ঢাকা ১১:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ভোলায় সাংবাদিক ইউনুছ শরীফের উপর হামলা, বিভিন্ন মহলের নিন্দা Logo পাসপোর্ট আনতে গিয়ে সোনারগাঁয়ের দুই যুবক নিহত Logo সৈয়দপুরে গরিব ও দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ Logo আইফেল টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড! ১২০০০ পর্যটককে নিরাপদ স্থানে সরান হল Logo সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে: প্রেস সচিব Logo উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড: শিশুসহ নিহত ২ Logo বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক জোরদারের আশাবাদ প্রণয় ভার্মার Logo আশুলিয়ায় ছয় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা Logo অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি মার্কিন সমর্থন অব্যাহত থাকবে, ফোনলাপে জ্যাক সুলিভান Logo গণহত্যার সাথে জড়িতদের বিএনপিতে নেয়া মানা: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশে ডেঙ্গু টিকার সফল পরীক্ষা

সারাবেলা ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:১৪:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৩১ বার পঠিত
যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানের আবিষ্কার করা ডেঙ্গু টিকা সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ‘সফলভাবে ট্রায়াল বা পরীক্ষা’ চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বা আইসিডিডিআরবি’র বিজ্ঞানীরা।
এই টিকার একটি ডোজ ডেঙ্গুর চারটি ধরণের জন্যই কার্যকর হবে বলে দেখতে পেয়েছেন তারা। এই টিকা আবিষ্কার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ বা এনআইএইচ। টিকার নাম দেয়া হয়েছে টিভি০০৫। ডেঙ্গু টিকার দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা ছিল বাংলাদেশে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের লার্নার কলেজ অব মেডিসিন এবং বাংলাদেশের আইসিডিডিআরবি’র গবেষকরা যৌথভাবে এটি পরিচালনা করেছেন। আইসিডিডিআরবি গবেষকরা দাবি করছেন, ডেঙ্গু টিকার দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা শেষে দেখা গেছে এটি শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে প্রয়োগের জন্য নিরাপদ এবং এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম।
ডেঙ্গুর মোট চারটি ধরণ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ এবং ডেন-৪। গবেষকরা বলছেন, ডেঙ্গু টিকা আবিষ্কারে এনআইএইচ প্রথম প্রতিষ্ঠান নয়। এর আগে সানোফি ফার্মাসিউটিক্যালস এবং তাকেদা ফার্মাসিউটিক্যালস ডেঙ্গু টিকা তৈরি করেছে। “সানোফির টিকা তিনটি আলাদা ডোজের এবং এটি নয় বছরের কম বয়সী শিশু, যারা আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে, তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। আর তাকেদা ফার্মাসিউটিক্যালসের ডেঙ্গুর টিকা দুই ডোজের।
এই টিকা ডেঙ্গুর মাত্র একটি ধরণের ক্ষেত্রেই কার্যকর,” বিবিসি বাংলাকে বলেন আইসিডিডিআরবি’র জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী রাশিদুল হক। যেভাবে পরীক্ষা করা হয় : ২০০৯ সাল থেকে এই ডেঙ্গু টিকার পরীক্ষা শুরু হয়। বাংলাদেশে এই টিকা পরীক্ষার সাথে যুক্ত দলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন আইসিডিডিআরবি’র জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী রাশিদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশে পরীক্ষার আগে এটি যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলেও পরীক্ষা চালানো হয়েছে।
এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিল- দুই দেশেই প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের দুটি পরীক্ষাই করা হয়েছে। এ বিষয়ে রাশিদুল হক বলেন, যে কোন টিকা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়- এই তিনটি ধাপে পরীক্ষা করা হয়। প্রথম ধাপে দেখা হয় যে, ওই টিকাটি মানুষের দেহে প্রয়োগের জন্য নিরাপদ কী না। দ্বিতীয় ধাপে দেখা হয়, টিকার নিরাপত্তা এবং এটির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির সক্ষমতা। আর তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় এটির কার্যকারিতা দেখা হয়। অর্থাৎ যে জনগোষ্ঠীর উপর টিকা পরীক্ষা করা হয় তাদের মধ্যে কেউ আবারো ওই রোগটি দ্বারা আক্রান্ত হয় কী না। মি. হক জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যে ট্রায়াল বা পরীক্ষাটি হলো সেটি শুধুমাত্র দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা।
