ঢাকা ০৯:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

গোবরের ঘুটে বিক্রি করে স্বাবলম্বী অনেক পরিবার

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১১:৩৯:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪ ৬৩ বার পঠিত

সৈয়দপুরে গোবরের ঘুটে বা শলাকা বানিয়ে তা বিক্রি করে সংসার চলছে হাজারো পরিবারের। অনেকে এসব বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। গতকাল শহর সহ উপজেলার অনেকের সাথে কথা বলে এমনই তথ্য পাওয়া যায়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শহর বা গ্রামের অনেকেই গরু মহিষ পালন করছেন।কেউ কেউ বানিজ্যিক ভাবে খামার গড়ে তুলেছেন। অসচ্ছল পরিবারের নারীরা গরুর খামার বা আশপাশের গোবর কুড়িয়ে নিজ বাড়ি, রাস্তার পাশে অথবা ফাঁকা জায়গায় ঘুটে বা শলাকা তৈরি করছেন। এরপর সেগুলো রোদে শুকিয়ে জ্বালানির উপযোগী করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অনত্র বিক্রি করছেন। প্রতিবস্তা শুকনো ঘুটে ৩/৪ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। আর গোবর দিয়ে তৈরী কৃত শলাকা প্রতিটি ৩ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এতে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে একেকজনের প্রতিমাসে ৪/৫ হাজার টাকা আয় হচ্ছে।

 

শহরের ইসলাম বাগ ফিদালী ইন্সটিটিউট সংলগ্ন এলাকায় বানু নামের এক নারী বলেন,তার স্বামী একজন রিক্সা চালক,তার পরিবারে মোট ৫ জন সদস্য। ভাড়া বাসায় থেকে স্বামীর রোজগারে সংসার চালাতে কষ্ট হয় বলে আশপাশ থেকে অথবা খামার থেকে গোবর সংগ্রহ করে ঘুটে ও শলাকা তৈরি করছি।এতে একদিকে নিজ বাড়িতে রান্নার কাজ হচ্ছে, অন্য দিকে অবশিষ্ট ঘুটে ও শলাকা বিক্রি করে প্রতিমাসে আয় হচ্ছে ২/৩ হাজার টাকা। আর সে টাকা দিয়ে বাচ্চাদের পড়াশুনার খরচ চালাতে পারছি।

শহরের দারুলউলুম মাদ্রাসা মোড় সংলগ্ন রাজিয়া বেগম বলেন, সামান্য আয়ের সংসার তার।গ্যাস বা লাকরি কেনার সামর্থ্য নেই বলে আশপাশের গোবর কুড়িয়ে পাট কাঠি দিয়ে শলাকা তৈরি করছি। এরপর সেগুলো রোদে শুকিয়ে নিজ বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহার করছি।আর বাকিটা বিক্রি করে প্রতিমাসে ৩/৪ হাজার টাকা জমিয়ে রাখছি।তিনি বলেন,সৈয়দপুর শহরে কত মেয়র ও কাউন্সিল এলো গেলো কিন্তু আমার খবর কেউই রাখছেন না।

আঁকলিমা পারভীন জানান,শহরের বাংগালী পুর নীজ পাড়ায় তার বাড়ি। স্বামী দুলাল হোসেন একজন বাসের কন্ট্রাক্টার। কষ্ট করে ১/২ টি গরু কিনেছি। বাড়ির গরুর গোবর আর সংগ্রহ করা গোবর দিয়ে জ্বালানি তৈরি করছি।এরপর সেগুলো রোদে শুকিয়ে নিজেদের সংসারের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিমাসে ৫/৬ হাজার টাকা আয় করছি।১ মেয়েকে সেই টাকায় অনার্সে পড়াশোনা করাচ্ছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভুষন রায় বলেন, গোবর দিয়ে তৈরি কৃত জ্বালানি পরিবেশ বান্ধব। গোবরের সাথে ধানের গুড়া মিশ্রন করে ঘুটে ও শলাকা তৈরি করলে ভালো জ্বলে।আর জ্বালানি শেষে ওই ছাই ফসলের জমিতে ব্যবহার করা যায়। এতে জমি হয় উর্বর। ফসল ও হয় পর্যাপ্ত।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :

গোবরের ঘুটে বিক্রি করে স্বাবলম্বী অনেক পরিবার

আপডেট সময় : ১১:৩৯:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪

সৈয়দপুরে গোবরের ঘুটে বা শলাকা বানিয়ে তা বিক্রি করে সংসার চলছে হাজারো পরিবারের। অনেকে এসব বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। গতকাল শহর সহ উপজেলার অনেকের সাথে কথা বলে এমনই তথ্য পাওয়া যায়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শহর বা গ্রামের অনেকেই গরু মহিষ পালন করছেন।কেউ কেউ বানিজ্যিক ভাবে খামার গড়ে তুলেছেন। অসচ্ছল পরিবারের নারীরা গরুর খামার বা আশপাশের গোবর কুড়িয়ে নিজ বাড়ি, রাস্তার পাশে অথবা ফাঁকা জায়গায় ঘুটে বা শলাকা তৈরি করছেন। এরপর সেগুলো রোদে শুকিয়ে জ্বালানির উপযোগী করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অনত্র বিক্রি করছেন। প্রতিবস্তা শুকনো ঘুটে ৩/৪ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। আর গোবর দিয়ে তৈরী কৃত শলাকা প্রতিটি ৩ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এতে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে একেকজনের প্রতিমাসে ৪/৫ হাজার টাকা আয় হচ্ছে।

 

শহরের ইসলাম বাগ ফিদালী ইন্সটিটিউট সংলগ্ন এলাকায় বানু নামের এক নারী বলেন,তার স্বামী একজন রিক্সা চালক,তার পরিবারে মোট ৫ জন সদস্য। ভাড়া বাসায় থেকে স্বামীর রোজগারে সংসার চালাতে কষ্ট হয় বলে আশপাশ থেকে অথবা খামার থেকে গোবর সংগ্রহ করে ঘুটে ও শলাকা তৈরি করছি।এতে একদিকে নিজ বাড়িতে রান্নার কাজ হচ্ছে, অন্য দিকে অবশিষ্ট ঘুটে ও শলাকা বিক্রি করে প্রতিমাসে আয় হচ্ছে ২/৩ হাজার টাকা। আর সে টাকা দিয়ে বাচ্চাদের পড়াশুনার খরচ চালাতে পারছি।

শহরের দারুলউলুম মাদ্রাসা মোড় সংলগ্ন রাজিয়া বেগম বলেন, সামান্য আয়ের সংসার তার।গ্যাস বা লাকরি কেনার সামর্থ্য নেই বলে আশপাশের গোবর কুড়িয়ে পাট কাঠি দিয়ে শলাকা তৈরি করছি। এরপর সেগুলো রোদে শুকিয়ে নিজ বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহার করছি।আর বাকিটা বিক্রি করে প্রতিমাসে ৩/৪ হাজার টাকা জমিয়ে রাখছি।তিনি বলেন,সৈয়দপুর শহরে কত মেয়র ও কাউন্সিল এলো গেলো কিন্তু আমার খবর কেউই রাখছেন না।

আঁকলিমা পারভীন জানান,শহরের বাংগালী পুর নীজ পাড়ায় তার বাড়ি। স্বামী দুলাল হোসেন একজন বাসের কন্ট্রাক্টার। কষ্ট করে ১/২ টি গরু কিনেছি। বাড়ির গরুর গোবর আর সংগ্রহ করা গোবর দিয়ে জ্বালানি তৈরি করছি।এরপর সেগুলো রোদে শুকিয়ে নিজেদের সংসারের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিমাসে ৫/৬ হাজার টাকা আয় করছি।১ মেয়েকে সেই টাকায় অনার্সে পড়াশোনা করাচ্ছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভুষন রায় বলেন, গোবর দিয়ে তৈরি কৃত জ্বালানি পরিবেশ বান্ধব। গোবরের সাথে ধানের গুড়া মিশ্রন করে ঘুটে ও শলাকা তৈরি করলে ভালো জ্বলে।আর জ্বালানি শেষে ওই ছাই ফসলের জমিতে ব্যবহার করা যায়। এতে জমি হয় উর্বর। ফসল ও হয় পর্যাপ্ত।

Facebook Comments Box