ঢাকা ০১:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

নকল প্রসাধনীতে সয়লাব সৈয়দপুর 

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৭:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩ ৬৭ বার পঠিত
নকল প্রসাধনীতে সয়লাব সৈয়দপুরসহ নীলফামারীর সদর ও আশপাশ এলাকা। নকল এসব প্রসাধনী ব্যবহারে নানা ধরনের চর্মরোগ সহ স্কিন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও দৃষ্টি নেই সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের।
জানা গেছে, সৈয়দপুর শহরের চুড়িপট্টি এলাকার সাহিদ,জাবেদ,সনু,আমির,চান,সাদ্দাম ও ফয়সাল সহ বেশ ক’জন দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার চকবাজার সহ একাধিক মার্কেট থেকে নকল প্রসাধনী ক্রয় করে নিয়ে আসছেন সৈয়দপুরে।এরপর তারা তাদের ক্রয়কৃত প্রসাধনী গুদামজাত করে চুড়িপট্টি এলাকার দোকানে সামান্য কিছু রেখে বিক্রি করছেন এবং বাকিগুলো দালালের মাধ্যমে চড়া দামে বিক্রি করছেন নীলফামারী জেলার বিভিন্ন জেলা উপজেলায়।
একটি সুত্র জানায়,উল্লেখিত ব্যবসায়িরা নীলফামারী জেলা ছাড়াও দিনাজপুর, পঞ্চগড়, পার্বতীপুর ও লালমনিরহাটে ও মোকাম গড়ে তুলেছেন।তাদের আমদানিকৃত প্রসাধনীর গায়ে বিএসটিআইয়ের লোগো, ব্যাচ নং, এমআরপি ও মেয়াদ এমন ভাবে লিখা রয়েছে যা দেখে বুঝার উপায় নেই কোনটা আসল নাকি নকল।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উল্লেখিত ব্যবসায়িদের প্রায় সকলের দোকানেই অবাধে বিক্রি হচ্ছে নকল প্রসাধনী।বিক্রি করা প্রসাধনীর গায়ে বহুজাতিক কোম্পানির হুবহু নকল মোড়ক রয়েছে বলে অনেকের অভিযোগ। কারো গায়ে লেখা রয়েছে মেড ইন জার্মানির জায়গায় মেড ইন জার্মান সহ বিভিন্ন দেশের ষ্টিকার।
ইউনিলিভারের ফেয়ার এন্ড লাভলীর বদলে ফেজার এন্ড লাভলী  ও ফুয়ার এন্ড লাভলী নামে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া রং ফর্সা করার ক্রিম, শেভিং ফম,ফেসওয়াস, ন্যাচারাল ব্লাক কালার,হেড এন্ড সোল্ডার মাক্স লোসন, মেরিন লোসন, নেভিয়া লোসন, সাবান সহ অর্ধশতাধিক নকল প্রসাধনী অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ অনেকের।এছাড়া সুগন্ধির মধ্যে ফগ,রজনীগন্ধা, কোবরা,হ্যাবক সহ নানা ধরনের পারফিউম বিক্রি করা হচ্ছে অবাধে।
শিশুদের অলিভ অয়েল, আফটার সেভ লোসন, জনসন বেবি লোসন, জনসন ক্রিম সহ বিভিন্ন ধরনের নামিদামি মোরকের পন্য সামগ্রি বিক্রি করা হচ্ছে।
অনেকের মতে,উল্লেখিত নকল প্রসাধনী ব্যবসায়িরা শহরের বেশ কটি সেলুন ও হেয়ার ড্রেসিংয়ের দোকান গুলোতে বেশি সরবরাহ করছেন।
শহরের ক’জন সাংবাদিক পরিচয় দানকারি ও পুলিশ পরিচয় দানকারি ব্যাক্তিদের ম্যানেজ করলেও প্রকৃত আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে নকল প্রসাধনীর ব্যবসায়িরা জমজমাট ভাবেই তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চুড়িপট্টি এলাকার ক’জন ব্যবসায়ি বলেন,সৈয়দপুরের পুলিশ প্রসাশন সব জানেন কিন্তু অভিযান চালান না। মাঝে মধ্যে ভোক্তা অধিদপ্তর ২/৩ টি দোকানে অভিযান চালিয়েই নিশ্চুপ হয়ে যায়। তারা মোটা অংকের জরিমানা বা কঠোর ব্যবস্হা না নেয়ার ফলেই উল্লেখিত ব্যবসায়িরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। এর ফলে এদের অনেকেই নকল প্রসাধনী বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। তারা বছরের পর বছর ট্যাক্স ভ্যাট কিছুই দেন না বলে ও জানা গেছে। এসব ব্যবসায়িদের দোকান ও গোডাউনে তল্লাশী চালালে শত কোটি টাকারও বেশি মুল্যের নকল প্রসাধনী মিলবে বলে অনেকের ধারনা।
ঢাকা থেকে আসা সৈয়দপুর শহরের প্রাইম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা সেবা দিতে আসা চর্মও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ফারহানা সুলতানা বলেন, নকল প্রসাধনী ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট করে। চামড়ায় একজিমা সহ স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে।
তবে নকল প্রসাধনী ব্যবসায়িরা বলছেন, আমরা এসব ঢাকার চকবাজার থেকে ক্রয় করে আনছি।ক্রয়কৃত প্রসাধনী গুলো যদি নকলই হয় তা দেখার বিষয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার। কোন সাংবাদিকের নয়। এসব নিয়ে পেপার পত্রিকায় সংবাদ লিখলেও কোন লাভ হবার নয় বলে মন্তব্য তাদের।
Facebook Comments Box
ট্যাগস :

