ঢাকা ১১:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

বন্ধুত্ব চাইলে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠান: ভারতকে হাফিজ

সারাবেলা সংবাদ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ১২:৪৮:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৪ ২১ বার পঠিত

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব) হাফিজ । ছবি সংগৃহিত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ভারতের উদ্দেশে বলেছেন,যদি বন্ধুত্ব করতে চান, তাহলে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠান। আপনারা স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছেন, সেজন্য আমরা অনেক কৃতজ্ঞ। কিন্তু এদেশের প্রভু হওয়ার চেষ্টা করবেন না। জনগণের বিপক্ষ হওয়ার চেষ্টা করবেন না।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকবে কিন্তু আমাদের দেশ ও সাধারণ মানুষের সম্পর্কে নিয়ে ষড়যন্ত্র করবে না। সার্কের প্রত্যেকটা দেশ আপনাদের বিরুদ্ধে কেন? মালদ্বীপ, শ্রীলংকা সবাই। আমরা চাই বন্ধুত্ব হবে জনগণের সঙ্গে।

শেখ হাসিনা ইতিহাসের সবচাইতে বড় ঘাতক। তিনি কত মায়ের বুক খালি করেছেন? এই সভা থেকে দাবি করব শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটরিয়ামে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার নির্দেশদাতা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত এনে বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

হাফিজ বলেন, ‘অন্তবর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে গতকাল শপথ নিয়েছেন লে. জেনারেল জাহাঙ্গীর। তার নেতৃত্বে একটা তদন্ত কমিটি হয়েছিল বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে। তিনি সঠিকভাবে কারণ এবং সমাধান বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এই প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখে নাই। আমরা চাই, তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত যে সত্য অনুসন্ধান রিপোর্ট তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক।’

তিনি বলেন, ‘বিডিআর এ মেধাবী চৌকশ সেনা অফিসারদের পোস্টিং দেওয়া হয়েছিল। এদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের বিচারে হচ্ছে দীর্ঘসূত্রিতা। এভাবে কেয়ামত পর্যন্ত এর বিচার শেষ হবে না। অতি দ্রুত প্রয়োজন হলে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল করে যাদের যাদের ফাঁসির আদেশ হয়েছে প্রত্যেককে ঝুলিয়ে দেন। তাহলে নিহতদের আত্মা শান্তি পাবে।’

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটা নিকৃষ্টতম প্রতিষ্ঠান। ভোট ডাকাতি করে এতদিন আওয়ামী লীগকে বহাল রেখেছে তারা। এই কমিশন বলেছিল, আওয়ামী লীগ এলে ভোটাররা আসবে। ইলেকশনের দিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘুমান, এক ঘুমে ২৪% ভোট ৫৫% হয়ে গেছে দুপুরেই। কি ধরনের ইলেশন কমিশন এরা, এখনো তারা কি করে থাকে?’ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা কেউ নির্বাচিত নয়, তাদের সকল নিয়োগ বাতিলের দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের মার্চ মাসে আমরা পাঁচটি ক্যান্টনমেন্টে বিদ্রোহী সৈনিকেরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আমাদের সেনাবাহিনীর ফাউন্ডিং ফাদার মনে করা হয়। এবার আন্দোলনে আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু মাহেন্দ্রক্ষণে আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী শেখ হাসিনাকে সরানোর ব্যাপারে সঠিক ভূমিকা রেখেছে। সেজন্য আমি তাদের অভিবাদন জানাই। আমাদের দাবি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নামে যে ক্যান্টনমেন্ট করা হয়েছে অবিলম্বে তা বাতিলের দাবি করতে হবে।’ বিগত কয়েকটি নির্বাচনের সাবেক সেনা প্রধানরা ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের’ পক্ষে যেভাবে ‘তোষামোদি’ করেছেন তার কঠোর সমালোচনাও করেন তিনি।

হাফিজ বলেন, ‘আবু সাঈদের ছবি এখানে আছে। এরা আদর্শ রোল মডেল বাংলাদেশের। গত কয়েক বছরে আমরা একাত্তর ভুলে গিয়েছিলাম। একাত্তরের চেতনায় উদ্বিপ্ত যুবকরা যে এখনো আছে, তার প্রমাণ শহীদ আবু সাঈদ। হাজার বছর যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন আবু সাঈদ হীরো হিসেবে থাকবে।’

এ সময় দলের স্থায়ী কমিটিতে স্থান পাওয়া হাফিজ উদ্দিন কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদ একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীরসহ মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতারা বক্তৃতা করেন। সমাবেশে মুক্তযোদ্ধা দলের পক্ষ থেকে ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়।

মেজর হাফিজ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর ছাত্ররা সাটিফিকেট নিতে আসেননি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার। আর এখন মুক্তিযোদ্ধা এসে দাঁড়িয়েছে আড়াই লাখ। এত মুক্তিযোদ্ধা এলো কিভাবে?

তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে ২৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে। যেই গুলি জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা হয়েছে। অথচ মিয়ানমার যখন সীমান্তে হামলা করল, তখন তো আরাকানে গিয়ে একটা হেলিকপ্টার উড়তে দেখি নাই।’

হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নামে যে ক্যান্টনমেন্ট করা হয়েছে, অবিলম্বে সেটি বন্ধ করতে হবে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নতুন সদস্য বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসাবে শুক্রবার শপথ নিয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তার নেতৃত্বে একটি তদন্ত হয়েছিল বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকা-ের ঘটনা নিয়ে। তিনি সঠিকভাবে কারণ এবং সমাধান বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এই রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি। আমরা চাই, তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত যে সত্য অনুসন্ধান রিপোর্ট তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক।’

গত ১৬ বছরের পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্টতম বলে মন্তব্য করে হাফিজ বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্য মারা গেছেন, এটাকে আমরা সমর্থন করি না। এর জন্য শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ দায়ী।’ পুলিশকে জনগণের বাহিনীর হওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা।

তিনি আরও বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে শুক্রবার রাতে টেলিফোনে কথা হয়েছে। শুধু একটি কথা বলেছি, এবার নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করবে। কিন্তু আমরা যেন আওয়ামী লীগ না হই, আমাদের জিয়াউর রহমানের দল হতে হবে। ক্ষমতায় গিয়ে কোনো চাঁদাবাজি, দুর্নীতি করা যাবে না।

মেজর হাফিজ আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সমর্থন করি। আমরা এই বিপ্লবের একটি সঠিক পরিণতি চাই। আওয়ামী লীগের মতো কোনো কলঙ্ক যাতে তাদের স্পর্শ করতে না পারে।’

এদিকে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারকে খুঁজে বের করতে হবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেন, ‘হারুন- বিপ্লব কোথায়? তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। যারা এই ছাত্র আন্দোলনে গুলির নির্দেশ দিয়েছে তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে।’

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

বন্ধুত্ব চাইলে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠান: ভারতকে হাফিজ

আপডেট সময় : ১২:৪৮:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৪

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ভারতের উদ্দেশে বলেছেন,যদি বন্ধুত্ব করতে চান, তাহলে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠান। আপনারা স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছেন, সেজন্য আমরা অনেক কৃতজ্ঞ। কিন্তু এদেশের প্রভু হওয়ার চেষ্টা করবেন না। জনগণের বিপক্ষ হওয়ার চেষ্টা করবেন না।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকবে কিন্তু আমাদের দেশ ও সাধারণ মানুষের সম্পর্কে নিয়ে ষড়যন্ত্র করবে না। সার্কের প্রত্যেকটা দেশ আপনাদের বিরুদ্ধে কেন? মালদ্বীপ, শ্রীলংকা সবাই। আমরা চাই বন্ধুত্ব হবে জনগণের সঙ্গে।

শেখ হাসিনা ইতিহাসের সবচাইতে বড় ঘাতক। তিনি কত মায়ের বুক খালি করেছেন? এই সভা থেকে দাবি করব শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটরিয়ামে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার নির্দেশদাতা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত এনে বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

হাফিজ বলেন, ‘অন্তবর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে গতকাল শপথ নিয়েছেন লে. জেনারেল জাহাঙ্গীর। তার নেতৃত্বে একটা তদন্ত কমিটি হয়েছিল বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে। তিনি সঠিকভাবে কারণ এবং সমাধান বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এই প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখে নাই। আমরা চাই, তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত যে সত্য অনুসন্ধান রিপোর্ট তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক।’

তিনি বলেন, ‘বিডিআর এ মেধাবী চৌকশ সেনা অফিসারদের পোস্টিং দেওয়া হয়েছিল। এদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের বিচারে হচ্ছে দীর্ঘসূত্রিতা। এভাবে কেয়ামত পর্যন্ত এর বিচার শেষ হবে না। অতি দ্রুত প্রয়োজন হলে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল করে যাদের যাদের ফাঁসির আদেশ হয়েছে প্রত্যেককে ঝুলিয়ে দেন। তাহলে নিহতদের আত্মা শান্তি পাবে।’

