বিতর্কিত কূটনীতিক হেনরি কিসিঞ্জার যেভাবে বিশ্বে নানা ঘটনার রূপ দিয়েছিলেন
- আপডেট সময় : ১০:২০:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ৩৫ বার পঠিত
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ১০০ বছর বয়সে কানেক্টিকাটে তার বাড়িতে মারা গেছেন। তাকে নিয়ে নানা ধরনের মতামত ও বিতর্ক ছিল।
বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনি ‘বাস্তববাদের’ চর্চা করতেন। তিনি একইসাথে যেমন নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, তেমনি যুদ্ধাপরাধী হিসেবে নিন্দিতও হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে ‘বৈরিতার অবসান’ নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। এর আওতায় তিনি সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীনের সাথে সম্পর্কের কঠিন বরফ গলাতে সক্ষম হয়েছিলেন।
নিজের কূটনৈতিক তৎপরতায় তিনি ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েল সংঘাত নিরসনে সহায়তা করেছিলেন। প্যারিস শান্তি চুক্তিতে তার সমঝোতা তৎপরতার কারণে আমেরিকা তার দীর্ঘদিনের দুঃস্বপ্ন ভিয়েতনাম থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিল।
কিন্তু তার সমর্থকরা তাকে ‘বাস্তববাদী রাজনীতিবিদ’ হিসেবে বর্ণনা করলেও তার সমালোচকরা তাকে ‘অনৈতিক’ বলে নিন্দা করে।
চিলিতে রক্তক্ষয়ী সামরিক অভ্যত্থানের মাধ্যমে বামপন্থী বামপন্থী সরকার যখন উৎখাত করা হয় তখন সেখানে সমর্থন দেবার জন্য কিসিঞ্জারের অভিযুক্ত ছিলেন। আর্জেন্টিনার সেনাবাহিনী যখন তাদের দেশের জণগণের বিরুদ্ধে “নোংরা যুদ্ধ” শুরু করেছিল তখন চোখ বুজে ছিলেন তিনি।
কিসিঞ্জারের শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার খবর শুনে কৌতুক অভিনেতা টম লেহরার তার বিখ্যাত উক্তিতে বলেছিলেন, “রাজনৈতিক ব্যঙ্গের বিলুপ্তি ঘটলো।”
জার্মানি থেকে পলায়ন
হাইনজ আলফ্রেড কিসিঞ্জার ১৯২৩ সালের ২৭শে মে জার্মানির বাভারিয়ায় একটি মধ্যবিত্ত ইহুদী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তার পরিবার নাৎসিদের নিপীড়ন থেকে পালিয়ে ১৯৩৮ সালে নিউইয়র্কে বসবাসরত জার্মান ইহুদী সম্প্রদায়ের সাথে যোগ দেয়।
‘হেনরি’ কৈশোরে বেশ লাজুক প্রকৃতির ছিলেন। ফুটবল খেলার প্রতি তার ভালোবাসা সবসময় অটুট ছিল।
তিনি দিনের বেলা শেভিং ব্রাশ কোম্পানিতে কাজ করতেন এবং রাতে একটি হাইস্কুলে পড়াশুনা করতেন। হিসাববিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করার ইচ্ছা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন।
তিনি পদাতিক বাহিনীতে যোগ দিলেও তার বিচক্ষণতা এবং ভাষাগত দক্ষতাকে সামরিক গোয়েন্দারা কাজে লাগায়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে কিসিঞ্জার ‘ব্যাটল অব বালজ’-এর প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। সে যুদ্ধে জার্মান বাহিনী তার মাটি থেকে মিত্র বাহিনীকে সরানোর চেষ্টা করলেও সক্ষম হয়নি। আমেরিকান সৈন্যরা যখন জার্মানীর একটি শহর দখল করে নেয় তখন সেটি পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। মি. কিসিঞ্জার তখন সামরিক বাহিনীতে নিম্ন পদে কর্মরত ছিলেন।
যুদ্ধের শেষে তিনি কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সে যোগ দেন। মাত্র ২৩ বছর বয়সে তাকে একটি দল পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়। সে দলটির কাজ ছিল হিটলারের কুখ্যাত ‘গেস্তাপো বাহিনীর’ সাবেক কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করা এবং আটক করা। এজন্য কিসিঞ্জারের দলকে সর্বময় কর্তৃত্ব দেয়া হয়েছিল।
