হচ্ছে শতভাগ। কিন্তু বিমানবন্দরের ২৫ নটিকেল মাইলের মধ্যে উঁচু ভবন থাকায় আতঙ্কে রয়েছে বিমানের পাইলটরা। তিনি বলেন নুর ইসলাম নামের ওই ব্যাক্তিকে রানওয়ে সংলগ্ন ভবন নির্মাণের কোন প্রকার অনুমতি দেয়া হয় নি। অবতরণে আতঙ্কিত ভবনগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পৌর কর্তৃপক্ষ ও সিভিল এ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্শন করেন তিনি ।

সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবি বলেন, নিরাপদে বিমান চলাচলের স্বার্থে রানওয়ে সংলগ্ন বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য কোন নকশা পাস করা হয় নি। যারা রানওয়ের আশপাশ এলাকার বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন তারা এক প্রকার গায়ের জোরেই করছেন। রানওয়ের আশপাশ এলাকার সকল অবৈধ বহুতল ভবন গুড়িয়ে দিতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।

Facebook Comments Box