অর্থাৎ এই টিকার নিরাপত্তা এবং এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারে কী না সে বিষয়টিই পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। ট্রায়ালের আওতায় ২০১৫ সাল থেকে ক্লিনিকাল ট্রায়াল ও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ে পড়াশুনাসহ পরীক্ষা চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতা তৈরি করা হয়। পরে ২০১৬ সাল থেকে ডেঙ্গুর টিকার দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু হয়।
এর আওতায় গবেষকরা এক থেকে ৪৯ বছর বয়সী ১৯২ জনের উপর টিকা প্রয়োগ করেন এবং পরবর্তী তিন বছর ধরে তাদেরকে পর্যবেক্ষণ করেন। পরীক্ষায় অংশ নেয়া সবাই স্বেচ্ছায় এতে অংশ নেন এবং তাদেরকে দৈব-চয়ন পদ্ধতিতে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচন করা হয় বলে জানানো হয়। টিকা দেয়ার আগে এদের সবাইকে চারটি আলাদা ভাগে ভাগ করা হয়। এদের মধ্যে এর আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তিও ছিলেন। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা ভারতে করা হবে। চলতি মাস থেকে এই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে বলেও জানান আইসিডিডিআরবি এর বিজ্ঞানী রাশিদুল হক।
যা পেয়েছেন গবেষকরা : আইসিডিডিআরবি’র গবেষকরা বলছেন, তিন বছর ধরে পর্যবেক্ষণের পর তারা দেখতে পান যে, বেশিরভাগ স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে ডেঙ্গুর চারটি ধরণের বিরুদ্ধেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। যারা এর আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাদের দেহে এই অ্যান্টিবডির মাত্রাও বেশি পাওয়া গেছে। একই সাথে যাদের দেহে টিকা প্রয়োগ করার পর তিন বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে, তাদের কেউই এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত হননি।
আইসিডিডিআরবি এর বিজ্ঞানী রাশিদুল হক বলেন, এরই মধ্যে এই টিকা আমেরিকা এবং ব্রাজিলের জনগোষ্ঠীর উপর পরীক্ষা করা হয়েছে। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই প্রথম পরীক্ষা করা হলো। “আমাদের পপুলেশনেও আমরা দেখলাম যে এটা সেফ(নিরাপদ) এবং ইমিউনোজেনিক(রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে),” বলেন তিনি।
যাদের উপর টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল তাদের মধ্যে গুরুতর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। কারো কারো শরীরে র্যাশ, জ্বর, মাথাব্যথার মতো উপসর্গ ছিল। “২৮% ভ্যাক্সিনেটেডের মধ্যে আমরা র্যাশ পাইছি, যে র্যাশ তিন-চার দিনের মধ্যে মধ্যে মিলায় গেছে।” তিনি বলেন, “র্যাশ হওয়াটা ভাল। আমরা বলি যখন এই ভাক্সি নটা দেয়া হলো তার মানে সেটা রিঅ্যাক্ট করতেছে বডিতে, এবং অ্যান্টিবডি প্রডিউস করতেছে। আমরা একে বলি হ্যাপি র্যাশ।”
মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে কাউকে হাসপাতালে ভর্তি করার মতো অবস্থা দেখা যায়নি। এটি যেভাবে আলাদা : ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে বাজারে এরই মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠানের দুটি আলাদা টিকা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হচ্ছে সানোফি ফার্মাসিউটিক্যালসের ডেংভ্যাক্সিয়া নামে একটি টিকা।
রাশিদুল হক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বলা হয়েছে, ৯ বছরের বেশি বয়সীদের এই টিকা দেয়া যাবে। তবে তার জন্য অবশ্যই আগে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে হবে। আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত না হলে এই টিকা দেয়া যাবে না। তিনি বলেন, এই টিকাটির মোট তিনটি ডোজ ছয় মাস পর পর নিতে হয়।
