ঢাকা ০৫:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণ কোরিয়ায় বিরোধীদের ভূমিধ্বস বিজয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:০৮:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০২৪ ৩৮ বার পঠিত

দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিজয়ী হয়েছে উদারপন্থী বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি-ডিপিকে। ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টি-পিপিপিকে বিপুল ব্যবধানে হারিয়েছে তারা।

এবারের নির্বাচনে ডিপিকে’র সাথে জোট বেধেছিল ছোট ছোট কয়েকটি বিরোধী দল।
তারা যৌথভাবে জাতীয় পরিষদের তিনশোটি আসনের মধ্যে ১৯২টিতে জিতেছে।

এবারের সাধারণ নির্বাচনকে দক্ষিণ কোরিয়ার পেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের জন্য গণভোট হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও, আরো তিন বছর মেয়াদ বাকি আছে তার।

ফলাফলের জেরে ইতোমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী হান দুক-সু। দলের অন্যতম নেতা হান ডং-হুন সহ আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও পদ ছেড়েছেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল এবং ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হি

ইউন সুক ইওল এবং তার পিপল পাওয়ার পার্টি-পিপিপি’র জন্য বিপর্যয় নিয়ে এসেছে এই পরাজয়।

আইনসভায় বিরোধী দল ডিপিকে’র আধিপত্যের কারণে আগে থেকেই কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নে হিমশিম খেতে হতো পিপিপিকে।

এখন বুধবারের নির্বাচনে বিজয়ের ফলে ডিপিকে সংসদে দ্রুতগতিতে যেকোনো আইন প্রণয়ন করতে সক্ষম হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচনে ছোট দলগুলোর ভূমিকাও লক্ষণীয়। ডিপিকে এবং পিপিপি দুই দলের কাছেই তাদের কদর রয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচনি ব্যবস্থায় সংসদের তিনশো আসনের মধ্যে ৪৭টি আসন প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে দলগুলোর মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হয়।

ছোট দলগুলোও এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিছু আসন পেয়ে থাকে। এই আসনের জন্যই বড় দলগুলো তাদের সাথে রাখতে চায়।

ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হি, যাকে “মানুষ প্রেসিডেন্টের চেয়েও বেশি অপছন্দ করেন

পেঁয়াজের দাম নিয়ে মন্তব্যই কাল হলো?

ভোটারদের উপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব নিয়ে তার তেমন মাথাব্যথা নেই, এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার মুখে ছিলেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল।
ফেব্রুয়ারি মাসে,কোরিয়ার অভিজাত ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোতে একেকটি আপেলের দাম উঠেছিল সাত ডলার পর্যন্ত।

এতটা না হলেও সাধারণ মানুষ যেসব জায়গায় কেনাকাটা করেন সেখানেও ফলের দাম তাদের ক্রয়ক্ষমতাকে ছাপিয়ে যায়। নিত্যপণ্যের দামের উর্ধ্বগতিতে হাঁসফাঁস করতে থাকে মানুষগুলো।
প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল তখন একটি খাদ্যপণ্যের বাজার পরিদর্শনে যান।

উদ্বেগ দূর করতে এমন পরিদর্শন কতটা কাজে আসবে সেটা নিয়েও প্রশ্ন ছিলো সাধারণের মাঝে। স্প্রিং ওনিয়ন(বসন্তকালীন পেঁয়াজ)-এর দাম এতটা ‘রিজনেবল’(যৌক্তিক) দেখে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন।

তিনি বলেছিলেন, এক প্যাকেট বা এক আঁটি সবুজ পেঁয়াজের দাম ৮৭৫ ওন (দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রা) হওয়াটা “যুক্তিসঙ্গত”। ৮৭৫ দক্ষিণ কোরিয়ান ওন বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭১ টাকার মতো।

পণ্যটি ছাড় দিয়ে এই দামে বিক্রি করা হচ্ছিল। ভর্তুকি’র কারণে ওই ছাড়টুকু দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। নইলে, সাধারণত তিন থেকে চার হাজার ওনের মতো খরচ করতে হতো।
তার মন্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা।