নকল প্রসাধনীতে সয়লাব সৈয়দপুর 

আপডেট সময় : ০৪:৪৭:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩
নকল প্রসাধনীতে সয়লাব সৈয়দপুরসহ নীলফামারীর সদর ও আশপাশ এলাকা। নকল এসব প্রসাধনী ব্যবহারে নানা ধরনের চর্মরোগ সহ স্কিন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও দৃষ্টি নেই সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের।
জানা গেছে, সৈয়দপুর শহরের চুড়িপট্টি এলাকার সাহিদ,জাবেদ,সনু,আমির,চান,সাদ্দাম ও ফয়সাল সহ বেশ ক’জন দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার চকবাজার সহ একাধিক মার্কেট থেকে নকল প্রসাধনী ক্রয় করে নিয়ে আসছেন সৈয়দপুরে।এরপর তারা তাদের ক্রয়কৃত প্রসাধনী গুদামজাত করে চুড়িপট্টি এলাকার দোকানে সামান্য কিছু রেখে বিক্রি করছেন এবং বাকিগুলো দালালের মাধ্যমে চড়া দামে বিক্রি করছেন নীলফামারী জেলার বিভিন্ন জেলা উপজেলায়।
একটি সুত্র জানায়,উল্লেখিত ব্যবসায়িরা নীলফামারী জেলা ছাড়াও দিনাজপুর, পঞ্চগড়, পার্বতীপুর ও লালমনিরহাটে ও মোকাম গড়ে তুলেছেন।তাদের আমদানিকৃত প্রসাধনীর গায়ে বিএসটিআইয়ের লোগো, ব্যাচ নং, এমআরপি ও মেয়াদ এমন ভাবে লিখা রয়েছে যা দেখে বুঝার উপায় নেই কোনটা আসল নাকি নকল।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উল্লেখিত ব্যবসায়িদের প্রায় সকলের দোকানেই অবাধে বিক্রি হচ্ছে নকল প্রসাধনী।বিক্রি করা প্রসাধনীর গায়ে বহুজাতিক কোম্পানির হুবহু নকল মোড়ক রয়েছে বলে অনেকের অভিযোগ। কারো গায়ে লেখা রয়েছে মেড ইন জার্মানির জায়গায় মেড ইন জার্মান সহ বিভিন্ন দেশের ষ্টিকার।
ইউনিলিভারের ফেয়ার এন্ড লাভলীর বদলে ফেজার এন্ড লাভলী  ও ফুয়ার এন্ড লাভলী নামে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া রং ফর্সা করার ক্রিম, শেভিং ফম,ফেসওয়াস, ন্যাচারাল ব্লাক কালার,হেড এন্ড সোল্ডার মাক্স লোসন, মেরিন লোসন, নেভিয়া লোসন, সাবান সহ অর্ধশতাধিক নকল প্রসাধনী অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ অনেকের।এছাড়া সুগন্ধির মধ্যে ফগ,রজনীগন্ধা, কোবরা,হ্যাবক সহ নানা ধরনের পারফিউম বিক্রি করা হচ্ছে অবাধে।
শিশুদের অলিভ অয়েল, আফটার সেভ লোসন, জনসন বেবি লোসন, জনসন ক্রিম সহ বিভিন্ন ধরনের নামিদামি মোরকের পন্য সামগ্রি বিক্রি করা হচ্ছে।
অনেকের মতে,উল্লেখিত নকল প্রসাধনী ব্যবসায়িরা শহরের বেশ কটি সেলুন ও হেয়ার ড্রেসিংয়ের দোকান গুলোতে বেশি সরবরাহ করছেন।
শহরের ক’জন সাংবাদিক পরিচয় দানকারি ও পুলিশ পরিচয় দানকারি ব্যাক্তিদের ম্যানেজ করলেও প্রকৃত আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে নকল প্রসাধনীর ব্যবসায়িরা জমজমাট ভাবেই তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চুড়িপট্টি এলাকার ক’জন ব্যবসায়ি বলেন,সৈয়দপুরের পুলিশ প্রসাশন সব জানেন কিন্তু অভিযান চালান না। মাঝে মধ্যে ভোক্তা অধিদপ্তর ২/৩ টি দোকানে অভিযান চালিয়েই নিশ্চুপ হয়ে যায়। তারা মোটা অংকের জরিমানা বা কঠোর ব্যবস্হা না নেয়ার ফলেই উল্লেখিত ব্যবসায়িরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। এর ফলে এদের অনেকেই নকল প্রসাধনী বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। তারা বছরের পর বছর ট্যাক্স ভ্যাট কিছুই দেন না বলে ও জানা গেছে। এসব ব্যবসায়িদের দোকান ও গোডাউনে তল্লাশী চালালে শত কোটি টাকারও বেশি মুল্যের নকল প্রসাধনী মিলবে বলে অনেকের ধারনা।
ঢাকা থেকে আসা সৈয়দপুর শহরের প্রাইম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা সেবা দিতে আসা চর্মও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ফারহানা সুলতানা বলেন, নকল প্রসাধনী ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট করে। চামড়ায় একজিমা সহ স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে।
তবে নকল প্রসাধনী ব্যবসায়িরা বলছেন, আমরা এসব ঢাকার চকবাজার থেকে ক্রয় করে আনছি।ক্রয়কৃত প্রসাধনী গুলো যদি নকলই হয় তা দেখার বিষয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার। কোন সাংবাদিকের নয়। এসব নিয়ে পেপার পত্রিকায় সংবাদ লিখলেও কোন লাভ হবার নয় বলে মন্তব্য তাদের।
Facebook Comments Box