ঢাকা ০৪:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্রদল নেতা রাসেলকে অবিলম্বে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি রিজভীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৫:৪১:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪ ১৮ বার পঠিত

অবিলম্বে ছাত্রদল নেতা আতিকুর রহমান রাসেলকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘গত ১ জুলাই সোমবার তাকে গোয়েন্দা পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে। ৮ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি বা আদালতে হস্তান্তর করা হয়নি। ফলে পরিবার, তার বাবা, তার মা, তার আত্মীয়স্বজন ও দলের নেতাকর্মীর প্রত্যেকে গভীর উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। বাবা-মায়ের যে আকুতি তা ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। ’

‘তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে তুলে নিয়ে গেছে তা অনেকে দেখেছেন উল্লেখ করে রাসেল গোয়েন্দা হেফাজতে রয়েছেন’ বলে দাবি করেন রিজভী।

এ ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও মর্মস্পর্শী উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘এই ধরনের তরুণদেরকে নিরুদ্দেশ করে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, তারা মানুষের পক্ষে কথা বলে, গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলে, গণতন্ত্রের পক্ষে স্লোগান দেয়। তাদের স্লোগান স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিষ্ঠুর দমন-নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আতিকুর রহমান রাসেলদের মতো তরুণদের নিরুদ্দেশ করে দেওয়া হচ্ছে, নিখোঁজ করে দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশ এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা অতিক্রম করছে। মানুষের অধিকারগুলো দখলদার সরকার একের পর এক হরণ করেছে। মানুষ অধিকার বঞ্চিত, গণতন্ত্রে মানুষের যে অধিকারগুলো স্বীকৃত সে অধিকারগুলোকে মানুষ যাতে প্রয়োগ করতে না পারে তার জন্য রাষ্ট্রশক্তিকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে শেখ হাসিনা ইচ্ছা পূরণ করতে পারেন। এই বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে কেউ যেন কথা না বলতে পারে। তার বিরুদ্ধে কেউ যেন মিছিল না করতে পারে। এদেশে কেউ যেন সমাবেশ না করতে পারে। বাংলাদেশের সংবিধান কাটাছেঁড়া করার পরেও গণতন্ত্রের যে অধিকারগুলো আছে সেই অধিকারগুলো সরকারি যন্ত্র দিয়ে নানাভাবে দমন করছে। এই দমন পৈশাচিক, এই দমন নিষ্ঠুর, এই দমন রক্তাক্ত।’

রিজভী বলেন, ‘যতদিন যাচ্ছে তত একের পর এক সরকারের কুকীর্তি বেরিয়ে আসছে। শেখ হাসিনা যাদেরকে দিয়ে বিরোধী দমন করেছেন তারা এদেশের জনগণের সম্পদ-অর্থ লুট করে বিদেশে টাকা পাচার করেছে এবং দেশের মধ্যেও অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছে। নবাবদেরও এত সম্পদ ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘লুটপাট আর দুর্নীতির কারণে দেশের আর্থিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, রাজকোষ শূন্য হয়ে গেছে। দেশটা তিন মাস যে চলবে সেই প্রয়োজনীয় অর্থ এখন ব্যাংকে নেই। যারা ঋণখেলাপি হয়েছেন এক লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকার, তাদেরকে নিয়ম করে সুদ মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। যারা লুটপাট করেছে, টাকা পাচার করেছে তারা সবাই ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ লোক।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির প্রমুখ।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

ছাত্রদল নেতা রাসেলকে অবিলম্বে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি রিজভীর

আপডেট সময় : ০৫:৪১:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪

অবিলম্বে ছাত্রদল নেতা আতিকুর রহমান রাসেলকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘গত ১ জুলাই সোমবার তাকে গোয়েন্দা পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে। ৮ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি বা আদালতে হস্তান্তর করা হয়নি। ফলে পরিবার, তার বাবা, তার মা, তার আত্মীয়স্বজন ও দলের নেতাকর্মীর প্রত্যেকে গভীর উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। বাবা-মায়ের যে আকুতি তা ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। ’

‘তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে তুলে নিয়ে গেছে তা অনেকে দেখেছেন উল্লেখ করে রাসেল গোয়েন্দা হেফাজতে রয়েছেন’ বলে দাবি করেন রিজভী।

এ ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও মর্মস্পর্শী উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘এই ধরনের তরুণদেরকে নিরুদ্দেশ করে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, তারা মানুষের পক্ষে কথা বলে, গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলে, গণতন্ত্রের পক্ষে স্লোগান দেয়। তাদের স্লোগান স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিষ্ঠুর দমন-নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আতিকুর রহমান রাসেলদের মতো তরুণদের নিরুদ্দেশ করে দেওয়া হচ্ছে, নিখোঁজ করে দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশ এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা অতিক্রম করছে। মানুষের অধিকারগুলো দখলদার সরকার একের পর এক হরণ করেছে। মানুষ অধিকার বঞ্চিত, গণতন্ত্রে মানুষের যে অধিকারগুলো স্বীকৃত সে অধিকারগুলোকে মানুষ যাতে প্রয়োগ করতে না পারে তার জন্য রাষ্ট্রশক্তিকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে শেখ হাসিনা ইচ্ছা পূরণ করতে পারেন। এই বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে কেউ যেন কথা না বলতে পারে। তার বিরুদ্ধে কেউ যেন মিছিল না করতে পারে। এদেশে কেউ যেন সমাবেশ না করতে পারে। বাংলাদেশের সংবিধান কাটাছেঁড়া করার পরেও গণতন্ত্রের যে অধিকারগুলো আছে সেই অধিকারগুলো সরকারি যন্ত্র দিয়ে নানাভাবে দমন করছে। এই দমন পৈশাচিক, এই দমন নিষ্ঠুর, এই দমন রক্তাক্ত।’

রিজভী বলেন, ‘যতদিন যাচ্ছে তত একের পর এক সরকারের কুকীর্তি বেরিয়ে আসছে। শেখ হাসিনা যাদেরকে দিয়ে বিরোধী দমন করেছেন তারা এদেশের জনগণের সম্পদ-অর্থ লুট করে বিদেশে টাকা পাচার করেছে এবং দেশের মধ্যেও অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছে। নবাবদেরও এত সম্পদ ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘লুটপাট আর দুর্নীতির কারণে দেশের আর্থিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, রাজকোষ শূন্য হয়ে গেছে। দেশটা তিন মাস যে চলবে সেই প্রয়োজনীয় অর্থ এখন ব্যাংকে নেই। যারা ঋণখেলাপি হয়েছেন এক লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকার, তাদেরকে নিয়ম করে সুদ মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। যারা লুটপাট করেছে, টাকা পাচার করেছে তারা সবাই ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ লোক।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির প্রমুখ।

Facebook Comments Box