ঢাকা ০৫:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে নির্বাচন কমিশন গঠন Logo সোনারগাঁয়ে গাজাঁ ও ফেনসিডিলসহ আটক-৪ Logo স্বপ্ন পূরণ হলো না মৌলভীবাজারের লিটনের ! বেলারুশ সীমান্তে পিটিয়ে হত্যা তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: স্বপ্ন পূরণে ইচ্ছা ছিল জার্মানিতে গিয়ে উন্নত জীবনযাপনের মাধ্যমে স্বপ্নের বাস্তবতা হাসিল করার অদম্য সাহস ছিল লিটন চৌধুরীর। সেই দেশে যেতে বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিসহ কয়েকজন অভিবাসন-প্রত্যাশী পোল্যান্ড পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। তাদের পুশব্যাক করা হয়। কিন্তু বেলারুশেও তারা ঢুকতে পারেননি। দুই দেশের সীমান্তে গভীর জঙ্গলে বহু কষ্টে দিন কাটছিল তাদের। গত সোমবার স্থানীয় সময় রাতে স্বজনেরা জানতে পারেন, লিটনসহ ১৫ জন অভিবাসী পুলিশের পিটুনিতে মারা গেছেন। বেলারুশের একটি হাসপাতালের মর্গে তাদের লাশ রাখা হয়েছে। এ খবরে লিটনের পরিবারে মাতম শুরু হয়। লিটন চৌধুরী (৩৫) মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সদরের জাঙ্গিরাই এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত মোশারফ হোসেন চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ ছেলে। তার মা, এক ভাই, স্ত্রী ও তিন শিশুসন্তান রয়েছে। লিটন এর আগে দুবাইয়ে থাকতেন। লিটনদের বাড়িতে, একটি কক্ষে তার মা ও স্ত্রী আহাজারি করছেন। স্বজনেরা তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, লিটনের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে একটি কিন্ডারগার্টেনে পঞ্চম ও মেয়ে একই প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ছেলের বয়স মাত্র দুই বছর। লিটনের ছোট ভাই নোমান চৌধুরী ইতালিতে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বসবাস করছেন। বৈধ না হওয়ায় দেশে ফিরতে পারছেন না। স্বজনেরা বলেন, লিটনদের পরিবার অনেকটা সচ্ছল। দুবাইয়ের জীবন লিটনের ভালো লাগত না। ইউরোপে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের স্বপ্ন দেখতেন তিনি। লিটনের স্ত্রীর বড় ভাই শাহিন আহমদ বলেন, মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে বছরখানেক আগে লিটন দুবাই থেকে দেশে ফেরেন। মায়ের চিকিৎসা করান। মা সুস্থ হওয়ার কয়েক মাস পর দুবাইয়ে ফিরে যান। দুবাইয়ে গিয়ে রাশিয়ায় বসবাসকারী ম্যাক্স নামের এক দালালের মাধ্যমে জার্মানিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। এ কাজের জন্য ম্যাক্স ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। ম্যাক্সের বাড়ি নোয়াখালী। প্রকৃত নাম অন্য কিছু হলেও দুবাইয়ে ওই নামেই তিনি পরিচিত। শাহিন বলেন, সিলেটের বিয়ানীবাজারে নজরুল ইসলাম নামের এক গাড়ি ব্যবসায়ী ম্যাক্সের আত্মীয়। নজরুলের কাছে তাঁরা টাকা জমা দেন। এ সময় একটি চুক্তিনামাও করা হয়। জার্মানিতে পাঠাতে না পারলে সব টাকা ফেরতের কথাও চুক্তিনামায় উল্লেখ করা হয়। সেপ্টেম্বরে লিটন রাশিয়া হয়ে বেলারুশে যান। এরপর বেলারুশের সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে পৌঁছালে পুলিশ তাঁকেসহ আরও কয়েকজনকে ধরে ফেলে। তাদের সীমান্ত দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। বেলারুশের পুলিশ তাঁদের ঢুকতে বাঁধা দেয়। এ পরিস্থিতিতে