শিশুদের উপর এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেশি হয়। এছাড়া এই টিকা বেশ ব্যায়বহুল। সেদিক থেকে দেখতে গেলে টিভি০০৫ নামে নতুন এই ডেঙ্গু টিকার মাত্র একটি ডোজই সব ধরণের ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে কার্যকর হবে। আলাদা আলাদা ডোজ নেয়ার দরকার হবে না। শিশুসহ সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ডেঙ্গু আক্রান্ত না হলেও এই টিকা নেয়া যাবে। আর অন্য টিকার তুলনায় এটি সস্তা। বিবিসি
সারাবেলার সংবাদ/ এমএএইচ/  ২৮ সেপ্টম্বর ২০২৩
Facebook Comments Box
ট্যাগস :

বাংলাদেশে ডেঙ্গু টিকার সফল পরীক্ষা

আপডেট সময় : ১২:১৪:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানের আবিষ্কার করা ডেঙ্গু টিকা সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ‘সফলভাবে ট্রায়াল বা পরীক্ষা’ চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বা আইসিডিডিআরবি’র বিজ্ঞানীরা।
এই টিকার একটি ডোজ ডেঙ্গুর চারটি ধরণের জন্যই কার্যকর হবে বলে দেখতে পেয়েছেন তারা। এই টিকা আবিষ্কার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ বা এনআইএইচ। টিকার নাম দেয়া হয়েছে টিভি০০৫। ডেঙ্গু টিকার দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা ছিল বাংলাদেশে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের লার্নার কলেজ অব মেডিসিন এবং বাংলাদেশের আইসিডিডিআরবি’র গবেষকরা যৌথভাবে এটি পরিচালনা করেছেন। আইসিডিডিআরবি গবেষকরা দাবি করছেন, ডেঙ্গু টিকার দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা শেষে দেখা গেছে এটি শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে প্রয়োগের জন্য নিরাপদ এবং এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম।
ডেঙ্গুর মোট চারটি ধরণ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ এবং ডেন-৪। গবেষকরা বলছেন, ডেঙ্গু টিকা আবিষ্কারে এনআইএইচ প্রথম প্রতিষ্ঠান নয়। এর আগে সানোফি ফার্মাসিউটিক্যালস এবং তাকেদা ফার্মাসিউটিক্যালস ডেঙ্গু টিকা তৈরি করেছে। “সানোফির টিকা তিনটি আলাদা ডোজের এবং এটি নয় বছরের কম বয়সী শিশু, যারা আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে, তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। আর তাকেদা ফার্মাসিউটিক্যালসের ডেঙ্গুর টিকা দুই ডোজের।
এই টিকা ডেঙ্গুর মাত্র একটি ধরণের ক্ষেত্রেই কার্যকর,” বিবিসি বাংলাকে বলেন আইসিডিডিআরবি’র জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী রাশিদুল হক। যেভাবে পরীক্ষা করা হয় : ২০০৯ সাল থেকে এই ডেঙ্গু টিকার পরীক্ষা শুরু হয়। বাংলাদেশে এই টিকা পরীক্ষার সাথে যুক্ত দলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন আইসিডিডিআরবি’র জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী রাশিদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশে পরীক্ষার আগে এটি যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলেও পরীক্ষা চালানো হয়েছে।
এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিল- দুই দেশেই প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের দুটি পরীক্ষাই করা হয়েছে। এ বিষয়ে রাশিদুল হক বলেন, যে কোন টিকা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়- এই তিনটি ধাপে পরীক্ষা করা হয়। প্রথম ধাপে দেখা হয় যে, ওই টিকাটি মানুষের দেহে প্রয়োগের জন্য নিরাপদ কী না। দ্বিতীয় ধাপে দেখা হয়, টিকার নিরাপত্তা এবং এটির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির সক্ষমতা। আর তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় এটির কার্যকারিতা দেখা হয়। অর্থাৎ যে জনগোষ্ঠীর উপর টিকা পরীক্ষা করা হয় তাদের মধ্যে কেউ আবারো ওই রোগটি দ্বারা আক্রান্ত হয় কী না। মি. হক জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যে ট্রায়াল বা পরীক্ষাটি হলো সেটি শুধুমাত্র দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা।