সবুজ পেঁয়াজ নিয়ে বিক্ষোভে নামেন কৃষকরা। ডিপিকে’র নির্বাচনি সমাবেশেও পেঁয়াজকে ‘প্রপস্’ (উপকরণ) হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

তখন এক বিরোধী দলীয় নেতা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, “স্প্রিং ওনিয়নই প্রেসিডেন্টকে ধরাশায়ী করবে।”

তবে, দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদীয় নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ইউনের দল হেরে যাওয়ার পেছনে দ্রব্যমূল্য একটি মাত্র কারণ। তালিকাটা আরো দীর্ঘ।

মি. ইউন নাগরিকদের কাছে বরাবরই অজনপ্রিয়। দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে অল্প, ০.৭ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে প্রতি জনসমর্থন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।
গত মাসে, একটি জরিপে দেখা যায়, অর্ধেক অংশগ্রহণকারীই তার প্রতি অসন্তুষ্ট।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. লি সানসিন বিবিসিকে বলেন, “অনেকগুলো ঘটনায় তার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে গেছে।”
প্রথমটি কূটনৈতিক শিষ্টাচারের ঘাটতি, যা তাকে আন্তর্জাতিক শিরোনামে পরিণত করে।
মি. ইউন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে দেখা করার পর মার্কিন আইনপ্রণেতাদের নিয়ে বেখেয়ালে করা তার কয়েকটি কটু মন্তব্য রীতিমত মাইকে শোনা যায়।
এটি বহির্বিশ্বে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে বলে মনে করেন কোরিয়ানরা।
তারপরে তার স্ত্রী,ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হি, যাকে অধ্যাপক লির মতে, “মানুষ প্রেসিডেন্টের চেয়েও বেশি অপছন্দ করেন।”
তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণামূলক প্রবন্ধে চৌর্যবৃত্তি করার এবং পুঁজি বাজারে কারচুপির অভিযোগ আছে।
গত বছর, অভিযোগ ওঠে তিনি একটি দামি একটি হাতব্যাগ ঘুষ নিয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে ফার্স্ট লেডি হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করলেও, মিজ কিমকে পরে আর তার স্বামীর সাথে জনসমক্ষে দেখা যায়নি।

ফলাফলের পর বৃহস্পতিবার ডিপিকে নেতা লি জায়ে-মিউং বলেছেন, “এই বিজয় শুধু ডেমোক্রেটিক পার্টির বিজয় নয়, বরং জনগণের জন্যই এক মহান অর্জন।”তিনি বলেন, “চলমান অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় দুই পক্ষের রাজনীতিবিদদেরই সর্বশক্তি প্রয়োগ করে নামতে হবে।”

ডিপিকে নেতা লি জায়ে-মিউং বলেন, ‘এ বিজয় জনগণের

“জীবিকার সংকট সমাধানের সেই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবে ডেমোক্রেটিক পার্টি,” যোগ করেন তিনি।

লি জায়ে-মিউং ২০২২ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইউনের কাছে অল্প ব্যবধানে হেরে গিয়েছিলেন।
আজকের ফলাফল হয়তো তাকে আরেকবার প্রেসিডেন্ট পদের দৌড়ে নামতে সাহস যোগাবে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া জনসংখ্যাসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে সংকটে দক্ষিণ কোরিয়া। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে চিকিৎসকদের চলমান ধর্মঘট। সব মিলিয়ে চাপের মধ্যে আছেন ইউন।

একই সময়ে ফার্স্ট লেডির পাশাপাশি দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধেও আলাদা আলাদা দুর্নীতির অভিযোগ আসতে থাকে। তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে দাবি করেন বিরোধীরা।

রাজনৈতিক বিতর্কও বাড়ছিলো পিপিপির মধ্যে। এর ফলে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেও পর্যুদস্ত হয়ে পড়ছিল দলটি। তার ওপর দুর্নীতির অভিযোগ নাস্তানাবুদ করে ফেলে তাদের।
বিবিসি