দুই দেশের সীমান্তে জঙ্গলে তাঁরা দিন কাটান। শাহিন বলেন, সর্বশেষ ৭ই অক্টোবর লিটন তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভয়েস মেসেজ পাঠান। ওই ভয়েস মেসেজে লিটন বলেন, তিনি জঙ্গলে খুব কষ্টে আছেন। খাবার নেই, পানি নেই। তাঁর একটি পা ভেঙে গেছে। লিটন ম্যাক্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত তাকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে বলেন। পরে তিনি (শাহিন আহমেদ) ম্যাক্সের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ করলে তিনি শুধু আশ্বাস দিতে থাকেন। কিছুদিন পর লিটনের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। লিটনের খোঁজ না পাওয়ায় চিন্তিত ছিল তার পরিবার। এই বিষয়ে শাহিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে লিটনের খোঁজখবর না পাওয়ায় তারা উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাতে থাকেন। সম্প্রতি তারা বেলারুশ সীমান্তের একটি ভিডিও পান। ভিডিওটি স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের। ওই ভিডিওতে দাবি করা হয়, সীমান্তে ১৫ জন অভিবাসীকে পোল্যান্ড পুলিশ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এর মধ্যে চেহারা, পরনের টি-শার্ট ও প্যান্ট দেখে তারা লিটনের লাশ শনাক্ত করেন। কিন্তু তাতেও তাঁরা পুরোপুরি নিশ্চিত হননি। শাহিন বলেন, বিভিন্ন সূত্রের ভিত্তিতে বেলারুশে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি চিকিৎসকের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করেন। ওই চিকিৎসক বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্প ও হাসপাতালে খোঁজ নেন। একপর্যায়ে একটি হাসপাতালের মর্গে লিটনের লাশ পান। সোমবার রাত আটটার দিকে চিকিৎসক লিটনের লাশের ছবি তাদের কাছে পাঠান। এতে তাঁরা নিশ্চিত হন লিটন মারা গেছেন। শাহিন বলেন, লিটনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পর তারা ম্যাক্স ও নজরুলের সঙ্গে কথা বলেন। লাশ ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তাদের সহায়তা চান। কিন্তু তারা কোনো সহায়তা করেননি। ম্যাক্সের আসল পরিচয় উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা চলছে। তারা ম্যাক্স ও নজরুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেবেন। শাহিন বলেন, লিটনের লাশ দেশে আনা হবে কি না, সে বিষয়ে তাঁরা পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ বিষয়ে কুলাউড়া সার্কেলের (কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান গনমাধ্যমে বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। Logo সৌদিতে ফ্যাশন শো নিয়ে ইসলামী পণ্ডিতদের ক্ষোভের যত কারণ Logo প্রতারণার অভিযোগে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে আমেরিকার আদালতে মামলা Logo ট্রাইব্যুনালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক কর্তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হলো Logo ভাঙ্গুড়া প্রেস ক্লাবের অবৈধ কমিটি বাতিলের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান Logo মৌলভীবাজার পূজা উদযাপন পরিষদের সম্পাদক মহিম গ্রেপ্তার Logo পাবনার আমিনপুরে ইজিবাইক-মোটর সাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ Logo সেনাকুঞ্জে যাবেন খালেদা জিয়া

