ঢাকা ১১:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

প্রধান বিচারপতির এজলাস থেকে লাইভ দেখানোর সুযোগ পেলেন গণমাধ্যমকর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১২:৫২:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪ ৩ বার পঠিত

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষ আধুনিকায়নের পর উদ্বোধন করা হয়েছে। এই প্রথমবারের মতো এজলাস কক্ষ থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান লাইভে দেখানোর সুযোগ পেলেন গণমাধ্যমকর্মীরা
সোমবার (১০ জুন) বিকালে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এজলাস কক্ষের উদ্বোধন করেন। এরপর পুনরায় বিচারিক কার্যক্রমের সূচনা উপলক্ষে এজলাস কক্ষে বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত তথা প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষ সুসজ্জিত হয়ে উঠেছে। আমি বিশ্বাস করি, এই আয়োজন নতুন দিনের সূচনামাত্র। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নিম্ন আদালতের ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন নতুন করে প্রাণ পাবে।’
বিশেষ অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে আনুষ্ঠানিক বেঞ্চ বসে। এ সময় প্রধান বিচারপতির বিচার কক্ষে পাঁচ জন সাবেক প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি, আইনজীবীসহ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পাঁচ জন সাবেক বিচারপতি হলেন— বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির হোসেন, বিচারপতি মো. রুহুল আমিন, বিচারপতি মো. তাফাজ্জাল ইসলাম, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বক্তব্য দেন।
উদ্বোধন উপলক্ষে প্রথমবারের মতো সুসজ্জিত বিচার কক্ষে ক্যামেরাসহ গণমাধ্যমকর্মীরা প্রবেশ করার সুযোগ পান। তবে আজকের পর থেকে এসব স্থির চিত্র ও ভিডিও ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন প্রধান বিচারপতি।
অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান তার বক্তব্যে বাংলাদেশের আদালত ব্যবস্থার বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরেন। নতুন এই এজলাস কক্ষ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি ও সমকালীন কাঠামোর পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির এই এজলাস কক্ষে আমাদের সম্মৃদ্ধ ঐতিহ্য এবং এই ভবনের আদি শিল্পকর্ম জীবন্ত হয়ে উঠেছে। এই ভবনের পূর্ব দিকে অবস্থিত বাংলাদেশের মানচিত্র সংবলিত যে নান্দনিক নকশাকর্ম, দীর্ঘকাল ধরে সেটি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অনন্য স্মারক হিসেবে আমাদের জনস্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে। এরসঙ্গে সাদৃশ্য রেখেই এই কক্ষের চারপাশের দেয়ালের নকশা করা হয়েছে। একইসঙ্গে তথ্য-প্রযুক্তির আধুনিক অনুষঙ্গগুলো এখানে নিয়ে আসা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালনা করতে এ আদালত এখন সম্পূর্ণ সক্ষম।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই আমি বিচার বিভাগের জন্য একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছলাম। সেই লক্ষ্যে এরইমধ্যে ঢাকার নিম্ন আদালতে কর্মরত বিজ্ঞ বিচারক, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের বিজ্ঞ আইন কর্মকর্তা এবং বিজ্ঞ আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। নানান উদ্যোগে সেই পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বাংলাদেশের অধস্তন আদালতে স্বাচ্ছন্দ্যে বিচারপ্রক্রিয়া পরিচালনার স্বার্থে সব স্থাপনার আধুনিকায়ন এবং উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুবিবেচনা এবং সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন তার বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ রায়গুলো উল্লেখ করেন এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি ও বিশিষ্ট আইনজীবীদের নাম উল্লেখ করে তাদের স্মরণ করেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘বিচার বিভাগ যত শক্তিশালী হবে, মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি ততটাই সহজ হবে।’ তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে নীতিমালা করতে হবে। জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য মেধা, যোগ্যতা ও ব্যক্তিত্ব-সম্পন্নদের বিচারক হিসেবে নিয়োগ করতে হবে।’