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটা নিকৃষ্টতম প্রতিষ্ঠান। ভোট ডাকাতি করে এতদিন আওয়ামী লীগকে বহাল রেখেছে তারা। এই কমিশন বলেছিল, আওয়ামী লীগ এলে ভোটাররা আসবে। ইলেকশনের দিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘুমান, এক ঘুমে ২৪% ভোট ৫৫% হয়ে গেছে দুপুরেই। কি ধরনের ইলেশন কমিশন এরা, এখনো তারা কি করে থাকে?’ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা কেউ নির্বাচিত নয়, তাদের সকল নিয়োগ বাতিলের দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের মার্চ মাসে আমরা পাঁচটি ক্যান্টনমেন্টে বিদ্রোহী সৈনিকেরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আমাদের সেনাবাহিনীর ফাউন্ডিং ফাদার মনে করা হয়। এবার আন্দোলনে আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু মাহেন্দ্রক্ষণে আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী শেখ হাসিনাকে সরানোর ব্যাপারে সঠিক ভূমিকা রেখেছে। সেজন্য আমি তাদের অভিবাদন জানাই। আমাদের দাবি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নামে যে ক্যান্টনমেন্ট করা হয়েছে অবিলম্বে তা বাতিলের দাবি করতে হবে।’ বিগত কয়েকটি নির্বাচনের সাবেক সেনা প্রধানরা ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের’ পক্ষে যেভাবে ‘তোষামোদি’ করেছেন তার কঠোর সমালোচনাও করেন তিনি।

হাফিজ বলেন, ‘আবু সাঈদের ছবি এখানে আছে। এরা আদর্শ রোল মডেল বাংলাদেশের। গত কয়েক বছরে আমরা একাত্তর ভুলে গিয়েছিলাম। একাত্তরের চেতনায় উদ্বিপ্ত যুবকরা যে এখনো আছে, তার প্রমাণ শহীদ আবু সাঈদ। হাজার বছর যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন আবু সাঈদ হীরো হিসেবে থাকবে।’

এ সময় দলের স্থায়ী কমিটিতে স্থান পাওয়া হাফিজ উদ্দিন কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদ একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীরসহ মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতারা বক্তৃতা করেন। সমাবেশে মুক্তযোদ্ধা দলের পক্ষ থেকে ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়।

মেজর হাফিজ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর ছাত্ররা সাটিফিকেট নিতে আসেননি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার। আর এখন মুক্তিযোদ্ধা এসে দাঁড়িয়েছে আড়াই লাখ। এত মুক্তিযোদ্ধা এলো কিভাবে?

তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে ২৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে। যেই গুলি জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা হয়েছে। অথচ মিয়ানমার যখন সীমান্তে হামলা করল, তখন তো আরাকানে গিয়ে একটা হেলিকপ্টার উড়তে দেখি নাই।’

হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নামে যে ক্যান্টনমেন্ট করা হয়েছে, অবিলম্বে সেটি বন্ধ করতে হবে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নতুন সদস্য বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসাবে শুক্রবার শপথ নিয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তার নেতৃত্বে একটি তদন্ত হয়েছিল বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকা-ের ঘটনা নিয়ে। তিনি সঠিকভাবে কারণ এবং সমাধান বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এই রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি। আমরা চাই, তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত যে সত্য অনুসন্ধান রিপোর্ট তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক।’

গত ১৬ বছরের পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্টতম বলে মন্তব্য করে হাফিজ বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্য মারা গেছেন, এটাকে আমরা সমর্থন করি না। এর জন্য শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ দায়ী।’ পুলিশকে জনগণের বাহিনীর হওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা।

তিনি আরও বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে শুক্রবার রাতে টেলিফোনে কথা হয়েছে। শুধু একটি কথা বলেছি, এবার নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করবে। কিন্তু আমরা যেন আওয়ামী লীগ না হই, আমাদের জিয়াউর রহমানের দল হতে হবে। ক্ষমতায় গিয়ে কোনো চাঁদাবাজি, দুর্নীতি করা যাবে না।

মেজর হাফিজ আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সমর্থন করি। আমরা এই বিপ্লবের একটি সঠিক পরিণতি চাই। আওয়ামী লীগের মতো কোনো কলঙ্ক যাতে তাদের স্পর্শ করতে না পারে।’

এদিকে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারকে খুঁজে বের করতে হবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেন, ‘হারুন- বিপ্লব কোথায়? তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। যারা এই ছাত্র আন্দোলনে গুলির নির্দেশ দিয়েছে তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে।’

Facebook Comments Box