ফুলকপি চাষ করে কৃষকের মুখে হাসি

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৯:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ১০৫ বার পঠিত

চলতি মৌসুমে অধিক লাভের আশায় ফুলকপি চাষাবাদ করেছেন বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন এর বড়দহ গ্রামের আবুল হোসেন। সঠিক সময়ে যত্ন নেয়া ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলনও বেশ ভালো হয়েছে তাঁর। আগাম জাতের এ সবজি চাষ করে দাম বেশি পাওয়ায় তার চোখেমুখে হাসির ঝিলিক লক্ষ্য করা গেছে। তার এই চাষাবাদ দেখে ওই ইউনিয়ন এর প্রায় ২০ কৃষক ঝুকে পড়েছেন এই আবাদে। তাদের মতে, শুধু বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন এর চাষাবাদে সৈয়দপুরের চাহিদা মিটিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা উপজেলার হাট বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব।

কৃষক আবুল হোসেন বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি মৌসুমে ৪ একর জমিতে ফুলকপি চাষাবাদ করেছেন। এরমধ্যে প্রায় ২ একর জমির ফুলকপি বাজারে বিক্রি করেছেন। এতে খরচ থেকে ৩ গুন লাভ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে বাকি জমির ফুলকপি বিক্রি করে যথেষ্ট লাভবান হবেন। তিনি আরো বলেন,কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে আগাম জাতের ফুলকপি বা বাধাকপির চাষাবাদ করলে সব কৃষকই লাভবান হবেন।

ওই ইউনিয়ন এর আরেক কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান,আবুল হোসেনের চাষাবাদ দেখে তিনি ৩ একর জমিতে ফুলকপি, ২ একর জমিতে বাধাকপি ও ১ একর জমিতে ছিমের চাষাবাদ করেছেন।গত মৌসুমে চাষাবাদ করে যে পরিমান ক্ষতি হয়েছে, বর্তমান মৌসুমে তার কয়েকগুন বেশি লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তিনি। ভরা মৌসুমে এসব সবজির চাষাবাদ করলে বাজারে দাম তেমন একটা পাওয়া যায় না বলেই এবারে আগাম চাষাবাদ করেছেন বলে জানান।

 সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকালে কথা হয় সবজি বিক্রেতা আলমগীর কবির এর সাথে, তিনি বলেন, সৈয়দপুরের বাজারে শীতকালীন সবজি উঠতে শুরু করেছে। ভাল মানের ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। টমেটো ১৩০ টাকা, মুলাও বাঁধাকপি ৬০ টাকা ও সিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। এসব সবজি আগাম চাষাবাদ করে বাজারে উঠার কারনেই দাম চড়া। তবে মাসখানেক পর দাম এমনটা থাকবে না বলে জানান তিনি।

সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভুষন রায় বলেন,সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন ও বাংগালীপুর ইউনিয়নে সবজির আগাম চাষাবাদ হয়। এই দুই ইউনিয়ন এর কৃষকদের চাষাবাদের কারনে সৈয়দপুরের চাহিদা মিটিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন অঞ্চলে তা সরবরাহ করা হয়। উপজেলার সব ইউনিয়ন এর কৃষকরা যদি কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শ মতে চাষাবাদ করেন তাহলে কোন কৃষকই লোকসানের কবলে পরবেন না। ২/৪ বছরেই তাঁরা আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হবেন বলে জানান তিনি।

