ঢাকা ০১:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo পাবনার সাঁথিয়ায় নছিমন চালকের মরদেহ উদ্ধার Logo পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যুবককে অপরহরণ অভিযোগ সাঁথিয়ায় Logo হত্যাচেষ্টায় দৈনিক জনবাণীর সম্পাদকসহ ৪ সাংবাদিকের ওপর হামলা Logo সোনারগাঁয়ে শীর্তাতদের মাঝে কম্বল বিতরন Logo রাত হলেই আকণ্ঠ মদ্যপান, নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন কেন? নিজেই জানালেন আমির খান Logo র‌্যাঙ্কিংয়ে নিজের সেরা অবস্থানে মাহেদি, ৮৫ ধাপ উন্নতি জাকেরের Logo পর্যটকদের গাড়িতে লাফ দিয়ে উঠল সিংহী, ঝাঁপিয়ে পড়ল যাত্রীদের উপর! Logo হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়ে চিঠি: আইনি দিক খতিয়ে দেখেই ঢাকাকে জবাব, সিদ্ধান্ত নয়াদিল্লির Logo ইজতেমার মাঠে বর্বর হামলার প্রতিবাদে সোনারগাঁওয়ে বিক্ষোভ মিছিল Logo সৈয়দপুরে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন

পণ্যের দাম নির্ধারণ: বাস্তবায়ন করবে কে?

সারাবেলা প্রতিবেদন
  • আপডেট সময় : ০৫:০১:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪ ১৩৯ বার পঠিত

বৃহস্পতিবার ২৯ ধরণের পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার৷ কিন্তু বাজারে দেখা যাচ্ছে, এসব পণ্য বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে৷

তিন দিন হলো ২৯ ধরনের কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর৷ কিন্তু তাদের নির্ধারিত দামে গত তিন দিনে কোথাও ওই পণ্য কিনতে পারেননি ক্রেতারা, এমন অভিযোগ রয়েছে৷ নির্ধারত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে৷

আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘‘অযৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে বিপণন অধিদপ্তর দেশের মানুষের সঙ্গে কৌতুক করছেন৷ ওই দামে পণ্য বিক্রি সম্ভব নয়৷”

২০১৮ সালের কৃষি বিপণন আইনে কৃষিপণ্যের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ এবং তা বাস্তবায়ন উভয় দায়িত্ব কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের৷ এটা বাস্তবায়নে বাধা দূর করতে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে৷ কৃষি বিপণন বিধিমালা ২০২১-এ অধিদপ্তরকে জেলা, উপজেলা এবং বাজার ভিত্তিক সমন্বয় কমিটি গঠন করে পণ্যের দাম বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে৷

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী এবং ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দুজনেই বলেছেন, ‘‘আইনে ওইসব পণ্যের দাম নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের৷ তারা বাস্তবায়ন করবে আশা করছি৷’’

জবাবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিম বলেন, ‘‘আমরা বাস্তবায়নের জন্য অভিযান পরিচালনা করতে পারি না৷ এরজন্য সরকারের অনেক সংস্থা আছে৷ আমরা মামলা করতে পারি৷’’

গত বৃহস্পতিবার ২৯ ধরণের পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে৷ তাতে কোন পর্যায়ে কোন পণ্যের দাম কত হবে তা বলে দেয়া হয়েছে৷ যেমন ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৪৫ টাকা ৭৮ পয়সা৷ উৎপাদন পর্যায়ে দাম ১৫১ টাকা ৮১ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১৬২ টাকা ৬৯ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৭৫ টাকা ৩০ পয়সা৷

একইভাবে গরুর মাংসের উৎপাদন খরচ ৫৮৭ টাকা ৫০ পয়সা৷ উৎপাদন পর্যায়ে দাম প্রতি কেজি ৬০৫ টাকা ১৩ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ৬৩১ টাকা ৬৯ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সার কথা বলা হয়েছে৷