ছোট পারমানবিক যুদ্ধ
যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে তিনি হার্ভার্ডে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করেন। এর মাধমে একাডেমিক জগতে তিনি উপরের দিকে উঠতে থাকেন।
১৯৫৭ সালে তিনি ‘পারমানবিক যুদ্ধ এবং পররাষ্ট্র নীতি’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। সে বইতে তিনি উল্লেখ করেন, সীমিত আকারে পারমানবিক যুদ্ধ হলে তা জয় করা সম্ভব। তিনি দাবি করেন, নতুন ধরনের ছোট মাপের ক্ষেপণাস্ত্রের ‘কৌশলগত’ ব্যবহার যৌক্তিক।
এই বইয়ের মাধ্যমে সবার নজরে আসেন তিনি। এর মাধ্যমে কিসিঞ্জারের খ্যাতি ও সুনামের দীর্ঘ যাত্রা শুরু হয়। তার সেই ‘সীমিত পারমানবিক যুদ্ধ’ তত্ত্ব এখনো প্রচলিত।
তিনি নিউইয়র্কের গভর্নর ও সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট নেলসন রকফেলারের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান। রিচার্ড নিক্সন নির্বাচনে জয়লাভ করে ১৯৬৮ সালে হোয়াইট হাউসের ক্ষমতায় আসেন। তখন কিসিঞ্জারকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করা হয়। সেটি হচ্ছে – যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
এই সম্পর্কটা বেশ জটিল ছিল। প্রেসিডেন্ট একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিসিঞ্জারের উপদেশের উপর নির্ভর করতেন, অন্যদিকে তখন আমেরিকান ইহুদিদের প্রতি ইহুদি বিদ্বেষ ও সন্দেহের দিকেও তিনি ঝুঁকে পড়েছিলেন।
স্নায়ুযুদ্ধ তখন তুঙ্গে ছিল। কিউবাকে কেন্দ্র করে তখন যুক্তরাষ্ট্র এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা এড়ানো সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু ভিয়েতনামে তখনও আমেরিকান সেনা ছিল এবং রাশিয়া মাত্র প্রাগ দখল করে নিয়েছে।
সম্পর্ক সহজ করা
নিক্সন এবং কিসিঞ্জার সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে উত্তেজনা কমানোর সিদ্ধান্ত নেন। উভয়পক্ষ পারমানবিক অস্ত্রের মজুদ কমিয়ে আনতে আবার আলোচনা শুরু করেন।
একই সাথে চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই-এর মাধ্যমে দেশটির সরকারের সাথেও আলোচনা শুরু হয়। এ ঘটনা চীন-মার্কিন সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটায় এবং তা সোভিয়েত নেতাদের উপর চাপ প্রয়োগে সহায়তা করে। কারণ তারা প্রতিবেশী বিশাল রাষ্ট্রটিকে ভয় পেতো।
কিসিঞ্জারের পদক্ষেপের কারণেই ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট নিক্সন সরাসরি চীন সফর করেন। সেখানে তিনি চৌ এবং মাও জে দং এর সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং ২৩ বছরের কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা এবং শত্রুতার অবসান ঘটান।
ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র তখন ভিয়েতনাম থেকে সরে আসার চেষ্টা করছিল।
নিক্সনের নির্বাচনী প্রচারণার মূল অঙ্গীকার ছিল “সম্মানের সাথে শান্তি”। কিসিঞ্জার দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিজয় অর্থহীন। কারণ, তারা যে রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন করতে চেয়েছির সেটি আমেরিকার সৈন্যরা সেখান থেকে ফেরত আসার পরে টিকবে না।