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

প্রধান বিচারপতির এজলাস থেকে লাইভ দেখানোর সুযোগ পেলেন গণমাধ্যমকর্মীরা

আপডেট সময় : ১২:৫২:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষ আধুনিকায়নের পর উদ্বোধন করা হয়েছে। এই প্রথমবারের মতো এজলাস কক্ষ থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান লাইভে দেখানোর সুযোগ পেলেন গণমাধ্যমকর্মীরা
সোমবার (১০ জুন) বিকালে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এজলাস কক্ষের উদ্বোধন করেন। এরপর পুনরায় বিচারিক কার্যক্রমের সূচনা উপলক্ষে এজলাস কক্ষে বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত তথা প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষ সুসজ্জিত হয়ে উঠেছে। আমি বিশ্বাস করি, এই আয়োজন নতুন দিনের সূচনামাত্র। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নিম্ন আদালতের ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন নতুন করে প্রাণ পাবে।’
বিশেষ অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে আনুষ্ঠানিক বেঞ্চ বসে। এ সময় প্রধান বিচারপতির বিচার কক্ষে পাঁচ জন সাবেক প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি, আইনজীবীসহ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পাঁচ জন সাবেক বিচারপতি হলেন— বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির হোসেন, বিচারপতি মো. রুহুল আমিন, বিচারপতি মো. তাফাজ্জাল ইসলাম, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বক্তব্য দেন।
উদ্বোধন উপলক্ষে প্রথমবারের মতো সুসজ্জিত বিচার কক্ষে ক্যামেরাসহ গণমাধ্যমকর্মীরা প্রবেশ করার সুযোগ পান। তবে আজকের পর থেকে এসব স্থির চিত্র ও ভিডিও ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন প্রধান বিচারপতি।
অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান তার বক্তব্যে বাংলাদেশের আদালত ব্যবস্থার বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরেন। নতুন এই এজলাস কক্ষ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি ও সমকালীন কাঠামোর পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির এই এজলাস কক্ষে আমাদের সম্মৃদ্ধ ঐতিহ্য এবং এই ভবনের আদি শিল্পকর্ম জীবন্ত হয়ে উঠেছে। এই ভবনের পূর্ব দিকে অবস্থিত বাংলাদেশের মানচিত্র সংবলিত যে নান্দনিক নকশাকর্ম, দীর্ঘকাল ধরে সেটি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অনন্য স্মারক হিসেবে আমাদের জনস্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে। এরসঙ্গে সাদৃশ্য রেখেই এই কক্ষের চারপাশের দেয়ালের নকশা করা হয়েছে। একইসঙ্গে তথ্য-প্রযুক্তির আধুনিক অনুষঙ্গগুলো এখানে নিয়ে আসা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালনা করতে এ আদালত এখন সম্পূর্ণ সক্ষম।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই আমি বিচার বিভাগের জন্য একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছলাম। সেই লক্ষ্যে এরইমধ্যে ঢাকার নিম্ন আদালতে কর্মরত বিজ্ঞ বিচারক, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের বিজ্ঞ আইন কর্মকর্তা এবং বিজ্ঞ আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। নানান উদ্যোগে সেই পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বাংলাদেশের অধস্তন আদালতে স্বাচ্ছন্দ্যে বিচারপ্রক্রিয়া পরিচালনার স্বার্থে সব স্থাপনার আধুনিকায়ন এবং উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুবিবেচনা এবং সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন তার বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ রায়গুলো উল্লেখ করেন এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি ও বিশিষ্ট আইনজীবীদের নাম উল্লেখ করে তাদের স্মরণ করেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘বিচার বিভাগ যত শক্তিশালী হবে, মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি ততটাই সহজ হবে।’ তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে নীতিমালা করতে হবে। জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য মেধা, যোগ্যতা ও ব্যক্তিত্ব-সম্পন্নদের বিচারক হিসেবে নিয়োগ করতে হবে।’

Facebook Comments Box