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

দক্ষিণ কোরিয়ায় বিরোধীদের ভূমিধ্বস বিজয়

আপডেট সময় : ০৬:০৮:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০২৪

দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিজয়ী হয়েছে উদারপন্থী বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি-ডিপিকে। ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টি-পিপিপিকে বিপুল ব্যবধানে হারিয়েছে তারা।

এবারের নির্বাচনে ডিপিকে’র সাথে জোট বেধেছিল ছোট ছোট কয়েকটি বিরোধী দল।
তারা যৌথভাবে জাতীয় পরিষদের তিনশোটি আসনের মধ্যে ১৯২টিতে জিতেছে।

এবারের সাধারণ নির্বাচনকে দক্ষিণ কোরিয়ার পেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের জন্য গণভোট হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও, আরো তিন বছর মেয়াদ বাকি আছে তার।

ফলাফলের জেরে ইতোমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী হান দুক-সু। দলের অন্যতম নেতা হান ডং-হুন সহ আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও পদ ছেড়েছেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল এবং ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হি

ইউন সুক ইওল এবং তার পিপল পাওয়ার পার্টি-পিপিপি’র জন্য বিপর্যয় নিয়ে এসেছে এই পরাজয়।

আইনসভায় বিরোধী দল ডিপিকে’র আধিপত্যের কারণে আগে থেকেই কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নে হিমশিম খেতে হতো পিপিপিকে।

এখন বুধবারের নির্বাচনে বিজয়ের ফলে ডিপিকে সংসদে দ্রুতগতিতে যেকোনো আইন প্রণয়ন করতে সক্ষম হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচনে ছোট দলগুলোর ভূমিকাও লক্ষণীয়। ডিপিকে এবং পিপিপি দুই দলের কাছেই তাদের কদর রয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচনি ব্যবস্থায় সংসদের তিনশো আসনের মধ্যে ৪৭টি আসন প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে দলগুলোর মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হয়।

ছোট দলগুলোও এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিছু আসন পেয়ে থাকে। এই আসনের জন্যই বড় দলগুলো তাদের সাথে রাখতে চায়।

ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হি, যাকে “মানুষ প্রেসিডেন্টের চেয়েও বেশি অপছন্দ করেন

পেঁয়াজের দাম নিয়ে মন্তব্যই কাল হলো?

ভোটারদের উপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব নিয়ে তার তেমন মাথাব্যথা নেই, এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার মুখে ছিলেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল।
ফেব্রুয়ারি মাসে,কোরিয়ার অভিজাত ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোতে একেকটি আপেলের দাম উঠেছিল সাত ডলার পর্যন্ত।

এতটা না হলেও সাধারণ মানুষ যেসব জায়গায় কেনাকাটা করেন সেখানেও ফলের দাম তাদের ক্রয়ক্ষমতাকে ছাপিয়ে যায়। নিত্যপণ্যের দামের উর্ধ্বগতিতে হাঁসফাঁস করতে থাকে মানুষগুলো।
প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল তখন একটি খাদ্যপণ্যের বাজার পরিদর্শনে যান।

উদ্বেগ দূর করতে এমন পরিদর্শন কতটা কাজে আসবে সেটা নিয়েও প্রশ্ন ছিলো সাধারণের মাঝে। স্প্রিং ওনিয়ন(বসন্তকালীন পেঁয়াজ)-এর দাম এতটা ‘রিজনেবল’(যৌক্তিক) দেখে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন।

তিনি বলেছিলেন, এক প্যাকেট বা এক আঁটি সবুজ পেঁয়াজের দাম ৮৭৫ ওন (দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রা) হওয়াটা “যুক্তিসঙ্গত”। ৮৭৫ দক্ষিণ কোরিয়ান ওন বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭১ টাকার মতো।

পণ্যটি ছাড় দিয়ে এই দামে বিক্রি করা হচ্ছিল। ভর্তুকি’র কারণে ওই ছাড়টুকু দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। নইলে, সাধারণত তিন থেকে চার হাজার ওনের মতো খরচ করতে হতো।
তার মন্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা।