ডিমের (এক পিস) উৎপাদন খরচ ৮ টাকা ৮১ পয়সা৷ উৎপাদন পর্যায়ে দাম ৯ টাকা ৫ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ৯ টাকা ৬১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১০ টাকা ৪৯ পয়সা৷ দেশি পেঁয়াজ উৎপাদন খরচ ৪৪ টাকা, উৎপাদক পর্যায়ে দাম ৪৪ টাকা ৩০ পয়সা, পাইকারি ৫৩ টাকা ২০ পয়সা, খুচরা ৬৫ টাক ৪০ পয়সা৷ এভাবে পণ্যগুলোর দাম কোন পর্যায়ে কত তা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে৷

কিন্তু বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজি ২২০টাকা, গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা, প্রতি পিস ডিম ১২ টাকা, দেশি পেঁয়াজ কেজি ৮০-৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে৷ এই হিসেবে প্রতিটি পণ্যের দামই বেধে দেয়া দামের চেয়ে ২০ থেকে ৪০ ভাগ বেশি৷

যৌক্তি দাম বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর তা জানতে কথা হয় জেলা পর্যায়ের কয়েকজন কৃষি বিপণন কর্মকর্তার সঙ্গে৷ তারা জানান, ‘‘আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে যৌক্তিক মূল্য তালিকা জানিয়ে দিয়েছি৷ মূল্য তালিকা টানিয়ে দিয়েছি৷ তাদের ওই দামে বিক্রি করতে বলেছি৷ জেলায় জেলায় বাজার মূল্য মনিটরিং সমন্বয় কমিটি আছে তারাও এটা দেখবেন৷ যদি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হয় সেটা জেলার ডিসি সাহেবরা করবেন৷’’

তাদের কথা, ‘‘বাজারে এর প্রভাব পড়তে সময় লাগবে৷ আমরা এই দাম নির্ধারণ করে দিয়ে এখন সচেতনতা সৃষ্টি করছি৷ সবাইকে যৌক্তিক মূল্য জানাচ্ছি৷’’

তবে পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘‘তারা অফিসে বসে অযৌক্তিকভাবে দাম নির্ধারণ করেছেন৷ ব্রয়লার মুরগির এখন উৎপাদন খরচ কেজি ১৭৫ টাকা৷ তাহলে এটা খুচরা পর্যায়ে কীভাবে ১৭৫ টাকা বিক্রি হবে৷ ডিমের যা দাম নির্ধারণ করেছে উৎপাদন খরচও তাই৷ ব্যবসা না হলে আমরা উৎপাদন কেন করব? এতে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হবে৷ বাজারে কোনো প্রভাব পড়বে না৷ ওই দামে কোনো পণ্য পাওয়া যাবে না৷ তারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কৌতুক করছে৷’’

আর দেশ কৃষিপণ্য নেটওয়ার্কের এস এম শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘‘আসলে কৃষিপণ্য পঁচনশীল৷ এখানে ৩০ শতাংশ নষ্ট হয়৷ এছাড়া চাঁদাবাজদের উৎপাত আছে, অনেক মধ্যস্বত্বভোগী আছে৷ সেই কারণে কৃষিপণ্যের দাম বেড়ে যায়৷ যদি কৃষিপণ্য সংরক্ষণ, আলাদা পরিবহন ও চাঁদাবাজি বন্ধ হতো তাহলে দাম কম হতো৷ ওগুলো বন্ধ না করে, বিবেচনায় না নিয়ে যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে সেই দামে বাজারে পণ্য পাওয়া যাবে না৷’’

এর জবাবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিম বলেন, ‘‘আমরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দুই মাস কাজ করে দাম নির্ধারণ করেছি৷ প্রতিটি পর্যায়ে কথা বলেছি৷ ওয়ার্কশপ করেছি৷ ওনারা যা বলছেন তা গ্রহণযোগ্য নয়৷ আমরা সঠিক দামই নির্ধারণ করেছি৷’’

বাজারে ওই দামে পণ্য পাওয়া কেন যাচ্ছে না তার জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা মাত্র ঘোষণা করেছি৷ প্রভাব পড়তে সময় লাগবে৷ এটা আগে ছিল না৷ এখন সবাই তো জানলো যে, যৌক্তিক দাম কোনটি৷ এখন বাজার মনিটরিং-এর মাধ্যমে ঠিক হবে৷ এই দাম আগেই নির্ধারণ করার ম্যান্ডেট আমাদের ছিল৷ তবে নানা কারণে আমরা করতে পারিনি৷’’

