ঢাকা ০৭:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

নোংরা পরিবেশে লাচ্ছা সেমাই তৈরীর ধুম

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৫:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪ ৯০ বার পঠিত

ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে সৈয়দপুরে লাচ্ছা-সেমাই তৈরির ধুম পড়েছে। বাণিজ্যিক শহর হিসেবে খ্যাত হওয়ায় সৈয়দপুরের হাতিখানা ক্যাম্পের জাহাঙ্গীর, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন জুম্মা পাড়ার সেলিম সহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় প্রায় ১৫/২০ টি অস্থায়ী কারখানাগুলোতে নোংরা পরিবেশে নিম্নমানের উপকরণে তৈরি করা হচ্ছে ভেজাল লাচ্ছা-সেমাই। লাচ্ছা-সেমাইগুলো ভোক্তাদের চোখে মুখরোচক মনে হলেও এগুলো তৈরি হচ্ছে স্যাঁতস্যাঁতে মেঝে ও নোংরা পরিবেশে। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ সেমাইগুলো।

কয়েকটি কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, নোংরা পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে সেমাই। কর্মচারীদের মাথায় নেই ক্যাপ, হাতে নেই হ্যান্ডগ্লাভস। স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেতে টিনের পাত্রের উপর বসে পা দিয়ে বানানো হচ্ছে খামির। এরপর অপরিষ্কার ডান ও বাম হাত দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে সেমাইয়ের বল।

বল তৈরির পর গরুর চর্বি ও পামওয়েলের মিশ্রণে নিম্নমানের তেলে ভাজা হচ্ছে সেমাই। মেশানো হয় কৃত্রিম রঙ। ভাজা শেষে তৈরি হয়ে যায় চকচকে ঘিয়ে ভাজা লাচ্ছা-সেমাই। মাঝে মাঝে এক সপ্তাহ পুরোনো তেলের সঙ্গে নতুন তেল মিশিয়ে সেমাই ভাজার কাজ চলে দিনের পর দিন।এসব কারখানার মালিকরা মাঝে মাঝে দেশের নামী-দামী ব্র্যান্ডের সেমাইয়ের প্যাকেটে ঢুকিয়ে বিক্রি করছেন ভেজাল সেমাই। এরপর এ লাচ্ছা-সেমাইগুলো চলে যাচ্ছে নীলফামারী জেলার প্রতিটি উপজেলা সহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলাগুলোতে। হাতিখানা ক্যাম্পের জাহাঙ্গীর আলম ও টার্মিনাল সংলগ্ন জুম্মা পাড়ার সেলিম প্রায় প্রতিদিনই নোংরা পরিবেশে চানাচুর ও রমজানের একটি মাস লাখ লাখ টাকা লাচ্ছা সেমাই তৈরী করে বাজারজাত করলেও ভোক্তা অধিদপ্তর তাদের বিরুদ্ধে কিছুই করেন না বলে অভিযোগ অনেকের।

সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ওয়াসিম বারি জয় বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি লাচ্ছা-সেমাই মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এ লাচ্ছা-সেমাই খেলে হার্টের সমস্যা, হার্ট অ্যাটাক, গ্যাস্ট্রিক-আলসারসহ কিডনির সমস্যা হতে পারে।এছাড়া চর্মরোগ পিছু হটবে না বলে জানান তিনি

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর রংপুরের সহকারী পরিচালক মো.আজহারুল ইসলাম বলেন, ভোক্তাদের সমস্যা করছেন এমন কারখানা বা ব্যবসায়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে, তা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা নেয়া হবেই হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন ঘিঞ্জি শহর হলো সৈয়দপুর। এশহরে সেমাই কারখানার মালিকরা সিন্ডিকেট করে ব্যবসা করেন। ফলে অভিযানের খবর পেয়ে কারখানা থেকে তারা আগেই সরে যান। তবে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

 

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

নোংরা পরিবেশে লাচ্ছা সেমাই তৈরীর ধুম

আপডেট সময় : ০৯:৫৫:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে সৈয়দপুরে লাচ্ছা-সেমাই তৈরির ধুম পড়েছে। বাণিজ্যিক শহর হিসেবে খ্যাত হওয়ায় সৈয়দপুরের হাতিখানা ক্যাম্পের জাহাঙ্গীর, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন জুম্মা পাড়ার সেলিম সহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় প্রায় ১৫/২০ টি অস্থায়ী কারখানাগুলোতে নোংরা পরিবেশে নিম্নমানের উপকরণে তৈরি করা হচ্ছে ভেজাল লাচ্ছা-সেমাই। লাচ্ছা-সেমাইগুলো ভোক্তাদের চোখে মুখরোচক মনে হলেও এগুলো তৈরি হচ্ছে স্যাঁতস্যাঁতে মেঝে ও নোংরা পরিবেশে। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ সেমাইগুলো।

কয়েকটি কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, নোংরা পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে সেমাই। কর্মচারীদের মাথায় নেই ক্যাপ, হাতে নেই হ্যান্ডগ্লাভস। স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেতে টিনের পাত্রের উপর বসে পা দিয়ে বানানো হচ্ছে খামির। এরপর অপরিষ্কার ডান ও বাম হাত দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে সেমাইয়ের বল।

বল তৈরির পর গরুর চর্বি ও পামওয়েলের মিশ্রণে নিম্নমানের তেলে ভাজা হচ্ছে সেমাই। মেশানো হয় কৃত্রিম রঙ। ভাজা শেষে তৈরি হয়ে যায় চকচকে ঘিয়ে ভাজা লাচ্ছা-সেমাই। মাঝে মাঝে এক সপ্তাহ পুরোনো তেলের সঙ্গে নতুন তেল মিশিয়ে সেমাই ভাজার কাজ চলে দিনের পর দিন।এসব কারখানার মালিকরা মাঝে মাঝে দেশের নামী-দামী ব্র্যান্ডের সেমাইয়ের প্যাকেটে ঢুকিয়ে বিক্রি করছেন ভেজাল সেমাই। এরপর এ লাচ্ছা-সেমাইগুলো চলে যাচ্ছে নীলফামারী জেলার প্রতিটি উপজেলা সহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলাগুলোতে। হাতিখানা ক্যাম্পের জাহাঙ্গীর আলম ও টার্মিনাল সংলগ্ন জুম্মা পাড়ার সেলিম প্রায় প্রতিদিনই নোংরা পরিবেশে চানাচুর ও রমজানের একটি মাস লাখ লাখ টাকা লাচ্ছা সেমাই তৈরী করে বাজারজাত করলেও ভোক্তা অধিদপ্তর তাদের বিরুদ্ধে কিছুই করেন না বলে অভিযোগ অনেকের।

সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ওয়াসিম বারি জয় বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি লাচ্ছা-সেমাই মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এ লাচ্ছা-সেমাই খেলে হার্টের সমস্যা, হার্ট অ্যাটাক, গ্যাস্ট্রিক-আলসারসহ কিডনির সমস্যা হতে পারে।এছাড়া চর্মরোগ পিছু হটবে না বলে জানান তিনি

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর রংপুরের সহকারী পরিচালক মো.আজহারুল ইসলাম বলেন, ভোক্তাদের সমস্যা করছেন এমন কারখানা বা ব্যবসায়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে, তা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা নেয়া হবেই হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন ঘিঞ্জি শহর হলো সৈয়দপুর। এশহরে সেমাই কারখানার মালিকরা সিন্ডিকেট করে ব্যবসা করেন। ফলে অভিযানের খবর পেয়ে কারখানা থেকে তারা আগেই সরে যান। তবে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

 

Facebook Comments Box