তিনি উত্তর ভিয়েতনামের সাথে সমঝোতা আলোচনা শুরু করেন। কিন্তু তিনি একই সাথে কম্বোডিয়ায় গোপন বোমা হামলা চালাতে নিক্সনের সাথে সম্মত হন। কমিউনিস্টদের সেনা ও রসদ সরবরাহ বন্ধ করার প্রয়াস হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছিল।
এ ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয় এবং দেশটিতে অস্থিতিশীলতার কারণে কম্বোডিয়ায় গৃহযুদ্ধ এবং পল পটের নৃশংস শাসন শুরু হয়।
কিসিঞ্জার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময়ে প্যারিসে ভিয়েত কং এর সাথে জটিল আলোচনার পর দক্ষিণ ভিয়েতনাম থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।
এ কারণে তিনি উত্তর ভিয়েতনামের লি ডাক থো এর সাথে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পান। তবে এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেন শান্তির পক্ষে প্রচারণা চালানো ব্যক্তিরা।
কিসিঞ্জার “বিনয়ের সাথে” এই পুরষ্কার গ্রহণ করেন এবং এর থেকে পাওয়া অর্থ তিনি সংঘাতে নিহত আমেরিকান সামরিক বাহিনীর শিশুদের কল্যাণে দান করেন।
দুই বছর পর যখন কমিউনিস্ট বাহিনী দক্ষিণ ভিয়েতনাম দখল করে নেয় তখন তিনি সেটি ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
বাস্তববাদী রাজনীতিবিদ
১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় তার কূটনীতির কারণে একটি অস্ত্রবিরতি হয়।
নিক্সনের গোপন হোয়াইট হাউজ রেকর্ড ব্যবস্থায় তার এবং কিসিঞ্জারের প্রতি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী গোলডা মেইর এর আবেগঘন ধন্যবাদ জ্ঞাপন ধরা পড়ে। তারা তার দেশকে যেভাবে গুরুত্ব দিয়েছে তার জন্য এই ধন্যবাদ জানান তিনি।
কিন্তু তার ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর, এই রেকর্ডে আরো কালো রাজনৈতিক বাস্তবতা উঠে আসে। কারণ রুশ ইহুদীদের ইসরায়েলে নতুন জীবনে প্রবেশ করতে দেয়ার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের উপর চাপ দেয়ার কোনো ইচ্ছা কিসিঞ্জার বা নিক্সনের ছিল না।
কিসিঞ্জার বলেন, “সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে ইহুদীদের অভিবাসন আমেরিকার পররাষ্ট্র নীতির অংশ ছিল না।”
“এবং তারা যদি ইহুদীদের গ্যাস চেম্বারে ঢোকায় তাহলে সেটা আমেরিকার উদ্বেগের বিষয় নয়, সেটি হয়তো মানবাধিকারের উদ্বেগের বিষয়।”
চিলিতে মার্ক্সবাদী সালভাডর অ্যালেন্ডের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সমস্যা ডেকে আনে। নতুন সরকার কিউবাপন্থী ছিল এবং তারা আমেরিকার কোম্পানিগুলোকে জাতীয়করণ করছিল।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ চিলিতে গোপন অভিযান চালায়। নতুন সরকারকে উৎখাত করতে বিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। এই পদক্ষেপ যারা অনুমোদন দিয়েছিল, কিসিঞ্জার সেই কমিটির প্রধান ছিলেন।
তিনি বলেন, “জনগণের দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার কারণে কোন একটি দেশকে কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত হওয়াটা আমাদের কেন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হবে তার পক্ষে আমি কোন কারণ খুঁজে পাই না।” “চিলির ভোটাররা যাতে তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরা নিতে পারে, সেকারণে এটি তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।”
পর্যায়ক্রমে সামরিক বাহিনী হস্তক্ষেপ করে। অ্যালেন্ডে সহিংস সেনা অভ্যুত্থানে নিহত হন এবং জেনারেল পিনোচেট ক্ষমতায় আসেন। তার অনেক সেনাকে সিআইএ অর্থায়ন করেছে বলে জানা যায়।