বাস্তবায়ন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘এটা সরকারের পুরো মেশিনারিজের ওপর নির্ভর করে৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, মোবাইল কোর্ট, আমাদের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ আরো অনেক এজেন্সি আছে তাদের সবার দায়িত্ব৷’’

আইনি ক্ষমতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এই দাম কেউ না মানলে এক বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে৷ আমরা অভিযোগ পেলে আদালতে মামলা করতে পারি৷ কিন্তু সরাসরি অভিযান পরিচালনা বা শাস্তি দিতে পারি না৷ আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করি না৷ এটা জেলা প্রশাসক, ভোক্তা অধিদপ্তরসহ আরো অনেক দপ্তর আছে যারা করে৷’’

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

পণ্যের দাম নির্ধারণ: বাস্তবায়ন করবে কে?

আপডেট সময় : ০৫:০১:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

বৃহস্পতিবার ২৯ ধরণের পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার৷ কিন্তু বাজারে দেখা যাচ্ছে, এসব পণ্য বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে৷

তিন দিন হলো ২৯ ধরনের কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর৷ কিন্তু তাদের নির্ধারিত দামে গত তিন দিনে কোথাও ওই পণ্য কিনতে পারেননি ক্রেতারা, এমন অভিযোগ রয়েছে৷ নির্ধারত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে৷

আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘‘অযৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে বিপণন অধিদপ্তর দেশের মানুষের সঙ্গে কৌতুক করছেন৷ ওই দামে পণ্য বিক্রি সম্ভব নয়৷”

২০১৮ সালের কৃষি বিপণন আইনে কৃষিপণ্যের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ এবং তা বাস্তবায়ন উভয় দায়িত্ব কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের৷ এটা বাস্তবায়নে বাধা দূর করতে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে৷ কৃষি বিপণন বিধিমালা ২০২১-এ অধিদপ্তরকে জেলা, উপজেলা এবং বাজার ভিত্তিক সমন্বয় কমিটি গঠন করে পণ্যের দাম বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে৷

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী এবং ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দুজনেই বলেছেন, ‘‘আইনে ওইসব পণ্যের দাম নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের৷ তারা বাস্তবায়ন করবে আশা করছি৷’’

জবাবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিম বলেন, ‘‘আমরা বাস্তবায়নের জন্য অভিযান পরিচালনা করতে পারি না৷ এরজন্য সরকারের অনেক সংস্থা আছে৷ আমরা মামলা করতে পারি৷’’

গত বৃহস্পতিবার ২৯ ধরণের পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে৷ তাতে কোন পর্যায়ে কোন পণ্যের দাম কত হবে তা বলে দেয়া হয়েছে৷ যেমন ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৪৫ টাকা ৭৮ পয়সা৷ উৎপাদন পর্যায়ে দাম ১৫১ টাকা ৮১ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১৬২ টাকা ৬৯ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৭৫ টাকা ৩০ পয়সা৷

একইভাবে গরুর মাংসের উৎপাদন খরচ ৫৮৭ টাকা ৫০ পয়সা৷ উৎপাদন পর্যায়ে দাম প্রতি কেজি ৬০৫ টাকা ১৩ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ৬৩১ টাকা ৬৯ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সার কথা বলা হয়েছে৷

ডিমের (এক পিস) উৎপাদন খরচ ৮ টাকা ৮১ পয়সা৷ উৎপাদন পর্যায়ে দাম ৯ টাকা ৫ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ৯ টাকা ৬১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১০ টাকা ৪৯ পয়সা৷ দেশি পেঁয়াজ উৎপাদন খরচ ৪৪ টাকা, উৎপাদক পর্যায়ে দাম ৪৪ টাকা ৩০ পয়সা, পাইকারি ৫৩ টাকা ২০ পয়সা, খুচরা ৬৫ টাক ৪০ পয়সা৷ এভাবে পণ্যগুলোর দাম কোন পর্যায়ে কত তা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে৷

কিন্তু বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজি ২২০টাকা, গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা, প্রতি পিস ডিম ১২ টাকা, দেশি পেঁয়াজ কেজি ৮০-৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে৷ এই হিসেবে প্রতিটি পণ্যের দামই বেধে দেয়া দামের চেয়ে ২০ থেকে ৪০ ভাগ বেশি৷