সারাবেলার সংবাদ/ এমএএইচ/ ৩১ অক্টোবর ২০২৩

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

স্বপ্ন পূরণ হলো না মৌলভীবাজারের লিটনের ! বেলারুশ সীমান্তে পিটিয়ে হত্যা তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: স্বপ্ন পূরণে ইচ্ছা ছিল জার্মানিতে গিয়ে উন্নত জীবনযাপনের মাধ্যমে স্বপ্নের বাস্তবতা হাসিল করার অদম্য সাহস ছিল লিটন চৌধুরীর। সেই দেশে যেতে বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিসহ কয়েকজন অভিবাসন-প্রত্যাশী পোল্যান্ড পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। তাদের পুশব্যাক করা হয়। কিন্তু বেলারুশেও তারা ঢুকতে পারেননি। দুই দেশের সীমান্তে গভীর জঙ্গলে বহু কষ্টে দিন কাটছিল তাদের। গত সোমবার স্থানীয় সময় রাতে স্বজনেরা জানতে পারেন, লিটনসহ ১৫ জন অভিবাসী পুলিশের পিটুনিতে মারা গেছেন। বেলারুশের একটি হাসপাতালের মর্গে তাদের লাশ রাখা হয়েছে। এ খবরে লিটনের পরিবারে মাতম শুরু হয়। লিটন চৌধুরী (৩৫) মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সদরের জাঙ্গিরাই এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত মোশারফ হোসেন চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ ছেলে। তার মা, এক ভাই, স্ত্রী ও তিন শিশুসন্তান রয়েছে। লিটন এর আগে দুবাইয়ে থাকতেন। লিটনদের বাড়িতে, একটি কক্ষে তার মা ও স্ত্রী আহাজারি করছেন। স্বজনেরা তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, লিটনের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে একটি কিন্ডারগার্টেনে পঞ্চম ও মেয়ে একই প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ছেলের বয়স মাত্র দুই বছর। লিটনের ছোট ভাই নোমান চৌধুরী ইতালিতে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বসবাস করছেন। বৈধ না হওয়ায় দেশে ফিরতে পারছেন না। স্বজনেরা বলেন, লিটনদের পরিবার অনেকটা সচ্ছল। দুবাইয়ের জীবন লিটনের ভালো লাগত না। ইউরোপে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের স্বপ্ন দেখতেন তিনি। লিটনের স্ত্রীর বড় ভাই শাহিন আহমদ বলেন, মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে বছরখানেক আগে লিটন দুবাই থেকে দেশে ফেরেন। মায়ের চিকিৎসা করান। মা সুস্থ হওয়ার কয়েক মাস পর দুবাইয়ে ফিরে যান। দুবাইয়ে গিয়ে রাশিয়ায় বসবাসকারী ম্যাক্স নামের এক দালালের মাধ্যমে জার্মানিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। এ কাজের জন্য ম্যাক্স ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। ম্যাক্সের বাড়ি নোয়াখালী। প্রকৃত নাম অন্য কিছু হলেও দুবাইয়ে ওই নামেই তিনি পরিচিত। শাহিন বলেন, সিলেটের বিয়ানীবাজারে নজরুল ইসলাম নামের এক গাড়ি ব্যবসায়ী ম্যাক্সের আত্মীয়। নজরুলের কাছে তাঁরা টাকা জমা দেন। এ সময় একটি চুক্তিনামাও করা হয়। জার্মানিতে পাঠাতে না পারলে সব টাকা ফেরতের কথাও চুক্তিনামায় উল্লেখ করা হয়। সেপ্টেম্বরে লিটন রাশিয়া হয়ে বেলারুশে যান। এরপর বেলারুশের সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে পৌঁছালে পুলিশ তাঁকেসহ আরও কয়েকজনকে ধরে ফেলে। তাদের সীমান্ত দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। বেলারুশের পুলিশ তাঁদের ঢুকতে বাঁধা দেয়। এ পরিস্থিতিতে দুই দেশের সীমান্তে জঙ্গলে তাঁরা দিন কাটান। শাহিন বলেন, সর্বশেষ ৭ই অক্টোবর লিটন তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভয়েস মেসেজ পাঠান। ওই ভয়েস মেসেজে লিটন বলেন, তিনি জঙ্গলে খুব কষ্টে আছেন। খাবার নেই, পানি নেই। তাঁর একটি পা ভেঙে গেছে। লিটন ম্যাক্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত তাকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে বলেন। পরে তিনি (শাহিন আহমেদ) ম্যাক্সের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ করলে তিনি শুধু আশ্বাস দিতে থাকেন। কিছুদিন পর লিটনের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। লিটনের খোঁজ না পাওয়ায় চিন্তিত ছিল তার পরিবার। এই বিষয়ে শাহিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে লিটনের খোঁজখবর না পাওয়ায় তারা উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাতে থাকেন। সম্প্রতি তারা বেলারুশ সীমান্তের একটি ভিডিও পান। ভিডিওটি স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের। ওই ভিডিওতে দাবি করা হয়, সীমান্তে ১৫ জন অভিবাসীকে পোল্যান্ড পুলিশ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এর মধ্যে চেহারা, পরনের টি-শার্ট ও প্যান্ট দেখে তারা লিটনের লাশ শনাক্ত করেন। কিন্তু তাতেও তাঁরা পুরোপুরি নিশ্চিত হননি। শাহিন বলেন, বিভিন্ন সূত্রের ভিত্তিতে বেলারুশে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি চিকিৎসকের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করেন। ওই চিকিৎসক বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্প ও হাসপাতালে খোঁজ নেন। একপর্যায়ে একটি হাসপাতালের মর্গে লিটনের লাশ পান। সোমবার রাত আটটার দিকে চিকিৎসক লিটনের লাশের ছবি তাদের কাছে পাঠান। এতে তাঁরা নিশ্চিত হন লিটন মারা গেছেন। শাহিন বলেন, লিটনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পর তারা ম্যাক্স ও নজরুলের সঙ্গে কথা বলেন। লাশ ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তাদের সহায়তা চান। কিন্তু তারা কোনো সহায়তা করেননি। ম্যাক্সের আসল পরিচয় উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা চলছে। তারা ম্যাক্স ও নজরুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেবেন। শাহিন বলেন, লিটনের লাশ দেশে আনা হবে কি না, সে বিষয়ে তাঁরা পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ বিষয়ে কুলাউড়া সার্কেলের (কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান গনমাধ্যমে বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফুলকপি চাষ করে কৃষকের মুখে হাসি