অর্থাৎ এই টিকার নিরাপত্তা এবং এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারে কী না সে বিষয়টিই পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। ট্রায়ালের আওতায় ২০১৫ সাল থেকে ক্লিনিকাল ট্রায়াল ও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ে পড়াশুনাসহ পরীক্ষা চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতা তৈরি করা হয়। পরে ২০১৬ সাল থেকে ডেঙ্গুর টিকার দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু হয়।
এর আওতায় গবেষকরা এক থেকে ৪৯ বছর বয়সী ১৯২ জনের উপর টিকা প্রয়োগ করেন এবং পরবর্তী তিন বছর ধরে তাদেরকে পর্যবেক্ষণ করেন। পরীক্ষায় অংশ নেয়া সবাই স্বেচ্ছায় এতে অংশ নেন এবং তাদেরকে দৈব-চয়ন পদ্ধতিতে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচন করা হয় বলে জানানো হয়। টিকা দেয়ার আগে এদের সবাইকে চারটি আলাদা ভাগে ভাগ করা হয়। এদের মধ্যে এর আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তিও ছিলেন। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা ভারতে করা হবে। চলতি মাস থেকে এই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে বলেও জানান আইসিডিডিআরবি এর বিজ্ঞানী রাশিদুল হক।
যা পেয়েছেন গবেষকরা : আইসিডিডিআরবি’র গবেষকরা বলছেন, তিন বছর ধরে পর্যবেক্ষণের পর তারা দেখতে পান যে, বেশিরভাগ স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে ডেঙ্গুর চারটি ধরণের বিরুদ্ধেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। যারা এর আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাদের দেহে এই অ্যান্টিবডির মাত্রাও বেশি পাওয়া গেছে। একই সাথে যাদের দেহে টিকা প্রয়োগ করার পর তিন বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে, তাদের কেউই এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত হননি।
আইসিডিডিআরবি এর বিজ্ঞানী রাশিদুল হক বলেন, এরই মধ্যে এই টিকা আমেরিকা এবং ব্রাজিলের জনগোষ্ঠীর উপর পরীক্ষা করা হয়েছে। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই প্রথম পরীক্ষা করা হলো। “আমাদের পপুলেশনেও আমরা দেখলাম যে এটা সেফ(নিরাপদ) এবং ইমিউনোজেনিক(রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে),” বলেন তিনি।
যাদের উপর টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল তাদের মধ্যে গুরুতর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। কারো কারো শরীরে র্যাশ, জ্বর, মাথাব্যথার মতো উপসর্গ ছিল। “২৮% ভ্যাক্সিনেটেডের মধ্যে আমরা র্যাশ পাইছি, যে র্যাশ তিন-চার দিনের মধ্যে মধ্যে মিলায় গেছে।” তিনি বলেন, “র্যাশ হওয়াটা ভাল। আমরা বলি যখন এই ভাক্সি নটা দেয়া হলো তার মানে সেটা রিঅ্যাক্ট করতেছে বডিতে, এবং অ্যান্টিবডি প্রডিউস করতেছে। আমরা একে বলি হ্যাপি র্যাশ।”
মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে কাউকে হাসপাতালে ভর্তি করার মতো অবস্থা দেখা যায়নি। এটি যেভাবে আলাদা : ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে বাজারে এরই মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠানের দুটি আলাদা টিকা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হচ্ছে সানোফি ফার্মাসিউটিক্যালসের ডেংভ্যাক্সিয়া নামে একটি টিকা।
রাশিদুল হক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বলা হয়েছে, ৯ বছরের বেশি বয়সীদের এই টিকা দেয়া যাবে। তবে তার জন্য অবশ্যই আগে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে হবে। আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত না হলে এই টিকা দেয়া যাবে না। তিনি বলেন, এই টিকাটির মোট তিনটি ডোজ ছয় মাস পর পর নিতে হয়।
শিশুদের উপর এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেশি হয়। এছাড়া এই টিকা বেশ ব্যায়বহুল। সেদিক থেকে দেখতে গেলে টিভি০০৫ নামে নতুন এই ডেঙ্গু টিকার মাত্র একটি ডোজই সব ধরণের ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে কার্যকর হবে। আলাদা আলাদা ডোজ নেয়ার দরকার হবে না। শিশুসহ সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ডেঙ্গু আক্রান্ত না হলেও এই টিকা নেয়া যাবে। আর অন্য টিকার তুলনায় এটি সস্তা। বিবিসি
সারাবেলার সংবাদ/ এমএএইচ/  ২৮ সেপ্টম্বর ২০২৩
Facebook Comments Box