ঢাকা ০১:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo দাম নিয়ন্ত্রণে ট্রেনে সবজি পরিবহন Logo আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি কর্নেল অলির Logo আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে সরকার সফল হবে না: তারেক Logo স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে দেশ এখনও মুক্ত নয়: রিজভী Logo হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে যেভাবে ইসরায়েল খুঁজে বের করে হত্যা করেছে Logo সোনারগাঁওয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে যুবকের মৃত্যু Logo সংবাদ প্রকাশের পর বৃদ্ধা মহিলার ঠাই হলো স্বামীর বসত ভিটায় Logo সোনারগাঁয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি হালট দখল করে বালু ভরাট Logo ‘সংস্কারের ধীর গতি’ ও কাজের গুরুত্ব নির্ধারণ নিয়ে সমালোচনা, কী বলছেন উপদেষ্টারা? Logo আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু আজ

নতুন শিক্ষাব্যবস্থায় পাঁচ ঘণ্টার পরীক্ষা!

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
  • আপডেট সময় : ০৬:১০:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪ ১৭ বার পঠিত

ঢাকা : নতুন শিক্ষাব্যবস্থায় প্রতিটি বিষয়ে মিডটার্ম ও বার্ষিক চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে পাঁচ ঘণ্টার। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে এ খসড়া তৈরি করা হয়েছে।

খসড়া মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অনুযায়ী, প্রতিটি বিষয়ে মিডটার্ম ও বার্ষিক চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে পাঁচ ঘণ্টার। পাঁচ ঘণ্টায় হবে এসএসসি ও এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষাও। পাবলিক পরীক্ষা হবে অন্য কেন্দ্রে আর চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণির এ পরীক্ষা হবে নিজ নিজ স্কুলে। সকাল ১০টা থেকে এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া বা পরীক্ষা শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। মাঝখানে এক ঘণ্টার বিরতি থাকবে।

একজন শিক্ষার্থীর পাঁচ ঘণ্টায় ৬টি সেশন হবে। চার ঘণ্টা ব্যবহারিক। প্রথমে ওরিয়েন্টেশন দেওয়া হবে। এই সেশনে একজন শিক্ষার্থীর দলগতভাবে কাজ করতে হবে, আবার প্রত্যেককে এককভাবে ব্যবহারিক কাজ করতে হবে। মূল্যায়নকারী/শিক্ষকদের কাছে তাদের পারদর্শিতা দেখাতে হবে। শেষ ১ ঘণ্টা তত্ত্বীয় পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত হবে।

তত্ত্বীয় পরীক্ষার উত্তরপত্র মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট এবং উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার মতো পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট বোর্ডে পাঠানো হবে। মিডটার্ম ও বার্ষিক চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলোর সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। এ ছাড়া ধারাবাহিক মূল্যায়ন নতুন কারিকুলামের আলোকে চলবে।

পুরোনো কারিকুলাম অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের ৩ ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা হয়। পৃথক দিনে ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী মূল্যায়ন প্রক্রিয়াও ভিন্ন হচ্ছে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছেও ‘কাগজ কলম দিয়ে’ পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি আসছে। অভিভাবকরা বলছেন, নইলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগী হচ্ছে না। বিষয়টি আমিও বিভিন্ন সভায় তুলে ধরেছি। মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রোববার (২৪ মার্চ) সভা হয়েছে। আগামীতে আরও সভা হবে। সেখানেই খসড়া চূড়ান্ত হতে পারে।

এনসিটিবির সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, আমরা ঘণ্টা বাজিয়ে পরীক্ষা শুরু আবার ঘণ্টা বাজিয়ে শেষ এমন গতানুগতিক কোনো পরীক্ষায় যাচ্ছি না। আর এটাকে ‘পরীক্ষা’ও বলতে চাইছি না। এটাকে আমরা মূল্যায়ন বলছি।

মো. মশিউজ্জামান বলেন, পরীক্ষার জন্য মার্কিং সিস্টেম থাকবে না। মূল্যায়নকারীরা ফলাফলকে ৩টি ভাগে বিভক্ত করবে (রিপোর্টিং ভালো, অর্জনের পথে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে)। চতুর্থ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিবছরের জন্য মিডটার্ম এবং ফাইনাল পরীক্ষা হবে। এসএসসি এবং এইচএসসি শিক্ষার্থীদের শুধু চূড়ান্ত পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে। আগামী জুন মাস থেকেই স্কুলগুলো এই প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবে। এর আগেই সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে যাবে। পাঁচ ঘণ্টায় প্রতিটি বিষয়ের ওপর সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। এ ছাড়া কারিকুলাম অনুযায়ী ধারাবাহিক মূল্যায়ন তো থাকবেই।

তিনি বলেন, পরীক্ষা ও মূল্যায়ন নিয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষাবিদ নিয়ে আমরা এই খসড়া তৈরি করেছি। এটি মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সামনে আমরা উত্থাপন করেছি। তারা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০টি সাধারণ বিষয় পড়তে হবে। এসএসসি পরীক্ষা হবে দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রমের ওপর। আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রতি বছর দুটি পাবলিক পরীক্ষা হবে। গত বছর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে। চলতি বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে এবং আগামী বছর চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে চালু হবে এ নিয়ম। এর আলোকে ২০২৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা হবে।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

নতুন শিক্ষাব্যবস্থায় পাঁচ ঘণ্টার পরীক্ষা!