পরের বছরগুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বিদেশি নাগরিকদের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত করেছে এমন একাধিক আদালত কিসিঞ্জারকে ধরার চেষ্টা করেছে।
এর এক বছর পর, কিসিঞ্জার ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির জের ধরে অশ্রুসিক্ত নয়নে রিচার্ড নিক্সনকে হোয়াইট হাউস ছেড়ে যেতে দেখেন। তার উত্তরসূরি জেরাল্ড ফোর্ড ক্ষমতায় আসার পর তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিয়োগ করেন।
তিনি রোডেশিয়ার শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘু সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার চাপ দেন। কিন্তু তিনি আর্জেন্টিনার জান্তা সরকারের সমালোচকদের “নিখোঁজ” হওয়ার বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার জন্য সমালোচনার মুখে পড়েন।
ক্ষমতা: চূড়ান্ত আকর্ষণ
১৯৭৭ সালে তিনি অবসর নেয়ার পরও সমালোচনা তার পিছু ছাড়েনি। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের প্রস্তাব শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে তুলে নেয়া হয়।
তিনি জিমি কার্টার এবং বিল ক্লিনটনের পররাষ্ট্র নীতির কঠোর সমালোচক ছিলেন। তার অভিযোগ ছিল, এই প্রেসিডেন্টরা খুব দ্রুত মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রতিষ্ঠার পক্ষে পদক্ষেপ নিতে চাইছিলেন। কিসিঞ্জারের মতে, এটা শুধুমাত্র ধীরে ধীরেই প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
৯/১১ এর পর জর্জ ডাব্লিউ বুশ তাকে নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনে হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দেয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তাকে জোরপূর্বক সেখান থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।
২০০৩ সালের আগ্রাসনের পর ইরাক বিষয়ে উপদেশ দিতে তিনি প্রেসিডেন্ট বুশ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির সাথে বৈঠক করেন। তিনি তাদের বলেছিলেন, “সহিংসতার মাধ্যমে জয়ই” “বের হওয়ার একমাত্র কৌশল”।
তিনি সব সময়ই প্রভাবশালী ছিলেন। ২০১৭ সালের নির্বাচনে জয় লাভের পর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ে উপদেশ দিয়েছিলেন তিনি। ক্রাইমিয়ার উপর পুতিনের দখলকে মেনে নেয়ার পরামর্শ ছিল তার।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ২০২৩ সালে তিনি যখন তার শততম বর্ষে পদার্পণ করেন, তখন ইউক্রেন নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করেছিলেন তিনি। রাশিয়ার আক্রমণের পর, শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দেশকে নেটোতে যোগ দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছিলেন।
হেনরি কিসিঞ্জারের পরিচিতদের তালিকা বেশ দীর্ঘ ছিল এবং তিনি বেশ প্রত্যুৎপন্নমতিও ছিলেন। তিনি ‘ক্ষমতা’কে বলতে পছন্দ করতেন “প্রকৃত আকর্ষণ উদ্দীপক”।
জীবনের চেয়েও বিশাল এই চরিত্র গত শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় নিজেকে ক্ষমতার কেন্দ্রে আবিষ্কার করেছেন।
অনেকের ক্ষোভের মুখেও তিনি মার্কিন স্বার্থে এবং দেশের জীবনধারার বিষয়ে তার একক মনোভাবের বিষয়ে ক্ষমাহীন ছিলেন।
তিনি একবার বলেছিলেন, “যে দেশ তার পররাষ্ট্র নীতিতে নিখুঁত নৈতিকতা চায়” “তারা পরিপূর্ণতাও পায় না, সুরক্ষাও পায় না।”বিবিসি