ঢাকা ০২:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে সরকার সফল হবে না: তারেক Logo স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে দেশ এখনও মুক্ত নয়: রিজভী Logo হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে যেভাবে ইসরায়েল খুঁজে বের করে হত্যা করেছে Logo সোনারগাঁওয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে যুবকের মৃত্যু Logo সংবাদ প্রকাশের পর বৃদ্ধা মহিলার ঠাই হলো স্বামীর বসত ভিটায় Logo সোনারগাঁয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি হালট দখল করে বালু ভরাট Logo ‘সংস্কারের ধীর গতি’ ও কাজের গুরুত্ব নির্ধারণ নিয়ে সমালোচনা, কী বলছেন উপদেষ্টারা? Logo আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু আজ Logo বাড়তে পারে ঈদ ও পূজার সরকারি ছুটি Logo আগামী বছর থেকে আবারও মাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন শুরু

পাবনায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে এক নারীকে ধর্ষণ; ১ হাজার টাকা জরিমানায় ধামাচাপার চেষ্টা ইউপি চেয়ারম্যানের

পাবনা প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৮:১৯:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ২১৫ বার পঠিত

বেড়া চাকলা ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস সরদার

পাবনার বেড়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা মাত্র এক হাজার টাকা জরিমানায় ধামাচাপা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে চাকলা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গত ৩১ জানুয়ারীর এ ঘটনায় আইনশৃংখলা বাহিনীর সহযোগিতায় রবিবার থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। গ্রেফতার হয়েছে অভিযুক্তও আসামি শফিকুল।

স্থানীয়রা জানান, প্রধানমন্ত্রীর উপহারে গত বছর আগস্ট মাসে পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা আশ্রয়ন কেন্দ্রের ২ নং ঘরে স্ত্রী কে নিয়ে সুখের বসতি গড়েন ভূমিহীণ দরিদ্র এক চা দোকানী। তবে, সেই সুখের সংসারে হঠাৎ এক ঝড়ে যেন নেমে এসেছে ঘোর অমানিশা।
চা দোকানীর অভিযোগ, গত ৩১ জানুয়ারী দুপুরে প্রতিবেশী শফিকুল ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে তার স্ত্রীকে। বাড়িতে এসে তিনি দরজায় ধাক্কা দিলে পালিয়ে যায় শফিকুল। বিচারের আশায় স্বামীকে সাথে নিয়ে ঐ দিনই চাকলা ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস সরদারের কাছে যান ভুক্তভোগী নারী। তবে, মামলা বা আইনী সহযোগিতার পরিবর্তে সালিশ ডেকে অভিযুক্ত শফিকুলের নিকট হতে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে মাত্র এক হাজার টাকা জরিমানা, নাকে খত ও কান ধরে উঠবস করিয়ে জোরপূর্বক মীমাংসা করে দেন ইদ্রিস চেয়ারম্যান। এমন সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানালে চেয়ারম্যান ভয়ভীতিও দেখান, অভিযোগ ভুক্তভোগীদেরকে।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী জানান, গত রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে চাকলা ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠকে বসে ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী। এরপর কয়েকজন ইউপি সদস্যসহ তার অনুসারীদের নিয়ে একটি সালিশী বোর্ড গঠন করে বিচারকার্য পরিচালনা করে ইউপি চেয়ারম্যান। ধর্ষককে জুতা পেটা, নাকে খত ও কান ধরে উঠাবসা করার শাস্তি দেন ওই সালিশী বোর্ড। একইসাথে অভিযুক্ত ধর্ষককে এক হাজার টাকা জরিমানা করে মীমাংসা করে দেন ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস সরদার। কিন্তু ভুক্তভোগী নারীর স্বামী তৎক্ষণাৎ এ মীমাংসা মেনে না নিয়ে থানায় মামলা করার কথা বললে তাকে হুমকি দিয়ে মামলা করতে নিষেধ করেন চেয়ারম্যান।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বলেন, আমার স্ত্রীর ইজ্জতের দাম এক হাজার টাকা নির্ধারণ করে রায় দেন ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস সরদার। রায় দেবার সাথে সাথে আমি জানিয়েছি, এ রায় মানি না। আমি থানায় মামলা করব। তখন চেয়ারম্যান ধমক দিয়ে বলেন, এতোবড় সাহস তোর, আমার রায় মানিস না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে রটিয়ে দেবো বউ দিয়ে দেহ ব্যবসা করিয়ে খাস। হুমকি দিয়ে তিনি আরও বলেন সালিশ না মানলে পরিষদের প্যার্ডে লিখে দিব যে তোর স্ত্রী দেহ ব্যাবসা করে। এছাড়া গালাগালি ও নানারকম হুমকিও দেন চেয়ারম্যান। আমার স্ত্রীকে জোর করে ধর্ষণ করেছে শফিকুল। তার শাস্তি না দিয়ে উল্টো তার পক্ষ নিয়ে আমার সাথে অন্যায় করা হয়েছে, হুমকি দেয়া হয়েছে। এরপরও আমি থানায় মামলা করেছি। পরে পুলিশ ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জমিজমা সংক্রান্ত সহ নানা ঝামেলার মীমাংসা করতে স্থানীয়রা চাকলা ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস সরদারের শরণাপন্ন হলে উভয়পক্ষকে জিম্মি করে টাকা খেয়ে সালিশ করে থাকেন। সালিশে স্বজনপ্রীতি ও টাকা খেয়ে অন্যায়ের পক্ষে রায় দেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া ধর্ষণের বিচার কোনো সালিশী বৈঠকে সম্পন্ন করা বিধান নেই জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আহসান হাবিব (শাওন) বলেন, ধর্ষণ একটি ফৌজদারি অপরাধ। এটি গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করার কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া সালিশী রায়ে অভিযুক্তকে কায়া শাস্তি (শারিরীক শাস্তি) দেবার এখতিয়ারও কারো নেই। এদিক থেকে এ সালিশী কার্যক্রম সঠিক হয়নি। চাকলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন বলেন, ধর্ষণ অপরাধের মীমাংসা এক হাজার টাকা জরিমানা। এটি কোনোভাবেই সঠিক মীমাংসা হতে পারে না। তা ছাড়াও আমাদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে টাকা ছাড়া সালিশ না করার বহু অভিযোগ আছে। এতে সাধারণ মানুষ গ্রাম আদালতের প্রতি আস্থা হাড়িয়ে ফেলছে। সে সালিশের নামে সালিশ বানিজ্য করে।

অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে চাকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস সরদার বলেন, উভয়পক্ষের সম্মতিতে সালিশ করা হয়েছে। সালিশী কাগজপত্রে স্বাক্ষরও করেছেন তারা। এর বাইরে একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারাই এই বিষয়টিকে ভিন্নভাবে তুলে ধরছেন।

এ ব্যাপারে বেড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, কোনো ঘটনা ঘটলে চেয়ারম্যান বা ইউপি সদস্যদের পুলিশকে অবহিত করার দায়িত্ব রয়েছে। এ সমস্থ ঘটনার সালিশের এখতিয়ার কারো নেই। সেটি না করে অন্যায়ভাবে কেউ যদি কোনো সালিশ বা মীমাংসার বিষয়েও তদন্ত চলছে। এক্ষেত্রে অনিয়ম হলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

পাবনায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে এক নারীকে ধর্ষণ; ১ হাজার টাকা জরিমানায় ধামাচাপার চেষ্টা ইউপি চেয়ারম্যানের

আপডেট সময় : ০৮:১৯:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

পাবনার বেড়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা মাত্র এক হাজার টাকা জরিমানায় ধামাচাপা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে চাকলা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গত ৩১ জানুয়ারীর এ ঘটনায় আইনশৃংখলা বাহিনীর সহযোগিতায় রবিবার থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। গ্রেফতার হয়েছে অভিযুক্তও আসামি শফিকুল।

