ঢাকা ০৪:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশি পোশাক পণ্যের সম্ভাবনাময় বাজার রাশিয়া: রাষ্ট্রদূত

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১০:৩১:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ৩৮ বার পঠিত

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘টকস উইথ অ্যাম্বাসেডর’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি

রাশিয়ায় বাংলাদেশি গার্মেন্টস পণ্য রফতানি হয় উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত রুশ ফেডারেশনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি বলেছেন, দেশটিতে বাংলাদেশি পোশাক পণ্যের সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘টকস উইথ অ্যাম্বাসেডর’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি। স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরামের আয়োজনে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় এই সংবাদ সম্মেলন।

রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি বলেন, রাশিয়ার বাজারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক পণ্য রফতানি হয়। তবে সেখানে বাংলাদেশের পোশাক রফতানিকারকদের জন্য আরও বেশি পোশাক পণ্য রফতানির সুযোগ রয়েছে। কারণ নিষেধাজ্ঞার কারণে বর্তমানে রাশিয়া ছেড়েছে পশ্চিমা ব্রান্ডগুলো। তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান নিতে পারেন বাংলাদেশি পোশাক রফতানিকারকরা।

দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে নতুন মাত্রা পেয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে রুশ কোম্পানিগুলো কাজ করতে আগ্রহী বলে জানান তিনি।

এছাড়া রূপপুর পরমাণু কেন্দ্রে মস্কোর সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, জ্বালানি খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সহযোগিতা দিন দিন বাড়ছে। রাশিয়া বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচিতে সহযোগিতা দিয়ে যাবে।

রাশিয়ায় বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে বলেও জানান রুশ রাষ্ট্রদূত। এছাড়া তিনি বলেন, রূপপুর পরমাণু কেন্দ্রে কাজ করতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি টেকনিশিয়ান রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা রাশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরমাণু বিজ্ঞানে পড়াশোনা করছে।

পরমাণু খাতের পাশাপাশি অন্যান্য জ্বালানি খাতেও বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার কথা জানান রুশ রাষ্ট্রদূত। এ সময় বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে রুশ জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের অংশ গ্রহণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে চায়।

এছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অবকাঠামো খাতসহ দেশের বিভিন্ন খাতে রুশ প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিতে ইচ্ছুক বলেও জানান রুশ রাষ্ট্রদূত।

বাংলাদেশে রাশিয়ার সার রফতানির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি গমসহ বিভিন্ন খাদ্য পণ্য সরবরাহের কথাও জানান। রাষ্ট্রদূত বলেন, বিশ্বে খাদ্য সংকটের সময় পুতিন পুরো বিশ্বকে খাদ্য সংকট থেকে রক্ষা করেছেন। এক্ষেত্রে ব্ল্যাক সি গ্রেন ডিলের কথা উল্লেখ করেন রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ভি মান্টিটস্কি।

এছাড়া তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ প্রকল্পেও বাংলাদেশকে রাশিয়া সহযোগিতা করতে আগ্রহী। এ প্রসঙ্গে দুই দেশের আলোচনা চলছে।

এবিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের মতো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ প্রকল্পেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী রাশিয়া। এই সম্পর্কে অনেক দূর কথা হয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রজেক্ট টু ফ্রান্স থেকে তৈরি করবে না, রাশিয়া থেকে করবে, এটি বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয়।

একাত্তর সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তানি সেনাদের পেতে রাখা মাইন অপসারণ কার্যক্রমে রাশিয়ার নৌবাহিনীর অংশগ্রহণের কথা স্মরণ করে রুশ রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে রাশিয়ার নৌ বাহিনীর জাহাজের সফরের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর মাইন সুইপিং অপারেশনে রাশিয়ার একজন নাবিক মারা যান, যিনি সমাহিত আছেন বাংলাদেশের মাটিতেই।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

বাংলাদেশি পোশাক পণ্যের সম্ভাবনাময় বাজার রাশিয়া: রাষ্ট্রদূত

আপডেট সময় : ১০:৩১:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩

রাশিয়ায় বাংলাদেশি গার্মেন্টস পণ্য রফতানি হয় উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত রুশ ফেডারেশনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি বলেছেন, দেশটিতে বাংলাদেশি পোশাক পণ্যের সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘টকস উইথ অ্যাম্বাসেডর’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি। স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরামের আয়োজনে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় এই সংবাদ সম্মেলন।

রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি বলেন, রাশিয়ার বাজারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক পণ্য রফতানি হয়। তবে সেখানে বাংলাদেশের পোশাক রফতানিকারকদের জন্য আরও বেশি পোশাক পণ্য রফতানির সুযোগ রয়েছে। কারণ নিষেধাজ্ঞার কারণে বর্তমানে রাশিয়া ছেড়েছে পশ্চিমা ব্রান্ডগুলো। তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান নিতে পারেন বাংলাদেশি পোশাক রফতানিকারকরা।

দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে নতুন মাত্রা পেয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে রুশ কোম্পানিগুলো কাজ করতে আগ্রহী বলে জানান তিনি।

এছাড়া রূপপুর পরমাণু কেন্দ্রে মস্কোর সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, জ্বালানি খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সহযোগিতা দিন দিন বাড়ছে। রাশিয়া বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচিতে সহযোগিতা দিয়ে যাবে।

রাশিয়ায় বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে বলেও জানান রুশ রাষ্ট্রদূত। এছাড়া তিনি বলেন, রূপপুর পরমাণু কেন্দ্রে কাজ করতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি টেকনিশিয়ান রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা রাশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরমাণু বিজ্ঞানে পড়াশোনা করছে।

পরমাণু খাতের পাশাপাশি অন্যান্য জ্বালানি খাতেও বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার কথা জানান রুশ রাষ্ট্রদূত। এ সময় বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে রুশ জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের অংশ গ্রহণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে চায়।

এছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অবকাঠামো খাতসহ দেশের বিভিন্ন খাতে রুশ প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিতে ইচ্ছুক বলেও জানান রুশ রাষ্ট্রদূত।

বাংলাদেশে রাশিয়ার সার রফতানির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি গমসহ বিভিন্ন খাদ্য পণ্য সরবরাহের কথাও জানান। রাষ্ট্রদূত বলেন, বিশ্বে খাদ্য সংকটের সময় পুতিন পুরো বিশ্বকে খাদ্য সংকট থেকে রক্ষা করেছেন। এক্ষেত্রে ব্ল্যাক সি গ্রেন ডিলের কথা উল্লেখ করেন রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ভি মান্টিটস্কি।

এছাড়া তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ প্রকল্পেও বাংলাদেশকে রাশিয়া সহযোগিতা করতে আগ্রহী। এ প্রসঙ্গে দুই দেশের আলোচনা চলছে।

এবিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের মতো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ প্রকল্পেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী রাশিয়া। এই সম্পর্কে অনেক দূর কথা হয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রজেক্ট টু ফ্রান্স থেকে তৈরি করবে না, রাশিয়া থেকে করবে, এটি বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয়।

একাত্তর সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তানি সেনাদের পেতে রাখা মাইন অপসারণ কার্যক্রমে রাশিয়ার নৌবাহিনীর অংশগ্রহণের কথা স্মরণ করে রুশ রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে রাশিয়ার নৌ বাহিনীর জাহাজের সফরের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর মাইন সুইপিং অপারেশনে রাশিয়ার একজন নাবিক মারা যান, যিনি সমাহিত আছেন বাংলাদেশের মাটিতেই।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

Facebook Comments Box