ঢাকা ০৪:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চরমপন্থীদেন সাথে মিটিং করে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে: শাহীন

পাবনা প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৮:২৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪ ২৮ বার পঠিত

চরমপন্থীদের সঙ্গে মিটিং করে নিল নকশা তৈরি আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নকশাল সর্বহারা দিয়ে আমাকে হত্যা করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায় বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব। আমাকে হত্যা করা হলেও আপনারা ভয় পাবেন না। রাজপথে থেকে ওই সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে পতন নিশ্চিত করবে বলে মন্তব্য করেছেন সুজানগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীন।

মঙ্গলবার (০৯ জুলাই) বিকেলে সুজানগর পৌরসভার সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এমন কথা বলেন তিনি। এর আগে দুপুরের দিকে ঢাকা থেকে সড়ক পথে আরিচা- কাজিরহাট ফেরিঘাট হয়ে বিশাল বহর নিয়ে নিজ উপজেলা সুজানগরে আসেন। এরপর স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে ফুল বরণ করেন।

শাহিনুজ্জামান শাহীন বলেন, কাউকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখা যায় না। যার নেতৃত্বে মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছে সুজানগরের জনগণ তাকে প্রত্যাখান করেছেন। বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার না করলে আপামর জনতা রাজপথে তার ব্যবস্থা নিবে।

রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হলেও সুজানগরের আপামর জনতার যে ভালোবাসা পেয়েছি এটার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। দলের সভাপতি সন্ত্রাসের গডফাদার একাধিক হত্যা মামলার আসামী আমার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে অযথা হয়রানি করছে ।

বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব তিনি দলের সাধারণ সম্পাদকের নামে মামলা দিয়ে নিজ এলাকায় সহিংসতা লাগিয়ে প্রমোদ ভ্রমণে সমুদ্র সৈকতে সহকর্মীদের নিয়ে উল্লাস করছেন। দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে উনি আনন্দ উল্লাস কিভাবে করেন বলে প্রশ্ন করেন।

শাহীন আরও অভিযোগ করে বলেন, আব্দুল ওহাব সাহেব আল আমিন নামের যুবলীগ নেতাকে হত্যার সময় উপস্থিত ছিলেন। এজন্য নিহতের আত্মীয় স্বজন ওহাবের নামে মামলা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি নিজেই আওয়ামী লীগের সভাপতির নামে মামলা হতে দেইনি। আল আমিন হত্যায় জড়িত দুদকের দুর্নীতিবাজ কর্তকর্তা হাফিজ ওহাবের সঙ্গে যোগসাজসে এমন হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলেই হাফিজের নামে মামলা হয়েছে। রানিনগর ইউনিয়নের বাহিরে যাতে কারও নামে মামলা না হয় সেজন্য আমি পরামর্শ দিয়েছি। কারণ দলের সভাপতির নামে মামলা দিলে দলের জন্য কবর রচনা হয়।

দুদকের এই হাফিজের নেতৃত্ব রানিনগরে ৪ টি হত্যাকান্ড হয়েছে। দুদকে চাকুরী করে হাজার হাজার কোটি টাকার নামে বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। এই খুনির সঙ্গে হাতমিলিয়ে আওয়ামী লীগকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করছে ওহাব। আল আমিনের খুনিদের সঙ্গে কোন আপোস করা হবে না।

মোজাহার নামের ওই ব্যক্তি রানিনগরের একজন প্রতিষ্ঠিত চোর ছিল। এবং সে আল আমিন হত্যার ১৬ নম্বর আসামী ছিল। আমার নির্দেশে নাকি হত্যা হয়েছে। আমি যখন জামিন নিতে হাইকোর্টে যাই, বিচারকরা আশ্চর্য হয়েছে। এই মামলা আমার নামে কিভাবে হয়েছে?। বিচারকরা বিব্রত হয়েছে এই মামলা কোন ধারার হবে।

ওহাব সাহেবের মামলায় আমার কিছু যায় আসে না। তুমি ওহাব আগামীদিনের জন্য প্রস্তুত থাকো। আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছেন। আমি যেখানেই হত্যাকান্ডের শিকার হই ওই মামলার প্রধান আসামি হবে ওহাব।

প্রতিবাদ সমাবেশে সুজানগর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদাউস আলম ফিরোজের সঞ্চালনায় ও উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার সরদারের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, সুজানগর পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম রেজা, সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক শ্রী সুবোধ কুমার নটো, সুজানগর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সরদার রাজু আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক সরদার আব্দুর রউফ, উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ইউনুস আলী বাদশা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক রাজা হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম রেজাসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৮ মে সুজানগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব (মোটরসাইকেল মার্কা) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীন (আনারস মার্কা) প্রতিক নিয়ে। এতে পরাজিত হোন সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীন। এরপর থেকেই সুজানগরে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে। এপর গত ২১ জুন রানীনগর এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে আলামিন মিয়া (৩৫) নামে শাহীন গ্রুপের একজন নিহত হন। এ ঘটনার জেরে ওই এলাকার বেশ কিছু বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। হামলায় মোজাহার বিশ্বাসসহ ওহাব গ্রুপের বেশ কয়েকজন আহত হন। মোজাহার বিশ্বাসের‌ অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার ৬ দিন পর গত ২৭ জুন তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীনকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। গত( ৮ জুলাই) উচ্চ আদালত থেকে ৮ সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন নেন শাহিনুজ্জামান শাহীন।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