স্থানীয়রা জানান, প্রধানমন্ত্রীর উপহারে গত বছর আগস্ট মাসে পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা আশ্রয়ন কেন্দ্রের ২ নং ঘরে স্ত্রী কে নিয়ে সুখের বসতি গড়েন ভূমিহীণ দরিদ্র এক চা দোকানী। তবে, সেই সুখের সংসারে হঠাৎ এক ঝড়ে যেন নেমে এসেছে ঘোর অমানিশা।
চা দোকানীর অভিযোগ, গত ৩১ জানুয়ারী দুপুরে প্রতিবেশী শফিকুল ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে তার স্ত্রীকে। বাড়িতে এসে তিনি দরজায় ধাক্কা দিলে পালিয়ে যায় শফিকুল। বিচারের আশায় স্বামীকে সাথে নিয়ে ঐ দিনই চাকলা ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস সরদারের কাছে যান ভুক্তভোগী নারী। তবে, মামলা বা আইনী সহযোগিতার পরিবর্তে সালিশ ডেকে অভিযুক্ত শফিকুলের নিকট হতে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে মাত্র এক হাজার টাকা জরিমানা, নাকে খত ও কান ধরে উঠবস করিয়ে জোরপূর্বক মীমাংসা করে দেন ইদ্রিস চেয়ারম্যান। এমন সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানালে চেয়ারম্যান ভয়ভীতিও দেখান, অভিযোগ ভুক্তভোগীদেরকে।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী জানান, গত রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে চাকলা ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠকে বসে ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী। এরপর কয়েকজন ইউপি সদস্যসহ তার অনুসারীদের নিয়ে একটি সালিশী বোর্ড গঠন করে বিচারকার্য পরিচালনা করে ইউপি চেয়ারম্যান। ধর্ষককে জুতা পেটা, নাকে খত ও কান ধরে উঠাবসা করার শাস্তি দেন ওই সালিশী বোর্ড। একইসাথে অভিযুক্ত ধর্ষককে এক হাজার টাকা জরিমানা করে মীমাংসা করে দেন ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস সরদার। কিন্তু ভুক্তভোগী নারীর স্বামী তৎক্ষণাৎ এ মীমাংসা মেনে না নিয়ে থানায় মামলা করার কথা বললে তাকে হুমকি দিয়ে মামলা করতে নিষেধ করেন চেয়ারম্যান।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বলেন, আমার স্ত্রীর ইজ্জতের দাম এক হাজার টাকা নির্ধারণ করে রায় দেন ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস সরদার। রায় দেবার সাথে সাথে আমি জানিয়েছি, এ রায় মানি না। আমি থানায় মামলা করব। তখন চেয়ারম্যান ধমক দিয়ে বলেন, এতোবড় সাহস তোর, আমার রায় মানিস না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে রটিয়ে দেবো বউ দিয়ে দেহ ব্যবসা করিয়ে খাস। হুমকি দিয়ে তিনি আরও বলেন সালিশ না মানলে পরিষদের প্যার্ডে লিখে দিব যে তোর স্ত্রী দেহ ব্যাবসা করে। এছাড়া গালাগালি ও নানারকম হুমকিও দেন চেয়ারম্যান। আমার স্ত্রীকে জোর করে ধর্ষণ করেছে শফিকুল। তার শাস্তি না দিয়ে উল্টো তার পক্ষ নিয়ে আমার সাথে অন্যায় করা হয়েছে, হুমকি দেয়া হয়েছে। এরপরও আমি থানায় মামলা করেছি। পরে পুলিশ ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জমিজমা সংক্রান্ত সহ নানা ঝামেলার মীমাংসা করতে স্থানীয়রা চাকলা ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস সরদারের শরণাপন্ন হলে উভয়পক্ষকে জিম্মি করে টাকা খেয়ে সালিশ করে থাকেন। সালিশে স্বজনপ্রীতি ও টাকা খেয়ে অন্যায়ের পক্ষে রায় দেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া ধর্ষণের বিচার কোনো সালিশী বৈঠকে সম্পন্ন করা বিধান নেই জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আহসান হাবিব (শাওন) বলেন, ধর্ষণ একটি ফৌজদারি অপরাধ। এটি গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করার কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া সালিশী রায়ে অভিযুক্তকে কায়া শাস্তি (শারিরীক শাস্তি) দেবার এখতিয়ারও কারো নেই। এদিক থেকে এ সালিশী কার্যক্রম সঠিক হয়নি। চাকলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন বলেন, ধর্ষণ অপরাধের মীমাংসা এক হাজার টাকা জরিমানা। এটি কোনোভাবেই সঠিক মীমাংসা হতে পারে না। তা ছাড়াও আমাদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে টাকা ছাড়া সালিশ না করার বহু অভিযোগ আছে। এতে সাধারণ মানুষ গ্রাম আদালতের প্রতি আস্থা হাড়িয়ে ফেলছে। সে সালিশের নামে সালিশ বানিজ্য করে।

অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে চাকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস সরদার বলেন, উভয়পক্ষের সম্মতিতে সালিশ করা হয়েছে। সালিশী কাগজপত্রে স্বাক্ষরও করেছেন তারা। এর বাইরে একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারাই এই বিষয়টিকে ভিন্নভাবে তুলে ধরছেন।

এ ব্যাপারে বেড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, কোনো ঘটনা ঘটলে চেয়ারম্যান বা ইউপি সদস্যদের পুলিশকে অবহিত করার দায়িত্ব রয়েছে। এ সমস্থ ঘটনার সালিশের এখতিয়ার কারো নেই। সেটি না করে অন্যায়ভাবে কেউ যদি কোনো সালিশ বা মীমাংসার বিষয়েও তদন্ত চলছে। এক্ষেত্রে অনিয়ম হলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Facebook Comments Box