যৌক্তি দাম বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর তা জানতে কথা হয় জেলা পর্যায়ের কয়েকজন কৃষি বিপণন কর্মকর্তার সঙ্গে৷ তারা জানান, ‘‘আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে যৌক্তিক মূল্য তালিকা জানিয়ে দিয়েছি৷ মূল্য তালিকা টানিয়ে দিয়েছি৷ তাদের ওই দামে বিক্রি করতে বলেছি৷ জেলায় জেলায় বাজার মূল্য মনিটরিং সমন্বয় কমিটি আছে তারাও এটা দেখবেন৷ যদি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হয় সেটা জেলার ডিসি সাহেবরা করবেন৷’’

তাদের কথা, ‘‘বাজারে এর প্রভাব পড়তে সময় লাগবে৷ আমরা এই দাম নির্ধারণ করে দিয়ে এখন সচেতনতা সৃষ্টি করছি৷ সবাইকে যৌক্তিক মূল্য জানাচ্ছি৷’’

তবে পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘‘তারা অফিসে বসে অযৌক্তিকভাবে দাম নির্ধারণ করেছেন৷ ব্রয়লার মুরগির এখন উৎপাদন খরচ কেজি ১৭৫ টাকা৷ তাহলে এটা খুচরা পর্যায়ে কীভাবে ১৭৫ টাকা বিক্রি হবে৷ ডিমের যা দাম নির্ধারণ করেছে উৎপাদন খরচও তাই৷ ব্যবসা না হলে আমরা উৎপাদন কেন করব? এতে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হবে৷ বাজারে কোনো প্রভাব পড়বে না৷ ওই দামে কোনো পণ্য পাওয়া যাবে না৷ তারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কৌতুক করছে৷’’

আর দেশ কৃষিপণ্য নেটওয়ার্কের এস এম শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘‘আসলে কৃষিপণ্য পঁচনশীল৷ এখানে ৩০ শতাংশ নষ্ট হয়৷ এছাড়া চাঁদাবাজদের উৎপাত আছে, অনেক মধ্যস্বত্বভোগী আছে৷ সেই কারণে কৃষিপণ্যের দাম বেড়ে যায়৷ যদি কৃষিপণ্য সংরক্ষণ, আলাদা পরিবহন ও চাঁদাবাজি বন্ধ হতো তাহলে দাম কম হতো৷ ওগুলো বন্ধ না করে, বিবেচনায় না নিয়ে যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে সেই দামে বাজারে পণ্য পাওয়া যাবে না৷’’

এর জবাবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিম বলেন, ‘‘আমরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দুই মাস কাজ করে দাম নির্ধারণ করেছি৷ প্রতিটি পর্যায়ে কথা বলেছি৷ ওয়ার্কশপ করেছি৷ ওনারা যা বলছেন তা গ্রহণযোগ্য নয়৷ আমরা সঠিক দামই নির্ধারণ করেছি৷’’

বাজারে ওই দামে পণ্য পাওয়া কেন যাচ্ছে না তার জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা মাত্র ঘোষণা করেছি৷ প্রভাব পড়তে সময় লাগবে৷ এটা আগে ছিল না৷ এখন সবাই তো জানলো যে, যৌক্তিক দাম কোনটি৷ এখন বাজার মনিটরিং-এর মাধ্যমে ঠিক হবে৷ এই দাম আগেই নির্ধারণ করার ম্যান্ডেট আমাদের ছিল৷ তবে নানা কারণে আমরা করতে পারিনি৷’’

বাস্তবায়ন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘এটা সরকারের পুরো মেশিনারিজের ওপর নির্ভর করে৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, মোবাইল কোর্ট, আমাদের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ আরো অনেক এজেন্সি আছে তাদের সবার দায়িত্ব৷’’

আইনি ক্ষমতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এই দাম কেউ না মানলে এক বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে৷ আমরা অভিযোগ পেলে আদালতে মামলা করতে পারি৷ কিন্তু সরাসরি অভিযান পরিচালনা বা শাস্তি দিতে পারি না৷ আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করি না৷ এটা জেলা প্রশাসক, ভোক্তা অধিদপ্তরসহ আরো অনেক দপ্তর আছে যারা করে৷’’

Facebook Comments Box