চরমপন্থীদেন সাথে মিটিং করে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে: শাহীন

আপডেট সময় : ০৮:২৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪

চরমপন্থীদের সঙ্গে মিটিং করে নিল নকশা তৈরি আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নকশাল সর্বহারা দিয়ে আমাকে হত্যা করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায় বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব। আমাকে হত্যা করা হলেও আপনারা ভয় পাবেন না। রাজপথে থেকে ওই সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে পতন নিশ্চিত করবে বলে মন্তব্য করেছেন সুজানগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীন।

মঙ্গলবার (০৯ জুলাই) বিকেলে সুজানগর পৌরসভার সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এমন কথা বলেন তিনি। এর আগে দুপুরের দিকে ঢাকা থেকে সড়ক পথে আরিচা- কাজিরহাট ফেরিঘাট হয়ে বিশাল বহর নিয়ে নিজ উপজেলা সুজানগরে আসেন। এরপর স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে ফুল বরণ করেন।

শাহিনুজ্জামান শাহীন বলেন, কাউকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখা যায় না। যার নেতৃত্বে মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছে সুজানগরের জনগণ তাকে প্রত্যাখান করেছেন। বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার না করলে আপামর জনতা রাজপথে তার ব্যবস্থা নিবে।

রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হলেও সুজানগরের আপামর জনতার যে ভালোবাসা পেয়েছি এটার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। দলের সভাপতি সন্ত্রাসের গডফাদার একাধিক হত্যা মামলার আসামী আমার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে অযথা হয়রানি করছে ।

বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব তিনি দলের সাধারণ সম্পাদকের নামে মামলা দিয়ে নিজ এলাকায় সহিংসতা লাগিয়ে প্রমোদ ভ্রমণে সমুদ্র সৈকতে সহকর্মীদের নিয়ে উল্লাস করছেন। দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে উনি আনন্দ উল্লাস কিভাবে করেন বলে প্রশ্ন করেন।

শাহীন আরও অভিযোগ করে বলেন, আব্দুল ওহাব সাহেব আল আমিন নামের যুবলীগ নেতাকে হত্যার সময় উপস্থিত ছিলেন। এজন্য নিহতের আত্মীয় স্বজন ওহাবের নামে মামলা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি নিজেই আওয়ামী লীগের সভাপতির নামে মামলা হতে দেইনি। আল আমিন হত্যায় জড়িত দুদকের দুর্নীতিবাজ কর্তকর্তা হাফিজ ওহাবের সঙ্গে যোগসাজসে এমন হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলেই হাফিজের নামে মামলা হয়েছে। রানিনগর ইউনিয়নের বাহিরে যাতে কারও নামে মামলা না হয় সেজন্য আমি পরামর্শ দিয়েছি। কারণ দলের সভাপতির নামে মামলা দিলে দলের জন্য কবর রচনা হয়।

দুদকের এই হাফিজের নেতৃত্ব রানিনগরে ৪ টি হত্যাকান্ড হয়েছে। দুদকে চাকুরী করে হাজার হাজার কোটি টাকার নামে বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। এই খুনির সঙ্গে হাতমিলিয়ে আওয়ামী লীগকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করছে ওহাব। আল আমিনের খুনিদের সঙ্গে কোন আপোস করা হবে না।

মোজাহার নামের ওই ব্যক্তি রানিনগরের একজন প্রতিষ্ঠিত চোর ছিল। এবং সে আল আমিন হত্যার ১৬ নম্বর আসামী ছিল। আমার নির্দেশে নাকি হত্যা হয়েছে। আমি যখন জামিন নিতে হাইকোর্টে যাই, বিচারকরা আশ্চর্য হয়েছে। এই মামলা আমার নামে কিভাবে হয়েছে?। বিচারকরা বিব্রত হয়েছে এই মামলা কোন ধারার হবে।

ওহাব সাহেবের মামলায় আমার কিছু যায় আসে না। তুমি ওহাব আগামীদিনের জন্য প্রস্তুত থাকো। আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছেন। আমি যেখানেই হত্যাকান্ডের শিকার হই ওই মামলার প্রধান আসামি হবে ওহাব।

প্রতিবাদ সমাবেশে সুজানগর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদাউস আলম ফিরোজের সঞ্চালনায় ও উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার সরদারের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, সুজানগর পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম রেজা, সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক শ্রী সুবোধ কুমার নটো, সুজানগর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সরদার রাজু আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক সরদার আব্দুর রউফ, উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ইউনুস আলী বাদশা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক রাজা হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম রেজাসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৮ মে সুজানগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব (মোটরসাইকেল মার্কা) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীন (আনারস মার্কা) প্রতিক নিয়ে। এতে পরাজিত হোন সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীন। এরপর থেকেই সুজানগরে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে। এপর গত ২১ জুন রানীনগর এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে আলামিন মিয়া (৩৫) নামে শাহীন গ্রুপের একজন নিহত হন। এ ঘটনার জেরে ওই এলাকার বেশ কিছু বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। হামলায় মোজাহার বিশ্বাসসহ ওহাব গ্রুপের বেশ কয়েকজন আহত হন। মোজাহার বিশ্বাসের‌ অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার ৬ দিন পর গত ২৭ জুন তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীনকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। গত( ৮ জুলাই) উচ্চ আদালত থেকে ৮ সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন নেন শাহিনুজ্জামান শাহীন।

Facebook Comments Box