ঢাকা ০৫:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাবনায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে বাস মালিক সমিতি দখলের অভিযোগ

পাবনা প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৯:২৮:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪ ১৭ বার পঠিত

পাবনায় জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির কার্যালয় ভাংচুর, দখল ও অবৈধভাবে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। প্রতিকার চেয়ে সদর থানা ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন সমিতির সাধারণ সদস্য পরিবহন মালিকেরা।

শনিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সদস্যরা অভিযোগ করেন, ২০০৮ সালে জেলা বাস-মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির সর্বশেষ নির্বাচনে মো. ওমর আলী সভাপতি ও কালাম আহম্মেদ সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিন বছর কমিটির মেয়াদ পূর্তির পরেও তারা তৎকালীন সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন দেননি। সাধারণ সদস্যদের সমিতির হিসাব নিকাশ ও রেজিস্টার সংরক্ষণ না করে নিজেদের মতো তহবিল লুট করেন। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর তারা আত্মগোপনে চলে যান। এরপর গত ৭ আগস্ট সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের সম্মতিতে গঠন তন্ত্রের ১৪ (ঘ) ধারা অনুযায়ী কাউছার রহমান রিন্টুকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাইদুর রহমান মানিককে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়।

সম্প্রতি, পাবনা সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেহানুল ইসলাম বুলাল বাস মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতি দখলে নেয়ার ষড়যন্ত্র শুরু করেন। গত ২৬ আগস্ট তিনি কতিপয় সন্ত্রাসী সাথে নিয়ে এসে শহরের এআর কর্ণারের সমিতির কার্যালয়ের তালা ভেঙে মালিক সদস্যদের সাক্ষর করা রেজিস্ট্রার বই ও রেজুলেশন বই চুরি করে নিয়ে যান। এরপর তিনি সেলিম হোসেনকে সভাপতি ও নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে সমিতির কার্যালয় দখল করে নিয়েছেন।

সমিতির সদস্যরা আরো অভিযোগ করেন, সভাপতি সেলিম হোসেন ৮ বছর আগেই তার গাড়ীর ব্যানার ও ট্রিপ বিক্রি করে দেয়ায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সদস্যপদ হারিয়েছেন। এবং রেহানুল ইসলাম বুলাল নিজে বা তার পরিবারের কেউ কখনোই পরিবহণ ব্যবসায় যুক্ত নন, তার নামে মালিক সমিতিতে কোন গাড়ীও কখনো তালিকাভুক্ত ছিলো না। এরপরেও চর দখলের মতো করে আমাদের অফিস ও কমিটি তিনি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে দখল করেছেন। আমরা প্রশাসনকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানিয়েছি। বিএনপির শীর্ষ নের্তৃত্বকেও এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সমিতির সদস্যরা জানান, বিগত সরকারের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কতিপয় ব্যক্তি আমাদের জিম্মি করে রেখেছিলেন। এখন নতুন সরকারের সময়েও একই ঘটনার পুণরাবৃত্তি আমরা চাই না। নির্বাচনের মাধ্যমে সমিতির নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণে আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করি।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির প্রায় অর্ধশত সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

তবে, এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেহানুল ইসলাম বুলাল। তিনি বলেন, সমিতির সর্বশেষ কমিটির মেয়াদ ২০২২ সালে শেষ হয়েছে। আমি সমিতির ২০ নম্বর সদস্য। সম্পূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আমাদের কমিটি গঠিত হয়েছে যা সরকারি অনুমোদনও পেয়েছে। আগামী তিনবছরের মধ্যে কোন নির্বাচনের সুযোগ নেই।  তালা ভেঙে অফিস দখলের বানোয়াট অভিযোগ না করে সকল সদস্যকে সমিতির অফিসে এসে কথা বলারও আহ্বান জানান তিনি।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

পাবনায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে বাস মালিক সমিতি দখলের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৯:২৮:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪

পাবনায় জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির কার্যালয় ভাংচুর, দখল ও অবৈধভাবে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। প্রতিকার চেয়ে সদর থানা ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন সমিতির সাধারণ সদস্য পরিবহন মালিকেরা।

শনিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সদস্যরা অভিযোগ করেন, ২০০৮ সালে জেলা বাস-মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির সর্বশেষ নির্বাচনে মো. ওমর আলী সভাপতি ও কালাম আহম্মেদ সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিন বছর কমিটির মেয়াদ পূর্তির পরেও তারা তৎকালীন সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন দেননি। সাধারণ সদস্যদের সমিতির হিসাব নিকাশ ও রেজিস্টার সংরক্ষণ না করে নিজেদের মতো তহবিল লুট করেন। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর তারা আত্মগোপনে চলে যান। এরপর গত ৭ আগস্ট সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের সম্মতিতে গঠন তন্ত্রের ১৪ (ঘ) ধারা অনুযায়ী কাউছার রহমান রিন্টুকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাইদুর রহমান মানিককে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়।

সম্প্রতি, পাবনা সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেহানুল ইসলাম বুলাল বাস মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতি দখলে নেয়ার ষড়যন্ত্র শুরু করেন। গত ২৬ আগস্ট তিনি কতিপয় সন্ত্রাসী সাথে নিয়ে এসে শহরের এআর কর্ণারের সমিতির কার্যালয়ের তালা ভেঙে মালিক সদস্যদের সাক্ষর করা রেজিস্ট্রার বই ও রেজুলেশন বই চুরি করে নিয়ে যান। এরপর তিনি সেলিম হোসেনকে সভাপতি ও নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে সমিতির কার্যালয় দখল করে নিয়েছেন।

সমিতির সদস্যরা আরো অভিযোগ করেন, সভাপতি সেলিম হোসেন ৮ বছর আগেই তার গাড়ীর ব্যানার ও ট্রিপ বিক্রি করে দেয়ায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সদস্যপদ হারিয়েছেন। এবং রেহানুল ইসলাম বুলাল নিজে বা তার পরিবারের কেউ কখনোই পরিবহণ ব্যবসায় যুক্ত নন, তার নামে মালিক সমিতিতে কোন গাড়ীও কখনো তালিকাভুক্ত ছিলো না। এরপরেও চর দখলের মতো করে আমাদের অফিস ও কমিটি তিনি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে দখল করেছেন। আমরা প্রশাসনকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানিয়েছি। বিএনপির শীর্ষ নের্তৃত্বকেও এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সমিতির সদস্যরা জানান, বিগত সরকারের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কতিপয় ব্যক্তি আমাদের জিম্মি করে রেখেছিলেন। এখন নতুন সরকারের সময়েও একই ঘটনার পুণরাবৃত্তি আমরা চাই না। নির্বাচনের মাধ্যমে সমিতির নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণে আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করি।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির প্রায় অর্ধশত সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

তবে, এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেহানুল ইসলাম বুলাল। তিনি বলেন, সমিতির সর্বশেষ কমিটির মেয়াদ ২০২২ সালে শেষ হয়েছে। আমি সমিতির ২০ নম্বর সদস্য। সম্পূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আমাদের কমিটি গঠিত হয়েছে যা সরকারি অনুমোদনও পেয়েছে। আগামী তিনবছরের মধ্যে কোন নির্বাচনের সুযোগ নেই।  তালা ভেঙে অফিস দখলের বানোয়াট অভিযোগ না করে সকল সদস্যকে সমিতির অফিসে এসে কথা বলারও আহ্বান জানান তিনি।

Facebook Comments Box