আপডেট সময় : ০৩:৩৯:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৩

চলতি মৌসুমে অধিক লাভের আশায় ফুলকপি চাষাবাদ করেছেন বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন এর বড়দহ গ্রামের আবুল হোসেন। সঠিক সময়ে যত্ন নেয়া ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলনও বেশ ভালো হয়েছে তাঁর। আগাম জাতের এ সবজি চাষ করে দাম বেশি পাওয়ায় তার চোখেমুখে হাসির ঝিলিক লক্ষ্য করা গেছে। তার এই চাষাবাদ দেখে ওই ইউনিয়ন এর প্রায় ২০ কৃষক ঝুকে পড়েছেন এই আবাদে। তাদের মতে, শুধু বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন এর চাষাবাদে সৈয়দপুরের চাহিদা মিটিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা উপজেলার হাট বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব।

কৃষক আবুল হোসেন বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি মৌসুমে ৪ একর জমিতে ফুলকপি চাষাবাদ করেছেন। এরমধ্যে প্রায় ২ একর জমির ফুলকপি বাজারে বিক্রি করেছেন। এতে খরচ থেকে ৩ গুন লাভ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে বাকি জমির ফুলকপি বিক্রি করে যথেষ্ট লাভবান হবেন। তিনি আরো বলেন,কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে আগাম জাতের ফুলকপি বা বাধাকপির চাষাবাদ করলে সব কৃষকই লাভবান হবেন।

ওই ইউনিয়ন এর আরেক কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান,আবুল হোসেনের চাষাবাদ দেখে তিনি ৩ একর জমিতে ফুলকপি, ২ একর জমিতে বাধাকপি ও ১ একর জমিতে ছিমের চাষাবাদ করেছেন।গত মৌসুমে চাষাবাদ করে যে পরিমান ক্ষতি হয়েছে, বর্তমান মৌসুমে তার কয়েকগুন বেশি লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তিনি। ভরা মৌসুমে এসব সবজির চাষাবাদ করলে বাজারে দাম তেমন একটা পাওয়া যায় না বলেই এবারে আগাম চাষাবাদ করেছেন বলে জানান।

 সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকালে কথা হয় সবজি বিক্রেতা আলমগীর কবির এর সাথে, তিনি বলেন, সৈয়দপুরের বাজারে শীতকালীন সবজি উঠতে শুরু করেছে। ভাল মানের ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। টমেটো ১৩০ টাকা, মুলাও বাঁধাকপি ৬০ টাকা ও সিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। এসব সবজি আগাম চাষাবাদ করে বাজারে উঠার কারনেই দাম চড়া। তবে মাসখানেক পর দাম এমনটা থাকবে না বলে জানান তিনি।

সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভুষন রায় বলেন,সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন ও বাংগালীপুর ইউনিয়নে সবজির আগাম চাষাবাদ হয়। এই দুই ইউনিয়ন এর কৃষকদের চাষাবাদের কারনে সৈয়দপুরের চাহিদা মিটিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন অঞ্চলে তা সরবরাহ করা হয়। উপজেলার সব ইউনিয়ন এর কৃষকরা যদি কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শ মতে চাষাবাদ করেন তাহলে কোন কৃষকই লোকসানের কবলে পরবেন না। ২/৪ বছরেই তাঁরা আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হবেন বলে জানান তিনি।

সারাবেলার সংবাদ/ এমএএইচ/ ৩১ অক্টোবর ২০২৩

Facebook Comments Box