আপডেট সময় : ০৬:১০:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪

ঢাকা : নতুন শিক্ষাব্যবস্থায় প্রতিটি বিষয়ে মিডটার্ম ও বার্ষিক চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে পাঁচ ঘণ্টার। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে এ খসড়া তৈরি করা হয়েছে।

খসড়া মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অনুযায়ী, প্রতিটি বিষয়ে মিডটার্ম ও বার্ষিক চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে পাঁচ ঘণ্টার। পাঁচ ঘণ্টায় হবে এসএসসি ও এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষাও। পাবলিক পরীক্ষা হবে অন্য কেন্দ্রে আর চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণির এ পরীক্ষা হবে নিজ নিজ স্কুলে। সকাল ১০টা থেকে এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া বা পরীক্ষা শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। মাঝখানে এক ঘণ্টার বিরতি থাকবে।

একজন শিক্ষার্থীর পাঁচ ঘণ্টায় ৬টি সেশন হবে। চার ঘণ্টা ব্যবহারিক। প্রথমে ওরিয়েন্টেশন দেওয়া হবে। এই সেশনে একজন শিক্ষার্থীর দলগতভাবে কাজ করতে হবে, আবার প্রত্যেককে এককভাবে ব্যবহারিক কাজ করতে হবে। মূল্যায়নকারী/শিক্ষকদের কাছে তাদের পারদর্শিতা দেখাতে হবে। শেষ ১ ঘণ্টা তত্ত্বীয় পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত হবে।

তত্ত্বীয় পরীক্ষার উত্তরপত্র মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট এবং উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার মতো পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট বোর্ডে পাঠানো হবে। মিডটার্ম ও বার্ষিক চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলোর সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। এ ছাড়া ধারাবাহিক মূল্যায়ন নতুন কারিকুলামের আলোকে চলবে।

পুরোনো কারিকুলাম অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের ৩ ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা হয়। পৃথক দিনে ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী মূল্যায়ন প্রক্রিয়াও ভিন্ন হচ্ছে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছেও ‘কাগজ কলম দিয়ে’ পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি আসছে। অভিভাবকরা বলছেন, নইলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগী হচ্ছে না। বিষয়টি আমিও বিভিন্ন সভায় তুলে ধরেছি। মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রোববার (২৪ মার্চ) সভা হয়েছে। আগামীতে আরও সভা হবে। সেখানেই খসড়া চূড়ান্ত হতে পারে।

এনসিটিবির সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, আমরা ঘণ্টা বাজিয়ে পরীক্ষা শুরু আবার ঘণ্টা বাজিয়ে শেষ এমন গতানুগতিক কোনো পরীক্ষায় যাচ্ছি না। আর এটাকে ‘পরীক্ষা’ও বলতে চাইছি না। এটাকে আমরা মূল্যায়ন বলছি।

মো. মশিউজ্জামান বলেন, পরীক্ষার জন্য মার্কিং সিস্টেম থাকবে না। মূল্যায়নকারীরা ফলাফলকে ৩টি ভাগে বিভক্ত করবে (রিপোর্টিং ভালো, অর্জনের পথে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে)। চতুর্থ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিবছরের জন্য মিডটার্ম এবং ফাইনাল পরীক্ষা হবে। এসএসসি এবং এইচএসসি শিক্ষার্থীদের শুধু চূড়ান্ত পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে। আগামী জুন মাস থেকেই স্কুলগুলো এই প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবে। এর আগেই সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে যাবে। পাঁচ ঘণ্টায় প্রতিটি বিষয়ের ওপর সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। এ ছাড়া কারিকুলাম অনুযায়ী ধারাবাহিক মূল্যায়ন তো থাকবেই।

তিনি বলেন, পরীক্ষা ও মূল্যায়ন নিয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষাবিদ নিয়ে আমরা এই খসড়া তৈরি করেছি। এটি মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সামনে আমরা উত্থাপন করেছি। তারা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০টি সাধারণ বিষয় পড়তে হবে। এসএসসি পরীক্ষা হবে দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রমের ওপর। আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রতি বছর দুটি পাবলিক পরীক্ষা হবে। গত বছর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে। চলতি বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে এবং আগামী বছর চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে চালু হবে এ নিয়ম। এর আলোকে ২০২৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা হবে।

Facebook Comments Box