সবুজ পেঁয়াজ নিয়ে বিক্ষোভে নামেন কৃষকরা। ডিপিকে’র নির্বাচনি সমাবেশেও পেঁয়াজকে ‘প্রপস্’ (উপকরণ) হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

তখন এক বিরোধী দলীয় নেতা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, “স্প্রিং ওনিয়নই প্রেসিডেন্টকে ধরাশায়ী করবে।”

তবে, দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদীয় নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ইউনের দল হেরে যাওয়ার পেছনে দ্রব্যমূল্য একটি মাত্র কারণ। তালিকাটা আরো দীর্ঘ।

মি. ইউন নাগরিকদের কাছে বরাবরই অজনপ্রিয়। দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে অল্প, ০.৭ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে প্রতি জনসমর্থন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।
গত মাসে, একটি জরিপে দেখা যায়, অর্ধেক অংশগ্রহণকারীই তার প্রতি অসন্তুষ্ট।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. লি সানসিন বিবিসিকে বলেন, “অনেকগুলো ঘটনায় তার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে গেছে।”
প্রথমটি কূটনৈতিক শিষ্টাচারের ঘাটতি, যা তাকে আন্তর্জাতিক শিরোনামে পরিণত করে।
মি. ইউন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে দেখা করার পর মার্কিন আইনপ্রণেতাদের নিয়ে বেখেয়ালে করা তার কয়েকটি কটু মন্তব্য রীতিমত মাইকে শোনা যায়।
এটি বহির্বিশ্বে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে বলে মনে করেন কোরিয়ানরা।
তারপরে তার স্ত্রী,ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হি, যাকে অধ্যাপক লির মতে, “মানুষ প্রেসিডেন্টের চেয়েও বেশি অপছন্দ করেন।”
তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণামূলক প্রবন্ধে চৌর্যবৃত্তি করার এবং পুঁজি বাজারে কারচুপির অভিযোগ আছে।
গত বছর, অভিযোগ ওঠে তিনি একটি দামি একটি হাতব্যাগ ঘুষ নিয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে ফার্স্ট লেডি হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করলেও, মিজ কিমকে পরে আর তার স্বামীর সাথে জনসমক্ষে দেখা যায়নি।

ফলাফলের পর বৃহস্পতিবার ডিপিকে নেতা লি জায়ে-মিউং বলেছেন, “এই বিজয় শুধু ডেমোক্রেটিক পার্টির বিজয় নয়, বরং জনগণের জন্যই এক মহান অর্জন।”তিনি বলেন, “চলমান অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় দুই পক্ষের রাজনীতিবিদদেরই সর্বশক্তি প্রয়োগ করে নামতে হবে।”

ডিপিকে নেতা লি জায়ে-মিউং বলেন, ‘এ বিজয় জনগণের

“জীবিকার সংকট সমাধানের সেই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবে ডেমোক্রেটিক পার্টি,” যোগ করেন তিনি।

লি জায়ে-মিউং ২০২২ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইউনের কাছে অল্প ব্যবধানে হেরে গিয়েছিলেন।
আজকের ফলাফল হয়তো তাকে আরেকবার প্রেসিডেন্ট পদের দৌড়ে নামতে সাহস যোগাবে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া জনসংখ্যাসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে সংকটে দক্ষিণ কোরিয়া। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে চিকিৎসকদের চলমান ধর্মঘট। সব মিলিয়ে চাপের মধ্যে আছেন ইউন।

একই সময়ে ফার্স্ট লেডির পাশাপাশি দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধেও আলাদা আলাদা দুর্নীতির অভিযোগ আসতে থাকে। তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে দাবি করেন বিরোধীরা।

রাজনৈতিক বিতর্কও বাড়ছিলো পিপিপির মধ্যে। এর ফলে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেও পর্যুদস্ত হয়ে পড়ছিল দলটি। তার ওপর দুর্নীতির অভিযোগ নাস্তানাবুদ করে ফেলে তাদের।
বিবিসি

Facebook Comments Box